শুক্রবার   ২৯ মার্চ ২০২৪   চৈত্র ১৫ ১৪৩০

নরপতির গূঢ় তথ্য ফাস !

যুগের চিন্তা অনলাইন

প্রকাশিত: ৭ জুন ২০২১  

ধীরে ধীরে বেড়িয়ে আসতে শুরু করেছে রাতের শহরের নয়া নরপতি মুরাদ হোসেন বারিসের অজানা তথ্য। তবে গত দুইদিন যাবৎ তিনি তার বাহিনী নিয়ে শহর ও নগরের অলি গলিতে মহড়া দেয়া বন্ধ রেখেছেন। নয়া কৌশলে তিনি আবার মাঠে নামবেন বলে জানিয়েছেন একটি সূত্র। পাঠানটুলী ও এর আশপাশের এলাকায় মুরাদ বাহিনীর বেশির ভাগ সদস্যও মাদক ব্যবসার জড়িত বলেও দাবী করেছেন অনেকে। গত কয়েক বছর আগে মুরাদের ভাই রনির কাছ থেকে সোর্সের মাধ্যমে মাদক ক্রয় করেছিল জেলা ডিবি পুলিশ। আর এসময় ডিবির হাতে তিনি আটকও হয়েছিল।

 

অপরদিকে মুরাদের এক বোনের শাশুরী মাদক বিক্রির ঘটনায় সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশের হাতে অনেক আগে আটক হয়ে জেলও খেটেছেন বলে দাবী করেছেন একাধিক সূত্র।  উদ্ভট পোশাক আশাকের অধিকারী মুরাদ রাতের আঁধারে মাদক বিক্রেতাদের শেল্টার দিতে মহড়া দিয়ে যাচ্ছেন কিনা এ নিয়েও চলছে নানা গুঞ্জন।  মুরাদের ব্যানার ফেস্টুন শহর ছাড়িয়ে এখন সৈয়দপুর ও চর সৈয়দপুর এলাকার অনেক বিদুৎতের খ্ুঁটিতেও ঝুলতে দেখা গেছে।

 


নারায়ণগঞ্জ শহরে একেক সময় একেকজন নরপতির আবির্ভাব ঘটে। জেলার প্রভাবশালী পরিবারের কোনো না কোনো সদস্যের নাম ভাঙ্গিয়ে অনেকেই এই শহরের ক্ষনিকের নরপতি বনে যায়। আবার অনেকে ঐ পরিবারের আত্মীয়তার সূত্র ধরে ত্রাসের রাজত্ব কায়েমে মত্ব হয়ে উঠে। অনেক সময় এই প্রভাবশালী পরিবারের সদস্যদের অগোচরে আবার অনেক সময় জ্ঞাতসারে তারা শহরে লাল নীল ঘটনার জন্ম দেয়। তবে ঐ পরিবারের কোনো কোনো সদস্যদের সাথে মিশে নিজেকে আন্ডার ওয়ার্ল্ডের ডন হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে চায় অনেকে। ঠিক তেমনই একজন পাঠানটুলী এলাকার জহির উদ্দিনের ছেলে মুরাদ হোসেন বারিস।

 

প্রভাবশালী পরিবারের একজন সদস্যের ওকিল মেয়ের জামাই হিসেবে তিনি পরিচয় দিতে পছন্দ করেন। তার বাবার নাম জিজ্ঞেস করলে মুরাদ তার ওকিল শ্বশুরের নাম বলতে বেশি স্বাচ্ছন্দ বোধ করেন।  এলাকাবাসী জানান, পাঠানটুলী এলাকায় মুরাদের একটি অফিস ছিল। আর ঐ অফিসে ছিল বিভিন্ন দেশের দুই শতাধিক তসবিহ। প্রত্যেকটি তসবিহ দেয়ালে সাঁটানো ছিল। যে কেউ ঐ অফিসে প্রবেশ কললে উদ্ভট এক আমেজের গন্ধ পেতেন। তবে অফিসটি এখন আর নেই। সেই অফিসটি সড়ক কর্তৃপক্ষ বেশ কয়েক মাস আগে ভেঙ্গে গুড়িয়ে দিয়েছেন।   

 


পাঠানটুলী এলাকার একজন নাম প্রকাশ না করার শর্তে এই প্রতিবেদককে জানান, মুরাদের পরিবারের ইতিহাস ঘাটলে দেখা যায়। ১৯৮২ সালে তার বাবা জহির উদ্দিন গোদনাইল ইউনিয়নে নির্বাচন করে পরাজিত হয়েছিল। পরবর্তীতে একবার নির্বাচিত হয়েছিলেন তিনি। এরপর এনসিসির নির্বাচনে ৮ নং ওয়ার্ড থেকে নির্বাচন করে একটি কেন্দ্রে ১০৮টি ভোট পেয়েছিলেন। এভাবে প্রতিটি কেন্দ্রে তিনি চরমভাবে পরাজিত হয়। মুরাদের বড় ভাই রনির কাছ থেকে জেলা ডিবি পুলিশ বেশ কয়েক বছর আগে সোর্সের মাধ্যমে মাদক কিনেছিলেন। আর সেই সোর্সের মাধ্যমেই মাদকসহ ডিবি পুলিশের হাতে আটক হয়েছিলেন। একই ঘটনা ঘটেছে মুরাদের বোনের শাশুড়ীর বেলায়ও।  উভয়ে হাজত বাস করেছেন মাদক মামলায়।

 


পাঠানটুলী এলাকার লোকজন জানান, মুরাদের পরিবারের সাথে এলাকাবাসীর সাথে তেমন কোনো উঠাবসা নেই। সম্প্রতি সময়ে জেলার প্রভাবশালী পরিবারের একজন সদস্যের ওকিল মেয়ের জামাই পরিচয়ে পুরো এলাকার বেশ কিছু যুবকদের একত্রিত করেছে। ঐ যুবকরা তার কাছ থেকে কি পেয়ে থাকে আর মুরাদও তাদের দিয়ে কি কাজ করায় তাও অজানা সবার কাছে। 

 


তারা আরো বলেন, মুরাদের ব্যবসা বা চাকুরী কি তা কেউ জানে না। সম্প্রতি রাতে ও দিনের বেলা তার বাড়ির সামনে বেশ কিছু প্রাইভেটকার ও মোটর সাইকেল এসে জড়ো হয়।  উদ্ভট পোশাক নিয়ে গাড়ি হাকিয়ে চলা মুরাদ এখন পাঠানটুলী এলাকার আতংক। জনগনের চলাচলের পথে বহর থামিয়ে অনেককে মোবাইলে সেল্ফী তুলতেও দেখা যায়।  হঠাৎ করে সেলিব্রেটি বনে যাওয়া মুরাদের চলাফেরা নিয়েও এলাকায় শুরু হয়েছে নানা গুঞ্জন। 
আরেকটি সূত্রের দাবী, মুরাদে বিষয়ে ইতিমধ্যে গোয়েন্দা তৎপরতা শুরু হয়েছে। যুগের চিন্তা পত্রিকায় মুরাদের বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশ হওয়ার পর অনেকে সাধুবাদ জানিয়েছে। এছাড়াও সংবাদ প্রকাশের পর থেকে মুরাদ ও তার লোকজন অনেকটা গা ঢাকা দিয়ে আছেন বলেও একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছেন।  
 

এই বিভাগের আরো খবর