
নারায়ণগঞ্জবাসীর বহুল প্রতীক্ষিত দাবি অবশেষে আলোর মুখ দেখলো। অবশেষে এই প্রথমবারের মতো যানজট নিরসন ও ফুটপাতে হকারদের দখলমুক্ত করার মতো দুটি জনগুরুত্বপূর্ণ দাবি নিয়ে সমাধানের উদ্দেশ্যে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী, নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য একেএম শামীম ওসমান এবং নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য একেএম সেলিম ওসমান এক টেবিলে বসেছেন।
নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের আয়োজনে গতকাল সকাল ১১টায় আয়োজিত এই গোলটেবিল নিয়ে নারায়ণগঞ্জবাসীর আগ্রহের পারদ ছিল অনেক উপরে। নির্ধারিত সময়ের একঘন্টা পরে এই গোলটেবিল বৈঠক শুরু হলেও জনপ্রতিনিধি, জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, ব্যবসায়ী, সাংবাদিক ও সুধীজনদের নিয়ে আয়োজিত অনুষ্ঠানে ‘পজিটিভ নারায়ণগঞ্জ’ গড়ার বিষয়ে বেশ কিছু ইতিবাচক ও দৃঢ় সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।
খাবার বিতরণ অংশে বিশৃঙ্খলা ব্যতিত পুরো গোলটেবিল বৈঠক অনুষ্ঠান নগরবাসীর জন্য অত্যন্ত সফল ও তাৎপর্যমণ্ডিত হয়েছে। যানজট নিরসন ও ফুটপাত হকার মুক্ত করার ব্যাপারে গোলটেবিল বৈঠকে বেশ কিছু তাৎক্ষণিক কার্যকর সিদ্ধান্ত ও সুদূরপ্রসারী প্রস্তাবনা দেয়া হয়েছে।
বৈঠকের পর আজ থেকেই ১.শহরের ফুটপাতে কোন ধরণের হকার থাকবে না ২. চাষাঢ়া মোড়সহ শহরের সকল অবৈধ স্ট্যান্ড উচ্ছেদ ৩. সকাল ৬টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত শহরে ট্রাক ঢোকা বন্ধ ৪. ব্যাটারিচালিত রিক্সা, ইজিবাইক শহরে প্রবেশ করবেনা ৫. মীর জুমলা সড়কের দখল উচ্ছেদ করে যানচলাচলের উপযোগী করা ৬. রুট পারমিট ব্যতিত সকল বাস চলাচল নিষিদ্ধ, আজ থেকেই অভিযান করে সরাসরি ডাম্পিং ৭. নারায়ণগঞ্জ থেকে বিভিন্ন জেলামুখী রুটপারমিটবিহীন বাস চলাচল নিষিদ্ধ এবং ৮. অটোরিক্সা গ্যারেজগুলোতে বিদ্যুৎ চুরি ঠেকাতে মোবাইল কোর্ট পরিচালনার অভিযানে নামবে জেলা প্রশাসন এমন তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারি এসএসসি পরীক্ষা শুরুর আগেই আজ (৪ ফেব্রুয়ারি) থেকে জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসন মাঠে নামবে। এছাড়া যানজট নিরসনে আরো বেশ কিছু প্রস্তাবনা দেয়া হয়েছে এবং তাতে সকলেই সম্মতি প্রকাশ করেছেন। প্রস্তাবনাগুলো হলো, ১.কমলাপুর থেকে চাষাঢ়া স্টেশন পর্যন্ত ট্রেন চালুর ব্যাপারে প্রস্তাবনা ২. চাষাঢ়া রাইফেলক্লাবের সামনে থেকে কাউন্টারগুলো চানমারিতে সরানোর প্রস্তাব ৩. ২নং রেলগেট থেকে চাষাঢ়া পর্যন্ত রেললাইন নাসিকের আওতায় সড়ক করার প্রস্তাবনা ৪. ৫নং ঘাট এলাকায় কাঠের দোকানউচ্ছেদ করে সেখানে নিতাইগঞ্জের ট্রাকের মালামাল লোড-আনলোডের দাবি, ৫. চাষাঢ়া-পোস্তগোলা পুরনো সড়ক ১২০ ফুট প্রশস্ত হচ্ছে, যেখানে জেলা পরিষদ ডাক বাংলো ভেঙে এই সড়কের সাথে ফ্লাইওভার করে নাগিনা জোহা সড়ক এটাচ (সংযোগ করা)।
বৈঠকে সেলিম ওসমান স্পষ্ট ভাষায় ঘোষণা দেন, ফুটপাতে কোন হকার থাকবে না, শহরে কোন অবৈধ স্ট্যান্ড থাকবে না, শামীম ওসমান এই দাবির সাথে একমত পোষণ করে বলেন হকার শতভাগ উচ্ছেদ করতে হবে, কোন ধরণের স্বজনপ্রীতি করা যাবে না, মীর জুমলা সড়ক যানচলাচলের উপযোগী করতে উচ্ছেদের দাবি জানান এবং মেয়র আইভী তার এই দাবির সাথে একমত পোষণ করেছেন।
নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতি আরিফ আলম দিপুর সভাপতিত্বে নারায়ণগঞ্জ জেলা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আফজাল হোসেন পন্টির সঞ্চালনায় গোলটেবিল বৈঠকে অংশ নেন নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী, নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য একেএম সেলিম ওসমান, নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য একেএম শামীম ওসমান, নারায়ণগঞ্জ জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বাবু চন্দনশীল, নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসক মাহমুদুল হক, নারায়ণগঞ্জ জেলা পুুলিশের ভারপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার আমির খসরু, নারায়ণগঞ্জ চেম্বার অব কমার্সের সহ-সভাপতি মোর্শেদ সারওয়ার সোহেল, নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ট্রাফিক) রুহুল আমিন সাগর, বিআরটিএ’র সহকারী পরিচালক (ইঞ্জি.) মো.শামসুল কবীর, ব্যবসায়ীক নেতা প্রবীর সাহা।
এছাড়া গোলটেবিল বৈঠক অনুষ্ঠানে সদর, ফতুল্লা, বন্দর, সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাবৃন্দ, নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের কাউন্সিলরবৃন্দ, নারায়ণগঞ্জ ফতুল্লা ও বন্দর এলাকার চেয়ারম্যানবৃন্দ, বিভিন্ন সামাজিক ও ব্যবসায়িক নেতৃবৃন্দসহ সাংবাদিকগণ উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠক শুরুর আগে ভিডিও প্রজেক্টরে নারায়ণগঞ্জের যানজটের বেশকিছু কারণ ও ফুটপাতে হকারদের নৈরাজ্য ও জনগণের ভোগান্তি সংক্রান্ত একটি ডকুমেন্টরী প্রদর্শণ করা হয়। পরে নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ট্রাফিক) রুহুল আমিন সাগর তাঁর বক্তব্যে বলেন, ‘নারায়ণগঞ্জ শহরে গাড়ি চলাচল করার মতো সড়কের সংখ্যা মাত্র ৪.২% আর বাকি যে ৯৪.৮% আর সেগুলোতে ছোট গাড়ি বা পায়ে হাঁটার মতো রাস্তা। নারায়ণগঞ্জের গাড়ি চলাচলের মতো ব্যবহার উপযোগী রাস্তা খুবই কম। বিশেষ করে এক মাত্র বিবি সড়ক ছাড়া এই শহরে বড় কোন সড়ক নেই।’
পরে বিআরটিএ’র সহকারী পরিচালক (ইঞ্জি.) মো.শামসুল কবীর বলেন, ‘নারায়ণগঞ্জের যানজটে আমার ধারণা অনুযায়ী ইজিবাইক হচ্ছে সবচেয়ে বড় সমস্যা। তিনি ইজিবাইকগুলোকে যদি সিটি কর্পোরেশনের মাধ্যমে একটি নাম্বারিং করার প্রস্তাবনা দিলেও মেয়র আইভী, সেলিম ওসমান ও শামীম ওসমান তিনজনই একত্রে বৈধতা না থাকার দরুণ এটি নাকচ করে দেন। তিনি জানান, নারায়ণগঞ্জে থেকে ঢাকা পর্যন্ত বিআরটিএ ১১৯টি বাস আমরা রোড পারমিট করা হয়েছে, ঢাকা থেকে রোটপারমিট নিয়ে সব মিলিয়ে নারায়ণগঞ্জে মোট ১৫০টি বাসের অনুমোদন রয়েছে’।
এরপর বক্তব্য রাখেন নারায়ণগঞ্জ জেলা পুুলিশের ভারপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার আমির খসরু। তিনি বলেন, আমরা হকারকে বসতে দিয়েছি, অনুমোদন দিয়েছি আন-অফিসিয়ালী এখন এই হকারগুলোকে উচ্ছেদ করলে এরা কোথায় যাবে। আগে বিকল্প একটি পন্থা ভেবে কিভাবে এই নগরীকে যানজট মুক্ত করা যায়।। তিনি বলেন, আমার কিন্তু নিতাইগঞ্জে একটি সরকারি বাংলো আছে আমি সত্যি এই যানজটের ভয়ে সেই বাংলোতে উঠিনি। আমি তা ছেড়ে এখন ভূঁইগড় রূপায়নে থাকি। তিনি ইজিবাইক সিটি কর্পোরেশনের মধ্যে কতগুলো আমরা এলাও করতে পারি, সিটি কর্পোরেশনের বাহিরে যেগুলো রয়েছে সেখানে আমরা কতগুলোকে অনুমোদন দিতে পারি সে বিষয়ে নির্দেশনা চান।
এছাড়া বঙ্গবন্ধু রোডে দেড় ফিট, এক ফিট উঁচু যে ডিভাইডারগুলো আছে সেগুলো ভেঙে দিতে হবে। কারণ এই ডিভাইডারের একটি পাশ দিয়ে একটি গাড়ি যায় আরেক পাশ দিয়ে না অটো যেতে পারে না রিক্সা। যার কারণে সেখান দিয়ে আমরা ৩টি গাড়ি যেতে পারে, সেখান দিয়ে ১টি গাড়ি যায়। তাই এই ডিভাইডারগুলো ভেঙে দিয়ে দুই সাইড চওড়া করে দিতে পারি।’ এমন প্রস্তাবনার পরপরই তার এসব প্রস্তাবনা নিয়ে সমালোচনা করেন নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আইভী।
মেয়র আইভী বলেন, চাষাড়া রাস্তা দিয়ে কেনো এই অবৈধ বাসগুলো চলবে। কেন এই বাসগুলোর রোড পারমিট বাতিল করা হচ্ছে না। এখানে যারা বসে আছি সবাই কি একমত হতে পারি যে এই মৌমিতা গাড়ি নারায়ণগঞ্জে চলতে দেওয়া যাবে না। পুরো শহর বাসের নগরী। আমাদের শহরেই তো অনেক বাস আছে। তাহলে কেনো আরেক জায়গা থেকে এসে আরেক জায়গার বাস এখানে কেন চলবে? সম্ভবত ২০০৬ কি ২০০৮ এর দিকে নারায়ণগঞ্জে যখন এসপি ইব্রাহিম ফাতিমি ছিলেন উনি একটা এক্সপিরিমেন্ট করে ৬ মাসে পর সফলতা পাওয়ার পর তিনি আমাদের কাছে চিঠি দিছে যেন আমরা এটার একটা পার্মানেন্ট একটা লেন করে দেই।
এখন যদি বলেন, এগুলোর জন্য যানজট হচ্ছে। তাহলে তো বলবো রোজার সময় যখন আপনি কন্ট্রোল করে ফেললেন কোনো যানজট ছিলো না তখন তো এই কথাটা আসলো না। যেন ডিভাইডার তুলে দিতে হবে। আমার যেটা মনে হচ্ছে, আমরা এখানে যারা বসে আছি তারা তাদের কাজটা যদি সঠিক ভাবে করি তাহলে কোনো সমস্যা থাকবে না। ট্রাফিক তো ট্রাফিকের কাজ করছে। ট্রাফিক তো এমপি বা সিটি করপোরেশনের উপরে চাপায় দিতে পারে না। যদি আপনারা মনে করেন মেয়র এই কাজগুলো আপনাদের জন্য করে দিবে তাহলে মেয়র করে দিবে। এই জায়গায় স্ট্যান্ড দেওয়া যাবে না দিবে না। আমরা বারবার বৈধ-অবৈধের চিঠি বার বার আপনার কাছে পাঠানো আছে। আমার লাস্ট চিঠি আপনার কাছে পাঠানো আছে ২০২৩ সালে। একাটারও কি পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে তিনি প্রশ্ন রাখেন।
মেয়র আইভী বলেন, ‘আমি জানতে চাই রাইফেল ক্লাবের সামনে কেন অবৈধ সিএনজি স্ট্যান্ড কেন থাকবে? প্রেস ক্লাবের সামনেই দেখেন চারপাশ ঘিরে কতগুলো অবৈধ স্ট্যান্ড আছে। রাস্তার ডিভাইডার তুলে দিতে হবে আর ইজিবাইকের তো গভর্নমেন্টই অনুমতি দিচ্ছে না। আমি কিভাবে অনুমোদন দিবো। আমি তো প্রায় গুলোকে ধরে নিয়ে জরিমানা করতাছি। আমরা হকারদের নির্দিষ্ট একটা কি দুটো জায়গা দিছি যে এখানে দোকান নিয়ে বসো। আমি যখন থেকে মেয়র হয়ে আসতাছি সেই ২০০৩ থেকে বলে আসছি যে বঙ্গবন্ধু সড়কে হকার মুক্ত করার জন্য। একজন এসপি যখন কথা বলবে তখন তো রেসপনসিবলিটি নিয়ে কথা বলবে।
৬০০ হকারকে পূনর্বাসন করার পরেও ওনি যখন বললো একজন হকারকে উচ্ছেদ করা যাবে না। একজন প্রশাসনের ব্যক্তির মুখ থেকে যখন এমন কথা বের হয় তখন কি শহরে হকার উঠবে? এখানে বসছিই তো যানজট আর হকার মুক্ত করার জন্য। এখানে আমরা সমাধান করতে বসেছি। আর সমাধানই হবে। কারণ দীর্ঘদিন ধরে আমরা এটাকে সাফার করছি। আপনারারা যারা সবাই ঢাকা থাকে আমরা যারা এখানে থাকি তাদের সমস্যা। আমরা এখানে যারা আছি তারা যদি এটাকে সমাধান না করে এটাকে আরো প্রশ্রয় দিই তাহলে তো এখানে বসার কোনো মানে হয় না। পুরো নারায়ণগঞ্জের ভোটাররা তাকিয়ে আছে আজকের সমাধানের দিকে। যে কী সমাধান আমরা দেই। ডিসি অফিসে আপনার নেতৃত্বে মিটিং হইছে যে রাতে ট্রাকগুলো চলবে।
তাহলে কেনো দিনের বেলাতে ট্রাকগুলো চলতেছে। সেই ৬০০ হকার তাদের দোকান বিক্রি করে এখন রাস্তায়। পুরো সড়ক এখন হকারদের দখলে। এটাই কিভাবে সমাধান করা যায় এটার প্রতিকার আমরা চাই। আমার কোনো অযুহাত দরকার নাই। কে কি করতাছে। এনসিসির কী কাজ। কোথায় কী করতে হবে এটা যদি আমাকে দৃষ্টান্তমূলক ভাবে বলে দেয় তাহলে আমি করে দিবো। এসপি একটা কথা বলেছেন যে ঐ এলাকাতে যানজটের কারণে আমি সেখানে থাকি না। কেন ভাই সেখানে কি মানুষ থাকে না? আমাকে তো বন্ধি করে রাখছেন। নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোােরশন ট্রাক দিয়ে বন্দি। মেয়রকে আপনারা সব সময় দোষারোপ করেন। তাহলে কেনো আমাকে এখন থামিয়ে দিবেন। সমাধান করতে আসছেন, সমাধান করতে দেন।
আপনি এসপি যদি সেখানে থাকতে তাহলে কিছুটা হলেও সেখানে যানজট মুক্ত থাকতো। আমি অনুরোধ করবো আপনি সেখানে থাকেন। কারণ ঐখানে ড্রেন, পানির সমস্যা ছিলো সব সমস্যা, আমি সমাধান করে দিছি। এবং নিতাইগঞ্জের ট্রাকস্ট্যান্ড নিয়ে হাইকোর্টে মামলা করা হয়েছে। আর সেখানে স্পষ্টভাবে রায় ডিসি আর এসপিকে দেওয়া হয়েছে। উচ্ছেদ করে ওইটা ফ্রি করে তাকে জানানোর জন্য। তাদেরকে ১টা করে লাইন করার জন্য বলা হয়েছে। কিন্তু সেখানে তারা ৩ লাইন করে দাঁড়িয়ে থাকে। আজকে সকলের সামনে আমার বড় দুইভাই সকলের সামনে আমাকে কমিটমেন্ট দিতে হবে যে, সড়কে হকার থাকবে না। এবং আপনারা প্রশাসনকে নির্দেশ দেন। শহরে মেয়রের কথা কেউ শুনে না কোনো প্রশাসন শোনেনা। মেয়র জনগণের সাথে কথা বলে। সুতরাং আপনাদের কমিটমিন্ট থাকতে হবে এবং আমাকে কি করতে হবে এটা যদি সুনিদিষ্ট করে আমাকে বলে দেন তাহলে কিন্তু আমাদের অনেক প্রবলেম সমাধান হয়ে যায়।’
মেয়রের বক্তব্যের পর একমত পোষণ করেন সাংসদ সেলিম ওসমানও। তিনি মেয়রকে শান্ত করে বলেন, ‘এমন কোনো কথা নেই যে, এখান থেকে উঠবো আর সব সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। আমার মেয়র, মহাদয় এসপি সাহেবের কথায় একটু মনক্ষুন্ন হয়েছে। আমিও মনক্ষুন্ন হয়েছি। কিন্তু প্রশাসন তো প্রশাসন। প্রশাসন কে প্রশাসনের মতোই চলতে হবে। প্রশাসন প্রশাসনের বাইরে যেয়ে এরা কোথায় যাবে এরা কোথায় খাবে এরা কোথায় শোবে, এটা ভাবতে পারে না। কালকেও আমরা দেখেছি ঢাকার মেয়র আতিক ইচ্ছামতো বস্তি উঠিয়ে দিয়ে, নতুন পার্ক করার চিন্তা ভাবনা করছে। আমরা সাধারণ মানুষ কেউ চাই না একটা মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হোক।
কিন্তু ক্ষতিগ্রস্থ হোক এটা চাই না কিন্ত একটা মানুষ কে সুযোগ দিয়ে হাজার মানুষের অসুবিধা হয় তাহলে কী এটা চলনসই হবে? এটা কখোনোই চলন সই হবে না। সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে এলাকার মানুষ এখানে কেউ ঢাকা থেকে ব্যবসা করছেন, কেউ অন্য কোথাও থেকে ব্যবসা করেন, এলাকার মানুষই তো অবৈধ ব্যবসা করেন। আমি মেয়রের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলছি, তাদের গাড়িও চলবে না। উনি আমি কী আমার কাকা, আমার দুলাভাই? যে ওনার গাড়িটা চলবে। যার কারণে বার বার আইন করেও কিন্তু আইনকে ভেঙ্গে দেওয়া হচ্ছে।আমাদের নারায়ণগঞ্জবাসীর মধ্যে স্বজনপ্রীতি একটু বেশি আছে। চোখের পর্দাটা যদি উল্টানো না যায়, এ সমস্ত আলোচনা করে কোনো লাভ হবে না। কোনো আলোচনা হবে না। কঠোর থেকে কঠোরোতম হতে হবে।’
সেলিম ওসমান বলেন, আল্লাহর কাছে লাখো কোটি শুকরিয়া জানাই, ‘গত ১০ বছর চেষ্টার ফল যে আজকে এখানে সবাইকে নিয়ে এক সাথে বসতে পেরেছি। আমরা মেয়রকে সহযোগিতা করবো, তার মধ্যে কোনো ভুল নাই। সেলিম ওসমান বলেন, এক দফা এক দাবি, এটা বিএনপির স্লোগান না। নারায়ণগঞ্জ সম্পূর্ণ সন্ত্রাস মুক্ত, চাঁদাবাজ মুক্ত, ইভটিজিং মুক্ত, নেশা মুক্ত, রাস্তা মুক্ত, যানজট মুক্ত একটা নারায়ণগঞ্জ বানানোর জন্য যারা আমরা আজকে এখানে বসছি তারাই যথেষ্ট। আমাদের এখানে যদি কোনো রাজনীতি থাকে, আমরা এখানে ফেল করবো। শুধু আমরা একবার করে বসবো, মাসে বসি, ১৫ দিন পর বসি, ২ মাসে বসি, আমাদের বসতে হবে, আমরা এই একি লোক নিয়ে বসবো না। আমাদের বার বার বসতে হবে।
শামীম ওসমানকে নিয়ে সেরি সেলিম ওসমান বলেন, নারায়ণগঞ্জ এর ৪০০ বছরের যে অশান্তি ছিল, পতিতালয়ের নারায়ণগঞ্জ ছিল, শামীম ওসমান কী পারে নাই, পতিতালয় থেকে নারায়ণগঞ্জ কে মুক্ত করতে। শামীম ওসমান ই পারবে সন্ত্রাস দূর করতে, চাঁদাবাজি দুর করতে, মাদক আসক্ত দুর করতে। শামীম ওসমান কে আমরা শক্তি হিসাবে ব্যবহার করবো। প্ল্যানিং করার জন্য আমি আর মেয়র আর জেলা প্রশাসন, আমরা প্ল্যানিং করে শামীম ওসমানকে দিব। শামীম ওসমান আপনার কর্মী চাই আপনি ব্যবস্থা করেন আপনারা সহযোগিতা করবেন। যখনি ডাকা হবে তখনি যাবেন এটা কেউ মনে করবেন না যে আজকেই আমরা বসে যাব। আজকে নারায়ণগঞ্জর মানুষ কিন্তু আশা করছে যে নারায়ণগঞ্জ আর কোনো সমস্যা হবে না। সেই মূল্যায়নটা যেন আমরা করতে পারি।’
সেলিম ওসমান বলেন, আজকে এখান থেকে বসেই ডিসিশন নেওয়া যাবে, পাগলার বোরাক বাস থাকবে না, বেবি স্টান্ডগুলো রাইফেল ক্লাবের সামনে থাকবে না। আগে স্ট্যান্ডগুলো দখলমুক্ত করেন, তারপর নোটিশ করেন যে কোনো ফুটপাতে দোকান দেওয়া হবে না। ওরা কোথায় যাবে এটা আমাদের মাথা ঘামানোর বিষয় না ওরা যাবে কোথাও না কোথাও যাবে।আমার নারায়ণগঞ্জ পাটে ভরপুর ছিল পাট ছাড়া নারায়ণগঞ্জ কেউ কখোনো চিন্তা করে নাই। লক্ষ লক্ষ সিমেন্ট ছিল সেগুলো বন্ধ হয়ে যায় নি। সেখানের সেই মানুষ গুলো কী নাখেয়ে মরে গেছে। শেখ হাসিনার সরকারের কেউ না খেয়ে মরবে না। সুযোগ দিবেন না। জুয়ার থেকে সন্ত্রাস থেকে আজকে অকে বেশি ক্ষতি হচ্ছে আজকে ফুটপাত থেকে। ফুটপাতের দায়িত্ব আমি এখন পুলিশের কাছে রাখলাম না।
বাস কয়টা আছে আমাদের হিসাব দেন, কার বাস কয়টা আছে। আমাকে কেউ বলতে পারে না এই স্টান্ডটা কে চালায় ওই স্টান্ডটা কে চালায় কমিশনার রা বলতে পারে না এলাকার মানুষ বলতে পারে না পুলিশ বলতে পারে না, তাহলে সমস্যার সমাধান টা হবে কেমন করে। আমার একটাই চাহিদা, যেটা আমার দায়িত্ব না সেটা আমাকে দিয়েন না রাস্তাঘাট আগে খালি করেন। তারপর আমাদের প্রজেক্ট --ইতিমধ্যে আমাদের নারায়ণগঞ্জ ৪ আসনের সংসদ সদস্য বলেছেন টাকার দরকার হলে উনি সরকারের থেকে টাকা আনবেন।আমরা টাকা হলে তো আর খেয়ে ফেলবো না। আমরা বসি। আলোচনা সাপেক্ষে নারায়ণগঞ্জ এর মানুষ অত্যন্ত শান্তিতে থাকবে। যদি পারেন তো দোয়া করেন যে আমরা আজকে যে আলোচনায় বসছি। এই আলোচনা যেন কন্টিনিউ থাকে।
রোজার আগেই রাস্তা ঘাট খালি হয়ে যাবে। রোজার পরে আবার বসবে এটা যেন না হয়। এটা যেন না হয় আপনি যদি আশ্বস্ত করেন, শামীম ওসমান সাহেব আছেন ওনার শক্তি আছে,ওনার কর্মীরা আছেন ওনার লোক আছে। আমরা যদি প্ল্যানিং করতে পারি পুলিশের দায়িত্ব যদি পুলিশ কে বুঝিয়ে দিতে পারি। শামীম ওসমানের দায়িত্ব যদি শামীম ওসমান কে বুঝিয়ে দিতে পারি আমাদের নারায়ণগঞ্জ অতন্ত সুন্দর হবে। এবং এই কথাও বলবো জনসভা লাগবে না। শামীম ওসমানের মুখের কথাই যথেষ্ট। ওপেন সিক্রেট মাদক চলবে না। পরবর্তীতে সেলিম ওসমান আবারও বলেন, আল্লাহর কাছে শুকরিয়া, আজ যানজট নিরসন ও সিটি কর্পোরেশন এলাকার ফুটপাত থেকে হকার উচ্ছেদ। ৬০০ হকার না ৩০০ হকার তা নয়, জনপ্রতিনিধি হিসেবে আমাদের মানুষের জন্য কাজ করতে হবে।
কিন্তু আজকে নয়, প্রথমে আমাদের রাস্তাটা পরিষ্কার করতে হবে। পরবর্তীতে যারা ক্ষতিগ্রস্ত তাদের দিকটা দেখবো। শামীম ওসমানের যেই কথা, কিছু রাখবো কিছু রাখবো এমনটি হবেনা এটি আমারও কথা। প্রথমে রাস্তায় কোন হকার থাকবেনা। আমরা এখন সবাই ফিল করছি। হকার এখন ত্রিমুখী। একটা হচ্ছে দোকানের সাইড থেকে মুখ করা আছে, আরেকটি দোকানের অপজিট থেকে মুখ করা আছে, আরেকটা দোকানের পিছন থেকে মুখ করা আছে। আমরা সিদ্ধান্ত নিতে পেরেছি, ১৫ ফেব্রুয়ারি এসএসসি পরীক্ষা শুরুর আগেই সমস্যার সমাধান করতে পারবো।
যদি স্পেশাল পুলিশ আনতে হলে, পুলিশ আনতে হবে। কিন্তু আমরা চাইবো না, জনপ্রতিনিধিদের থেকে লোক দিয়ে এটা করতে। কারণ তাতে আক্রোশ হতে পারে ভুল হতে পারে। যেটা একবার ভুল হয়েছে, বারবার কথাটা উঠে আসছে, এটা প্রশাসনের মাধ্যমে রাস্তাটা খালি করতে হবে। জেলা প্রশাসন নিজেই দায়িত্ব নিয়ে নিয়েছেন আজকে (রোববার) থেকেই এই কাজটা শুরু করবেন। আজকে সবার মনে, সারা নারায়ণগঞ্জবাসীর কাছে আনন্দের বিষয় হচ্ছে আমরা দুই ভাই, একবোন এক বৃন্তে। আমরা খাবো, হাসবো, আনন্দ সহকারে পুরনো কথা না বলে আমরা নারায়ণগঞ্জকে সুন্দর করবো, স্মার্ট নারায়ণগঞ্জ গড়ে তুলবো।
নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের এমপি শামীম ওসমান গোলটেবিল বৈঠকে বলেন, ‘এখানে আলোচনার বিষয় হচ্ছে দুটি। এক শহরের যানজট আরেকটা হচ্ছে হকার ইস্যু। প্রথমত, নারায়ণগঞ্জে ব্যাপক গাড়ি চলছে। কিন্তু কোনো গাড়ি বিআরটিএর পারমিশন ছাড়া চলবে কেন? চলতে দেওয়া উচিত না। আপনি হচ্ছেন আইনের রক্ষক, আপনি ভক্ষক হবেন কেনো। তারপর আপনি কি বলবেন আপনি পারেন না, আমি বলবো আমিও পারি না, আইভী বলবে সেও পারে না। আমরা যেন পারি সে জন্যই এই উদ্যোগটা নেওয়া হয়েছে। নারায়ণগঞ্জে যারা বাস মালিক সমিতির লোক আছেন আমার মনে হয় ডিসির মহদোয়ের সাথে কথা বলে তাদের ব্যাপারে একটা ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।আমার মনে হয় আমার সাথে সবাই একমত যে বিআরটিএ’র পারমিশন ছাড়া কোনো গাড়ি সড়কে চলাচল করতে দেওয়া যাবে না।
দ্বিতীয়ত, আমার জানা মতে ইজিবাইক চলাচলে কোনো পারমিশন নাই। কালকে যদি সিটি করপোরেশন পারমিশন দেয় তাহলে সারা বাংলাদেশে এর পারমিশন দিতে হবে। এই শহরটা পায়ে হাঁটার শহর। এই ছোট শহরে এতো গাড়ির কি কোনো দরকার আছে। শামীম ওসমান বলেন, মীরজুমলা সড়ক পুরাটা বন্ধ। একটা ট্রেন যদি সারাদিনে ১৬ বার আসা যাওয়া করে এই ছোট একটা শহরের দিয়ে তাহলে যানজট তো হবেই। আমার কথা হলো হকার উঠাবেন পুরোটা উঠান। নিয়ম হচ্ছে সিটি করপোরেশন ম্যাজিষ্ট্রেট দিবে, পুলিশ তাদের সাহায্য করবে। সারা বাংলাদেশে এখন বিদ্যুৎ সংকট। এই যে সিএনজির ব্যাটারীগুলো চার্জ করে। এটা পুরো ১ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ নষ্ট করে। আমি জেলা প্রশাসকে কাছে অনুরোধ করবে আপনি এটা ব্যাপারে খোঁজ নেন। কেবল নারায়ণগঞ্জ জেলা আপনি একটু খবর নেন কোথায় কোথায় এই ব্যাটারী গুলো চার্জ হয়। এবং আপনি নিশ্চিত থাকেন এই ব্যাটারী গুলো যে চার্জ হচ্ছে তারা কিন্তু বিদ্যুৎ বিল দিচ্ছে না।’
এরপর জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মাহমুদুল হক বলেন, আমি আজ প্রকাশ্যে ঘোষণা করছি আগামীকাল (৩ ফেব্রুয়ারি) থেকে রুট পারমিট ছাড়া গাড়ি রাস্তায় পেলে সেটি ডাম্পিংয়ে দেওয়া হবে। কারণ আমি যেখানে একটা এরকম কনসাচনেচ (সচেতনা) চাচ্ছিলাম, তা আজকে পেয়ে গেছি। আগামিকাল থেকে নারায়ণগঞ্জ শহরে কোনো রুট পারমিট ছাড়া গাড়ি ঢুকবেনা না। যদি ঢুকে তাহলে ম্যাজিস্ট্রেট সামনে সকাল থেকে সন্ধা পর্যন্ত ম্যাজিস্ট্রেট ডিউটি করবে সেসব গাড়ি সরাসরি ডাম্পিংয়ে দেওয়া হবে। শহরে অবৈধ কোনো স্ট্যান্ড আমরা থাকতে দিবো না।
মেয়র মহাদয় চাচ্ছেন, কালকে থেকে মোবাইল কোর্ট তুলবে অবৈধ্য স্ট্যান্ডগুলো দুর করা, যেগুলো আমার চোখেও পরে আমরা ইতোমধ্যে অনেক জরিমানা করেছি। মেয়র মহাদয়কে অনুরোধ করবো কালকে আপনি আপনার লোক দেন ম্যাজিস্ট্রেট থাকবে, পুলিশ থাকবে কালকে থেকে অবৈধ স্ট্যান্ড উচ্ছেদ করার জন্য অভিযান চালাবো। এছাড়া তিনি বলেন, কোথায় কোথায় ব্যাটারি চার্জ দেওয়া হয় ও বিক্রি করা হয় অটোরিকশা। কঠোর আমাদের হতেই হবে। প্রতিনিয়ত ঢুকতেছে তাদের কারখানা গুলো বন্ধ করে দিবো। আমি বলে দিচ্ছি, আমরা চেষ্টা করবো এগুলো বন্ধ করতে আমি জানি এগুলোর অনুমোদন নেই, সত্যিকার অর্থে সিল করে দিবো আমরা। যে কারখানাগুলো তে অটোরিকশা হয় উৎপাদনটা বন্ধ করে দিতে চাই। এটা একদিনে সম্ভব না আমরা খুব দ্রুত এবং অভিযান গুলো চালাবো।’
এরপর মীর জুমলা সড়ক নিয়ে মেয়র আইভী বলেন, পৌরসভা থাকাকালীন প্রেসক্লাবের অনুরোধে মীর জুমলা সড়কে উচ্ছেদ করেছিলাম। এবং মুক্ত করেছিলাম। কিন্তু পরবর্তীতে এটা আবার ডেথ প্লেস হয়ে আছে। ২০১১ সালে সিটি কর্পোরেশন হওয়ার পর ৪ মাসের জন্য যে জেলা প্রশাসক এখানে ছিলেন তিনি কিন্তু আবার এখানে দ্বিগু বাবু বাজারের টেন্ডার কল করলেন। আমি জনপ্রতিনিধি হিসেবে কিন্তু এটা বন্ধ করতে পারি নাই। এখন শামীম ওসমান যেটি বললো (মীর জুমলা সড়ক) ব্যবহারের কথা।যেদিন থেকে পুলিশ প্রশাসন বলবে, এই রাস্তা ব্যবহার করবে গাড়ি চলাচল করবে, সেইদিন থেকে একটা দোকানও থাকবেনা আমি বলে দিলাম। কিন্তু সেটা ব্যবহার করতে হবে।
শামীম ওসমানের দিকে দৃষ্টিআকর্ষণ করে আইভী বলেন, ‘সকাল বেলা রাস্তার উপর যতগুলো ট্রাক বসে এইট্রাকগুলো ৫নং ঘাটে নিয়ে যেতে পারি, (যেখানে অনেক বড় বড় কাঠ রেখে দিছে, কারা রেখে তা আমরা জানিনা)। সেখানে যদি লোডআনলোডের ব্যবস্থা করলে শৃঙ্খলা ফিরে আসবে। দিনের বেলা ট্রাক ঢুকতে না দিলে সড়কে শৃঙ্খলা আসবে। আগে সেলিম ভাই দিনের বেলা ট্রাক ঢুকা বন্ধ করে দিয়েছিলেন। পরে হাতেম ভাইসহ অন্যারা বলায় আবার দিনে ট্রাক চলা শুরু হয়। দিনের বেলা ট্রাক না চললে যানজট হবেনা।’
আইভী বলেন, ‘এখানে আজ যে আবার কাজ করা শুরু করলাম, এখানে কেউ বা হাত দিয়েননা। কাজ করতে দেন। আমার ব্যক্তিগত কিছু নাই। আমি মেয়রের জায়গায় আছি, ভাইয়েরা এমপি আছে, প্রশাসন প্রশানের জায়গায় আছে।আমরা ঝগড়া করবো, যা ইচ্ছ তাই করবো, দল নিয়ে দলাদলি করবো, আপনারা (প্রশাসন) আপনাদের কাজ করেন। আপনারা সরকারের হয়ে কাজ করবেন। শামীম ভাই আপনি যদি ঘোষণা দেন, মাদক থাকবেনা, তাহলে থাকবেনা। আপনি পুলিশকে বাধ্য করবেন। পুলিশ প্রশাসন এমপিদের কথায় চলে, মেয়রের কথাকে পাত্তাই দেয়না। এসপি-ডিসিকে অনুরোধ করে আমাকে নিতে হয়। আমাদের মাঝে মাঝে বসতে হবে।
আমাদের সরকারের পক্ষ থেকেই মন্ত্রীপরিষদ থেকে রেজ্যুলেশন দেয়া আছে, একটি সভায় মেয়র সভাপতিত্ব করেন ডিসি-এসপিসহ। এখন থেকে বড় ভাই সেলিম ওসমানকে অনুরোধ করবো অতিথি হিসেবে সেই সভায় উপস্থিত থাকতে। এই মিটিংটি ৬মাস পরপর হয়। যদি আমাদের নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য শামীম ওসমান যদি ওই মিটিংয়ে অতিথি হিসেবে যেতে চায় আমরা সানন্দে তাকে ডাকবো। আমার ব্যক্তিগত চাওয়া হলো, আমি আবার আগের মতো নারায়ণগঞ্জ দেখতে চাই। কোন অবস্থাতেই নেগেটিভ নারায়ণগঞ্জ চাইনা। আমরা সন্ত্রাস, খুনখারাবি , মাদকের শহর, ইভটিজিং, যত্রতত্র বাস ট্রাকের নগরী চাইনা। ’
স্বাগত বক্তব্যে নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক রফিকুল জীবন বলেন, ‘প্রাচ্যের ডান্ডিখ্যাত শিল্পনগরী নারায়ণগঞ্জ জাতীয় অর্থনীতিতে ব্যাপক ভূমিকা রাখা সত্ত্বেও এবং দেশের ধনী জেলা হওয়া সত্ত্বেও নাগরিক সুবিধা পাওয়ার ক্ষেত্রে অনেক পিছিয়ে আমরা। যানজটমুক্ত ও ফুটপাতে হকারমুক্ত করার ব্যাপারে আমরা সাংবাদিক হিসেবে সমস্যা চিহ্নিত করে এই গোলটেবিল বৈঠক আয়োজন করা হয়েছে। অতীতের সকল বিভেদ ভুলে নগরবাসী ও আগামী প্রজন্মের জন্য একটি সুন্দর ও বসবাসযোগ্য নগরী গড়ে তোলার জন্যই এই গোলটেবিল বৈঠকের আয়োজন করা হয়েছে।’
নারায়ণগঞ্জ জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বাবু চন্দনশীল বলেন, ‘এই সিদ্ধান্ত নিয়ে যে আমরা এক টেবিলে বসেছি, আমি বক্তব্য রাখবো না। সমস্যার জট সৃষ্টি হয়েছে। সেই জট নিরসনে আজকে আমরা এখানে বসেছি। বিশ্বাস করেন নারায়ণগঞ্জবাসী বিশ্বাস করেন, এই সমস্যার সমাধান অবশ্যই অবশ্যই হয়ে যাবে।’ এস.এ/জেসি