রোববার   ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪   ভাদ্র ৩০ ১৪৩১

আইভী বলয়ের কাউকে দেখা যায়নি সমাবেশে 

যুগের চিন্তা রিপোর্ট

প্রকাশিত: ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩  

 

গতকাল অনুষ্ঠিত হয়েছে নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য একেএম শামীম ওসমানের বহুল আলোচিত সেই জনসভা। যে জনসভাকে কেন্দ্র করে সপ্তাহ জুড়ে জেলার বিভিন্ন এলাকায় বিভিন্ন থানায় ধারাবাহিকভাবে প্রস্তুতি সভা চলে আসছিল। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী রাজনীতিবিদ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। তবে এই জনসভাকে কেন্দ্র করেও ফুটে ওঠে নারায়ণগঞ্জ আওয়ামী লীগের দুই বলয়ের বিভক্তি।

 

নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য নারায়ণগঞ্জ আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতা একেএম শামীম ওসমান তার বলয়ের নেতা, কর্মী ও সমর্থকদের ছাড়া তার সাথে যাদের মত পার্থক্য আছে এমন কোন নেতা কর্মী বা তাদের সমর্থকদের এই জনসভার বিষয়ে কোন প্রকার জানানের প্রয়োজন মনে করেননি বলে অভিযোগ করেন দক্ষিণ বলয়ের রাজনীতিবিদগণ।

 

মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন এই বিষয়ে জানান, একটি সংগঠনের প্রধান হিসেবে তাকে দাওয়াত দেওয়া দূরের কথা দলীয়ভাবে এই বিষয়ে তাকে কোন প্রকার জানানো হয়নি। বিভিন্ন মাইকিংয়ে প্রচার শুনে এবং সংবাদ পত্র পড়ে তিনি জানতে পেরেছেন যে ১৬ সেপ্টেম্বর শনিবার শহরে একটি জনসমাবেশ আছে এবং সেখানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী উপস্থিত থাকবেন। আওয়ামী লীগের জাতীয় পরিষদের সদস্য এডভোকেট আনিসুর রহমান দিপুও এই বিষয়ে দলীয়ভাবে কেউ কিছু বলেননি বলে জানান। অন্যান্য সাধারণ মানুষ যেভাবে জেনেছে তিনিও সেভাবে জেনেছেন বলে জানান তিনি।

 

অন্যদিকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালও তার বক্তৃতায় বলেছেন আজ শামীমের ডাকে আপনারা যেভাবে এসেছেন, এখানে লাখো জনতার ঢল নেমেছে। অর্থাৎ এই জনসভাকে মাইকিংসহ প্রচার মাধ্যমেও দলীয় বা আওয়ামী লীগের জনসভা বলে ঘোষণা করা হয়নি। বরং সব জায়গায়ই শামীম ওসমানের জনসভা বলে প্রচারণা চালানো হয়েছে। সব কিছু মিলিয়ে বুঝাই যায় যে এই জনসভা শামীম ওসমানের ব্যক্তিগত জনসভা। তাই এই জনসভার বিষয়ে একদিকে ওসমান পরিবারের সমর্থকদের বাইরে যারা আওয়ামী লীগ করেন তাদের যেমন বলা হয়নি।

 

অন্যদিকে ওসমান পরিবারের সমর্থক হিসেবে পরিচিত জাতীয় পার্টির লোকজনকেও দেখা গেছে বিভিন্ন প্রস্তুতি সভায় অংশ নিতে। তবে দলের এমন ক্রাইসিস সময়ে দলে কোন বিভেদ চান না বলে জানান কোন প্রকার দাওয়াত না পাওয়া আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ। আর তাই গতকালের জনসভা চলাকালে মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন, জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহসভাপতি ও যুবলীগের সভাপতি আব্দুল কাদির, জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলমসহ বেশ কয়েকজন নেতাকে দেখা গেছে মঞ্চের পেছনে বসে এবং জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে বসে নেতাদের বক্তব্য শুনতে।

 

জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম বলেন যেহেতু আমাদের কেউ জানাননি তাই আমরা সেখানে উপস্থিত থাকি কি করে। তারপরও যেহেতু আমাদের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এসেছে এবং এখন আমাদের নির্বাচনের সময় তাই আমাদের মধ্যে একতাবদ্ধ থাকাটা এখন খুবই জরুরী। তাই আমরা মঞ্চে উপস্থিত না থাকলেও তার কাছাকাছি ছিলাম। আমরা মঞ্চের পেছনে বসে এবং আমাদের পার্টি অফিসে বসে জনসভার পুরো বক্তব্য শুনেছি এবং দল ও দলীয় সকল কিছুর সাথে একাত্বতা প্রকাশ করেছি।

 

যদিও জনসভাটা আমাদের দলীয় কোন কর্মসূচী না, সংসদ সদস্যের এককভাবে ডাকা কর্মসূচী। তারপরও তিনি যেহেতু আমাদের দলীয় সাংসদ এবং আমাদের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সেখানে উপস্থিত থাকবেন তাই সৌজন্যতার খাতিরে হলেও আমাদের জানানো উচিৎ ছিল। তারপরও তিনি ভুল করলেও আমরা কোন ভুল করিনি। আমরা আমাদের মতো করে সেখানে ঠিকই উপস্থিত থেকে শরীক হওয়াসহ দলের কর্মসূচীর সাথে একাত্বতা প্রকাশ করেছি।

 

জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহসভাপতি ও যুবলীগের সভাপতি আব্দুল কাদির বলেন আমরা সেখানে ছিলাম। যদিও আমাদের কোন দাওয়াত করা হয়নি। এমনকি আয়োজকদের পক্ষ হতে আমাদের কেউ জানানোর প্রয়োজনীয়তাও মনে করেনি। তারপরও যেহেতু আমাদের দলীয় মন্ত্রী সেখানে উপস্থিত ছিলেন এবং যিনি জনসভা ডেকেছেন তিনিও আমাদের দলীয় এমপি তাই আমরাও সেখানে আমাদের মতো করে উপস্থিত হতে চেষ্টা করেছি।

 

আমরা মঞ্চের পেছনেই অবস্থান করেছি এবং আমাদের আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে অবস্থান করে অনুষ্ঠানের পুরো আয়োজনে শরিক হয়েছি। আমরা মনে করেছি সেখানে যাওয়া আমাদের কর্তব্য। তাছাড়া এখন আমাদের কোন প্রকার বিভেদ সৃষ্টি হোক তা আমরা চাই না। এখন দলীয় ঐক্যের খুবই প্রয়োজন। এস.এ/জেসি

এই বিভাগের আরো খবর