
# গ্যাসের অভাবে রান্না ঘরের চুলা জ্বলছে না
কবে নাগাদ এ দুর্ভোগ শেষ হবে, তা না জানলেও আশায় বুক বেঁধে আছেন নারায়ণগঞ্জবাসী। আশায় আশায় কাটছে তাদের কাল। গ্যাস সংকটে নাকাল নারায়ণগঞ্জবাসী। আবাসিক এলাকায় গ্যাসের অভাবে অনেকেরই রান্নাঘরের চুলায় আগুন জ্বলছে না। এক মাস যাবৎ চলছে এ অবস্থা।
ফলে নারায়ণগঞ্জ, বন্দর ও শহরতলীর বেশীরভাগ এলাকার খেটে খাওয়া মানুষের জীবনযাত্রায় নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। রান্না না হওয়ায় তাদেরকে অভুক্ত অবস্থায় কর্মস্থলে যেতে হচ্ছে। মওকা বুঝে হোটেল মালিকরাও খাবারের দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন। আর বাড়তি দামেই হোটেল থেকে খাবার কিনতে বাধ্য হচ্ছেন কর্মজীবী নারীপুরুষ।
পূর্ব ইসদাইর বুড়ির দোকান এলাকার কর্মজীবী নারী রাহেলা বেগম জানান, তিনি ভাড়া থাকেন। দিনের বেলা একেবারেই গ্যাস থাকে না। রাত ১২ টার পর সামান্য পরিমাণে গ্যাস পাওয়া গেলেও তা দিয়ে রান্না করা যায় না। প্রায়দিনই তিনি না খেয়ে কাজে যান। ছেলেমেয়েদেরকে হোটেল থেকে খাবার কিনে আনার জন্য টাকা দিয়ে যেতে হয়।
গ্যাস সংকট নিয়ে ২০১৩ সাল থেকেই আন্দোলনের মাঠে আছে ‘আমরা নারায়ণগঞ্জবাসী’ নামের সংগঠন। গত রোববার এই সংগঠনের পক্ষ থেকে নারায়ণগঞ্জের আবাসিক এলাকায় নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস সরবরাহের দাবি জানিয়ে ঢাকার কারওয়ান বাজারে অবস্থিত তিতাস গ্যাসের প্রধান কার্যালয়ে এমডি’র হাতে স্মারকলিপি প্রদান করা হয়েছে।
সংগঠনের সভাপতি আলহাজ্ব নূর উদ্দিন আহমেদ বলেন, গ্যাস সংকট সমাধানের জন্য আমরা ১০ বছর ধরে আন্দোলন চালিয়ে আসছি। তিতাস গ্যস কর্তৃপক্ষের সাথে দফায় দফায় আলোচনা করেছি, গ্যাস অফিস ঘেরাও করেছি। কয়েক মাস গ্যাস সরবরাহ স্বাভাবিক থাকলেও ফের সংকট শুরু হয়ে যায়। বিগত এক মাস যাবত আবাসিক এলাকায় গ্যাস সংকট শুরু হয়েছে। আমরাও আবার মাঠে নেমেছি।
গত ১৪ অক্টোবর আলী আহাম্মদ চুনকা নগর মিলনায়তনে আমাদের সংগঠনের পক্ষ থেকে আবাসিক এলাকায় গ্যাস সংকট নিয়ে নাগরিক মতবিনিময় করেছি। তিতাসের এমডিকে স্মারকলিপি দিয়েছি। স্মারকলিপিতে আমরা গোদনাইল থেকে চাষাঢ়া হয়ে পঞ্চবটি পর্যন্ত ইতোপূর্বে স্থাপিত ১২ ইঞ্চি পাইপ লাইনের চাষাঢ়া পায়েন্ট থেকে ৬ ইঞ্চি পাইপ লাইন স্থাপনের দাবি জানিয়েছি।
শুধু তাই নয়, উক্ত লাইনের সব পুরানো পাইপ পরিবর্তন করে বেশী ব্যাসের পাইপ বসিয়ে আবাসিক এলাকার গ্যাস সরবরাহ বৃদ্ধি ও স্বভাবিক করার দাবি জানিয়েছি। এমডি মহোদয় আমাদের স্মারকলিপি হাতে নিয়ে আগাগোড়া পড়ে জিএম (অপারেশন) এবং ডিএমডি (না.গঞ্জ) কে মার্ক করে লিখলেন, পরীক্ষান্তে পরবর্তী ব্যবস্থা নিবেন। আমরা এই চিঠি যথাস্থানে প্রেরণের ব্যবস্থা নিয়েছি।
নারায়ণগঞ্জের ডিএমডি আনিসুর রহমানের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, নারায়ণগঞ্জের পুরানো পাইপ লাইন সরিয়ে অধিক ব্যাসের নতুন লাইন বসানোর জন্য মন্ত্রণালয় থেকে একটি প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে। এই প্রকল্পের পরিচালক নির্বাচিত হয়েছেন প্রদীপ কুমার। এই প্রকল্পের জন্য ১৫০০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। এই প্রকল্প মন্ত্রণালয় থেকে একনেকে গেলেই পাস হয়ে যাবে বলে তিনি আশ্বস্ত করেছেন। এস.এ/জেসি