Logo
Logo
×

নগরের বাইরে

আসামী না হয়েও কেনো পালিয়েছেন বড় রাজু?

Icon

যুগের চিন্তা রিপোর্ট

প্রকাশ: ১২ জুলাই ২০২৪, ১১:৫০ পিএম

আসামী না হয়েও কেনো পালিয়েছেন বড় রাজু?

 

 

# এলাকাবাসী বলছেন, হত্যাকাণ্ডের পর থেকে আর এলাকায় দেখা যায়নি আহম্মেদ হোসেন রাজুকে। এখনো পর্যন্ত তার মুঠোফোন বন্ধ!

 

আ.লীগ নেতা সুরুজ আলী হত্যাকান্ডের পরপরই গা ঢাকা দিয়েছেন কাশীপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদক আহম্মেদ হোসেন রাজু। যাকে পুরো কাশীপুর জুড়ে সবাই বড় রাজু নামেই চেনে। সুরুজ আলী হত্যাকান্ডের মূলহোতা আলাউদ্দিন হীরা প্রধান শেল্টারদাতা বড় রাজু। হত্যাকান্ডের মাত্র এক সপ্তাহ আগেও হীরার সাথে জেলার বাইরে ট্যুর দিয়ে এসেছে সে। হত্যাকান্ডের পর নিহতের সন্তানের দায়ের করা মামলায় আসামী না হলেও সঙ্গত কারণে আড়ালে চলে গেছে রাজু। অভিযোগ আছে, সুরুজ আলী হত্যাকান্ডে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে আড়ালে থেকে কলকাঠি নেড়েছেন এই আহম্মেদ হোসেন রাজু ওরফে বড় রাজু।


খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এক সময় গার্মেন্টসের কাটিং ম্যান এর চাকরী করে সংসার চালাতেন আহমেদ হোসেন রাজু ওরফে বড় রাজু। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর রাজনীতিতে নাম লেখান তিনি। ফতুল্লা থানা আওয়ামী লীগের এক প্রভাবশালী নেতার আশীর্বাদে অল্প দিনেই বিশাল অর্থবৈভবের মালিক বনে যান তিনি। ভাতিজা আফজালকে দিয়ে এলাকায় গড়ে তোলেন বিশাল সন্ত্রাসী বাহিনী। 

 

থানা আওয়ামী লীগের ওই প্রভাবশালী নেতার নাম ভাঙিয়ে ফতুল্লা আদর্শনগর, প্রধান বাড়ি ও নূর মসজিদ এলাকায় রামরাজত্ব কায়েম করেন। ভাতিজা আফজালের গ্রুপ দিয়ে নিয়ন্ত্রণ করতেন চাঁদাবাজি, দখলবাজি ও কন্ট্রাকসন ব্যবসা। এলাকায় কেউ নতুন বাড়ি করতে হলে এই বাহিনীকে দিতে হয় চাঁদা। এমনকি ইমারত সামগ্রী নিতে হয় রাজুর দোকান থেকে। নয়তো ওই বাড়িওয়ালার উপর করা হতো অমানবিক অত্যাচার। 

 

কাশিপুর ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডে পঞ্চায়েত কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক হওয়ায় পর আহমেদ রাজুর প্রভাব আরও বেড়ে যায়। মূলত এলাকার আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ১৪ মামলার আসামী আফজালকে নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যা করে প্রতিপক্ষের লোকজন। ঠিক তারপর থেকেই সন্ত্রাসী হীরা বাহিনীর সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে যান আহম্মেদ হোসেন রাজু। পরবর্তীতে হীরা বাহিনীর সর্ব অপকর্মের পেছনে থেকে শেল্টার ও কলকাঠি নাড়তেন তিনি।

 

এদিকে, ২৭ জুন দুপুরে নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যা করা হয় কাশিপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের অর্থ সম্পাদক সুরুজ মিয়াকে। পরদিন ২৮ জুন রাতে নিহতের ছেলে মুন্না বাদি হয়ে ২১ জনের নাম উল্লেখ করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার ২৪ ঘন্টা না পেরোতেই র‌্যাবের হাতে গ্রেপ্তার হন মামলার এজহারভুক্ত চার আসামী। যাদের মধ্যে প্রধান আসামী সন্ত্রাসী হীরাও রয়েছেন। 

 

বাকিরা হলো: আল আমিন (২২), মো. রাসেল (২০), মো. সানি (২৯), বাপ্পি (২৩), জামাল (৪৮) ও কাইয়ুম। এছাড়াও ২ জুলাই আরও ছয়জনকে গ্রেপ্তার করে নারায়ণগঞ্জ জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। গ্রেপ্তার হলো: মোহাম্মদ হাবিব (২০), মো. সোহেল (৩০), মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন আনার (২৪), মোহাম্মদ ফয়সাল মোল্লা (৩২), ওয়াসেল হোসেন নাহিদ (২৭), মাসুদ (৫২)। এরমধ্যে গ্রেপ্তার হাবিব, সোহেল, আনোয়ার, নাহিদ- এই মামলার এজাহারনামীয় আসামি।

অপরদিকে কাশীপুর ইউনিয়নের স্থানীয় কয়েকজনের সাথে কথা বলে জানা যায়, আওয়ামী লীগ নেতা সুরুজ আলী হত্যাকান্ডের পর থেকেই এলাকায় আর দেখা যাচ্ছে না আহম্মেদ হোসেন রাজুকে। ঘটনার পরপরই বাড়ি দেখে বের হয়ে আর ফেরত আসেননি তিনি। অথচ, আওয়ামী লীগ নেতা সুরুজ আলী হত্যাকান্ডে দায়ের করা মামলায় আসামী করা হয়নি আহম্মেদ হোসেন রাজুকে। তারপরেও তার এই লুকোচুরি চরম রহস্যের জন্ম দেয় বলে মনে করছেন তারা।

 

এ বিষয়ে জানতে কাশীপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ও সন্ত্রাসী আলাউদ্দিন হীরা গ্রুপের অন্যতম শেল্টারদাতা আহম্মেদ হোসেন রাজুকে একাধিকবার মুঠোফোন করা হলেও তার ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।

 

Abu Al Moursalin Babla

Editor & Publisher
ই-মেইল: [email protected]

অনুসরণ করুন