Logo
Logo
×

রাজনীতি

ইয়াছিনের শেল্টারে বিএনপি নেতা ইকবালের তাণ্ডবলীলা

Icon

যুগের চিন্তা রিপোর্ট

প্রকাশ: ৩১ জুলাই ২০২৪, ০৩:৪০ পিএম

ইয়াছিনের শেল্টারে বিএনপি নেতা ইকবালের তাণ্ডবলীলা

নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে আওয়ামী লীগের দলীয় অবস্থান সবচেয়ে দুর্বল হয়ে রয়েছে। আর এই দুর্বল থাকার সত্যতা এবার বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ফুটে উঠেছে। বিশেষ করে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগ দৈন্য দশায় রয়েছে। দল দুর্বল থাকার অন্যতম কারন হিসেবে স্থানীয় নেতারা বলছে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ইকবালের সাথে এখানকার থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ইয়াছিনের বিএনপি পীরিত সম্পর্ক রয়েছে। তৃনমুল আওয়ামী লীগের নেতাদের অভিযোগ ইয়াছিন বিএনপির নেতা ইকবাল বাহিনীর উপর নির্ভর। আওয়ামী লীগের সেক্রেটারি ইয়াছিন যে বিএনপির সন্ত্রাসী ইকবালের বাহিনীর উপর নির্ভর তা গত ১৮ জুলাই এবং ১৯ জুলাই বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে তার নিরবতায় বুঝায় দিয়েছেন।


এদিকে কোটা সংস্কার আন্দোলন গিরে গত ১৮ জুলাই এবং ১৯ জুলাই ছাত্রদের সাথে মিশে বিএনপি জামাত সরন কালের হামলা, ভাংচুৃর, সন্ত্রাসী তান্ডবলীলা চালান। এই হামলায় নারায়ণগঞ্জে কয়েক শতাধিক মানুষ আহত সহ নিহত হয়েছেন। সেই সাথে ৫শ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। তবে ঢাকা চিটাগাংরোড অবস্থিত মা হাসপাতাল ভবনে আগুন জালিয়ে ভাংচুর করা হয়। তখন এই হামলায় একাধিক নারী সাংবাদিক আহত হন। আর এই হামলায় নেতৃত্ব দেন সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির সেক্রেটারি ও নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ২ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ইকবাল হোসেন। ইকবালের সাথে স্থানীয় যুবদল নেতা, ছাত্রদল নেতা সহ কয়েক শতাধিক সন্ত্রাসী তান্ডবলীলা চালান। তাছাড়া এই ইকবার জেলা বিএনপির সভাপতি সাবেক সাংসদ গিয়াস উদ্দিনের ঘনিষ্ঠ লোক হিসেবে পরিচিত। সেই সাথে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সেক্রেটারি ইয়াছিনের সাথে তার গভীর সম্পর্ক রয়েছে। যা অনেক প্রেম ভালোবাসাকেও হারমানাবে।


অপরদিকে জামাত বিএনপির হামলা ভাংচুর তান্ডবে প্রতিরোধে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ইয়াছিন সহ একই কমিটির সভাপতি মজিবুর রহমান সহ অন্যান্য নেতাকর্মীরা মাঠে নামেন নাই। তারা নিজেদের গা বাচিয়ে খ্যাতা মুড়ি দিয়ে ঘরে গুমিয়ে ছিলেন বলে মনে করেন তৃনমুল নেতাকর্মীরা। তার ভুমিকা প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে রয়েছে। জেলা বিএনপির সভাপতি সাবেক সাংসদ গিয়াস উদ্দিন থেকে শুরু করে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির সেক্রেটারি ইকবাল সহ বিএনপির একাধিক নেতার সাথে তার গভীর সম্পর্ক রয়েছে। রাজনৈতিক অঙ্গনে বলাবলি হচ্ছে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সেক্রেটারি ইয়াছিন বিএনপি আওয়ামী লীগ দুই দলই ম্যানেজ করে চলেন। আর এনিয়ে জেলা ছাড়িয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ জুরে তাকে নিয়ে সমালোচনার ঝর বইছে।


দলীয় সুত্রমতে জানাযায়, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সেক্রেটারি ইয়াছিন মিয়া তৎকালিন সময়ে বর্তমান জেলা বিএনপির সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা গিয়াস উদ্দিনের হাত ধরে রাজনীতিতে পর্দাপন করেন। তখন গিয়াস উদ্দিন কেন্দ্রীয় কৃষকলীগের নেতা ছিলেন। পরবর্তিতে তিনি বিএনপিতে চলে গেলেও তার শীর্ষ ইয়াছিন আওয়ামী লীগে থেকে যায়। এছাড়া সিদ্ধিরগঞ্জের রাজনীতিতে তারা গুরু শীর্ষ হিসেবেও পরিচিত। এখনো তাদের মাঝে গভীর সখ্যতা রয়েছে। ২০০১ থেকে ২০০৬ পর্যন্ত বিএনপি ক্ষমতা থাকা কালিন সময়ে ইয়াছিন আওয়ামী লীগের নেতা হয়েও দিব্বি চলা ফেরা করেছে। তার নামে তেমন কোন মামলাও হয় নাই তখন।


সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও ২ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. ইকবাল হোসেনের সাথে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সেক্রেটারি ইয়াছিন মিয়ার সাথে আত্মীয়তার সম্পর্ক রয়েছে। সম্পর্কে ক্ষমতাসীন দলের সেক্রেটারি ইয়াছিন মিয়ার মেয়ের উকিল বাব হন একই থানার বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন। এমনকি এই বিএনপি নেতা আওয়ামী লীগ নেতার কন্যাকে পাঁচ কাটা জায়গা পর্যন্ত দেন বলে জানান স্থানীয়রা। যা নিয়ে আওয়ামী লীগ বিএনপির নেতা কর্মীদের মাঝে ব্যপক আলোচনা হচ্ছে।
 
রাজনৈতিক বোদ্ধমহল মনে করেন, আসলে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় না থাকলেও ইয়াছিন মিয়ার কোন সমস্যা নেই। তাছাড়া ক্ষমতাসীন দলের এই নেতার সাথে বিএনপির জেলা থানা পর্যায়ের শীর্ষ নেতাদের সখ্যতা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে স্থানীয় নেতারা। কেননা তিনি সাংসদ শামীম ওসমানের সাথে সখ্যতা রেখে বিভিন্ন অনিয়ম করে যেমন কোটি পতি বনেগেছেন। তেমনি বিএনপি ক্ষমতায় আসলেও তাতে কোন সমস্যা নেই। এই কুল ওই কুল অর্থাৎ দুই কুলই তার ঠিক রয়েছে।


এছাড়া বিভিন্ন অনুষ্ঠানে জেলা ও থানা বিএনপির সাথে ক্ষমতাসীন দলের নেতার সাথে যে সখ্যতা রয়েছে সেই চিত্রের ছবিও দেখা গেছে। জেলা বিএনপির সাবেক ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক মনিরুল ইসলাম রবি, মহানগর বিএনপির মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদিকা আয়শা আক্তার দিনার সাথে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সেক্রেটারি ইয়াছিন মিয়া বসে রয়েছে এমন ছবি দেখা গেছে।  


অপরদিকে সম্প্রতি আওয়ামী লীগেরে সেক্রেটারি হয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ইকবালকে নাসিক কাউন্সিলর পদে জয়ী করার পিছনে তার অবদান রয়েছে। এছাড়া ইকবাল বিভিন্ন সময় পলাতক থাকলে তার সকল কাজকর্ম দেখাশুনা করেন আওয়ামী লীগের এই সেক্রেটারি। ক্ষমতাসীন দলের নেতাদের মতে তিনি আওয়ামী লীগকে শক্তিশালী করার চেয়ে বিএনপির সাথে সখ্যাতা ধরে রাখাকে বেশি প্রাধান্য দিয়ে থাকেন বলে জানা একাধিক নেতৃবৃন্দ। তাছাড়া গত নাসিক নির্বাচনে ইয়াছিন এবং তার ভাই আবুল বিএনপি নেতা ইকবালের পক্ষে কাজ করেছে। যতটা বিএনপির কাউন্সিলর প্রার্থীর পক্ষে কাজ করেে ততোটা নৌকার প্রার্থী পক্ষেও কাজ করে নাই বলে জানান স্থানীয়রা।


এছাড়া তার বিরুদ্ধে, কমিটি বাণিজ্য, চাঁদাবাজি, ছিনতাইকারীদের শেল্টার, মাদককারবারি, ভুমি দস্যুতার বাহিনী গড়ে তোলার অভিযোগ উঠেছে। যুগের চিন্তার অনুসন্ধানে জানাযায়, আওয়ামী লীগ নেতা ইয়াছিনের বিরুদ্ধে বন্দর থানায় ৫ আগষ্ট চাদাঁবাজির অভিযোগ হয়েছে। পরে তা মামলা হয়। যার মামলা নম্বর ১০/২২। এছাড়া বৈষম্য বিরোধী আন্দোলন ঠেকাতেও সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সেক্রেটারিকে মাঠে দেখা যায় নাই। অভিযোগ রয়েছে তার শেল্টার থাকায় বিএনপির ইকবাল সরণ কালের তান্ডব চালিয়েছেন। এমনকি তার নেতৃত্বে নারী সাংবাদিক সোনালী, ফাহমিদা এমিকে শ্লীলতা হানি সহ তাদের উপর হামলা চালানোর অভিযোগ রয়েছে। যা বিভিন্ন জাতীয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। তাই ইয়াছিনের মত নেতাদের বিরুদ্ধে দল থেকে ব্যবস্থা নেয়ার দাবী উঠেছে।


সিদ্ধিরগঞ্জ এলাকার মিতালি মার্কেটের ওয়াকফ কৃত মসজিদের জায়গা জাল দলিলের মাধ্যমে নিজের নামে করে নেয়ার অভিযোগ রয়েছে। এই ঘটনায় মসজিদের ওয়াকফা জমি জাল দলিল করে আত্মসাতের অভিযোগে আওয়ামী লীগ নেতা ইয়াছিনের বিরুদ্ধে চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আমলী আদালত ১ সি আর মামলা রয়েছে। যার মামলা নম্বর ২০৭/২২।
এবিষয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. ইয়াছিন মিয়ার সাথে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলে তার নাম্বার বন্ধ পাওয়া যায়।
 

Abu Al Moursalin Babla

Editor & Publisher
ই-মেইল: [email protected]

অনুসরণ করুন