রোববার   ০৬ অক্টোবর ২০২৪   আশ্বিন ২১ ১৪৩১

কলকারখানার ক্যামিকেলে বিষাক্ত বুড়িগঙ্গা

আরিফ হোসেন

প্রকাশিত: ৭ আগস্ট ২০২২  


# দূষণ রোধে জনসচেতনতা আগে থাকতে হবে: রনজিৎ মোদক
# দেশ থেকে এখনো পলিথিন মুক্ত হয়নি : তারিক বাবু

 

গঙ্গা নদীর একটি ধারা প্রাচীনকালে ধলেশ্বরী হয়ে সোজা দক্ষিণে বঙ্গোপসাগরে মিশেছিল। পরে গঙ্গার সেই ধারাটির গতিপথ পরিবর্তন হলে গঙ্গার সাথে তার সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। তবে প্রাচীন গঙ্গা এই পথে প্রবাহিত বলেই এর এমন নামকরণ। মূলত ধলেশ্বরী থেকে বুড়িগঙ্গার উৎপত্তি। আর এই বুড়িগঙ্গা নদী নিয়ে দেশের অনেক কবি জ্ঞানী, গুনি লোকেরা লিখেছেন কবিতা-উপন্যাস।


তবে সেই বুড়িগঙ্গা দিন দিন নাব্যতা হারাচ্ছে। যেখানে আগে এই নদীতে জেলেরা জাল ফেললে মাছে জাল ভরে যেত আজ সেখানে মাছ নেই বললেই চলে।পানিতে দেখা যায় শুধু ময়লা আবর্জনা কলকারখানার বর্জ্য দূষিত হয়ে আছে।আর যার কারনে ইতিহাসের ঐতিহ্য এই বুড়িগঙ্গা

 

আজ অব্যবস্থাপনার কারনে যা এখন হারাতে চলেছে।কলকারখানায় বর্জ্য ও দূষিত পানি পরিস্কার করার জন্য ইটিপি প্লান থাকার কথা থাকলেও যেটি অনেক কলকারখানায় নেই এই প্লান যার কারনে কলকারখানার বর্জ্য ও দূষিত ক্যামিকেল সরাসরি বুুড়িগঙ্গা নদীতে গিয়ে পরছে এবং এই সকল ময়লা আবর্জনা ক্যামিকেল নদীর পানিতে মিলিত হয়ে ব্যাপক ভাবে দূষিত হয়ে থাকে।

 

আর এতে করে হারাচ্ছে বুড়িগঙ্গার যৌবনের উত্তাল উচ্ছ্বাস।আর এই বুড়িগঙ্গার নাব্যতা ফিরিয়ে আনতে যদি সঠিক কোন রকম ব্যবস্থা না নেওয়া হয় তাহলে হারাবে এই প্রাচীন ঐতিহ্যে ভরা এই নদী।

 

এ বিষয়ে প্রবীন সাংবাদিক রনজিৎ মোদক বলেন, বুড়িগঙ্গা দূষণ রোধে সরকার পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্মকর্তরা ব্যাপক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে তবে আমরা সচেতন না।আর যাদের ওপর সরকার দায়িত্ব দিয়েছে যারা বুড়িগঙ্গার তীর গড়ে উঠা স্থাপনা ভাংচুর করেছে কিন্ত তারা কোন রকম শাস্তির ব্যবস্থা করেনি।

 

আর এটা রোধ করতে হলে সবার আগে জনসচেতনতা থাকতে হবে গনজাগরণ যাতে হয়,মানুষের মাঝে পরিবেশের ব্যাপারে চিন্তা চেতনা জাগ্রত হয় মানুষ সচেতন হবে।আর বুড়িগঙ্গা রক্ষার্থে নিজেরা যদি উদ্যেগ না নেয় তাহলে সরকারের যারা পরিবেশ রক্ষার্থে দায়িত্বে আছে তারা দেখছে কিন্ত সঠিক ভাবে আইন প্রয়োগ করছেনা যার জন্য মিল কারখানার দূষিত বর্জ্য ও ক্যামিকেল পানিতে ফেলছে তারা বিশেষ করে যারা নৌ পথে যাতায়াত করে তারা ওই সময় ময়লা আবর্জনা ফেলছে।

 

আপনারা জানেন ফতুল্লা বুড়িগঙ্গার পাশে বাজারটা ,তার পাশে সরকারী তফসিল অফিস,পোস্ট অফিস ,গরুর হাট,যার সমস্ত আবর্জনা এই ফতুল্লা লঞ্চ ঘাটের পাশে দিয়ে নদীতে ফেলছে আর এতে করে ব্যাপক ভাবে দূষিত হচ্ছে।আর তফসিল অফিসের পিছনে দিকে তাকালে দেখা যাবে সারাদিনের ময়লা আবর্জনা নদীতে ফেলছে।তাই সবার আগে আমাদের সাধারন জনগনের সচেতনতা দরকার তাহলে অনেকটাই নদী দূষন রোধ করা সম্ভব হবে।

 

এ বিষয়ে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) নারায়ণগঞ্জ জেলা সাধারন সম্পাদক তারিক বাবু জানান, আমি মনে করি এই বুড়িগঙ্গার দূষন মুক্ত করতে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন মেয়র তাপস সাহেব উদ্যেগ নিয়েছেন তিনি ওখান থেকে দূষন মুক্ত করবেন।আমার কথা হচ্ছে ঢাকা শহরের সকল বর্জ্য এই নদীতে যায় আর এটা যদি বন্ধ করা না যায় তাহলে বুড়িগঙ্গা নদী দূষন মুক্ত করা সম্ভব হবে না।


এসময় তিনি আরও বলেন, জনমানুষের সচেতনতা সবার আগে থাকতে হবে এর কারন হচ্ছে ঢাকা থেকে বিভিন্ন রুটে লঞ্চ চলাচল করে আর এই লঞ্চের যত সকল ময়লা আবর্জনা আছে তা নদীতে ফেলে তাই জনগনের সচেতন হওয়ার বিকল্প নেই।ভাগুরতি একটা নদী আছে আমি আজকে থেকে ২০ বছর আগে দেখেছি সেখানকার পানি টলটল করে তারা বর্জ্য ফেলে না।

 

আমরা শীতলক্ষ্যা নদী নিয়ে কাজ করেছি পরিবেশ অধিদপ্তরের কোন ভুমিকা দেখলাম না।তারা দেশ থেকে এখনো পলিথিন বন্ধ করতে পারেনি এ বিষয়ে তাদের ভূমিকা থাকার দরকার পলিথিন টা বন্ধ করতে জরুরী মনে করছি তা না হলে এ দূষন মুক্ত করা সম্ভব নয়।এসএম/জেসি 
 

এই বিভাগের আরো খবর