Logo
Logo
×

বিশেষ সংবাদ

কিশোরগ্যাংয়ে আতঙ্কিত এলাকাবাসী

Icon

যুগের চিন্তা রিপোর্ট

প্রকাশ: ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০৯:২৮ পিএম

কিশোরগ্যাংয়ে আতঙ্কিত এলাকাবাসী
Swapno

 

নারায়ণগঞ্জে বর্তমানে আতঙ্কের এক নাম হলো কিশোরগ্যাং। ভয়ংকর এই গ্যাং দাবড়ে বেড়াচ্ছেন পুরো জেলার এলাকাগুলোতে। রাজনৈতিক দলের বড় ভাইদের ছায়াতলে থেকে নানা অপরাধ মূলক কর্মকাণ্ড পারিচালনা করে আসছে কিশোরগ্যাং লিডার ও বাহিনীর অন্য সদস্যরা। কিছুদিন পর পরেই নারায়ণগঞ্জের পত্র পত্রিকায় শিরোনামে চলে আসে কিশোরগ্যাং বাহিনীর নানা কর্মকান্ডের অপকর্ম।

 

এসব নিয়ে ছেলে মেয়েদের নিয়ে আতঙ্ক নিয়েই বসবাস করছে নারায়ণগঞ্জবাসী। প্রতিটি পাড়া-মহল্লায় রাজনৈতিক দলের নামধারী বড় ভাইদের আর্শীবাদে বেপরোয়া রূপ নিয়েছে এ কিশোরগ্যাং সদস্যদের। পান থেকে চুন খসলে শুরু হয় দেশি ও বিদেশি অস্ত্র কিংবা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে কিশোরগ্যাং বাহিনীর মারামারি। এতে হত্যা কাণ্ডের মত ঘটনা এখন নিত্যদিনের খেলায় পরিণত হয়েছে।

 

তবে নারায়ণগঞ্জ এর পাশের জেলা ঢাকা ও গাজীপুরে কিশোরগ্যাং সদস্যদের প্রতি বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে আসছে পুলিশ ও র‌্যাব। তাদের হাতে প্রতিদিনই আটক হচ্ছে কিশোরগ্যাং সদস্য এবং বাহিনীর লিডাররা। তাদের বিরুদ্ধে নেওয়া হচ্ছে আইনী ব্যবস্থা। কিন্তু নারায়ণগঞ্জ একটি অতি গুরুতপুর্ণ জেলা হওয়ার পরেও জেলা পুলিশের পক্ষে থেকে তেমন একটি ভুমিকা পালন করতে চোখে পড়েনি।

 

আগে প্রতিটি এলাকায় রাতে ও দিনে পুলিশ টহল দিতো কিন্তু বর্তমানে সে টহল পুলিশ যেমন অতিথিদের মত দেখা মিলে পাড়া-মহল্লা গুলোতে। যার কারণে এলাকা গুলোতে অতীতের মতো চিহ্নিত সন্ত্রাসীরা এখন সরাসরি অপরাধের জন্ম না দিলেও উঠতি বয়সী কিশোরদের ব্যবহার করে নানা অপরাধের জন্ম দিয়ে স্বীয়স্বার্থ হাসিল করছে।

 

মাদক, চুরি, ছিনতাই, খুনসহ সমাজ বিরোধী নানা অপকর্মের সাথে সক্রিয় থেকে চায়ের দোকান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সামনের সড়ক, বিভিন্ন অলি-গলি, হোটেল-রেস্তোরাগুলোতে কিশোর গ্যাংয়ের একাধিক দলের সদস্য অবস্থান গ্রহণ করে ঘণ্টার পর ঘণ্টা আড্ডা দিয়ে থাকে এবং দল বেধে মোটর বাইক নিয়ে ঘোরাঘুরি করতে দেখা যায়।

 

সর্বশেষ গত দুই সপ্তাহে ফতুল্লায় দু’টি খুনের ঘটনা ঘটে। একটি খুনের সাথে জড়িত নারায়ণগঞ্জ মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি হাবিবুর রহমান রিয়াদ এর চাচাতো ভাই ও পুলিশের চিহ্নিত সোর্স রুমুর নাতি মাসদাইর এলাকার কিশোর গ্যাং লিডার অনিক প্রধান। আর কুতুবপুর ইউনিয়নের দেলপাড়া এলাকায় সংগঠিত অপর খুনের সাথে জড়িত রয়েছে কিশোর গ্যাং এর সদস্যরা।

 

জানা যায়, মাদক ব্যবসার দ্বন্দ্বের জেরে গত ১৬ জানুয়ারি মাসদাইর এলাকায় দানিয়াল-শুভ গ্রুপের সাথে সংঘর্ষ হয়েছিল ছাত্রলীগের কথিত নেতা অনিক গ্রুপের। ওই সময় দানিয়াল-শুভ বাহিনীর হামলায় অনিকসহ আহত হয়েছিলেন ৪ জন। সেই হামলার প্রতিশোধ নিতে গত ৯ ফেব্রুয়ারি প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা করা হয় দানিয়াল বাহিনীর প্রধান আল আমিন ওরফে দানিয়ালকে। এ সময় শুভ (২২) নামে আরও একজনকে কুপিয়ে গুরুতর আহত সন্ত্রাসীরা।

 

গত ২১ ফেব্রুয়ারি লালমনিরহাট জেলার সদরের ড্রাইভার পাড়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে র‌্যাব-১১ ও র‌্যাব-১৩ অনিক প্রধানকে গ্রেপ্তার করে। এছাড়া গত ২২ ফেব্রুয়ারি রাতে কুতুবপুর ইউনিয়নের দেলপাড়া ক্যানেলপাড় এলাকায় সিগারেটের ধোঁয়া মুখে ছাড়তে নিষেধ করায় সালমান নামের এক কিশোরকে পিটিয়ে হত্যা করে কিশোর গ্যাং এর অন্য সদস্যরা। এর আগের নারায়ণগঞ্জ শহরের বিভিন্ন স্থানে কিশোরগ্যাং এর হামলা শিকার হয়েছে সাধারণ মানুষ।

 

তার মধ্যে অন্যতম হলো শহরের মাসদাইর তালা ফ্যাক্টরি এলাকায় যেখানে একটি রেস্টুরেন্ট ভাংচুর ও পুলিশ সদস্য উপরেও হামলা চালানো হয়। এবং ইসদাইর রেল লাইন এলাকায় মাদক ব্যবসা দখল নিতে ও আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করেও প্রায় ৪/৫ টি হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। যার একটির বিচার এখনো হয়নি।

 

তবে নারায়ণগঞ্জ এর কিশোরগ্যাং সদস্যদের জন্য বেশ আলোচনায় রয়েছে ফতুল্লা ও সিদ্ধিরগঞ্জ থানা এলাকা। যেখানে রাজনৈতিক নেতাদের শেল্টারে গড়ে উঠেছে এসব বাহিনী যারা নেতার কথা মত কাজ করতে ব্যবহার করে দেশি ও বিদেশি অস্ত্র সহ নানা সরঞ্জাম। রাজনৈতিক দলের নেতাদের আত্মীয় স্বজনরাই এ কিশোরগ্যাং সদস্যদের পরিচালনা করে আসছে ও তাদের দিয়ে অপরাধ মূলক কর্মকান্ড পরিচালনা করে আসছে। এছাড়া রূপগঞ্জ, বন্দর, সোনারগাঁ, আড়াইহাজার উপজেলাতেও কিশোরগ্যাং ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। এস.এ/জেসি
 

Abu Al Moursalin Babla

Editor & Publisher
ই-মেইল: [email protected]

অনুসরণ করুন