রোববার   ০৬ অক্টোবর ২০২৪   আশ্বিন ২১ ১৪৩১

ঘাট-গার্মেন্টস দখলে ব্যস্ত যুবদল নেতা সজল

যুগের চিন্তা রিপোর্ট

প্রকাশিত: ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪  

 

 

মহানগর যুবদলের একজন বিতর্কিত নেতা হিসেবে পরিচিত নাম মহানগর যুবদলের আহ্বায়ক মনিরুল ইসলাম সজল। তা ছাড়া ও তার আরেকটি পরিচয় রয়েছে তিনি বিএনপির নির্বাহী কমিটির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক নজরুল ইসলাম আজাদের ক্যাশিয়ার। বিগত দিনে মন্তু-সজল কমিটি থাকা অবস্থায় পদ-বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছিলো এই সজলের বিরুদ্ধে। কিন্তু গত ৫ আগষ্ট পটপরিবর্তনের পর ভয়ঙ্কর রূপ ধারন করেন এই বিতর্কিত যুবদল নেতা মনিরুল ইসলাম সজল। 

 

তার দলের এক গ্রুপকে জেলা প্রশাসকের ভাঙলো পাহাড়া দিতে বসিয়ে আরেক গ্রুপের মাধ্যমে নাসিক ১১ নং ওয়ার্ড ও সদর থানার আওতাধীন বেশ কয়েকটি ওয়ার্ড জুড়ে দখল-দারিত্ব, লুটত্বরাজ, আওয়ামী লীগ নেতাদের বাড়ি বাড়িতে হামলার ভয় দেখিয়ে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন তার লোক ১১ নং ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক রিপন আহম্মেদ ও সদর থানা যুবদল নেতা সাইফুল ইসলাম আপন, সদর থানা যুবদল নেতা রাফিউদ্দিন রিয়াদ, মহানগর যুবদলের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক নূরে এলাহী সোহাগ এমন অভিযোগ পাওয়া যায়। 

 

পরবর্তীতে সজলের চোখ পরে ঘাটের দিকে তিনি ১নং খেয়াঘাট, নবীগঞ্জ ঘাট তার আত্মীয় মহানগর যুবলীগের সভাপতি পলাতক সাজনূ ভূঁইয়ার সাথে যোগাযোগ করে ইজাদার রিয়েলকে ভয়-ভীতি দেখিয়ে তার কাছ থেকে সজল তার নামে এপিড-ওপিড করেন। একই সাথে নাসিক ১১নং ওয়ার্ড জুড়ে ১২টি গার্মেন্টস সজলের দখলে একই সাথে লোড-আনলোড সিন্ডিকেট তৈরি করেছেন এই সজল তা ছাড়া ও কিল্লারপুর বিদ্যুৎ অফিস থেকে ও সজলের কাছে মোটা অংকের টাকা চাঁদা তুলেছেন তার পিএস খ্যাত নেতা রিপন ও সাইফুল ইসলাম আপন।

 

 এ ছাড়া নগরীর জিমখানা ও ডিআইটিতে মহানগর যুবদলের আহ্বায়ক মনিরুল ইসলাম সজলের শেল্টারে সদর থানা যুবদলের সভাপতি প্রার্থী রাফিউদ্দিন রিয়াদ ও মহানগর যুবদল নেতা নূরে এলাহী সোহাগসহ তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে হুমকি-ধমিক দিয়ে ওয়েস্টিজ মালামাল ও ঝুট সেক্টর নিয়ন্ত্রণের অভিযোগ রয়েছে।

 

সূত্র জানিয়েছে, নারায়ণগঞ্জের শহরে বিভিন্নস্থানে ঠিকাদারী ব্যবসার আধিপত্য বিস্তার ছিলো নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সাবেক সাংসদ সদস্য শামীম ওসমানের অতন্ত প্রিয় আস্থাভাজন মহানগর যুবলীগের সভাপতি শাহাদাৎ হোসেন সাজনুর দখলে। কিন্তু গত ৫ আগষ্ট আওয়ামী লীগ সরকার পল্টি দেয়ার পর গা-ঢাকা দেয় সাজনুসহ তার পুরো বাহিনী। পরবর্তীতে তার এই ঠিকাদারীসহ সব প্রকারের ব্যবসা বানিজ্যে, হাঁট-ঘাট সবই নিয়ন্ত্রণে নিয়ে ফেলে তারই আত্মীয় মহানগর যুবদলের আহ্বায়ক এই মনিরুল ইসলাম সজল। 

 

জানা গেছে, প্রথমেই তিনি সাজনুর লোক রিয়েলের কাছ থেকে দখলে নিয়ে নেয় বন্দর ১নং খেয়াঘাট পরবর্তীতে সেখানে দখলে যায় জাকির খান গ্রুপের অন্যতম নেতা দিদার খন্দকার। কিন্তু যেখানে সজল দৌঁড়ঝাপ করে ইজারাদার রিয়েলের কাছ থেকে দায়িত্ব নিয়ে নেয় সেই হিসেবে সজল কোন সংঘর্ষে না জড়িয়ে নিয়মিত এই খেয়াঘাটের টোল উঠে ৩ লাখ টাকা দুইভাগে বন্টন করে নেন। তা ছাড়া পাশের নৌকার থেকে টাকা কালেকশন, আশপাশের ফুটপাত থেকে টাকা কালেশন সেগুলো আলাদাভাবে তোলা হয়।

 

 নিয়মিত এই টাকার ভাগ নিয়ে যান সজলের ঘনিষ্ট আন্থাভাজন রাফিউদ্দিন রিয়াদ ও নূরে এলাহী সোহাগ। অপর দিকে নগীবগঞ্জ ঘাট ও ফেরীঘাট দুটোই নিয়ন্ত্রণ করেন সজলের লোক নাসিক ১১ নং ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক রিপন আহম্মেদ ও যুবদল নেতা সাইফুল ইসলাম আপন। এখান থেকে ও নিয়মিত কয়েক লাখ টাকা ফেরী ও টর্লার-নৌকা টোল থেকে উঠে।  তা ছাড়া বরফকল ঘাট বলা চলে সজলের দখলেই কারণ সেখান থেকে নিয়মিত সজলের লোক আপন টাকা নিয়ে আসে সজলের নামে বর্তমানে এই ঘাটের নিয়ন্ত্রণ রয়েছে ইজাদার রিয়েলের বন্ধু মোমেনের কাছে। 

 

তা ছাড়া গত ১০ আগষ্ট নাসিক ১১ নং ওয়ার্ডের আওতাধীন তিনটি বড় গার্মেন্টস হলো- আনোয়ারা গার্মেন্টস, বিটেক্স গার্মেন্টস, প্রাইম কালচার গার্মেন্টস এই তিনটির মধ্যে হানা দেয় মনিরুল ইসলাম সজল ও তার লোকজন। সেখানে গিয়ে বিভিন্নভাবে ভয়-ভীতি দেখিয়ে সেখানকার ওয়েস্টিজ মালামাল, ঝুট সেক্টরসহ যাবতীয় সব যেন তাদের কথা মতোই পরিচালিত হয় বলে সাফ-জানিয়ে দিয়ে আসেন তিনি ও তার লোকজন। এদিকে এর বাহিরে ও তিনি আরো বেশ কয়েকটি গার্মেন্টস-ফ্যাক্টরীতে গিয়ে তার আধিপত্য বিস্তার করেন। 

 

পরবর্তীতে সেখানে চৌরুঙ্গী পার্কের মাসিক চাঁদার ব্যবস্থা করেন, এর আশে-পাশের ফুটপাত থেকে নিয়মিত ২০০/৩০০ টাকা করে চাঁদাসহ তোলা হয় বলে অভিযোগ পাওয়া যায়। সব মিলিয়ে আওয়ামী লীগ না থাকায় এক চেটিয়াভাবে সব দখলে নিয়েছেন এই সজল। 

 

তা ছাড়া গত ৫ আগষ্টে পর থেকে প্রায় সময় দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান একটাই নির্দেশনা দিচ্ছেন যে কেউ চাঁদাবাজি-দখলবাজি করবেন না। সকলেই ধৈর্য ধরেন, আর সকলেই সাধারণ জনগণের মন জয় করার প্রতিযোগীতায় মগ্ন থাকেন। কিন্তু তারেক রহমানের কোন কথাকে তোয়াক্কা না করেই বিএনপির বহু নেতাকর্মীরা চাঁদাবাজি-দখলে মগ্ন হয়ে পরেছেন এদের মধ্যে অন্যতম এই মহানগর যুবদলের আহ্বায়ক মনিরুল ইসলাম সজল।

এই বিভাগের আরো খবর