Logo
Logo
×

বিশেষ সংবাদ

চাঁদাবাজির বদৌলতে ড্রাইভার থেকে কোটিপতি মাসুদ

Icon

যুগের চিন্তা রিপোর্ট

প্রকাশ: ০৯ নভেম্বর ২০২২, ০৭:০৭ পিএম

চাঁদাবাজির বদৌলতে ড্রাইভার থেকে কোটিপতি মাসুদ
Swapno


# চাঁদাবাজ ডন মাসুদ নামে পরিচিত তিনি

# ৫ লাখে ইউনিক বাসের কাউন্টার বসান
 

বাংলা ভাষায় একটা জনপ্রিয় কথা  হচ্ছে ‘আঙুল ফুলে কলাগাছ’। আঙুলটা যদি হঠাৎ কলাগাছে পরিণত হয়, কলাগাছের মতো ফুলে-ফেঁপে ওঠে, সেই অবস্থাকেই বোঝায়। এর মানে হচ্ছে, অপ্রত্যাশিত ধনলাভ, অবিশ্বাস্য উন্নতি, হঠাৎ বড়লোক হওয়া ইত্যাদি। আঙুলের সঙ্গে কলাগাছের কি কোনো মিল আছে? তারপরও মানুষ কেন বলে যে আঙুল ফুলে কলাগাছ?

 

 

সাধারণত অবৈধ পথে অর্থ উপার্জন করে হঠাৎ ধনী হয়ে যাওয়া ব্যক্তি সম্পর্কে ‘আঙুল ফুলে কলাগাছ’ কথাটা বেশি ব্যবহার হয়ে থাকে। যদিও ‘আঙুল ফুলে কলাগাছ’ না বলে ‘আঙুল ফুলে বটগাছ’ বললে অধিক মানানসই হয়। মানুষ ক্যাসিনো কান্ডের যুবলীগ নেতা সম্রাট নিয়ে জেনেছে। একই সাথে টেন্ডারবাজি নিয়ন্ত্রনের অন্যতম হোতা জিকে শামীম গ্রেপ্তার হয়েছে।

 

 

অভিযোগ রয়েছে অবৈধভাবে তারা শত কোটি টাকার মালিক বনে গেছেন। তাছাড়া নারায়ণগঞ্জ শহরের অলিতে গলিতে অনেক চাদাঁবাজ রয়েছে যারা চাদাঁবাজি করে কোটি টাকার মালিক বনে গেছেন। এবারা নারায়ণগঞ্জে সাইনবোর্ড এলাকার চিহ্নিত চাদাঁবাজ মাসুদকে নিয়ে হৈ চৈ শুরু হয়েছে। এই চাদাঁবাজ মাসুদ এর আগে একাধিকবার র‌্যাবের অভিযানে গ্রেপ্তার হয়।

 

 

মাসুদ নিজেও তা অকপটে স্বীকারও করেন। তবে তার দাবী তিনি এখন আর চাঁদাবাজি করেন না। কিন্তু তার বিষয়ে যুগের চিন্তার অনুসন্ধানে চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে।

 

 

এদিকে সিএনজি চালকদের সাথে কথা হলে একাধিক চালক জানান, এই মাসুদ ৬ থেকে ৭ বছর আগেও সিএনজি চালক ছিলেন। এখন তিনি প্রায় ১২টি সিএনজির মালিক হয়ে গেছেন। যে গুলো থেকে তার দৈনিক মিনিমাম ৬০০ টাকা পেয়ে থাকেন। যা দৈনিক হিসেবে প্রায় ৭ থেকে ৮ হাজার টাকা আসে। এছাড়া দৈনিক চাঁদাবাজির টাকাতো আছেই।

 

 

চালকরা প্রশ্ন তুলেন, ‘মাসুদ যখন সাইনবোর্ডে চাঁদাবাজি শুরু করেন তখনি তার ভাগ্যের পরিবর্তন হতে থাকে। যার পরিবর্তন সে এখন প্রায় ১২ টি সিএনজির মালিক।  রোড পারমিট সহ এক একটা সিএনজির মূল্য আছে ৬ লাখ টাকার মত। যার মূল্য আছে প্রায় অর্ধ কোটি টাকা। এছাড়া ইতোমেধ্য চাদাঁবাজির বদৌলতে তিনি শনির আখড়ায় বাড়ি করেছেন বলে জানান কয়েকজন ব্যক্তি।

 

 

সেই সাথে পুলিশ বক্সের দুইটা দোকান এডভান্স ১০ লাখ টাকা ও মাসে ৭০ হাজার টাকা ভাড়া নিচ্ছে টোকাই সেলিম, লিটু ও সৈকতকে সাথে নিয়া।  সিএনজি থেকে টোকাই সেলিম ও আলমগীর চাঁদা তুলে জাহাঙ্গীরকে দিয়ে।’

 

 

স্থানীয়রা জানান, ‘দীর্ঘ দিন যাবত মাসুদের নেতৃত্বে এখানে চাদাঁবাজি চক্র গড়ে উঠেছে। সাইনবোর্ড থেকে ডগাইর রোডে ব্রীজের পাশেই সরকারী জায়গায় অবৈধ ভাবে বাজার স্থাপন করে চাদাবাজি করেন তিনি। চাদাঁর টাকা কালেকশন করে মাসুদ মন্জু, দৈনিক কারেন্ট বিল ২০০ টাকা, আর দোকান প্রতি এডভান্স ৪০ হাজার টাকা, সাইনবোর্ড -কোনাপারা অটোস্ট্যান্ড থেকে প্রতি গাড়ি ৬০ টাকা করে চাঁদা নেন মাসুদ।

 

 

এছাড়া সিএনজি থেকে প্রতিদিন ১০০ টাকা করে নেন। আবার কারো কাছ থেকে ৫০ টাকা করেও চাঁদা নেন। এমনকি মাসে ১২০০ থেকে ১৫০০ করে চাঁদা নিয়ে থাকেন চাঁদাবাজ মাসুদ। চাঁদাবাজ মাসুদের সাথে সহযোগী হিসেবে রয়েছেন কবির, রেজু, মঞ্জু, সেলিম ওরফে টোকাই সেলিম, লিটু মিলে তাদের নিয়ন্ত্রণে এখানকার চাদাঁবাজি চলে।

 

 

এছাড়া তাদের বিরুদ্ধে সরকারী খাস জায়গায় দখলেরও অভিযোগ রয়েছে। এমনকি সরকারি জায়গা দখল করে কাঁচা বাজার দিয়ে সেখান থেকেও প্রতিদিন ভালো অংকের চাঁদা তুলে থাকেন। এই ভাবে চাঁদাবাজদের ডন হয়ে গেছেন তিনি।

 

 

এই মাসুদ নোয়াখালি চৌমুহনি থেকে এসে এখানে চাঁদাবাজ চক্র গড়ে তুলে এখন কোটি টাকার মালিক হয়ে যাওয়ায় তাকে নিয়ে এলাকাবাসীর মাঝে ব্যপক আলোচনা তৈরী হয়েছে।

 

 

সাইনবোর্ডেরে কয়েকজন দোকানদার জানান, ইউনিক বাসের কাউন্টার বসানোর জন্য ৫ লাখ টাকা নিয়েছে বলে অভিযোগ উঠে তাদের বিরুদ্ধে। প্রশাসনকে ম্যানেজ করেই তারা এখানে চাঁদাবাজি করেন বলে জানান স্থানীয়রা। র‌্যাব তাদের গ্রেপ্তার করলেও তারা জামিনে এসে আবার চাঁদাবাজিতে সক্রিয় হয়ে উঠেন।’ তাই তাদের বিরুদ্ধে এবার কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার দাবী তুলেন স্থানীয়রা।

 

 

জানা যায়, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সাইনবোর্ড মোড়টি একটি গুরুত্বপূর্ণ ব্যস্ততম পয়েন্ট। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সাইনবোর্ড মোড়টি নারায়ণগঞ্জের প্রবেশমুখ। সাইনবোর্ড থেকে লিংক রোড হয়ে সাধারণ মানুষ নারায়ণগঞ্জ এবং পার্শ্ববর্তী জেলা মুন্সিগঞ্জে যাতায়াত করে থাকে।

 

 

আর এই নারায়ণগঞ্জের প্রবেশমুখ ও ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মুল পয়েন্ট দখল করে অবৈধভাবে স্ট্যান্ড গড়ে তুলেছে মাসুদ ওরফে কাইল্লা মাসুদ নামে চাঁদাবাজ। এই রাস্তা দখল করার কারণে সাধারণ মানুষ যাতায়াত করতে সমস্যা সৃষ্টি হয়। নারায়ণগঞ্জগামী যান চলাচলে প্রতিবন্ধকতা তৈরী হলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ দেখেও যেন না দেখার ভান করছে।

 

 

মাসুদের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, ‘তার বিরুদ্ধে আনা সকল অভিযোগ মিথ্যা। তাছাড়া তার কোন সিএনজি নাই বলে জানান তিনি। তিনি জায়গা ভাড়া নিয়ে বাজার দিয়েছেন। তবে কার কাছ থেকে বাজারের জায়গা বা এই সরকারি জায়গা নিয়েছেন; তার নাম জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘সাইনবোর্ডে বড় করে লেখা আছে।’

 

 

এবিষয়ে র‌্যাব-১১’র সিও মাহমুদ পাশার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোনকল রিসিভ করেননি । জেলা ট্রাফিক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সোহান জানান, ‘সাইনবোর্ড সড়কের বিষয়ে হাইওয়ে পুলিশ দেখেন।’ এন.এইচ/জেসি

Abu Al Moursalin Babla

Editor & Publisher
ই-মেইল: [email protected]

অনুসরণ করুন