Logo
Logo
×

রাজনীতি

জাপার আসনে আ.লীগের প্রার্থী বাকিরাও নিশ্চিত নন

Icon

যুগের চিন্তা রিপোর্ট

প্রকাশ: ২৫ নভেম্বর ২০২৩, ০৯:৪৫ পিএম

জাপার আসনে আ.লীগের প্রার্থী বাকিরাও নিশ্চিত নন
Swapno

 

# মনোনয়ন লড়াইয়ে প্রার্থীরা নিজেদের যোগ্যতা এবং প্রতিদ্বন্দ্বীদের ব্যর্থতার কথা জানিয়েছেন  

 

 

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামীলীগের মনোনয়নপত্র সংগ্রহের পর চূড়ান্ত করার প্রক্রিয়ায় আছে দলের নীতি-নির্ধারনীরা। নারায়ণগঞ্জ থেকে পাঁচটি আসনে আওয়ামীলীগের ৩১ প্রার্থী মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছে। গত ১০ বছর ধরে আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীদের দাবি এবারই পূরণ হবার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। আজ শনিবার আওয়ামীলীগের সকল দলীয় প্রার্থী চূড়ান্ত করার কথা রয়েছে।

 

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জাতীয় পার্টি মহাজোটে থাকার কারণে নারায়ণগঞ্জের দুটি আসন নারায়ণগঞ্জ-৩ (সোনারগাঁ) এবং নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে (সদর-বন্দর) জাতীয় পার্টিকে ছাড় দেয় আওয়ামীলীগ। এবার জাতীয় পার্টি ৩০০ আসনে তাদের প্রার্থী দিচ্ছে। নারায়ণগঞ্জেও জাপার অধীনে থাকা দুটি আসনে বর্তমান সংসদ লিয়াকত হোসেন খোকা ও সেলিম ওসমান মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন। এই দুটি আসনের মধ্যে  সোনারগাঁয়ে আওয়ামীলীগের ১৫ প্রার্থী এবং নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে ৬ জন প্রার্থী মনোনয়ন কিনেছেন।

 

ফলে এই দুটি আসনে নৌকার প্রার্থী মনোনয়ন পাচ্ছেন এটা মোটামুটি নিশ্চিত। নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনে মনোনয়নপত্র কেনা ১৫ প্রার্থীদের মধ্যে সাবেক সংসদ সদস্য আবদুল্লাহ আল কায়সার হাসনাত, এরফান হোসেন দীপ, আবু জাফর চৌধুরী বীরু, মাহফুজুর রহমান কালাম দীর্ঘদিন ধরে এই আসনে আওয়ামীলীগের মনোনয়ন চেয়ে আসছিলেন। এরমধ্যে ২০১৮ সালের নির্বাচনে সাবেক সাংসদ আবদুল্লাহ আল কায়সার হাসনাত বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে মহাজোট প্রার্থী লিয়াকত হোসেন খোকার বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নেমেছিলেন। কিন্তু শেষ অবধি তিনি ব্যর্থ হন।

 

নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনটি জাপার টিকেটে সেলিম ওসমানের কাছে সংসদ সদস্যের চেয়ারটি দখলে যায়। যদিও জাপার এমপি সেলিম ওসমানের কাছ থেকে এই আসনটি উদ্ধারের দাবি জানিয়ে আসছিল জেলা ও মহানগর আওয়ামীলীগের নেতৃবৃন্দ। এই আসনে জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আবদুল হাই, সাধারণ সম্পাদক আবু হাসনাত শহীদ মো.বাদল, আওয়ামীলীগের জাতীয় পরিষদের সদস্য এড. আনিসুর রহমান দিপু, মহানগর আওয়ামীলীগের সভাপতি ও সাবেক জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক জিএম আরাফাত, মহানগর আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও নাসিক মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভীর ভাই আলী রেজা উজ্জ্বলসহ স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতারা বরাবরই জাতীয় পার্টির বিরোধীতা করে আসছিলেন।

 

এবার তারা প্রত্যেকেই মনোনয়নপত্র কিনেছেন। এই  আসনে আওয়ামীলীগের প্রার্থী দেয়া হবে এটিও মোটামুটি নিশ্চিত বলে মনে করেন স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতারা। জাতীয় পার্টির দখলে থাকা দুটি আসনেই যে শুধু আওয়ামীলীগ প্রার্থীদের মধ্যে মনোনয়ন প্রতিদ্বন্দ্বিতা রয়েছে এমনটি নয়।

 

আওয়ামীলীগের প্রভাবশালী নেতা ও নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য একেএম শামীম ওসমানও প্রতিদ্বন্দ্বিতার মুখোমুখি হয়েছেন জাতীয় শ্রমিক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক কাউছার আহম্মেদ পলাশের কাছে। কাউছার আহম্মেদ পলাশ ২০০৮ সাল থেকে অনুষ্ঠিত প্রত্যেকটি জাতীয় নির্বাচনে এই আসনে আওয়ামীলীগের মনোনয়ন চেয়ে আসছেন। আর তাই এবারের কঠোর পর্যবেক্ষণে থাকা নির্বাচনটিতে শামীম ওসমানকে আওয়ামীলীগের প্রার্থী হিসেবে দেখা না গেলেও অবাক হওয়ার কিছুই থাকবে না। 

 

হটকেক হিসেবে পরিচিত নারায়ণগঞ্জ-১ (রূপগঞ্জ) আসটিতে বর্তমান বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী ও সংসদ সদস্য গোলাম দস্তগীর গাজী মনোনয়নপত্র কিনেছেন। তবে এই আসনে উপজেলা চেয়ারম্যান শাহজাহান ভূঁইয়াও মনোনয়নপত্র কিনেছেন। তাছাড়া এই আসনে তৃণমূল বিএনিপর মহাসচিব তৈমূর আলম খন্দকারও মনোনয়ন কিনেছেন।

 

যদিও শোনা যাচ্ছে, তৃণমূল বিএনপি আওয়ামীলীগের সাথে জোটবদ্ধ হতে পারে। যদি নাও হয় সেক্ষেত্রে এই আসনে আওয়ামীলীগের প্রার্থী হিসেবে গোলাম দস্তগীর গাজীকেই আবারো দেখা যেতে পারে নির্বাচনে অংশ নিতে। তবে জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আবদুল হাই এই আসনে মনোনয়নপত্র কেনায় পুরোপুরি নির্ভার হতে পারেননি গোলাম দস্তগীর গাজী।

 

নারায়ণগঞ্জ-২ (আড়াইহাজার) আসনে অনেকটা আওয়ামীলীগের একক প্রার্থী হিসেবে মনে হয়েছিলো বর্তমান সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম বাবুকে। তবে মনোনয়নযুদ্ধে ভিন্ন চিত্র। এই আসনে বাবুর অন্যতম প্রতিদ্বন্দ্বী জেলা আওয়ামীলীগের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক ইকবাল পারভেজ, সাবেক রাষ্ট্রদূতসহ মোট ৬ জন আওয়ামীলীগের মনোনয়নপত্র কিনেছেন। বাবুর বিরুদ্ধে অতীতে উঠা নানা অভিযোগের প্রেক্ষিতে এই আসনে ভিন্ন কেউও মনোনয়ন পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। 

 

রাজনৈতিক বোদ্ধারা বলছেন, বিএনপি নির্বাচনে না আসায় আওয়ামীলীগ চাইছে বিতর্কিত নন এবং গ্রহণযোগ্যতা আছে এমন ব্যক্তিদের মনোনয়ন দিয়ে নির্বাচনে জয় নিশ্চিত করতে। সেক্ষেত্রে আওয়ামীলীগের বর্তমান সংসদ সদস্যদের প্রত্যেকেই নানা অভিযোগ অভিযুক্ত। কেউ দলীয়ভাবে এবং কেউ কেউ স্থানীয় জনরোষের মধ্যে রয়েছেন নানা অভিযোগে।

 

ফলে নারায়ণগঞ্জের মতো গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় আওয়ামীলীগ নতুন মুখও বেছে নেয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। মহাজোটে থাকা জাতীয় পার্টির আসনগুলোতে আওয়ামীলীগের প্রার্থী তো আসছেনই সেই সাথে বর্তমান আওয়ামীলীগের সংসদ সদস্য হিসেবে থাকা কেউ যদি মনোনয়ন টিকেট নাও পান সেক্ষেত্রে খুব বেশি অবাক হওয়ার কিছু থাকবেনা। শনিবার আওয়ামীলীগের প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত হওয়ার পরই এই ধুম্রজালের অবসান ঘটছে। এস.এ/জেসি 

Abu Al Moursalin Babla

Editor & Publisher
ই-মেইল: [email protected]

অনুসরণ করুন