দিদার খন্দকারের গাফিলতির কারণে খন্দকার টাওয়ারে যুবকের মৃত্যু

স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশ: ১০ জানুয়ারি ২০২৪, ০৮:২২ পিএম

# বিল্ডিংয়ের খোলা লিফট ও চার পাশে কোন নিরাপত্তা সেফটি নেই : ফ্ল্যাট মালিক শাকিল খন্দকার
নারায়ণগঞ্জ সদর থানাধীন নাসিক ১৪নং ওয়ার্ড আলী আহাম্মদ চুনকা সড়ক এলাকাস্থল খন্দকার টাওয়ারের মালিক জনি খন্দকারের রহস্যজনক মৃত্যু নিয়ে চলছে নানা রকমের জল্পনা-কল্পনা ও নাটকীয়। গত রবিবার ৭ জানুয়ারি রাত ৭টায় পশ্চিম দেওভোগ আলী আহাম্মাদ চুনকা সড়কের খন্দকার টাওয়ারের নির্মানাধীন বহুতল ভবনের ১০ তলা লিফটের ফাঁকে পড়ে জনি খন্দকার (৪০) নামে এক মাছ ব্যবসায়ীর রহস্যজনক মৃত্যু হয়।
নিহত জনি খন্দকার দেওভোগ এলাকার নাছির খন্দকারের ছেলে। গত সোমবার সন্ধ্যায় ঢাকা মেডিকেল থেকে ময়না তদন্তের পর তার মৃত দেহ তার নিজ বাড়িতে আনা হয়। পরে বাদ এশায় মরহুমের নামাজের জানাযা দেওভোগ সাকিম আলী জামে মসজিদে অনুষ্ঠিত হয়। জানা যায়, জনি খন্দকারের পৈতৃক সম্পত্তি হচ্ছে খন্দকার টাওয়ার। সেখানে তার একটি ফ্ল্যাট রয়েছে।
গত রবিবার তিনি তার ফ্ল্যাটের নির্মাণ কাজ দেখার জন্য খন্দকার টাওয়ারের ১০তলায় যান। সেখান থেকে ফেরার পথে তিনি লিফটের ফাঁকে পরে যান। এ বিষয়ে নিহত জনি খন্দকারের পিতা নাসির খন্দকার গত সোমবার জানান, আমার ছেলে মাছের আড়ৎ এর ব্যবসা করেন। এই ভবনটি হচ্ছে আমাদের পৈতৃক সম্পত্তি, এই ভবনটির নাম দেওয়া হয়েছে খন্দকার টাওয়ার।
এখানে আমাদের সব ছেলে মেয়ের ফ্ল্যাট রয়েছে। এই বিল্ডিং এর ডিজাইন ও ডেভেলপার হচ্ছে দিদার খন্দকার। তিনি এই বিল্ডিং এর নির্মানাধীন সমস্ত কাজ নিজেই করছেন। কিন্তু এই বিল্ডিং এর নির্মাণাধীন কাজ এখনও শেষ হয়নি। কাজ চলমান থাকাতেই দিদার ফ্ল্যাট ভাড়া সহ কমিউনিটি সেন্টার দিয়েছে। আমি অনেক বার দিদারকে বলেছি বিল্ডিং এর লিফটের সামনে ফাঁকা, তুমি এখানে নিরাপত্তা সেফটি প্রটেকশন দাও। কিন্তু সে আমাদের কাউর কোন কথা শুনে নি, তাই আজ আমার ছেলের মৃত্যু হলো। আমি এর বিচার চাই।
এ বিষয়ে নিহত জনি খন্দকারে ভাই শাকিল খন্দকার জানান, জনি খন্দকার হচ্ছে আমার বড় ভাই। এই খন্দকার টাওয়ার হচ্ছে আমাদের পৈতৃক সম্পত্তি। সেই টাওয়ারের ৭ম তলায় আমার একটি ফ্ল্যাট রয়েছে। সেই ভবনে আমিও বসবাস করি। এই ভবনের ডেভেলপার হচ্ছে দিদার খন্দকার। তার আর আমাদের সমান সমান ফ্ল্যাট রয়েছে। দিদার খন্দকার এই বিল্ডিং এর সমস্ত কাজ প্রথম থেকেই গাঁ ছাড়া ভাবে করছে। বিল্ডিং করার শুরু থেকেই তাকে আমরা বার বার বলেছি আপনি বিল্ডিং এর নিরাপত্তা সেফটি দেন।
কিন্তু তিনি আমাদের কাউর কোন কথায় শুনেনি। এই বিল্ডিংয়ে অনেক ফ্ল্যাট মালিক ও ভাড়াটিয়ে রয়েছে। আজ আমার ভাই এর জায়গায় সেখানে অন্য কেউ পরতে পারত। অনেকের ছোট ছোট বাচ্চা রয়েছে। এই বিল্ডিং এর কোন সেফটি নেই। অনেক বলা বলির পর দিদার পুলিশ লাইন থেকে পুরাতন টিন এনে চার পাশে দেয়, তারও আবার আড়াই ফিট। আর লিফটের সামনে শুরু থেকেই ফাঁকা।
গত এক মাস আগে একটা লিফট লাগিয়েছে। পাশেরটা ফাঁকা, রুম থেকে বের হলেই চার-পাঁচ ফিট পরে লিফটের ফাঁকা অংশ। দিদার খন্দকারকে আমরা অনেক বলার পর সে বাঁশের চাটা দিয়ে দুই-তিন হাত পর্যন্ত বেড়া দিছে। তাও আবার আটকানো না, বাতাস আসলে পরে যায়। তিনি আরও বলেন, আমি মনে করি দিদার খন্দকারের গাফিলতির কারনে আজ এই ঘটনা ঘটছে। তিনি বিএনপির নেতা, নাশকতা মামলায় তিনি দেশ ছেড়ে পলাতক। আমার ভাই মারা গেছে তিনি একটা খোঁজ খবরও নেই নি।
অন্যান্য মানুষদের দিয়ে তিনি বিষয়টি ধামা-চাপা দেওয়ার চেষ্টা করছে। আমার ভাইয়ের চার বছরের একটি সন্তান রয়েছে। একটি সদর থানায় অভিযোগ করেছি। দিদার এর গাফিলতির কারণে আজ আমার ভাইয়ের মৃত্যু হয়েছে। আমরা দিদার এর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেবো। এস.এ/জেসি