দ্বিতীয়বারের মতো সমাবেশ বাতিল করলেন শামীম ওসমান

যুগের চিন্তা রিপোর্ট
প্রকাশ: ৩১ জুলাই ২০২৪, ০৩:৩৭ পিএম

কোটা সংস্কার আন্দোলন ইস্যুতে ঘটে যাওয়া সহিংসতা নিয়ে এখনো চলছে চুলচেরা বিশ্লেষণ। দীর্ঘ দেড় দশকেরও বেশি সময় ধরে ক্ষমতায় থাকা একটি দলের সাংগঠনিক অবস্থা নিয়ে চলছে বিতর্ক। নারায়ণগঞ্জের ৫ টি আসনের মধ্যে সবচেয়ে আলোচিত আসন হচ্ছে নারায়ণগঞ্জ -৪ যা ফতুল্লা ও সিদ্ধিরগঞ্জ নিয়ে গঠিত। এ জনপদ আলোচিত হওয়ার অন্যতম কারণ এ আসনের এমপি শামীম ওসমান যাকে গোটা দেশ প্রতাপশালী সংসদ সদস্য হিসেবে চিনে। কিন্তু এবারের আন্দোলনে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে তার সংসদীয় আসনেই। তার নির্বাচনী এলাকার যে চিত্র অর্থাৎ সাংগঠনিক দূর্বলতা প্রকাশ পেয়েছে তা তিনি স্পষ্টই বুঝতে পেরেছেন। কেননা,ফতুল্লা ও সিদ্ধিরগঞ্জের তার বাঘা বাঘা নেতাকর্মী থাকলেও সহিংসতা চলাকালে কাউকে মাঠে দেখা যায়নি। তার নির্বাচনী এলাকার এমন করুণ দশা দেখে তিনি নেতাকর্মীদের বাইরে বের করতে সহিংস পরিস্থিতিতেই সমাবেশের ঘোষণা দিয়েছিলেন শামীম ওসমান।
কিন্তু কারফিউ জারি করায় তিনি আর সমাবেশ করতে পারেননি। তবে পরিস্থিতি যখন স্বাভাবিকের দিকে তখন শামীম ওসমান সিদ্ধিরগঞ্জ এর আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীদের নিয়ে রাইফেল ক্লাবে একটি মিটিং করে আগামী ৩ আগষ্ট শহরের ২ নং রেলগেইটে সামবেশের ঘোষনা দিয়েছিলেন। তবে গতকাল শামীম ওসমান ফতুল্লার নেতাকর্মীদের নিয়ে একটি মিটিং করে সেই মিটিং থেকে সমাবেশ বাতিল করার ঘোষণা দেন। অর্থাৎ এই মাসেই দুইবার সমাবেশের ডাক দিয়ে দুইবারই তা বাতিলের ঘোষণা দেন। তবে কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগ বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় সমাবেশ করার অনুমতি না দেওয়ায় সমাবেশ বাতিল হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। তবে সমাবশে ডাকা ও বাতিল করা এই বিষয়টিকে স্বাভাবিকভাবে দেখছেন না রাজনৈতিক বোদ্ধারা।
রাজনৈতিক সচেতন ব্যাক্তদের মতানুযায়ী, শামীম ওসমান সারা দেশে অত্যন্ত প্রভাবশালী এমপি হিসেবে সুপরিচিত থাকলেও তার নিজ আসনের আওয়ামীলীগের যে বেহাল দশা তা এবার সহিংসতার ঘটনার পরে ফুটে উঠেছে।
তার মিছিলে বিভিন্ন নেতারা হাজার হাজার মানুষ নিয়ে হাজির হলেও সহিংসতা প্রতিরোধে কাউকে মাঠে দেখা যায়নি। শামীম ওসমান নিজে তার ছেলেকে নিয়ে মাঠে চলে আসলেও তার পাশে কাউকে তেমনভাবে দেখা যায়নি। অর্থাৎ তার নির্বাচনী আসনে আওয়ামীলীগের যে দৈন্যদশা ও দুর্বলতা তা এই ঘটনার মাধ্যমে ফুটে উঠেছিলো। এটা বুঝতে পেরেই শামীম ওসমান তার আসনের সাংগঠনিক দূর্বলতা ডাকতে সমাবেশের ডাক দেন। কিন্তু হয়তো কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগ অনুমতি না দেওয়ায় সমাবেশের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসতে হয় শামীম ওসমানকে। তবে রাজনৈতিক বোদ্ধারা বলছেন এভাবে সমাবেশের ডাক না দিয়ে থানা,ইউনিয়ন,ওয়ার্ড এর নেতাদের সাথে বসে দলের সমস্যা চিহ্নিত করে তা সমাধান করতে পারলেই সংগঠন শক্তিশালী হবে। তবে এবার দেখার বিষয় শামীম ওসমান পরবর্তীতে তার নির্বাচনী এলাকা নিয়ে কি ধরনের সিদ্ধান্ত নিয়ে অগ্রসর হয়।