না.গঞ্জ-৪ আসনে আ.লীগ বিএনপিতে উত্তপ্ত

যুগের চিন্তা রিপোর্ট
প্রকাশ: ১৭ আগস্ট ২০২৩, ০২:৩৪ পিএম

# সিদ্ধিরগঞ্জে অস্ত্র প্রবেশ করাচ্ছে: শামীম ওসমান
# ওনার কোনো পদপদবী নেই: গিয়াস উদ্দিন
আগামী নির্বাচনে নিয়ে রাজনীতির মাঠ এখন থমথমে। আওয়ামী লীগ বিএনপি দুই দলই রাজপথে সক্রিয় ভুমিকা পালন করছেন। বিশেষ করে নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের নিবাচনী মাঠ উত্তপ্ত হয়ে রয়েছে। এখানে কেউ কাউকে ছাড় দিচ্ছে না।
কথার লড়াইয়ে ক্ষমতাসীন দলের বর্তমান এমপি শামীম ওসমান ও বিরোধী দলের সাবেক এমপি জেলা বিএনপির সভাপতি গিয়াস উদ্দিন দুজনের মাঝে কথার লড়াই চলছে। আজকে শামীম ওসমান বললে দেখা যায় কালকে গিয়াস উদ্দিন বলে। দুই দলের শীর্ষ নেতাদের কথার লড়াই চলে আসছে।
কিন্তু যদিও বিএনপি এই সরকারের অধীনে নির্বাচনে আসবে না এমন কথা বলে আসছে। তবে তারা নির্বাচনে আসবে ধরে নিয়েই ক্ষমতাসীন দলের নেতারা প্রস্তুতি নিচ্ছে। এদিকে নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতা শামীম ওসমান একই আসনের সাবেক এমপি জেলা বিএনপির সভাপতি গিয়াস উদ্দিনকে উদ্দেশ্য করে বলেন, সিদ্ধিরগঞ্জে এমন লোক আছে যিনি এক সময় আওয়ামী লীগ।
তার পরে জাতীয় পার্টি, তারপরে আবার বিএনপি, আবার জাতীয় পার্টি, পরে আবারও বিএনপি করে। এই ধরনের লোকদের রাজনৈতিক ভাষায় পলিটিক্যাল পস্টিটিউট বলা হয়। এদের কোন আদর্শ নেই। সাংসদ শামীম ওসমান বলেন, এমন কিছু করবেন না যাতে আমাদের ধৈর্যের ভাধ ভেঙ্গে যায়। আমরা জানি অনেকেই এই এলাকায় অনেক অস্ত্র প্রবেশ করাচ্ছে।
অশান্তি সৃষ্টি করার জন্য অনেক কিছু বলছেন। একটা কথা বলে দিতে চাই আমি শামীম ওসমান এখানকার সংসদ সদস্য। ২০০১ সনের পরে আমরা কারো উপর কোন আঘাত করি নাই। কেউ যদি মনে করেন আমাদের কোন নেতাকে ক্ষতি করার চেষ্টা করবেন তাহলে মনে রাখবেন আপনাদের মাটির তল থেকে না মাটির নিচ থেকে বের করে নিয়ে আসবো।
আমার ভালো মানুষ এবং ভালো লোক দরকার। কোন আস্তান মাস্তান দরকার নাই। ভালো কাজ করতে গেলে ভালো মানুষ লাগে। যারা অনেক বড় বড় কথা বলছেন তাদের চ্যালেঞ্জ করে বলতে চাই বাংলাদেশে শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী আছেন এবং তিনি আগামীতে থাকবেন। ২০২৪ সনের নির্বাচনে দেশের মানুষ আবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেশ পরিচালনার জন্য দায়িত্ব দিবেন।
অপরদিকে নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনে সাবেক সংসদ সদস্য গিয়াস উদ্দিন আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী সাংসদ শামীম ওসমানকে লক্ষ্য করে বলেন, ওনার কোনো পদপদবী নেই। কারণ তার দলের নীতিনির্ধারকরা জানেন ওনাকে পদপদবী দিলে দলটা পঁচে যাবে। তাই ওনাকে কোনো পদপদবী দেন না। অথচ তিনি সারা জীবনই বড় বড় কথা বলে এসেছেন।
রাজনীতির নামে সন্ত্রাসকে বেছে নিয়েছেন। হুমকি ধমকি ছাড়া কথা বলাকে তিনি কোনো রাজনীতিই মনে করেন না। অথচ রাজনীতির একটি নিজস্ব ভাষা আছে, নিজস্ব সংস্কৃতি ও গতি আছে। জনগনকে সেবা দেওয়ার জন্যই রাজনীতি। অথচ তার রাজনীতির ভাষা হলো খেলা হবে, মারা হবে, কাটা হবে, জ্বালিয়ে দেয়া হবে ইত্যাদি।
তার অনুগত কর্মীরাও এক ভাষায় কথা বলেন এবং এসব কাজ করেন। তাই আমি পরিস্কার ভাবে বলবো এসব কোনো রাজনীতি নয়, এসব হলো সন্ত্রাস। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এই মুহুর্তে দেশের রাজননীতিতে যখন চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে তখন নারায়ণগঞ্জে বিএনপির এবং আওয়ামী লীগের রাজনীতিতেও চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।
কারণ এই জেলায় এখন দুটি দলের নেতৃত্ব দিতে মাঠে রয়েছেন দুই দলের দুই নেতা। গোটা জেলায় নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি হিসাবে নেতৃত্ব দিচ্ছেন আলহাজ্ব মুহম্মদ গিয়াস উদ্দিন। আর আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে নিজে থেকেই মাঠে নেমেছেন সংসদ সদস্য শামীম ওসমান। দলে তার কোনো পদ পদবী না থাকলেও তিনি নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের এমপি।
আর এই দুইজনেরই নির্বাচনী আসন হলো নারায়ণগঞ্জ-৪ আসন। একবার ২০০১ সালের নির্বাচনে এই দুই নেতার মাঝে প্রতিদ্বন্দ্বীতা হয়েছিলো। তখন ত্রিশ হাজারের বেশি ভোটের ব্যবধানে জয়ী হয়েছিলেন গিয়াস উদ্দিন। এরপর বিগত দুটি নির্বাচনে আর এই দুই নেতার মাঝে কোনো প্রতিদ্বন্দ্বীতা হয়নি।
তবে আগামী নির্বাচনে যদি অংশগ্রহনমূলক হয় তাহলে আবারও শামীম ওসমান এবং গিয়াস উদ্দিনের মাঝে প্রতিদ্বন্দ্বীতা হবে বলেই পরিস্কার বুঝা যাচ্ছে। তাই এবার গিয়াস উদ্দিন নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতির দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকেই শামীম ওসমান তাকে আক্রমন করে বক্তব্য রাখছেন।
প্রতিনিয়ত শামীম ওসমান তার প্রতিপক্ষকে হুমকি দিচ্ছেন। তবে আগামী নির্বাচনে কি হতে যাচ্ছে তফসিল ঘোষনা হলেই বুঝা যাবে নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনে কারা প্রার্থী হচ্ছে। এন. হুসেইন রনী /জেসি