
# এই সাজানো নির্বাচন করতে পারবে না : সুমন
# নির্বাচন দেশের জনগণ হতে দিবে না : সাখাওয়াত
# সরকারকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করবো : দিপু ভূঁইয়া
# খুব বেশি দূর এগোতে পারবে না : মামুন মাহমুদ
আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সাংসদ নির্বাচনের বাকি আর মাত্র এক মাস। ইতিমধ্যে আওয়ামী লীগের জোটবদ্ধ ও জোটের বাহিরে বিভিন্ন দল নিয়েই নিবার্চনের প্রস্তুতি চলমান রয়েছে। কিন্তু দেশের আরেক বড় বিরোধী দল জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি এই সরকারের অধীনে নির্বাচনে না আসার অঙ্গীকারেই অনড় রয়েছে তাদের এক দফা দাবির আন্দোলন চলতেই থাকবে বলে মন্তব্য করে আসছেন বেশ কয়েকজন বিএনপির তৃণমূল পর্যায়ের নেতারা।
এদিকে নির্বাচনে না আসা নিয়ে এক কথায় অনড় থাকায় শেষ পর্যন্ত বিএনপির অংশগ্রহণ ছাড়াই অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। গতকাল বৃহস্পতিবার মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন ছিল। বিএনপির পক্ষ থেকে কোনো আসনেই মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া হয়নি। এদিকে নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিব মো. জাহাঙ্গীর আলম ও বলে দিয়েছেন (বৃহস্পতিবার) বিকাল ৪টায় দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মনোনয়নপত্র দাখিলের সময় শেষ হয়ে গেছে।
এ অবস্থায় নির্বাচনের তফসিল পুনর্নিধারণের কোনো সুযোগ নেই।’ জানা গেছে, মনোনয়ন দাখিলের এই দিনটিকে ঘিরে দেশ জুড়ে নেতাদের সতর্ক বার্তা দিয়েছে বিএনপি। নির্বাচনে অংশ নিতে কোনো ‘কৌশল বা ফাঁদে’ না পড়ার আহ্বান জানানো হয়েছে। যদিও বড় মাপের কোনো নেতাই এখন পর্যন্ত পা বাড়ায়নি নির্বাচনের দিকে। তবে তৃণমূল বিএনপি ও বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলন (বিএনএম) ‘কাঁপন’ ধরিয়ে দিয়েছিল দলের মধ্যে।
বিশেষ করে নারায়ণগঞ্জের তৈমুর আলম খন্দকারের তৃণমূল বিএনপিতে যাওয়াটা বিস্ময়ের পাশাপাশি উদ্বেগও তৈরি করেছিল বিএনপির সর্বস্তরে। আশঙ্কা ছিল ‘মামলা-হামলায় বিপর্যস্ত কিংবা বিরোধী রাজনীতিতে ক্লান্ত’ হয়ে পড়া নেতাদের কেউ কেউ ভিন্ন দলের ব্যানারে নির্বাচনে যেতে রাজি হবে। এমন উদ্বেগের প্রধান কারণ ছিল নতুন ওই দুই দলের উদ্যোক্তারা কিছুদিন আগেও বিএনপির রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন।
এছাড়া নতুন দলগুলো গঠনের আগে বলা হয়েছিল বিএনপির অনেক নেতা তাদের সঙ্গে যোগ দেবেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এমন কিছু না হওয়ায় স্বস্তির বাতাস বইছে সরকার বিরোধী আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া এই দলটিতে। নারায়ণগঞ্জের বিএনপির বেশির ভাগ নেতাদের নানা প্রোলভন দেখানো হয়েছিলো মনোনয়ন কিনে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে। কিন্তু কোনভাবেই নেতাকর্মীরা আন্দোলন ছেড়ে অন্য দলগুলোতে যোগ দিতে আসেনি। যার কারণে বলা চলে নারায়ণগঞ্জের পাঁচটি আসনের কাউকেই তৃণমূল বিএনপি তাদের দলে আনতে পারেনি।
এছাড়া ও গতকাল মনোনয়ন দাখিলের শেষ দিনে ও সারা দেশের ন্যায় নারায়ণগঞ্জ বিএনপির নেতারা ও সতর্ক অবলম্বন করেছেন। এদিকে নেতাকর্মীরা বলছে, এই নির্বাচন কোন ভাবেই করতে সফল হবে না এই সরকার। বর্তমানে যে কঠোর আন্দোলনগুলো দিয়ে তারা এগিয়ে যাচ্ছে সামনে আরো কঠোর থেকে কঠোর কর্মসূচি দিবে আর এই সরকারকে যে কোন মূল্যে দেশের জনগণ ক্ষমতা ছেড়ে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন করতে বাধ্য করবে এমনটাই দাবি বিএনপি নেতাদের।
এ বিষয়ে বিএনপির নির্বাহী কমিটির সহ-অর্থ বিষয়ক সম্পাদক মাহমুদুর রহমান সুমন যুগের চিন্তাকে বলেন, আমরা বর্তমানে আমাদের কেন্দ্রীয় ঘোষিত আন্দোলন হরতাল-অবরোধ পালন করে আসছি। আমরা বর্তমানে এই স্বৈরাচারী সরকারের অধীনে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবো না। শুধু আমরা নয় দেশেরে জনগণ এই নির্বাচনকে প্রত্যাখ্যান করেছে। তাই আমরা মনে করছি এবার জনগণের সামনে আরো আন্দোলনে আসে আর তারা তাদের এই সাজানো নির্বাচন করতে পারবে না।
বিএনপি যেহেতু জনসম্পৃক্ত দল এই দলকে কেউ ঠেকিয়ে রাখতে পারবে না। তিনি আরো বলেন, এই যে আওয়ামী লীগের নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের এমপি শামীম ওসমান তারা দেখি নানা জায়গায় নানা ধরনের বক্তব্য দিয়ে থাকে, নির্বাচনের সময় যেহেতু আরো বাকি আছে সকলে দেখতে পারবে এমন শত শত শামীম ওসমান আর দেশে পাওয়া যাবে না।
বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান ভূঁইয়া দিপু যুগের চিন্তাকে বলেন, আজকে এই সরকারের পাতানো তফসিল অনুযায়ী মনোনয়ন দাখিলের সময় শেষ। কিন্তু আমরা তো আগেই বলে দিয়েছি এই সরকার একজন স্বৈরাচারী সরকার কোনভাবেই আমরা এই সরকারের পাতানো নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবো না। আমরা আমাদের কথায় অনড় হয়ে রাজপথে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছি।
আর এই নির্বাচন যেহেতু জনগণের ইচ্ছার বাহিরে হচ্ছে সেহেতু এই নির্বাচন হবে না বলেই আমরা আশাবাদী, আমরা এই সরকারকে তার ক্ষমতা থেকে নামাতে যে ধরনের আন্দোলন প্রয়োজন সামনে করবো আর এই সরকারকে এই ধরনের পাতানো নির্বাচন থেকে সরিয়ে তাকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করবো।
নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক সাখাওয়াত হোসেন খান যুগের চিন্তাকে বলেন, ১ দফা দাবি এই স্বৈরাচারী সরকারের পদত্যাগের দাবিতে আমরা দফায় দফায় আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছি। আগামী রবিবার ও সোমবার আমাদের বিএনপির যুগ্ম মহা-সচিব রুহুল কবির রিজভী ৪৮ ঘন্টা অবরোধের কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে। আমরা আমাদের কঠোর থেকে কঠোর আন্দোলনের মাধ্যমে এই সরকারকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করবো।
আর সামনে আমাদের আরো কঠিন আন্দোলন আসছে এ সময় আমরা এই সরকারের পাতানো নির্বাচন, মনোনয়ন খেলা দেখার আমাদের সময় নেই। আমরা এই দেশে একটি নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন পালনের লক্ষ্য নিয়েই সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি। আর এই অবৈধ নির্বাচন দেশের জনগণ হতে দিবে না।
বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য মামুন মাহমুদ যুগের চিন্তাকে বলেন, আমরা তো আগেই বলে দিয়েছি আমরা এই অবৈধ সরকারের অধীনে কোন নির্বাচনে যাবে না। আমাদের হাইকমান্ড অনুযায়ী আমরা সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি এবার এই নির্বাচন বন্ধ ও সরকারকে পদত্যাগ করতে আমাদের যে যে ব্যবস্থা নেওয়া দরকার আমরা যথাযথ ভাবেই নিয়ে থাকবো।
ইতিমধ্যে আমাদের আবারো অবরোধ কর্মসূচি এসেছে সামনে যদি কোন ঘেরাও কর্মসূচি দেয় তাও আমারা জাতীয়তাবাদীর সৈনিকরা পালন করতে একাত্মতা বোধ করবো। আর দেশের জনগণ এই সরকারের বিরুদ্ধে যেভাবে ফুঁসে উঠেছে আমরা মনে হয়, এভাবে অবৈধ নির্বাচন ও মনোনয়ন বাণিজ্যে করে বেশি একটা দূরে যেতে পারবে না সরকার তাদের পতন অনিবার্য। এস.এ/জেসি