Logo
Logo
×

রাজনীতি

প্রার্থী বাছাইয়েও প্রতিযোগিতা 

Icon

লতিফ রানা

প্রকাশ: ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৮:৩৬ পিএম

প্রার্থী বাছাইয়েও প্রতিযোগিতা 
Swapno

 

# নৌকা ও লাঙ্গলের সিদ্ধান্ত বিএনপির অংশগ্রহণের উপর নির্ভর করবে
# সাংগঠনিক দুর্বলতা কাটাতে নৌকার বিকল্প নেই বলে তৃণমূলের ধারণা
# আইভী এমপি নির্বাচন করলে মেয়রের জন্য খুঁজতে হবে যোগ্য প্রার্থী
# দলীয় প্রধানের সিদ্ধান্তের জন্য শেষ মুহুর্ত পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে

 

 

তিন টার্ম যাবৎ জাতীয় পার্টির দখলে নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনটি। এই আসনটি পুনরুদ্ধারে সোচ্চার সদর বন্দরের আওয়ামী লীগসহ নারায়ণগঞ্জ আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতৃবৃন্দ। কেন্দ্র তাদের ডাকে গ্রীন সিগন্যাল দিয়েছে বলেও জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারক পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ। এর ফলে দীর্ঘ দিন যাবৎ জাতীয় পার্টির দখলে থাকা এই আসনটি এবার তাদের হাতছাড়া হচ্ছে বলে মনে করেন রাজনৈতিক মহল।

 

তাতে করে এই আসনটির প্রার্থী বাছাই এবং মনোনয়ন নিয়ে অনেক ধরণের সমীকরণের মুখোমুখি হতে হবে বলে মনে করেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকগণ। একদিকে আওয়ামী লীগ যদি আলাদা প্রার্থী দেয় তাহলে জাতীয় পর্টির সাথেও তাদের প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নামতে হবে। কিন্তু এই আসন থেকে সেলিম ওসমান যদি আবার নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করেন তাহলে সমীকরণ হবে আরেক রকম। আবার বিএনপি যদি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে তাহলে আওয়ামী লীগ এবং জাতীয় পার্টির জোট বহাল থাকারও সম্ভাবনা আছে বলে মনে করেন তারা।

 

তবে এই আসন থেকে যদি আওয়ামী লীগ আলাদা প্রার্থী দেয় এবং প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে সেলিম ওসমান ও বিএনপি থাকে তাহলে নির্বাচন ধারা হবে এক রকম। কিন্তু নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের (নাসিক) বর্তমান মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী যদি নৌকা নিয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন তাহলে সেই সমীকরণ হবে আরেক রকমের। এর মধ্যে আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টি ছাড়াও এই আসনে নাগরিক ঐক্য ও তৃণমূল বিএনপির প্রার্থীও ভূমিকা রাখতে পারে বলে মনে করছেন অনেকে।

 

তবে সেটা নির্ভর করবে তৃণমূল বিএনপিতে নব যোগদান করা অ্যাডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকারকে নারায়ণগঞ্জ-৫ আসন থেকে নাকি নারায়ণগঞ্জ-১ আসন থেকে মনোনয়ন দেন তার উপর। অর্থাৎ বিএনপির নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা, তৃণমূল বিএনপির এই আসন থেকে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা এবং নাগরিক ঐক্যের সাথে বিএনপির সমঝোতা, এসব কিছুর উপর অনেকটাই নির্ভর করবে এই আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন নির্বাচনের পদ্ধতি।

 

অর্থাৎ এবারও এই আসন থেকে আওয়ামী লীগ জাতীয় পার্টির সাথে সমঝোতা করবে কি না, কিংবা আওয়ামী লীগের প্রার্থী বাছাই পদ্ধতিও এইসব অনেক যদি ও কিন্তুর উপর নির্ভর করবে বলে মনে করছেন নারায়ণগঞ্জের রাজনৈতিক বিশ্লেষকগণ।

 

নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন রাজনৈতিক সূত্রসহ বিভিন্ন মিডিয়ায় প্রকাশিত সংবাদের উপর ভিত্তি করে জানা যায়, নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে আওয়ামী লীগের নির্বাচন বা মনোনয়নের বিষয়ে নির্বাচনের আগ মুহুর্ত পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হতে পারে। এখান থেকে যদি আওয়ামী লীগ এবং জাতীয় পার্টি আলাদা নির্বাচন করে তাহলে তাহলে এই আসন থেকে প্রার্থী হওয়ার জন্য প্রচার প্রচারণা চালানোসহ প্রার্থী হতে ইচ্ছুকদের তালিকায় আছেন আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা।

 

তাদের মধ্যে রয়েছেন মহানগর আওয়ামী লীগ সভাপতি আনোয়ার হোসেন, আওয়ামী লীগের জাতীয় পরিষদের সদস্য এডভোকেট আনিসুর রহমান দিপু, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুল হাই, সাধারণ সম্পাদক আবু হাসনাত মো. শহীদ বাদল (ভিপি বাদল)সহ জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা। এরই মধ্যে আবার সম্প্রতি নাসিক মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভীর একটি বক্তব্যে অনেকেই আবার প্রার্থীর তালিকায় তার নামও সংযুক্ত হওয়ার সম্ভাবনা আছে বলে মনে করছেন।

 

এমনকি অনেকেই আবার ধারণা করছেন মেয়র আইভী কেন্দ্র থেকে কোন গ্রীন সিগন্যাল পেয়েই এমন ইঙ্গিত দিয়েছেন। আবার কেউ কেউ বলছেন এবারের নির্বাচনে এই আসন থেকে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়া কতটা প্রয়োজন তা বোঝাতেই মেয়র এমন বক্তব্য দিয়েছেন।

 

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে এই আসন থেকে আওয়ামী লীগের পক্ষ হতে কাকে মনোনয়ন দেওয়া হবে সেই সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে অনেকগুলো সমস্যার সমাধান বের করতে হবে। এর মধ্যে রয়েছে প্রথমত: এবারের নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করবে কি না, দ্বিতীয়ত: এই আসন থেকে আওয়ামী লীগ নৌকা প্রতীকের মনোনয়ন দিবে কি না, তৃতীয়ত: সেলিম ওসমান জাতীয় পার্টির লাঙ্গল প্রতীক নিয়ে আলাদা নির্বাচন করবেন নাকি নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করবেন, চতুর্থত: মেয়র পদে যোগ্য কোন নেতৃত্ব খুঁজে আইভীর হাতে এই আসনের মনোনয়ন তুলে দিবেন কি না।

 

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে যদি এমন হয় যে, বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করুক আর না করুক এই আসন থেকে আলাদা নৌকা প্রতীক মনোনয়ন দেওয়া হবে, আইভী মেয়র হিসেবেই থাকবেন এবং সেলিম ওসমান জাতীয় পার্টিতেই থাকবেন, তখনই কেবল এই আসন থেকে আওয়ামী লীগের নতুন কোন মুখকে দেখা যাবে নৌকা প্রতীকের কান্ডারী হতে। আর এজন্যই এই আসন থেকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হওয়ার ইচ্ছুক এমন কোন নেতা বা কর্মী এখন পর্যন্ত জোর দিয়ে নির্বাচনী প্রচারণায় নামতে পারেননি।

 

সার্বিকভাবে সবাই শুধু দলীয় উন্নয়ন ও দলের জয়ের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন এবং নিজেদের ভক্ত ও সমর্থকদের নাম দিয়ে পরোক্ষভাবে প্রচারণা করে দলীয় সিদ্ধান্তের অপেক্ষা করতে দেখা গেছে। কেননা প্রত্যক্ষভাবে নিজেদের ইচ্ছের প্রকাশ করতে গিয়ে যদি আবার দলীয় বিরাগভাজনের শিকার হতে হয়।

 

তাই নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে আলাদা নৌকা প্রতীক দেওয়া হবে কিনা কিংবা আওয়ামী লীগের আগামী দিনের কান্ডারী কে হচ্ছেন তা জানার জন্য দেশের রাজনৈতিক অবস্থা যাচাই-বাছাইসহ শেষ মুহুর্ত পর্যন্ত দলীয় প্রধানের সিদ্ধান্তের জন্য অপেক্ষা করতে হবে নারায়ণগঞ্জ আওয়ামী লীগকে। এস.এ/জেসি
 

Abu Al Moursalin Babla

Editor & Publisher
ই-মেইল: [email protected]

অনুসরণ করুন