রোববার   ০৬ অক্টোবর ২০২৪   আশ্বিন ২১ ১৪৩১

বালু খেকো-পুলিশ হত্যা মামলার ট্যাগ নিয়ে বিপাকে স্বপন

যুগের চিন্তা রিপোর্ট

প্রকাশিত: ১৭ মে ২০২৪  

 

 

# আড়ালে হুইপ বাবু, ভোটাররাও মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে

 

আড়াইহাজার উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের একসপ্তাহেরও কম সময় বাকি। শেষ সময়ে প্রচারনায় ব্যাস্ত সময় পার করছেন প্রার্থীরা। এ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে  প্রার্থী তিনজন হলেও মূল প্রতিদ্বন্ধীতা মূলত হুইপ বাবু সমর্থিত প্রার্থী ঘোড়া প্রতীকের সাইফুল ইসলাম স্বপন ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান দোয়াত কলম প্রতীকের শাহজালাল মিয়ার মধ্যো।


তথ্যমতে, হুইপ সমর্থিত প্রার্থী সাইফুল ইসলাম স্বপন সম্পর্কে রয়েছে তুমুল বিতর্ক। তিনি তার নিজ ইউনিয়ন কালাপাহাড়িয়ায় সর্বশেষ ইউপি নির্বাচনে নৌকার মনোনয়ন পেয়েও বিপুল ভোটের ব্যাবধানে পরাজিত হয়েছেন। অর্থাৎ তিনি তার নিজ ইউনিয়নেই মানুষের আস্থা অর্জন করতে সমর্থ হননি। এর নেপথ্যে কারণ খুঁজতে গেলে বেড়িয়ে আসে বিভিন্ন তথ্য।


তথ্যমতে, ঘোড়া প্রতীকের প্রার্থী সাইফুল ইসলাম স্বপন কালাপাহাড়িয়ায় মেঘনা নদীতে শত শত ড্রেজার বসিয়ে বালু মহলের সম্রাট হিসেবে খ্যাতি পেয়েছে। এতে করে তীব্র ভাঙ্গনের সম্মুখীন হয়েছে এই নদী। হুমকির মুখে পরেছে কালাপাহাড়িয়া ইউনিয়নসহ আশেপাশের ইউনিয়নগুলো। শুধু তাই নয়।  ২০১৭ সালের ১ সেপ্টেম্বর ঢাকা মহানগর পুলিশের কাউন্টার টেররিজম এন্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের কনস্টেবল রুবেলকে হত্যার অভিযোগ উঠে এ প্রার্থীর বিরুদ্ধে। 

 

এ হত্যাকান্ডে নিহতের বড় ভাই মো.কামাল হোসেন বাদী হয়ে এই প্রার্থীকে প্রধান আসামী করে ৩২ জনের নাম উল্লেখ্যসহ অজ্ঞাত পরিচয়ে আরো ২০-২৫ জনকে আসামী করে হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে মামলা করেন। এ মামলাটি জেলা গোয়েন্দা পুলিশ(ডিবি) পুলিশ তদন্ত করছিলো। তখন ডিবি পুলিশ অভিযান চালিয়ে হত্যা মামলায় জড়িত সন্দেহে মনির হোসেন, রফিক, হৃদয় ওরফে টেন্ডুল ও কাশেমকে গ্রেফতার করে। পরে আদালতের নির্দেশে মামলাটি পিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ দেন। এ মামলায় গ্রেফতারকৃত আসামী পাভেল,শাহিন,ইয়াসিন ও সিরাজ মিয়া ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দেন।


তারা জবানবন্দীতে বলেন, কালাপাহাড়িয়া ইউনিয়ন এর চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম স্বপন এর হুকুমে ও প্রত্যক্ষ নেতৃত্বে আগ্নেয়াস্ত্র , দেশীয় তৈরি রামদা ,চাপাতি,চাইনিজ কুড়ালসহ রুবেলদের বাড়ি ঘেরাও করে তারা চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম স্বপন এর প্রত্যক্ষ নির্দেশে সবাইকে কুপিয়ে জখম করেন। এর মধ্যো চেয়ারম্যান স্বপন নিজে উপস্থিত থেকে সেখানে কয়েক রাউন্ড করেন।

 

এ সময় ছুটিতে আসা কন্সটেবল রুবেলকে হত্যা নিশ্চিত করে তারা চলে যায়। তবে গ্রেফতারকৃত আসামীরা ১৬৪ ধারায় চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম স্বপন এর সরাসরি সংশ্লিষ্টতার কথা স্বিকার করলেও স্থানীয় সাংসদের ঘনিষ্ঠজন হওয়ায় চেয়ারম্যানকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেন নিহতের পরিবার।


শুধু এ দুটি ঘটনাই নয়। এ প্রার্থীর নামের পাশে রয়েছে এমন বহু বিতর্ক। এর ফলে এই প্রার্থীর নাম শুনলেই ভয়ে আঁতকে উঠে কালাপাহাড়িয়াবাসী। তারা বলছে এ প্রার্থী যদি উপজেলায় জয়লাভ করে তবে খারাপ সময় অপেক্ষা করছে উপজেলাবাসীর জন্য। এমন একজন প্রার্থীকে স্থানীয় সাংসদ উপজেলা নির্বাচনে সমর্থন দেওয়ায় এ  নিয়ে উপজেলা আওয়ামীলীগ সহ সকল স্তরের মানুষ অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন।

 

তারা বলছে সাইফুল ইসলাম স্বপন ছাড়া বহু যোগ্য ত্যাগী নেতাকর্মী ছিলো এ উপজেলায়। কিন্তু তিনি এমন একজনকে সমর্থন দিলেন যাকে নিয়ে বিতর্কের শেষ নেই। অন্যদিকে বালু মহলের সম্্রাট হিসেবে ও পুলিশ হত্যা মামলার যে দাগ তার নামের পাশে রয়েছে এ নিয়ে তীব্র সমালোচনা হওয়ায় তিনি রয়েছেন চরম বিপাকে। শুধু তাই নয় সাধারন ভোটাররাও তাকে বয়কট করেছে। এর ফলে এ নির্বাচনে মানুষ জদি ভোট দিতে যেতে পারে ও নির্বাচন জদি শুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হয় তবে দোয়াত কলম প্রতীকের প্রার্থী বিপুল ভোটের ব্যাবধানে জয়ী হবেন এমনটাই বলছে তারা।

এই বিভাগের আরো খবর