Logo
Logo
×

রাজনীতি

বিএনপিকে পাত্তা দিচ্ছে না জেলা স্বেচ্ছাসেবক দল

Icon

যুগের চিন্তা রিপোর্ট

প্রকাশ: ২৩ মার্চ ২০২৪, ০৪:৩৩ পিএম

বিএনপিকে পাত্তা দিচ্ছে না জেলা স্বেচ্ছাসেবক দল
Swapno

 

# চার মাস যাবৎ লাপাত্তা আহ্বায়ক মাহবুব

 

নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির ভ্যানগার্ড হিসেবে সুপরিচিত নারায়ণগঞ্জ জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতাকর্মীরা বর্তমানে বিএনপিকে পাত্তাই দিচ্ছে না। কঠোর আন্দোলন থেকে শুরু করে বর্তমানে সাংগঠনিক কার্যক্রমে গতি ফিরিয়ে আনতে ইফতার রাজনীতিতে অনেকটাই পিছপা হয়ে আছেন জেলা স্বেচ্ছাসেবক দল। জানা গছে, নানা কারণে নয়া কমিটি গঠনের পরপরই অযোগ্য নেতাকে আহ্বায়ক করায় সেই পুরনো জৌলুস হারিয়েছে জেলা স্বেচ্ছাসেবক দল। সংগঠনটিকে বিএনপির ভ্যানগার্ড মনে করা হলেও সাম্প্রতিক আন্দোলন কর্মসূচিতে আহ্বায়ক বেখেয়ালি পনায় সেই চিত্র অনেকটা মলিন ছিল না।

 

বহু নেতাকর্মীর ভাষ্য অনুযায়ী জানা গেছে, বিগত দিনে সায়েম ও মাহবুবের কমিটিতে সব সময় দেখা মিলেছে নানা দ্বিধাদ্বন্দ্ব। তারপরে ও বর্তমানে এই গুরুত্বপূর্ণ সময়ে মাহবুবকে সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে তুলে পূণরায় আহ্বায়কের পদে দিয়ে জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলকে দুর্বল করে দেওয়া হয়েছে। যার কারণে বর্তমানে তিন সদস্যের গঠিত সংগঠন ৪ মাস যাবৎ দুই সদস্যের সংগঠনে পরিণত হয়েছে। দফায় দফায়কৃত আন্দোলনে রাজপথে বা স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতাকর্মীদের দিক নির্দেশনা দিতে মাঠে ছিলেন জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব সালাহউদ্দিন সালু ও সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক রফিকুল ইসলাম রফিক।

 

এদিকে জানা গেছে, সোনারগাঁ ও রূপগঞ্জের বিভিন্ন থানার আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরাই সেই মাহবুবের আত্মীয় স্বজন যার কারণে বিএনপি থেকে আওয়ামী লীগের লোকদের সাথেই তার বেশি উঠা বসা। যাকে ঘিরে উনি এই দ্বাদশ নির্বাচনে ও রূপগঞ্জের কেটলী মার্কার পরাজিত প্রার্থী শারজাহান ভূইঁয়ার পক্ষে গোপনে কাজ করার অভিযোগ ও রয়েছে। যাতে করে বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য কাজী মনিরুজাম্মান মনিরের ঘনিষ্ঠ এই মাহবুবুর রহমান বর্তমানে বিএনপিকে বা বিএনপির কোন আন্দোলন ও সভা সমাবেশকে পাত্তাই দিচ্ছেন না।

 

যার পরিপ্রেক্ষিতে মাহবুব সমর্থিত নেতারা ও জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা হতাশাগ্রস্থ হয়ে পরছেন। অপর দিকে নির্বাচন ঠেকাতে কঠোর আন্দোলনে রাজপথে থাকা বিএনপির নেতাকর্মীদের আবারো চাঙ্গা করতে কেন্দ্রীয় নির্দেশনা অনুযায়ী ইফতার রাজনীতি ব্যর্থ হয়ে পরেছেন বিএনপির মূল দল থেকে অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরাসহ অনেকেই।

 

এদিকে গতকাল রূপগঞ্জের একটি ইউনিয়নে জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের একটি ব্যানারে ইফতার পার্টির আয়োজন করা হলে ও সেখানে দেখা যায়নি আহ্বায়ক মাহবুবুর রহমানকে। যা নিয়ে বর্তমানে নানা প্রশ্ন নেতাকর্মীদের কাছে ঘুর পাক খাচ্ছে জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক কি মামলা-হামলার ভয়ে বিএনপি ছেড়ে দিলেন। তা ছাড়াও বর্তমানে যারা রাজপথে উপস্থিত আছেন তারা ও বেশি একটা  অ্যাকটিভ নয়। তাদের রাজপথে আহ্বায়কবিহীন থেকেই দল গোছানোর কাজ করলে সামনে জেলা স্বেচ্ছাসেবক দল আরো শক্তিশালী হয়ে উঠবে।

 

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের জুলাই মাসে একদফার আন্দোলনের ঘোষণা দিয়েছিল জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি। পরবর্তী সময়ে রাজধানীসহ সারা দেশে কঠোর কর্মসূচি পালন করে দলটি। যুগপৎভাবে একই কর্মসূচি পালন করেছে সমমনা ৩৬টি দলও। সেই পরিপ্রেক্ষিতে গত ২৮ অক্টোবর থেকে ৭ জানুয়ারির দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন পর্যন্ত হরতাল, অবরোধসহ অসহযোগ আন্দোলনও পালন করেছে দলগুলো। যাকে ঘিরে নাশকতা মামলা আসামী হয়েছিলেন বিএনপির শীর্ষপদের নেতাকর্মীদের থেকে শুরু প্রতিটি জেলা, থানা, ইউনিয়ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা।

 

যার বর্তমানে ২ মাস কেউ ৩-৪ মাস পর এসে কারামুক্ত হচ্ছেন এমনকি এখনো বহু নেতাকর্মীরা কারাবন্দি রয়েছেন। আবার অনেকে বর্তমানে উচ্চ আদালতে আগাম জামিন পেতে আবেদন করে রেখেছেন। জামিন না হওয়ায় অনেকেই রাজপথে আসতে পারছে না। কিন্তু জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক আন্দোলনে না থেকে ও আহ্বায়কের পদে থাকার জোরে মামলার আসামী হলেও নানাভাবে নানা প্রভাবশালীদের মাধ্যমে নিজের জামিন ঠিকই করিয়ে ফেলেছেন। কিন্তু স্বেচ্ছাসেবক দলের কর্মীরা কারা মামলা খেলেন, কারা এখনো কারামুক্ত হয়নি সেদিকে কোন প্রকারের পাত্তাই দিচ্ছেন না তিনি। এদিকে মামলায় জামিন পেয়েও এখনো কেন মাহবুব রাজপথে ফিরে আসছে না তা নিয়ে নানা প্রশ্ন করে যাচ্ছেন তারই সংগঠনের বহু নেতাকর্মীরা।

 

এদিকে গত বছরের (২৯ আগস্ট) রাতে জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি এস এম জিলানী ও সাধারণ সম্পাদক রাজীব আহসান এই কমিটি অনুমোদিত একটি প্রেস রিলিজের মাধ্যমে নারায়ণগঞ্জ জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের তিন সদস্য বিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়। কমিটিতে আহ্বায়ক পদে আতিষ্ঠ হন জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মাহাবুবুর রহমান, সদস্য সচিব সালাহউদ্দিন সালু ও সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক রফিকুল ইসলাম রফিক।

 

কমিটি গঠনের পর থেকে আন্দোলন সংগ্রামে ২ বা ৩ মাস ঐক্যবদ্ধ হয়ে রাজপথে ব্যাপকভাবে থাকলে ও এরপর থেকে সংগঠনে সেই বিগত কমিটির মতো করেই দ্বন্দ্ব সৃষ্টি করেন আহ্বায়ক মাহবুবুর রহমান। যার কারণে সদস্য সচিব সালাউদ্দিন সালু ও সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক রফিকুল ইসলাম রফিক এক হয়ে সাংগঠনিক গতিশীলে কাজ করতে থাকেন। কিন্তু গত ২৮ অক্টোরের পর থেকে নারায়ণগঞ্জ থেকে জেলা বিএনপির ন্যায় ভ্যানগার্ড খ্যাত জেলা স্বেচ্ছাসেবক দল ও উধাও হয়ে থাকলে ও তা আবারো সদস্য সচিব ও সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়কের হাত ধরে সাংগঠনিক ভাবে চাঙ্গা হওয়ার আলোচনা চলমান রয়েছে। এস.এ/জেসি
 

Abu Al Moursalin Babla

Editor & Publisher
ই-মেইল: [email protected]

অনুসরণ করুন