Logo
Logo
×

বিশেষ সংবাদ

বিএনপি কাউন্সিলর ইকবালের ব্যবসা পরিচালনায় আ.লীগের ইয়াছিন

Icon

যুগের চিন্তা রিপোর্ট

প্রকাশ: ০১ আগস্ট ২০২৪, ১১:৪১ পিএম

বিএনপি কাউন্সিলর ইকবালের ব্যবসা পরিচালনায় আ.লীগের ইয়াছিন

 

 

# বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে ১০ মামলার আসামী ইকবাল
# ভাড়া থেকে পার্সেন্টেজ পান ইয়াছিন

 

বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সারাদেশ আজ উত্তপ্ত পরিবেশ। কোটা সংস্কার আন্দোলন গত ১৫ জুলাই ছাত্রলীগের হামলায় সহিংসতায় রূপ নেয়। বিশেষ করে ১৮ এবং ১৯ জুলাই নারায়ণগঞ্জ সহ সারাদেশে ছাত্র আন্দোলনকে সুযোগ হিসেবে নিয়ে বিএনপির নেতাকর্মীরা হামলা,ভাংচুর, তাণ্ডব,আগুন দিয়ে জালিয়ে পুড়িয়ে পুরো শহরকে তছনছ করে। বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গত ১৯ জুলাই সাইনবোর্ড, চিটাগাংরোড, পাসপোর্ট অফিসে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির সেক্রেটারি ও নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ২ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ইকবালের নেতৃত্বে ভাংচুর হামলা চালানো হয়। 

 

অভিযোগ রয়েছে বিএনপি নেতা এই ইকবাল সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সেক্রেটারি ইয়াছিনের শেল্টারে দাপটের সাথে অপকর্ম চালিয়েও পার পেয়ে যায়। তেমনি ভাবে বিএনপি ক্ষমতা থাকা কালিন সময়ে তার চেয়ে বেশি সুবিধা পেয়ে থাকেন আওয়ামী লীগের ইয়াছিন।

 

এ দিকে গত ১৯ জুলাই চিটাগাংরোড এলাকায় বিএনপির নেতা ইকবালের সন্ত্রাসী বাহিনীর তান্ডবে নারায়নগঞ্জের একাধিক নারী সাংবাদিককে লাঞ্চিত করা হয়। এমনকি ১৯ জুলাই চিটাগাংরোড মা হাসপাতালের ভবনের সামনে বিএনপি নেতা ইকবাল নিজে দাড়িয়ে থেকে তার বাহিনী দিয়ে আগুন জালিয়ে দেন। এছাড়া নারী সাংবাদিকদের শ্লীলতাহানি করেন। এ যাবত স্মরণকালের সবচেয়ে বড় তাণ্ডব চালানো হয়।

 

গত ১৮ এবং ১৯ জুলাইয়ে। যেখানে নারায়ণগঞ্জে পাসপোর্ট অফিস পোড়ানো সহ পুলিশের পিবিআই অফিসের জালাও পোড়াও,ভাংচুর ঘটনায় নেতৃত্ব এবং অর্থ দিয়েছে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নাসিক কাউন্সিলর ইকবাল হোসেন। এই হামলার পর থেকে বিএনপির তান্ডকারীতে নেতৃত্ব দেয়া নেতা পলাতক রয়েছে। কিন্তু সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সেক্রেটারি ইয়াছিন সহ তার সহযোগিদের সাথে ইকবারে সখ্যতা থাকায় বিএনপি নেতা বব্যসা বানিজ্য পরিচালনায় কিংবা তার মালিকানাধীন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ভাড়া তোলা নিয়ে কোন চিন্তা করতে হয় না। 

 

কেননা স্থানীয়রা জানান বিএনপি নেতা ইকবালের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান সহ তার মালিকানাধীন স্থাপনায়  বা তার সম্পত্তিতে যে সকল প্রতিষ্ঠান ভাড়া রয়েছে সেগুলোর ভাড়া তুলেন আওয়ামী লীগ নেতা ইয়াছিনের লোকজন। তার সাথে ইয়াছিনের ভাই আবুল রয়েছে পরিচালনায়। একাধিক সুত্রমতে, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির সেক্রেটারি ইকবালের সাথে ওই থানার আওয়ামী লীগের সেক্রেটারি ইয়াছিনের সাথে গোপন চুক্তি রয়েছে। যার থেকে টাকার ভাগ ইয়াছিন পেয়ে থাকেন।

 

সিদ্ধিরগঞ্জের ক্ষমতাসীন দল সহ বিএনপির একাধিক কর্মী নেতাকর্মী নাম গোপন রাখার শর্তে জানান, সিদ্ধিরগঞ্জের ২ নম্বর ওয়ার্ডে বিএনপি সেক্রেটারি ইকবালের মালিকানাধীন সম্পত্তিতে ১২ থেকে ১৫ টি বিভিন্ন ধরনের ফ্যাক্টরী থেকে অর্ধকোটি টাকার মত ভাড়া পান। এছাড়া কয়েকটি প্রতিষ্ঠানে ইকবালে নিজে পার্টনারশিপ হিসেবে মালিক রয়েছেন। সেখান থেকে তার মোটা অংকের টাকা ফান্ডি আসে।

 

 তিনি যখন নানা জালাও পোড়াও মামলায় আসমাী হয়ে পলতাক থাকেন তখন এই সকল প্রতিষ্ঠানের ভাড়া ইয়াছিনের লোকজন টাকা তুলে তার কাছে এনে জমাদেন। আর সেই টাকা থেকে একটি অংশ থানা আওয়ামী লীগের সেক্রেটারি ইয়াছিন পেয়ে থাকে। ইকবালে ভাড়া পাওয়া প্রতিষ্ঠান গুলো হলো,

 

সিদ্ধিরগঞ্জ মিজমিজি মাদরাসা রোড হাজেরা সুপার মার্কেট একালাছুর রহমানের সিনথিয়া ক্যামিকেল এবং মিজমিজি মাদরাসা রোড মাইছ বাজার এলাকায় হারুন মিয়ার সোনালি কয়েল প্রতিষ্ঠানের মালিকানার অংশীদার রয়েছে বিএনপির সেক্রেটারি ইকবালের। এই দুই প্রতিষ্ঠান থেকে মাসে প্রায় ১৫ থেকে ২০ লাখ আসে বলে জানান একাধিকসুত্র। এছাড়া সিদ্ধিরগঞ্জ মিজমিজি মাদরাসা রোড হাজেরা মার্কেট মোড় হারুন মিয়ার মালিকানাধানী সোনালী কয়েল (২) ইকবালের কাছ থেকে ভাড়া নিয়ে ব্যবসা পরিচালনা করা হচ্ছে।

 

 এ্কই মালিকের মিজমিজি মাদরাসা রোড, হাজেরা মাকের্ট ডানদিক সোনালী কয়েল ফ্যাক্টরী ৩ পরিচালনা করে আসছেন। মিজমিজি মাদরাসা রোড, ছাদেম হাজী খামার সংলগ্ম সাইফুল মিয়া ইকবালের কাছ থেকে ভাড়া নিয়ে মাইন কয়েল ফ্যাক্টরী পরিচালনা করে আসছেন। তাছাড়া কামাল হোসেন সালু হাজী রোড চিশিÍয়া বেকারির পিছনে ইকবালের কাছ থেকে ভাড়া নিয়ে পাগলা কয়েল ফ্যাক্টরী চালান। 

 

মিজমিজি মাদরাসা রোড হাজেরা মার্কেটে ইসমাইল হোসেনেরে মালিকানাধীন রিফাত স্টীল খানাডুলি ফ্যাক্টরী বিএনপি নেতার কাছ থেকে ভাড়া নিয়ে প্রতিষ্ঠান চালান। এছাড়া একই এলাকায় মামা ভাগিনা খানাডুলি ফ্য্ক্টারী নামে আরেকটি প্রতিষ্ঠান চালান তিনি। মিজমিজি মাদরাসা রোড, হাজেরা মার্কেটে মা ফাতেমা স্টীল খানাডুলি ফ্যাক্টরী ভাড়াটিয়া আমির মিয়া পরিচালনা করেন। 

 

একই এলাকায় মা স্টীল খানাডুলি ফ্যাক্টরী ভাড়াটিয়া ইব্রাহীম চালান। প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের বিল্ডিং সেইড ভাড়া নেন থানা বিএনপির সেক্রেটারি ইকবালের কাছ থেকে। সবকটি প্রতিষ্ঠান থেকে প্রায় অর্ধকোটি টাকার ভাড়া পান ইকবাল। এই প্রত্যেকটি প্রতিষ্ঠানে অবৈধ ভাবে গ্যাস লাইন চালানো হয়। তাছাড়া কোন কোন প্রতিষ্ঠানে অবৈধ বিদ্যুৎ লাইন পর্যন্ত রয়েছে। অবৈধ গ্যাস লাইনের পিছনে থানা আওয়ামী লীগের সেক্রেটারি ইয়াছিন পিছন থেকে শেল্টারদেন। 

 

তাছাড়া এই প্রতিষ্ঠান গুলোতে কোন হামলা কিংবা জামেলা হলে তা ইয়াছিন এবং তার ভাই আবুল গিয়ে মিটমাট করেন। মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক শাহ নিজামের নমপার্কে হামলা হলেও ইকবালের কোন প্রতিষ্ঠানে হামলা হয় না। যখনি কেউ হামলা করতে যায় তখনি ঢাল হিসেবে আওয়ামী লীগের সেক্রেটারি ইয়াছিন এসে সামনে দাড়ান। আর তখন তার ভয়ে সরে যেতে হয়ে।

 

অপরদিকে সম্প্রতি বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে বিএনপির সিদ্ধিরগঞ্জ থানা সেক্রেটারি ইবকবাল জেলার বিভিন্ন থানায় জালাও পোড়াও আগুনের তান্ডবে ১০ টি মামলার প্রধান আসামী হয়ে পলাতক রয়েছে। এই হামলায় তিনি নিজে নেতৃত্ব দিয়ে আওয়ামী লীগন নেতার শেল্টারে দাপটে চলাচল করেন। আর তার মত ব্যক্তিদের শেল্টার দিয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সেক্রেটারি ফায়দা নিয়ে থাকেন। 

 

গোপন চুক্তির বিনিময়ে এই সকল প্রতিষ্ঠান থেকে ভাড়া তুৃলে ইকবালের কাছে পাঠান ইয়াছিন। আবার সেই টাকা আওয়ামী লীগকে ক্ষমতা থেকে হটানোর জন্য খরচ করা হয়ে থাকে। কিন্তু এখানে ক্ষমতাসীন দলের নেতাদেরই শেল্টার থাকে তা কে জানে।

 

দলীয় সূত্রমতে জানাযায়, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সেক্রেটারি ইয়াছিন মিয়া তৎকালিন সময়ে বর্তমান জেলা বিএনপির সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা গিয়াস উদ্দিনের হাত ধরে রাজনীতিতে পদার্পণ করেন। তখন গিয়াস উদ্দিন কেন্দ্রীয় কৃষকলীগের নেতা ছিলেন। পরবর্তিতে তিনি বিএনপিতে চলে গেলেও তার শীর্ষ ইয়াছিন আওয়ামী লীগে থেকে যায়। এছাড়া সিদ্ধিরগঞ্জের রাজনীতিতে তারা গুরু শীর্ষ হিসেবেও পরিচিত।

 

 এখনো তাদের মাঝে গভীর সখ্যতা রয়েছে। ২০০১ থেকে ২০০৬ পর্যন্ত বিএনপি ক্ষমতা থাকা কালিন সময়ে ইয়াছিন আওয়ামী লীগের নেতা হয়েও দিব্যি চলাফেরা করেছে। তার নামে তেমন কোন মামলাও হয় নাই তখন। সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও ২ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. ইকবাল হোসেনের সাথে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সেক্রেটারি ইয়াছিন মিয়ার সাথে আত্মীয়তার সম্পর্ক রয়েছে। 

 

সম্পর্কে ক্ষমতাসীন দলের সেক্রেটারি ইয়াছিন মিয়ার মেয়ের উকিল বাব হন থানার বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন। এমনকি এই বিএনপি নেতা আওয়ামী লীগ নেতার কন্যাকে পাঁচ কাটা জায়গা পর্যন্ত দেন বলে জানান স্থানীয়রা। যা নিয়ে আওয়ামী লীগ বিএনপির নেতা কর্মীদের মাঝে ব্যাপক আলোচনা হচ্ছে। 

 

তাই দলের এমন দুঃসময়ে ইয়াছিনের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার দাবী উঠেছে। তাছাড়া তাকে দল থেকে তৃনমুল নেতাকর্মীরা বয়কট করা আহ্বান জানিয়েছেন। এবিষেয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সেক্রেটারি ইয়াছিনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তার নাম্বার বন্ধ পাওয়া যায়।

Abu Al Moursalin Babla

Editor & Publisher
ই-মেইল: [email protected]

অনুসরণ করুন