রোববার   ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪   ভাদ্র ৩০ ১৪৩১

মানুষের ক্ষোভ এড়াতে এলাকা ছেড়েছেন যারা

যুগের চিন্তা রিপোর্ট

প্রকাশিত: ২৬ আগস্ট ২০২৪  

 

 

# পুরো ফতুল্লাতেই নানা অপরাধের বিশাল নেটওয়ার্ক

# টাকার ভাগ পেতেন না.গঞ্জের গডফাদার শামীম ওসমান

 

কোটা আন্দোলনকারী সাধারণ শিক্ষার্থী ও সাধারন জনগণের এক দফা দাবির তোপের মুখে পড়ে গত ৫ আগষ্ট বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পালিয়েছেন। তার দেশ ছাড়ার সাথে সাথে বেশ কিছু এমপি মন্ত্রী দেশ ছেড়েছে। এমনকি কোন কোন এমপি, মন্ত্রী, আওয়ামী লীগ নেতারা দেশেই বিভিন্ন স্থানে পলাতক হয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। ইতিমধ্যেই সারাদেশে ১২ সিটি মেয়র  ৪৯৩ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, ৩২৩ পৌরসভা ও ৬০ জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানকে অপসারণ করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে স্থানীয় সরকার বিভাগ। 

 

প্রশাসক নিয়োগে পৃথক দুটি প্রজ্ঞাপনে বলা হয় ৪৯৫ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিজ নিজ উপজেলায় প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। তবে সারাদেশেই ইউনিয়ন পরিষদের ব্যাপারে এখনো কোন ধরনের প্রজ্ঞাপন জারি হয়নি। তবে এর মধ্যে সারাদেশেই বেশির ভাগ চেয়ারম্যানরা আত্মগোপনে। জানা যায় নারায়ণগঞ্জের জনপ্রতিনিধরাও ইতিমধ্যে শেখ হাসিনার পদত্যাগের সাথে সাথে তারাও নিজেদের গা ঢাকা দিয়েছেন। ইতিমধ্যেই নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় আওয়ামী লীগ নেতা ও জনপ্রতিনিধ কেউ বাদ থাকেনি সবাই বিভিন্ন  জায়গাতে পালিয়ে বেড়াচ্ছে। 

 

শুধু তাই নয় নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন স্থানে হত্যাকান্ডের ঘটনায় ইতিমধ্যে ফতুল্লায় থানায় দুইটি মামলা দায়ের করা হয়ে আর এই মামলায় ফতুল্লায় অধিকাংশ আওয়ামী রেিগর নেতাদের নাম উল্লেখ করে দেওয়া হয়েছে। বিশেষ করে বিগত দিনে ফতুল্লাকে যারা এক ত্রাসের রাজত্ব হিসেবে পরিনত করেছে তাদের বিরুদ্ধে একটার পর একটা মামলা দেওয়া হচ্ছে।

 

বিশেষ করে নারায়ণগঞ্জ জেলার ফতুল্লা থানাধীন মোট পাঁচটি ইউনিয়ন আছে যার মধ্যে প্রতিটি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগের রাজনৈতির সাথে জরিত ছিলেন। তবে একে একে ৫ জন চেয়ারম্যান পারিয়ে বেড়াচ্ছে। আর এর কারন লক্ষ করা হয় তাহলে দেখা যাবে এই সকল চেয়ারম্যান তারা তাদের দূর্নীতি আর অনিয়মের মধ্যে দিয়ে তাদের দায়িত্ব পালন করেছে। শুধু তাই নয় প্রত্যেকেই প্রত্যেক প্রত্যেক এলাকায় নিজেদের আধিপত্য ধরে রাখতে বিভিন্ন সন্ত্রাসী বাহিনী ঘরে তুলেছিলেন। এমনকি তাদের নিয়ন্ত্রনে এলাকায় ভূমিদস্যুতা সহ নানান অপকর্ম চারানো হতো।

 

ফতুল্লা থানাধীন বক্তাবলী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও ফতুল্লা থানা আওয়ামী লীগের  এম শওকত আলী দুর্নীতি আর অনিয়ম করে গড়েছেন পাহাড় পরিমান সম্পদ এমনকি এই দূর্নীতির কারনে তার বিরুদ্ধে মামলাও হয়েছে। বেশ কয়েকবার তিনি  এই মামলার সম্মুক্ষিন হতে হয়েছে। এলাকাবাসীর জন্য তেমন উন্নয়ন না করলেও নিজের স্বার্থ হাসিল ঠিকই করেছে। অন্যদিকে কাশিপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ফতুল্লা থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি এম সাইফুল্লাহ বাদল যিনি চেয়ারম্যান হলেও মাসেও একদিন ইউনিয়ন পরিষদে যেতেন না ফতুল্লা থানার মধ্যে সবথেকে অবহেলিত ইউনিয়ন ছিলো কাশিপুর ইউনিয়ন এই এলাকার মানুষ বেশি সেবা থেকে বঞ্চিত হয়েছে। এমনকি এলাকায় তার রয়েছে বিশাল সন্ত্রাসী বাহিনী যেই বাহিনীর দ্বারা মাদক ব্যবসা সহ সকল ধরনের অপকর্ম করা হতো।

 

 তার সন্ত্রাসী বাহিনীরা পু্েরা কাশিপুরকে সন্ত্রাসের সম্রাজ্যে হিসেবে গড়ে তুলেছিলো। আর এই ফতুল্লা থানা এড়িয়ার মধ্যে বেশ কয়েক বছরে  সবচেয়ে বেশি হত্যাকণ্ডের ঘটনা ঘটেছে এই কাশিপুর ইউনিয়নটি। চেয়ারম্যানের ঘনিষ্ট লোকজন ও তার  পরিবারের সদস্যরা কিশোর গ্যাং ও মাদকের সেল্টারদাতা হিসেবে কাজ করতো। তিনিও ইউনিয়ন বাসিকে পরিপূর্ন সেবা না দিয়ে নিজে সম্পদের পাহাড় গড়েছেন এমনকি অঢেল সম্পত্তির মালিক হয়েছেন। অসুস্থ থাকা অবস্থাতেও তিনি তার বাহীনি দিয়ে বিভিন্ন জায়গা জমি দখল ও চাঁদাবাজি করার নির্দেশ দিতেন।

 

অন্যদিকে এনায়েত নগর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান ও ফতুল্লা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ফাইজুল ইসলাম তারাও  ইতিমধ্যে এলাকা ছেড়ে পালিয়েছে। প্রত্যেকেই নারায়ণগঞ্জ ৪ আসনের সাবেক এমপি শামীম ওসমানের অতি ঘনিষ্ট। তাদের কাছে থেকে সাধারন জনগন উপকারের থেকে অত্যাচারীই বেশি হয়েছে। তাই তাদের নেত্রী সাবেক প্রধানমন্ত্রী  শেখ হাসিনা ও তাদের সাবেক সাংসদ এ কে এম শামীম ওসমান দেশ থেকে পালিয়ে যাওয়ার পরপরই তাদেরও ছাড়তে হয় এলাকা বাধ্য হয়েছে

 

 তা নয় তাদের কুকর্ম ও সাধারন জনগনের ওপর যে অত্যাচার গুলো তা হয়তো  আর মেনে নিবে না প্রত্যেকটা ইউনিয়নের জনগন। তাই দূর্নীতিগ্রস্থ চেয়ারম্যানরা এলাকার সাধারন মানুষের তোপের মুখ থেকে বাঁচতেই পালিয়ে বেড়াচ্ছে। শুধু তাই নয় এসকল চেয়ারম্যানরা পালিয়ে গিয়েও কোন রক্ষা হরো না তাদের বিরুদ্ধে একে এক ফতুল্লা ও সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় বেশ কয়েকটি হত্যা মামলা ইতিমধ্যেই দায়ের করা হয়েছে।

 

মামলা শুধু জনপ্রতিনিধিই নয় ফতুল্লা থানা আওয়ামী লীগের যে সকল নেতৃবৃন্দ রয়েছে এমনকি ইউনিয়ন পর্যায় থেকে শুরু করে ওয়ার্ড পর্যায়ে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ সহ অন্যান্য অঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দরাও কেউ বাদ যায়নি এই মামলা থেকে। বিশেষ করে ফতুল্লা ও তার আশে পাশের ইউনিয়ন গুলোতে যে সকল সন্ত্রাসীরা দীর্ঘদিন মানুষের সাথে জুলুম অত্যাচারের সাথে জরিত ছিলো। মাদক ব্যবসা থেকে শুরু করে এমন কিছু নাই যে তারা না করেছে। আর এলাকায় আধিপত্যকে বিস্তার করে অনেকেই আবার কোটি কোটি টাকার সম্পদ গড়েছে। আর এই সকল সন্ত্রাসীদের অপকর্মের টাকার ভাগ পেতেন নারায়ণগঞ্জ ৪ আসনের সাবেক সংসদ গডফাদার খ্যাত পরিচিত শামীম ওসমান।

এই বিভাগের আরো খবর