বুধবার   ১১ ডিসেম্বর ২০২৪   অগ্রাহায়ণ ২৭ ১৪৩১

রেজাউলের সক্রিয়তায় গাত্রদাহ মান্নান-মোশারফের

এম মাহমুদ:

প্রকাশিত: ১০ নভেম্বর ২০২৪  

নারায়ণগঞ্জ-৩ (সোনারগাঁ) আসনে বিএনপির সাবেক প্রতিমন্ত্রী রেজাউল করিম রাজনৈতিক ভাবে সক্রিয় হওয়ায় সাথে সাথেই সোনারগাঁ উপজেলা বিএনপির মূলধারার নেতাকর্মীরা তাঁকে রাজনৈতিক ভাবে পরাস্ত করতে একের পর এক তুলোধনা করে বক্তব্য রাখছেন। এমনকি তাঁকে রাজনীতি থেকে দূরে সরে যেতে একের পর এক হুমকি স্বরূপ তীর্যক ভাষায় মন্তব্য করে সোনারগাঁয়ের রাজনৈতিক অঙ্গনে থমথমে পরিবেশ সৃষ্ট করছেন। যার ফলে রেজাউল করিমের সমর্থকদের দাবি করছে, রেজাউল করিমের সক্রিয়তায় এখন গাত্রদাহ হচ্ছে সোনারগাঁ উপজেলা বিএনপির মূলধারার নেতাদের কোন ভাবেই রাজনীতির ময়দানে রেজাউল করিমকে মেনে নিতে পারছে না। অথচ, এই রেজাউল করিমের হাত ধরেই সোনারগাঁয়ের বিএনপির রাজনীতিতে উত্থান ঘটেছিল তাদের।

 

স্থানীয় সূত্র নিশ্চিত করেছে গতকাল শনিবার (৯ নভেম্বর) বিকেলে সোনারগাঁয়ের শম্ভুপুরা ইউনিয়নে বিপ্লব ও সংহতি দিবস উদযাপন উপলক্ষ্যে অনুষ্ঠিত সমাবেশে সোনারগাঁ উপজেলা বিএনপির সভাপতি আজহারুল ইসলাম মান্নান ও সাধারণ সম্পাদক মোশারফ হোসেন বক্তব্য রাখতে নিয়ে নারায়ণগঞ্জ-৩ সোনারগাঁ আসনের সাবেক এমপি ও সাবেক মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী রেজাউল করিমকে তুলোধনা করেন। কেননা রেজাউল করিমের পৈতিক ভিটা সোনারগাঁয়ের শম্ভুপুরা ইউনিয়নে তার ইউনিয়নে এসেই তাঁকে তুলোধনা করে বক্তব্য রেখেছেন সোনারগাঁ উপজেলা বিএনপির সভাপতি আজহারুল ইসলাম মান্নান ও সাধারণ সম্পাদক মোশারফ হোসেন। 

 

সোনারগাঁ উপজেলা বিএনপির সভাপতি আজহারুল ইসলাম মান্নান বক্তব্যে বলেন, এখন ১৭বছর পর ঘুম থেকে জেগে একটু উকি ঝুকি দেয় জাতীয় পার্টি ও আওয়ামীলীগের লোক নিয়ে। সোনারগাঁয়ের কোন জায়গায় গিয়ে কোন সংস্কারবাদী আর কোনদিন বলতে পারবে না বাবা আমাকে একটু দেইখো আমি এমপি ছিলাম মন্ত্রী ছিলাম আমি আসতাছি এটা আর চলবে না। যারা বিএনপির আমলে হালুয়া রুটি খেয়েছে তারা এই স্বৈরাচার সরকার ক্ষমতায় আসার পর সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহেরা খাতুনের কাছে গিয়ে বন সই দিয়ে বলছে আমি আর জীবনে রাজনীতি করব না, আমাকে মামলা দিয়েন না। কোন ইউনিয়নে আর যদি গিয়ে কোন প্রকার হুমকি ধামকি দেয় তার পিঠের চামড়া রাখবে না। 

 

নারায়ণগঞ্জের যেকোন জায়গায় পাওয়া যাবে তাদের হাত পা ভেঙ্গে একেবারে পদ্ম দিয়ে ভাসিয়ে দেয়া হবে। তিনি আরও বলেন, শম্ভুপুরার অনেক লোক আপনারা রাতারাতি শিল্পপতি হতে পারেন নাই ব্যাংকের টাকা আত্মসাৎ করে দৌলিয়া হয়ে বসে এটা আপনাদের শম্ভুপুরার লোক। আপনার আমার জনগণের টেক্রের টাকা তারা আত্মসাৎ করে বসে আছে। আওয়ামীলীগের শেখ হাসিনার সাথে এই শম্ভুপুরার লোক বিভিন্ন জায়গায় সফর সঙ্গী হয়ে বিভিন্ন দেশে গিয়েছে। আজকে তারা আবার তাদের অফিসে শহীদ জিয়া বা খালেদা জিয়ার ছবি টানায় তাদের লজ্জা আছে এতদিন লাগিয়েছে শেখ হাসিনা ও শেখ মুজিবের ছবি এখন টানাচ্ছে খালেদা জিয়া বা তারেক রহমানের ছবি।

 

সোনারগাঁ উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মোশারফ হোসেন নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও প্রতিমন্ত্রী রেজাউল করিমকে উদ্দ্যেশ্য করে বলেন, ‘রাজনীতি করবেন না বলে আবার রাজনীতিতে নেমেছেন। ভেবেছেন আবার মন্ত্রী হবেন? ইউনিয়ন কাউন্সিলর, চেয়ারম্যান হওয়াও জুটবে না আপনার কপালে।’তিনি আরও বলেন, ‘বিগত ১৫ বছরে রাজপথে ৫টি মিছিলের ছবি দেখালে মান্নানকে ছেড়ে আপনার সাথে চলবো। তারেক রহমান আপনাকে না মান্নানকে ফোন করেন। আমি আপনার সাথে রাজনীতি করেছি, আপনি অসুস্থ্য, বাসায় থাকেন। উনি এমপি হয়েছে কয়েকবার উনার মিথ্যা কথার শেষ নেই উনি রাজনীতি করবে না বলে কেন রাজনীতিতে নামল। এক ঘর থেকে আরেক ঘর থেকে তাঁকে ধরে নিয়ে আসে এত মুজা পড়েছে এখন সে পা নিয়ে ট্রাকে উঠেছে। 

 

এখন ট্রাকে উঠেছেন কারণটা কি হু হু করে শব্দ হবে আবার মন্ত্রী হবেন এগুলো চিন্তা ভাবনা মোটেও না। তাকে সুসময়ের পাখি বলি না তাকে আমি সুসময়ের গুহারি বলি সে বলেছিল আন্দোলন বহুদূর ৫ আগস্ট সরকার যখন পতন হয়েছে সে বলেছে আন্দোলন বহু করেছি এইসব চিটার বাটপারের রাজনীতি আমরা করতে চাই না। তাদের এমন বক্তব্যে রেজাউল করিমের সমর্থিত নেতারা বলেছেন, আমাদের কাছে এখনো পরম শ্রদ্ধীয় রেজাউল করিম সে এমপি মন্ত্রী না হলেও কিন্তু একদল পল্টিবাজ যারা রেজাউল করিমের হাত ধরে রাজনীতি উত্থান ঘটিয়েছে ব্যাপক অর্থবিত্তের মালিক হয়েছে বিএনপির শাসন আমলে। আজকে তারাই সেই রেজাউল করিমের রাজনীতিকে কোন ভাবেই মেনে নিতে পারছে না। রেজাউল করিম রাজনীতি সক্রিয় হলেই সোনারগাঁয়ের মূলধারার নেতাদের মাথাব্যাথা শুরু হয়। 

 

কেননা গত ৮ নভেম্বর শুক্রবার ঢাকায় বিএনপি আয়োজিত বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষ্যে এক র‌্যালির আয়োজন করা হয়। সেখানে রেজাউল করিম হাজার হাজার নেতাকর্মী নিয়ে বিশাল শোডাউন করে অংশগ্রহণ করেন। তাছাড়া কেন্দ্রীয় নেতাদের জন্য ট্রাকে গঠিত মঞ্চে সম্মান প্রদর্শন করে রেজাউল করিমকে বসতে দেন কেন্দ্রীয় নেতারা। আর সেই দৃশ্য দেখেই আজকে রেজাউল করিমকে নিয়ে তুলোধনা নানা রকম তীর্যক মন্তব্য করতে দিধাবোধ করেননি সোনারগাঁ উপজেলা বিএনপির সভাপতি আজহারুল ইসলাম মান্নান ও সাধারণ সম্পাদক মোশারফ হোসেন। মূলত, রেজাউলের সক্রিয় রাজনীতি কোন ভাবেই মেনে নিতে না পারায় মান্নান-মোশারফের গাত্রদাহে এধরণের মন্তব্য করেছেন। এছাড়া তাদের দেয়া বক্তব্যের অনেক কথাই মিথ্যা ভিত্তিহীন।
 

এই বিভাগের আরো খবর