Logo
Logo
×

বিশেষ সংবাদ

রোজায় এবারও আগুন ফলের বাজারে

Icon

যুগের চিন্তা রিপোর্ট

প্রকাশ: ০৮ এপ্রিল ২০২২, ০৫:৩০ পিএম

রোজায় এবারও আগুন ফলের বাজারে
Swapno

পবিত্র মাহে রমজান মাসে রোজার সময় সব পরিবারেই ইফতারিতে কম-বেশি ফল রাখেন। ভাজা-পোড়ার পাশাপাশি ফল খেয়ে সারাদিনের ক্লান্তি দূর করার চেষ্টা করেন সব শ্রেণীর মানুষ। কিন্তু ইচ্ছে থাকলেও দামের কারণে ইফতারিতে বিভিন্ন রকমের ফল রাখা সম্ভব হয় না অনেকের পক্ষে। ফল ব্যবসায়ীরা বলছেন, আমদানি কম আর রোজার শুরুতে চাহিদা অনেক বেশি বলেই ফলের বাজার চড়া। ফলে রোজায় এবারও আগুন ফলের বাজারে!


এদিকে বাজারে ফলের কমতি নেই। স্থায়ী দোকান থেকে শুরু করে পাড়া মহল্লায় ভ্যানে করেও ফল ফেরি করে বেড়ান অনেকে। সেসব ফলের চাহিদাও কম নেই ক্রেতাদের কাছে। আর চাহিদা বেশি থাকে বলে প্রতিবারই রোজার ফলের বাজারে আগুন লাগবে এটাই যেন স্বাভাবিক। যদিও শহরের অলিগলি থেকে শুরু করে সব ফলের বাজারেই ভরা ফল। এবারও রোজা শুরু থেকেই বেড়ে গেলো তরমুজ- আঙুর-আপেল-মাল্টা-কমলা- বেদানা-আনার-নাশপাতি আর খেজুরের দাম।


এসময়ে বাজারে রসালো এবং মুখরোচক নানা স্বাদের ফলের অভাব নেই। তরমুজ, আপেল, বেল, বাঙ্গী, কলা, কমলা, মাল্টা, আঙুর, নাসপাতি, ডাব, পেঁপে, বরই, সফেদাসহ আরো কিছু ফলের দেখা মেলে বাজারে। কেবল কিনতে গেলেই দাম শুনে ধাক্কা খেয়ে ফিরে আসতে হয়। কেউ কেউ বাধ্য হয়ে কেনেন যৎসামান্য।


বর্তমান রোজায় সবচেয়ে বেশি আলোচিত ফলের নাম তরমুজ। অভিযোগ রয়েছে, তরমুজ বিক্রেতা পাইকাররা কৃষকের কাছ থেকে পিস হিসেবে কিনে এনে বিক্রি করছেন কেজি দরে। এতে তাদের লাভ হচ্ছে দ্বিগুণেরও বেশি।


বাজারে সরবরাহ যথেষ্ট থাকার পরও চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে খেজুর। ভিন্ন নামে, বিভিন্ন মানের খেজুরের দাম সাধারণ ক্রেতাদের নাগালের বাইরে। একশ টাকার নিচে বাজারে কোনো খেজুর নেই। সর্বোচ্চ খেজুরের কেজি হাজার টাকারও বেশি। যদিও রোজার দ্বিতীয় সপ্তাহ শেষে দাম অর্ধেক হয়ে যাবে বলে জানান পাইকারি ফল ব্যবসায়ীরা।


রমজানে অনেকেই সারাদিন রোজা রাখার পর ভাজা-পোড়া খাবার বাদ দিয়ে শরবত, দই-চিড়া বা বিভিন্ন ফল দিয়ে ইফতার করতে চান। তাপদাহের কারণে এসব ফল বেশি করে কিনে রাখা যায় না, নষ্ট হওয়ার কারণে। সে কারণেই রোজার প্রতিদিনই ফলের দোকানগুলোতে চাপ বাড়ে ক্রেতার। অথচ পছন্দ এবং চাহিদা মতো ফল কিনতে গিয়ে বাধ্য হয়ে ফিরে আসেন অনেকে।


শহরের কালীরবাজার পুরান কোর্টের সামনে অনেক বছর ধরে সিজনাল ফলের ব্যবসা করছেন আব্দুল আলীম। তিনি বলেন, এবার রোজার শুরু থেকে ক্রেতারা ফল দেখছেন বেশি, কিনছেন কম। গরম এবং রমজানে বেশি বিক্রির আশায় অনেক পরিমাণে ফল কিনেছিলাম। কিন্তু কম বিক্রি হওয়ায় বেশ কিছু ফল ইতোমধ্যে পচে গেছে। এবার লাভের জায়গায় বেশ লস হয়ে গেল।


শহরের চারারগোপ ও দিগুবাবুর বাজারের ফলের আড়াৎতে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রমজানের কারণে প্রায় সব ফলের দাম বেড়েছে। কেজিতে ২০ টাকা থেকে ৪০ টাকা পর্যন্ত। এক সময় তরমুজ পিস হিসেবে বিক্রি হলেও, গত বছর থেকে কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে তরমুজ। ৪০ থেকে ৫০ টাকার মধ্যে তরমুজের দাম উঠানামা করছে। একটা মধ্যম সাইজের তরমুজের দাম ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা।


অন্যদিকে, রসালো ফল হিসেবে পরিচিত এক কেজি মাল্টার দাম ১৮০ থেকে ২০০ টাকা, কমলার কেজি ২০০-২২০টাকা,  আঙুর ফলের কেজি ২২০-২৫০, আপেলের দাম কেজি প্রতি ২২০-২৫০ টাকা, আনারের কেজি ২৮০-৩২০ টাকা, নেসপাতির কেজি ২২০-২৪০ টাকা। মাঝারি এক পিস আনারস ৪০-৫০ টাকার কমে পাওয়া যাচ্ছে না। একটি ছোট বেলের দাম ৩০-৫০ টাকা, বড় বেল ৭০-৮০,  দেশি চম্পা কলার ডজন ১২০ টাকা, সাগর কলা ১২০-১৪০ টাকা, শবরী কলা ১৪০-১৬০ টাকা।


ফল কিনতে আসা একজন বেসরকারি অফিসের কর্মকর্তা শামীম আহমেদ বলেন, রোজার সময় সংসারের প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কেনার পর ইচ্ছে থাকলেও ফল কিনতে পারি না। তারপরও ছেলে-মেয়ের মুখের দিকে তাকিয়ে সামান্য পরিমাণে কিনতে হয়।  ফলের দাম দেখে দীর্ঘশ্বাস ফেলা ছাড়া আর কিছুই করার নেই। প্রতিবছরই রোজায় ফলের দাম দ্বিগুণ করে ফেলেন ব্যবসায়ীরা। নিত্য দ্রব্যমূল্যের বাজারের মতো ফলের আড়াৎতেও ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান চালানো দরকার বলে আমি মনে করি।

Abu Al Moursalin Babla

Editor & Publisher
ই-মেইল: [email protected]

অনুসরণ করুন