বুধবার   ১১ ডিসেম্বর ২০২৪   অগ্রাহায়ণ ২৭ ১৪৩১

লিটন সাহার অপকর্মের পার্টনার মোজাম্মেল দুই সংগঠনে বহাল

যুগের চিন্তা রিপোর্ট :

প্রকাশিত: ২৮ নভেম্বর ২০২৪  

ওসমানদের পকেটম্যান হিসেবে পরিচিত বাংলাদেশ ইয়ার্ন মার্চেন্ট অ্যাসোয়িশনের সাবেক সভাপতি লিটন সাহার সকল অপকর্মের পার্টনার হিসেবে পরিচিত মোজাম্মেল হক এখনো কোন স্বার্থে বহাল তবিয়তে রয়েছে। তা নিয়ে উঠছে নানা প্রশ্ন। এদিকে বিগত দিনে লিটন সাহা ও মোজাম্মেল ছিলেন টানবাজারের ব্যবসায়ীদের আতঙ্ক। এরা টানবাজারে অবৈধ বন্ড সুতার সিন্ডিকেট করে পুরো বাজার নষ্ট করে দিয়েছে বলে ও অভিযোগ রয়েছে। ব্যবসায়ী সংগঠনের এই দুই নেতার মধ্যস্ততায় ইয়ার্ন মার্চেন্টে এমন কোন অপকর্ম নেই যেন হয়নি। সর্বশেষ গত ৫ আগষ্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনে স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যায়। 

 

সে সময় ওসমানদের দোসর লিটন সাহা বেশ কয়েকটি হত্যা মামলার আসামি হওয়ার কারণে ফেরারি অবস্থায় ছিলেন। তার অবর্তমানে তাকে দূর থেকে সাহস, বুদ্ধি পরামর্শ দিচ্ছিলেন তারই সহযোগী মোজাম্মেল হক। এর বাহিরে ও তার বিরুদ্ধে ইর্য়ান মার্চেন্টের এফডিআর ভেঙে লিটন সাহার পার্সোনাল খরচের বাকি টাকা পরিশোধ করার অভিযোগ রয়েছে। পটপরিবর্তনের পর ব্যবসায়ীদের একটি বড় সংগঠন ইর্য়ান মার্চেন্টের সভাপতি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শামীম ওসমানের সাথে প্রকাশ্যে ছাত্র-জনতার উপরে গুলি বর্ষণ হত্যা মামলায় গত ১ নভেম্বর শুক্রবার রাতে রাজধানীর বেইলী রোডের বাসা থেকে গ্রেফতার হন লিটন সাহা। এদিকে দীর্ঘদিন সভাপতি বিহীন থাকায় ব্যবসায়ীদের মধ্যে বিশৃঙ্খলাসহ নানা অবস্থার অবনতি দেখে সংগঠনটির সভাপতির দায়িত্ব গ্রহণ করেন সাবেক সভাপতি এম. সোলেমান। 

 

এ সময় সাবেক কমিটির সিনিয়র সহ-সভাপতি অশোক মহেশ^রী, সদস্য জয় কুমার সাহা, বিশ^জিত সাহা এই কয়জনকে বাদ দিলে ও লিটন সাহার অপকর্মের পার্টনার মোজাম্মেল হক এখনো সহ-সভাপতির দায়িত্বে অবস্থান করছেন। এর বাহিরে ও লিটন সাহার হাতে প্রতিষ্ঠিত অনুমোধনবিহীন বাংলাদেশ টেক্সটাইল ডাইস এন্ড ক্যামিকেল এসোসিয়েশনের নতুন সভাপতির দায়িত্ব নিয়েছেন এই মোজাম্মেল হক। এদিকে এই কমিটিতে ও বিগত দিনে ওসমানদের পালিত লিটন সাহার হাতে গঠিত কমিটি বর্তমানে ও বহাল তবিয়তে রয়েছে। এই পর্ষদ বিগত দিনে সেলিম ওসমানকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানিয়েছে নিজেদের কার্যক্রম চালু করেছিলেন বলে জানা গেছে। লিটন সাহার সকল কুকর্মের ঘনিষ্ঠ সহচর এই মোজাম্মেলক হকের মাধ্যমে সর্বসময় টানবাজারের সকল খোঁজ খবর যাচ্ছে ওসমান পরিবারের নিকট এমনটা দাবী জানিয়েছে ব্যবসায়ীরা। শীগ্রই মোজাম্মেল হকের পদত্যাগ চান ব্যবসায়ীবৃন্দ।


 
সূত্র বলছে, গত ১৭ বছর আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকায় নারায়ণগঞ্জের ওসমানদের মাধ্যমে বিকেএমইএ, চেম্বার অব কমার্স, ইয়ার্ন মাচেন্ট এসোসিয়েশনের যোগসাজসে টানবাজারের ঐতিহ্যকে ধ্বংস করে দিয়েছে (বন্ড সুতার) চোরাই সিন্ডিকেট ব্যবসায়ী ও সংগঠনের নামে বেনামে চাঁদাবাজি অবৈধ এলসির মাধ্যমে বিসাক্ত ক্যামিকেল আদান প্রদান, রংয়ের লাইসেন্সে ক্যামিকেল ব্যবসা করার অনুমোদন, দোকানে দোকেন মাসিক মাসোয়ারাসহ বহু অপকর্মের সাথে জড়িত ইয়ার্ন মার্চেন্টে ও বাংলাদেশ টেক্সটাইল ডাইজ এন্ড কেমিক্যাল মার্চেন্ট এসোসিয়েশন সাবেক সভাপতি লিটন সাহা ও বর্তমান সভাপতি মোজাম্মেল হক। টানবাজার জুড়ে হেন অপকর্ম বাকি নেই যে এরা করেননি। ওসমানদের নামে ক্ষমতার জোর দেখিয়ে বিভিন্ন স্পিনিং মিল ও নিটিং ব্যবসায়ীদের এলসির মাধ্যমে দেশের বাহির থেকে অবৈধ বন্ড সুতা বাজারে এনে তা খোলা বাজারে বিক্রি করার পিছনে পুরো হাতই ছিলো এই লিটন সাহা ও মোজাম্মেল হকের। 

 

তা ছাড়া ও অনুমোধনবিহীন বাংলাদেশ টেক্সটাইল ডাইজ এন্ড কেমিক্যাল মার্চেন্ট এসোসিয়েশনের নামে সংগঠন খুলে ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে নিতেন মোটা অংকের চাঁদা। এদিকে লিটন সাহা ব্যবসায়ীদের কাছে চাঁদার জন্য প্রকাশ্যে ফোর্স না করলে ও এই মোজাম্মেল হকের মাধ্যমে বিভিন্ন থ্রেট দিতেন তিনি। তা ছাড়া জানা গেছে, সর্বশেষ আওয়ামী লীগের পতনের পূর্বে লিটন সাহা ও মোজাম্মেল যোগসাজস করে প্রায় মোটা অংকের টাকা লোপাটের অভিযোগ রয়েছে বলে দাবি সূত্রের। তা ছাড়া সকলেই লিটন সাহাকে দুষলেও লম্বা, পাঞ্জাবী পড়িত সাদা দাড়ি রেখে তার আড়ালে নীরবে চাঁদাবাজির মাস্টারমাইন্ড ছিলেন এই মোজাম্মেল হক।

 


এ দিকে বিগত দিন থেকেই লিটন সাহার পাওয়ারে বাংলাদেশ টেক্সটাইল ডাইজ এন্ড কেমিক্যাল মার্চেন্ট এসোসিয়েশনের দায়িত্বে ছিলো এই মোজাম্মেল। জানা গেছে, টানবাজারে অসংখ্য ডাইজ এন্ড কেমিক্যালের দোকান রয়েছে। এসব দোকানে কোনো ধরনের সতর্কতা অবলম্বন না করেই অবাধে বিক্রি করা হচ্ছে বিপজ্জনক কেমিক্যাল। তা ছাড়া ও লাইসেন্স না নিয়েই অনেক খুচরা ব্যবসায়ী কেমিক্যাল বিক্রি করছেন। এমনকি কাঠ ও জুতার মতো কম দামি কেমিক্যালের ছাড়পত্রে আমদানি করা হচ্ছে বিভিন্ন ধরনের অতি দাহ্য রাসায়নিক। কোনো কোনো অসাধু ব্যবসায়ী গোপনে গান পাউডারও বিক্রি করছেন। তার পাশাপাশি সরকারের নীতিমালা না মেনে কেমিক্যাল আমদানি করছেন ব্যাবসায়ীরা। বিগত দিনে এই বিষয় নিয়ে বহু জামেলা হলে সুরাহ করতেন লিটন সাহা ও এই মোজাম্মেল হক। বর্তমানে এই জুটির একজন কারাগারে হলেও আরেকজন বর্তমানে বিভিন্ন লবিংয়ে বহাল রয়েছে। 
 

এই বিভাগের আরো খবর