Logo
Logo
×

বিশেষ সংবাদ

শামীম ওসমানকে ভিসা না দেয়ায় নানা প্রশ্ন

Icon

যুগের চিন্তা রিপোর্ট

প্রকাশ: ২৭ মে ২০২৩, ১২:০৩ পিএম

শামীম ওসমানকে ভিসা না দেয়ায় নানা প্রশ্ন
Swapno


# বিগত মাসগুলিতে তিনি বিরোধী দল বিএনপিকে নানা রকম ভয়ভীতি প্রদর্শন করেছেন
 

নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের এমপি একেএম শামীম ওসমানকে নতুন করে যুক্তরাষ্ট্র ভিসা না দেয়ার বিষয়টি নিয়ে নারায়ণগঞ্জের সকল মহলে ব্যাপক জল্পনা কল্পনা চলছে। কারণ যুক্তরাষ্ট্র নতুন যে ভিসা নীতি ঘোষনা করেছে তার প্রয়োগ শুরু হবে পরে। আগামী নির্বাচনে বা নির্বাচনের আগে কেউ যদি নির্বাচন প্রক্রিয়ায় বাধা প্রদান করেন এবং কোনো দলের সভা সমাবেশে বাধা দান করেন তাহলে যুক্তরাষ্ট্র ওই ব্যাক্তিকে ভিসা দেবে না।

 

 

কিন্তু এরই মাঝে শামীম ওসমানকে কেনো ভিসা দিলো না সেই প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। তাহলে কি যুক্তরাষ্ট্র এ্যাকশান নিতে শুরু করে দিয়েছে? এ সময়ে তাকে ভিসা না দেয়ার কারন কি? বিষয়টিকে সাংবাদিক নাঈমুল ইসলাম খান যুক্তরাস্ট্রের লঘু স্যাংশান হিসাবে আখ্যায়িত করেছে। তাই প্রশ্ন উঠেছে যদি তাই হয় তাহলে কেনো শামীম ওসমানকে এভাবে স্যাংশানের আওতায় নেয়া হলো?

 

 

নারায়ণগঞ্জের বিএনপি নেতাকর্মীরা মনে করেন শামীম ওসমান বিগত প্রায় এক বছর ধরে বিএনপির নেতাকর্মীদেরকে নানা রকম হুমকি ধমকি দিয়ে এসেছেন। বিশেষ করে সাবেক এমপি গিয়াস উদ্দিন নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির আহবায়ক হওয়ার পর থেকে শামীম ওসমান নানা ভাবে গিয়াস উদ্দিনকে এবং দল হিসাবে বিএনপিকে চাপের মাঝে রাখার চেষ্ঠা করছেন।

 

 

ফলে এসব বিষয় বিভিন্ন সংবাদপত্রে এবং অনলাইন ও সোস্যাল মিডিয়ায় প্রচার হয়েছে। আর এ বিষয়টিই শামীম ওসমানের ভিসা না পাওয়ার পেছনে কাজ করছে বলে অনেকে মনে করেন।  এদিকে শামীম ওসমানকে ভিসা না দেয়ার ব্যাপারে দৈনিক যুগের চিন্তায় রিপোর্ট প্রকাশ হলেও শামীম ওসমান এখনো কোনো প্রতিক্রিয়া ব্যাক্ত করেননি।

 

 

কেনো তাকে ভিসা দিলো না যুক্তরাষ্ট্র এ বিষয়টি নিয়ে শামীম ওসমান এখনো মুখ খোলেননি। কোনো ব্যাখ্যা দেননি শামীম ওসমান। যার ফলে বিষয়টি এখন নারায়ণগঞ্জের রাজনৈতিক অঙ্গনে বেশ ডালপালা মেলতে শুরু করেছে। সর্বত্র চলছে ব্যাপক জল্পনা-কল্পনা। রাজনৈতিক মহলের অনেকেই মনে করেন শামীম ওসমান হয়তো যুক্তরাস্ট্রের ভিসা নিষেধাজ্ঞায়ই পরে গেলেন।

 

 

যদিও নাঈমুল ইসলাম খান বলেছেন এটা শামীম ওসমানের উপর যুক্তরাষ্ট্রের লঘু নিষেধাজ্ঞা। বাস্তবে এটা আরো বড় কিছু। এই নিষেধাজ্ঞা শামীম ওসমানের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎকে বেশ চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে দিয়েছে বলেই অনেকে মনে করেন। কারণ যুক্তরাষ্ট্র যাদের উপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা দিচ্ছে তারা আগামী দিনে জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক ভাবে বেশ চাপের মুখে পড়বেন এতে কারোই কোনো সন্দেহ নেই।

 

 

আর শামীম ওসমানকে ভিসা না দিলে তার স্ত্রী সন্তানদেরও দেবে না। এমনটিই ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র আর যখন এমন ভিসা নীতি ঘোষণা করেন তখন তাদেরকে অনুসরণ করেন কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড এবং ইউরোপীয় দেশগুলি।

 

 

তাই শামীম ওসমান এবং তার পরিবারের সদস্যরা এই ভ্রমন নিষেধাজ্ঞায় পরলো বলে অনেকে মনে করেন, যা কিনা তাদের অভিবাসন প্রক্রিয়ায় ব্যাপক নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। কারন তারা ওইসব দেশে ভ্রমণ করে অভ্যস্ত। এই যেমন শামীম ওসমান বিএনপি জামায়াত জোট সরকারের আমলে টানা পাঁচ বছর কানাডায় আশ্রয় নিয়েছিলেন। 

 

 

এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের ইমিগ্রেশন অ্যান্ড ন্যাশনালিটি অ্যাক্টের অধীনে কেবলমাত্র বাংলাদেশের জন্য ভিসা নীতিটি জারি করা হয়েছে। যাতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের নির্বাচনে বাধা সৃষ্টি করে গণতন্ত্রকে ক্ষতিগ্রস্তকারী ব্যক্তি, পরিবার বা প্রতিষ্ঠানের কর্তাদের বিরুদ্ধে ভিসায় বিধি-নিষেধ আরোপ করা হবে।

 

 

বুধবার বাংলাদেশ সময় মধ্যরাতে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্থনি জে ব্লিংকেন ভিসা কড়াকড়ি সংক্রান্ত ওই ঘোষণা দেন। যাকে ‘ভিন্নরকম নিষেধাজ্ঞা’ হিসাবে দেখছেন বিশ্লেকরা। ব্লিংকেনের টুইট বার্তা, স্টেট ডিপার্টমেন্ট এবং ঢাকাস্থ মার্কিন দূতাবাসের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে বাংলাদেশ বিষয়ক নতুন ওই ভিসা নীতি বা ঘোষণাটি একযোগে প্রচারিত হয়।

 

 

এই নীতির অধীনে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়াকে ক্ষুণ্ন করার জন্য দায়ী বা জড়িত যে কোন বাংলাদেশির ভিসা প্রদান সীমিত করবে। নতুন ভিসা নীতির আওতায় বাংলাদেশের বর্তমান ও সাবেক কর্মকর্তা, সরকার সমর্থক, বিরোধী রাজনৈতিক দলের সদস্য, আইন প্রয়োগকারী সংস্থা, বিচার বিভাগ ও নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা পড়বেন।

 

 

বাংলাদেশ সরকারকে নতুন ভিসা নীতি বিষয়ক ওয়াশিংটনের ওই সিদ্ধান্তের কথা ৩রা মে জানানো হয়েছে বলে মার্কিন বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়। বিবৃতিতে আরও বলা হয়, বাংলাদেশে একটি অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করতে ভোটার, রাজনৈতিক দল, সরকার, আইনশৃঙ্খলা বা নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য, নাগরিক সমাজ এবং মিডিয়া- প্রত্যেকেরই দায়িত্ব রয়েছে।

 

 

ব্লিংকেন বলেন, বাংলাদেশের গণতন্ত্রকে যারা এগিয়ে নিতে চান, তাদেরকে সমর্থন দিতে ওই নীতি প্রনয়ণ করা হয়েছে। নির্বাচনে বাধা সৃষ্টিকারী যেকোনো ব্যক্তির বিরুদ্ধে এই ব্যবস্থা নেয়া হতে পারে। মার্কিন বিধিনিষেধের আওতায় যারা পড়বেন তারা হলেন, সরকারের সাবেক ও বর্তমান কর্মকর্তা, রাজনীতিবিদ, আইন প্রয়োগকারী সংস্থা, বিচার বিভাগ এবং নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য। এতে বুঝা যায় যুক্তরাষ্ট্র বিগত কয়েক বছর ধরে যে বাংলাদেশে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের কথা বলে আসছে এ বিষয়ে তারা কতোখানি সিরিয়াস।  এন. হুসেইন রনী  /জেসি

Abu Al Moursalin Babla

Editor & Publisher
ই-মেইল: [email protected]

অনুসরণ করুন