Logo
Logo
×

বিশেষ সংবাদ

শীতের আগমনে পিঠার বাড়তি কদর

Icon

তানজিলা তিন্নি

প্রকাশ: ২৪ নভেম্বর ২০২৩, ০৩:১৯ পিএম

শীতের আগমনে পিঠার বাড়তি কদর
Swapno


পৌষের শীতের অন্যতম অনুসঙ্গ শীতের পিঠা।  শীতের আগাম বার্তায় প্রকৃতি সাজে তখনই ঘরে ঘরে বেড়ে যায় পিঠের কদর। আর এই শীতের মৌসুমকে কেন্দ্র করে বাড়ে পিঠে ব্যবসায়ীদের আয়। আবার এই শীতের সময় অনেকেই জীবিকা নির্বাহের জন্য বেছে নেন পিঠা বিক্রেতার পেশা। বর্তমান সময়ে শহরঅঞ্চলে অনেক বাড়িতে শীতের পিঠা বানানোর ঘটা করে তেমন কোনো আয়োজন খুব একটা দেখা যায় না।

 

 

তাই শীতের আগমনে পাড়া-মহল্লা ,অলিতে গলিতে দেখা মিলে পিঠার দোকান। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি দেখা যায় ভাপা ও চিতই পিঠে। চিতই পিঠের মূল আর্কষন বলা হয় কয়েক পদের ভর্তা যেমন,সরিষা, কালোজিরা, ধনেপাতা, শুঁটকি এসব ভর্তার চাহদা বেশি থাকে। কাঠ আর টিনের সাহায্যে বানানো দোকানে মাটির চুলো, কাঠ, হাড়ি আরো পিঠে বানানোর নানা সরনঞ্জাম দিয়ে সাজানো হয় এসব দোকান। শীতের সময় এসব ভাসমান দোকানে পিঠার চাহিদা থাকে অনেক।

 


ষড়ঋতুর দেশ বাংলাদেশ, শীতকাল তার মধ্যে অন্নতম। পৌষের হিমেল হাওয়া ছাড়া যেমন শীতকাল কল্পনা করা যায় না ঠিক পিঠে ছাড়াও বাঙালি শীত কল্পনা করতে পারে না। শীতকালে নতুন কৃষকের ঘরে নতুন ধান উঠে সেই ধান ঘরে ঘরে নতুন পিঠা বানানোর উৎসব শুরু হয়। নতুন চালের গুঁড়ো আর খজেুর রসের গুড় দিয়ে বানানো হয় নানা রকম পিঠা।

 

 

ভাপা পিঠা, চিতই পিঠা ,পাটসিাপটা, তেলের পিঠা,পুলি পিঠা আরো নানান রকম পিঠার চলন ছিল বাঙালির ঘরে ঘরে। তবে কালের বির্বতনে এসব পিঠা তৈরির আমেজ বর্তমানে নেই বললেই চলে।

 


নারায়ণগঞ্জ গনবিদ্যা নিকেতন স্কুলের সামনে ফুটপাতের উপর নিজের ছোট পিঠের দোকান বসান রেনু বেগম। শীতের পিঠের স্বাধ নিতে নিতে তার সাথে কথা বলে জানা যায়, বছরের পুরো সময় তিনি পিঠে বিক্রি করেই জীবিকা নির্বাহ করে থাকেন। এখন শীতের মৌসুমে তার পিঠের দোকনে দুই ধরনের পিঠে পাওয়া যায়। চিতই আর ভাপা পিঠে। ১০ টাকা করে বিক্রি করা হয় প্রতি পিচ।

 

 

চিতই পিঠের সাথ থাকে নানা ধনরণের ভর্তা।  বছরের প্রায় সময় তিনি শুধু চিতই পিঠেই বানিয়ে থাকেন। এখন শীত শীত ভাব পড়ায় পিঠেপ্রেমীদের ভাপা পিঠের চাহিদা বেড়েছে। তাই এখন ভাপা পিঠেও তৈরি করা হয় তার দোকানে। তিনি আরো বলেন শীতের মৌসুমেই বেচা কেনা একটু ভালো হয় আর গরমের সময় বেচা কেনা হয় তবে খুবই কম। আর শীতের সময় তার দোকানে ক্রেতার লাইন লেগে থাকে।

 

 

দুৃপুরের পর তিনি তার পিঠের দোকান নিয়ে বসেন। প্রতিদিন ৫ থেকে ৪ কেজি চালের পিঠা বানানো হয় তার দোকানে ২৫শ’ থেকে ৩ হাজার টাকা প্রতিদিন তার আয় হয় তবে সব কিছুর খরচ বাদে তার লাভ থাকে ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা।

 


রেনু বেগমের দোকানে পিঠের স্বাধ নিতে আসা নাজিম জানান,  আমাদের ছোট বেলায় মায়ের কাছে পিঠের বায়না করতে হতো না। প্রকৃতি শীতের আসার বার্তা দিলেই বাড়িতে পিঠে তৈরির উৎসব লেগে যেত। তবে আগের মতো আর পিঠে খেতে পারিনা। তাই বাইড়ে যখনই পিঠের দোকান দেখি লোভ আর সামলাতে পারি না। পিঠের সাথে ছোটবেলা থেকে যে সম্পর্কটা সেটা তো আর ভুলতে পারবো না। আর তাই প্রতিদিন কাজের ফাকে এখানে আসি পিঠের স্বাধ নিতে।

 


শহরের ডিআইটি মার্কেটের সামনের পিঠা ব্যবসায়ী রশিদ জানান, শীত বেশি পড়লে পিঠা বিক্রি বেশি হয়। তাই শীতের মৌসুমে বিকালের পর বাড়তি আয়ের আশায় এখানে পিঠের দোকান বসাই।  প্রতিদিন গড়ে পাঁচ থেকে ছয় কেজি চালের পিঠা বিক্রি হয়। চালের গুঁড়া, নারকেল, গুড়, লাকড়ি ও অন্যান্য খরচ বাদে ৩০০ থেকে ৪৫০ টাকা লাভ হয় দিনে। শুক্রবার সবচেয়ে বেশি বিক্রি হয়।

 

 

বিকালে দোকান বসালেও পিঠা বিক্রি তুলনামূলক ভাবে সন্ধ্যায় দোকানে পিঠার চাহিদা বেশি থাকে। অনেক সময় সন্ধ্যা হলে পিঠা কিনতে দোকানে সিরিয়াল দেন ক্রেতারা। রশিদ আরও বলেন, ‘অনেকে বাড়িতে নিয়ে পরিবার-পরিজন নিয়ে খান। এ ছাড়া বেশি পিঠা প্রয়োজন হলে এক দিন আগে অর্ডার দিয়ে যান। আবার পরিচিত অনেকে সকালে আমার বাসায় গিয়ে বলে আসেন। আমি পিঠা তৈরি করে সন্ধ্যায় তাঁদের বাসায় দিয়ে আসি।’
 

Abu Al Moursalin Babla

Editor & Publisher
ই-মেইল: [email protected]

অনুসরণ করুন