‘স্বেচ্ছায় পদত্যাগ নাকি বাধ্য করা হবে’

যুগের চিন্তা অনলাইন
প্রকাশ: ০৭ ডিসেম্বর ২০২১, ০২:৪৬ পিএম

# হাই বাদলসাহেব কী করছেন তা এখনো জানা যায়নি
# পক্ষে না নামেন তাহলে স্বেচ্ছায় আপনারা দল হতে পদত্যাগ করুন
# বিদায় করতে যা যা করণীয় তা' তা' অবশ্যই করতে আমরা বাধ্য হবো
২০১১ সালে প্রথম স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের মেয়র হন ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী। ২০১৬ সালে দ্বিতীয় মেয়াদে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকে মেয়র নির্বাচিত হন ডা. আইভী। এবাও আওয়ামী লীগের টিকেট পাওয়ায় দ্বিতীয়বারের মতো সিটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী তিনি। তবে তিনবারের নির্বাচনেই আওয়ামী লীগের একটি অংশের সমর্থন ছাড়াই মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন তিনি। তবে আগের দুইবারের চেয়ে এবার বিষয়টি ভিন্ন। কেননা গত দেড়বছর যাবৎ আওয়ামী লীগেরই একটি অংশ আইভীর প্রকাশ্য বিরোধিতা করে ব্যক্তব্য রেখেছেন, মাঠ গরম করেছেন। তবে সেসবে কান না দিয়ে আইভীর উপরই আস্থা রেখেছেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা। কিন্তু এরপরেও মহানগর আওয়ামী লীগের বেশ কিছু নেতা এখনো আইভীর পক্ষে অবস্থান নেননি। এরমধ্যে মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এড.খোকন সাহা এবং সহসভাপতি বাবু চন্দনশীলও নৌকার মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলেন। আরেকজন ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এড.আবু হাসনাত শহীদ মো. বাদল। আইভীকে মনোনয়ন দেয়ার দুইদিন পরেও এসব শীর্ষ নেতাদের কোন ধরণের প্রতিক্রিয়া না থাকায় ক্ষুব্ধ হয়েছেন তৃণমূলসহ আওয়ামী লীগ কর্মীরা।
তারা বলছেন, মনোনয়ন পাওয়ার বাসনা থাকতেই পারে, কিন্তু মনেনায়ন পেলে দল ভালো, না পেলে দলের সাথে নাই এমন আচরণ সিনিয়র নেতাদের কাছ থেকে আশা করা যায়না। এতোদিন শীর্ষ নেতারা কী করেছেন তা জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের নেতারা তো দেখেছেই কেন্দ্রও যে জানেনা এমনটি নয়। কিন্তু এরপরেও কয়েকজন নেতা এমন ভাব নিচ্ছেন যাতে তারা মনে করছেন তারা কোন পদে নেই। দায়িত্বশীল পদে থেকে দায়িত্বজ্ঞানহীন কাজ করবার মতো সুযোগ নেই। আর সেটি করতে হলে পদ ছেড়ে দিয়ে করার পরামর্শ দিয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের প্রবীণ সদস্য মো. শহীদুল্লাহ। তিনি আক্ষেপ করে বলেন, আমরা আওয়ামী লীগ করি। বঙ্গবন্ধু ছাড়া অন্য কারো সৈনিক আমরা নই। দল তথা জাতির পিতার কন্যা নাসিক নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন দান করেছেন ডা. সেলিনা হায়াত আইভীকে। মনোনয়ন দানের আগে দলের বিভিন্ন নেতাদের বিভিন্ন মতামত থাকতে পারে; বিভিন্নজনে বিভিন্ন নেতাদের মনোনয়ন দিবার দাবি ও করতে পারেন।এটা গনতন্ত্রের স্বাভাবিক প্রক্রিয়ার আওতাধীন বিধায় মনোনয়ন প্রদানের পর তা' সকলকে ভুলে যাবারই কথা। কিন্তু পরিতাপের সহিত লক্ষ্য করছি; আমাদের কিছু কিছু নেতা দলের পদ-পদবী ধারণ করা সত্ত্বেও আজ অবধি মেয়র আইভী এর নির্বাচন করার মানসে দলীয় কার্যালয়েও আসেননি।
এরমধ্যে আজ (৬ ডিসেম্বর) মহানগর আওয়ামী লীগ তাদের কার্যালয়ে সভা ডেকে মেয়র আইভী এর নির্বাচন করার সকল প্রক্রিয়া সমাপ্ত করেছেন;- যেই সভায় মেয়র মহোদয় ও উপস্তিত থেকে তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন। পরিতাপের বিষয় সেই সভায় কমিটির সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট বাবু খোকন সাহাসহ কিছু নেতা আসেননি।
তিনি বলেন, ‘অন্যদিকে দেখছি; আমরা যারা জেলা কমিটিতে আছি তারা এখনো জানতে পারিনি আমাদের জেলা কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক যথাক্রমে আব্দুল হাই সাহেব ও বাদল সাহেব কি করছেন, কী বলছেন? আমরা তাদেরসহ যারা তাদের কথামতো চুপ করে এখনো জেগে ঘুমাচ্ছেন তাদেরকে স্মরণ করিয়ে দিয়ে বিনয়ের সাথে শুধু বলবো যদি আপনারা আওয়ামী লীগের; বিশেষ করে বঙ্গবন্ধুর কন্যা, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী মহোদয়ের মনোনিত প্রার্থী ডা. সেলিনা হায়াত আইভী এর জন্য মাঠে না আসেন, নির্বাচনে এখনি না নামেন তাহলে স্বেচ্ছায় আপনারা দল হতে পদত্যাগ করুন। নতুবা জাতির পিতার সৈনিকরা আপনাদেরকে ক্ষমা করবেন না এবং আপনাদেরকে দল হতে চিরতরে বিদায় করতে যা যা করণীয় তা' তা' অবশ্যই করতে আমরা বাধ্য হবো।’