হারুনের ভাতের হোটেলে ভাত খেলেন শামীম ওসমান
যুগের চিন্তা রিপোর্ট
প্রকাশ: ৩০ নভেম্বর ২০২৩, ০৮:০৮ পিএম
# এবারও খেলা হবে, ফাউল কম হবে
# গিয়াসউদ্দিনের প্রতিবাদ করা উচিৎ
একাদশ জাতীয় নির্বাচনের মাত্র মাস খানেক বাকি। এরমধ্যেই নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার হিসেবে আসেন বর্তমান গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) প্রধান হারুন অর রশীদ। শুধু যে এলেন তা তো নয়, তামিল-হিন্দি সিংহাম মুভির সিংহাম খেতাব নিয়েই নারায়ণগঞ্জ ছাড়েন। নারায়ণগঞ্জে আসা থেকে যাওয়ার পর পর্যন্ত নারায়ণগঞ্জে তৎকালীন এসপি হারুন যা করে গেলেন তা ‘সিংহাম’ মুভিকেও হার মানায়। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন পর্যন্ত শামীম ওসমানের সাথে সিংহাম হারুনের সম্পর্ক ছিল মোটামুটি ভাল।
কিন্তু এরপর নারায়ণগঞ্জে এসপি হারুন শামীম ওসমানের ঘনিষ্ঠজনদের যেভাবে আইনের আওতায় আনলেন তা সারাদেশেই আলোচনায় আসে। তৎসময়ে শামীম ওসমানের ঘনিষ্ঠজনেরা কেউবা আইনের আওতায় এসেছে, কেউবা দেশ ছেড়ে দেশের বাইরে অবস্থান করেছে। শামীম ওসমানকেও দেখা গেছে তার ঘনিষ্ঠজনেরা যখন আইনের আওতায় এসেছে তাদের নিয়ে কথা বলতে এসপি হারুনের কার্যালয়ে।
কখনো এসপি হারুন তার পুলিশ বাহিনী নিয়ে পুরো নারায়ণগঞ্জ শহর মহড়া দিয়েছেন। আবার কখনো মেরী এন্ডারসনে অভিযান চালিয়েছেন। আবার কখনো ফতুল্লায় শীর্ষ সন্ত্রাসীদের আস্তানায় হানা দিয়ে গ্রেফতার করেছেন। তবে এসপি হারুন কেঁদেই নারায়ণগঞ্জ ছেড়েছেন। শেষ পর্যন্ত নানা অভিযোগে এসপি হারুন যখন নারায়ণগঞ্জ ছাড়েন এরপরই শামীম অনুসারীদের যেন প্রাণ ফিরে আসে। আস্তে আস্তে সবাই আবার নারায়ণগঞ্জমুখী হন।
এসপি হারুন নারায়ণগঞ্জ থেকে যাওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত নানা অনুষ্ঠানে শামীম ওসমানের সাথে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক বিনিময় করতে দেখা গেছে। তবে দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনের ঠিক আগ মুহুর্ত্বে শামীম ওসমানকে দেখা গেল গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) প্রধান হারুন অর রশীদের কার্যালয়ে। সেখানে তারা একসাথে খাবারও খান। সেই ছবি ভেসে বেড়াচ্ছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।
গতকাল ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের কার্যালয় থেকে বের হয়ে সাংবাদিক প্রশ্নের জবাবে নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) এ কে এম শামীম ওসমান বলেছেন, গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) প্রধান হারুন অর রশীদ সঙ্গে তো আমার আজকের পরিচয় না। আমরা ছাত্র রাজনীতি করতে করতে এখানে এসেছি।
মঙ্গলবার (২৮ নভেম্বর) আমি সংবাদ সম্মেলনে বলেছিলাম বাংলাদেশে কিছু ঘটনা ঘটানোর চেষ্টা করা হচ্ছে, দেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্র বানানোর জন্য। যেহেতু তিনি ঢাকার ডিবির দায়িত্বে আছেন, তাই আমার কাছে যেসব তথ্য আছে সেগুলো জানাতে চাই, যারা বাংলাদেশকে একটি ব্যর্থ রাষ্ট্র বানাতে চায়, এমন একটা জায়গায় নিয়ে যেতে চায় যেখান থেকে উঠে আসাটা কঠিন হবে। যেটা আপনারা দেখেছেন পুলিশকে কুপিয়ে মারা, সাংবাদিকদের মারা এসব কিছু তথ্য শেয়ার করা। এটা আমি এমপি হিসেবে নয় সাধারণ মানুষ হিসেবে এসেছি জানাতে।
সে দেশ উন্নত হয় যে দেশের সাধারণ মানুষ যদি কোনো তথ্য পায় সেটি দায়িত্বশীল কর্তৃপক্ষকে জানায়। আমি বিভিন্ন দিক থেকে খোঁজ খবর পাই, এগুলো সঠিক কি না তা দেখার দায়িত্ব প্রশাসনের। আমি মনে করি তিনি একজন শক্তিধর অফিসার তাই আমি তাকে বিষয়গুলো জানিয়েছি।
বিএনপির পক্ষ থেকে সাবেক সংসদ সদস্য মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিনের মনোনয়ন ষড়যন্ত্র করে উত্তোলনের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, উনার নমিনেশন পেপার যদি কেউ কিনে থাকে তাহলে তার এসে প্রতিবাদ করা উচিত। হয়তো উনি বলবেন আমার কেস আছে আমি আসতে পারছি না। আমি মনে করি, এটা নির্বাচনের দায়িত্ব ও আমি নির্বাচন কমিশনকে অনুরোধ করি যে ব্যক্তি তার ছেলে কাউন্সিলরের সচিব আমি শুনেছি, তাকে ডেকে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা উচিত।
এখানে দুটি জিনিস হচ্ছে এক উনি আমাদের ভাবমূর্তি নষ্ট করছেন দুই নির্বাচন কমিশনের ভাবমূর্তি নষ্ট করছেন আর তিনি দেখাতে চান তার ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে। নিজে না এলে আইনের আওতায় এনে কারণ কারো ভাবমূর্তি নষ্ট করার অধিকার কারো নেই। আমি মনে করি নির্বাচন কমিশন স্বতন্ত্র, তাদের উচিত তার এ অভিযোগে নির্বাচনের কমিশনের কর্ণপাত করা ও সঠিক বিচার করা।
শামীম ওসমানের ওপরে হামলার আশঙ্কার প্রশ্নে তিনি বলেন, এ পর্যন্ত সবচেয়ে বড় হত্যাচেষ্টা ও বোমা হামলা হয়েছে আমাদের ওপর ১৬ জুন ২০০১ সালে। আমরা তো মরেই গেছি, এ নিয়েই আছি, আপনারা দোয়া করবেন।
বিএনপি নির্বাচনে নেই তবুও খেলা হবে কি না প্রশ্নে তিনি বলেন, খেলা হবে, হয়তো পরিচ্ছন্ন খেলা হবে, হয়তো ফাউল কম হবে। ডিবি কার্যালয়ে খাবার খেয়েছেন কি না প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি হারুন সাহেবেরটা খাইনি, তার স্ত্রী আমার বোন হয়, আমি তার পাঠানো খাবার খেয়েছি। এর আগেও অনেকবার খেয়েছি, খাবার ভালোই হয়। এস.এ/জেসি


