রোববার   ০৬ অক্টোবর ২০২৪   আশ্বিন ২১ ১৪৩১

হার্ডলাইনে যেতে পারে সেনাবাহিনী

যুগের চিন্তা রিপোর্ট

প্রকাশিত: ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪  


 
চলছে যৌথ অভিযান। ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা নিয়ে সাঁড়াশি অভিযান পরিচালনা করছে সেনাবাহিনী। বিশেষ করে, নারায়ণগঞ্জের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি রক্ষা এবং লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধারেই বেশি মনযোগী দেখা যাচ্ছে সশস্ত্র বাহিনীটিকে। যদিও সম্প্রতি, রাজনৈতিক কয়েকটি ঘটনায় সেনাবাহিনীর হার্ডলাইনে যাওয়ার আলোচনা এসেছে।

 

 

জেলার বিভিন্ন জায়গায় প্রভাব বিস্তারকে কেন্দ্র করে হানাহানি, পেশিশক্তির জোড়ে অন্যের সম্পত্তি জবরদখল সহ বিএনপি নেতাকর্মীদের নানা অপকর্মে ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতায় সেনাবাহিনীর হার্ডলাইনে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। এমনটাই মনে করছেন জেলার সচেতন নাগরিকরা।

 


সূত্রানুযায়ী, ২২ সেপ্টেম্বর নারায়ণগঞ্জের কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করার পাশাপাশি বন্ধন পরিবহন দখলে নিতে বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। ওইদিন সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত নগরীর ১নং রেলগেট, টানবাজার ও লঞ্চ টার্মিনাল এলাকায় দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। পরবর্তীতে সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।

 

এসময় সেনা কর্মকর্তারা বলেন, সবাইকে বলছি রাস্তায় কেউ কোন ধরণের বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করবেন না। করলে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। আপনাদের কোনো দাবি দাওয়া থাকলে সেটা নিয়ামানুযায়ী করেন কিন্তু রাস্তায় কেউ বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি করলে, সেটা যেই হোক কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সংঘর্ষের কারণে কেন্দ্রীয় কাউন্টারে এখনো পর্যন্ত বন্ধ রয়েছে বন্ধন বাসের যাত্রীসেবা।

 

 

২নং রেলগেট, ১নং রেগেট এলাকায় বাস চলাচলও বন্ধ আছে বলে জানা গেছে। ১নং রেলগেট থেকে টানবাজার ও বন্দর ঘাট এলাকায় সব ধরণের যানবাহন চলাচল বন্ধ রাখা হযেছৈ। প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্যমতে, ক্রসফায়ারে নিহত বিএনপি নেতা মমিন উল্লাহ ডেভিড ও জেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি, কারাবন্দী জাকির খানের সমর্থকদের মাঝে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ৭ জনকে আটক করে পুলিশী হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।

 


এরআগে, ১১ সেপ্টেম্বর ফতুল্লায় বিএনপির দুই গ্রুপের মিছিল বের করা নিয়ে ব্যপক ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। দুই গ্রুপের সংঘর্ষে সেসময় আহত হন অন্তত অর্ধাশতাধিক মানুষ। অধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ওই সংঘর্ষের সময় দুই গ্রুপের লোকজনদের হাতেই পিস্তল, রাম দা, রড ও লাঠিসোটা দেখা গেছে।

 

 

সংঘর্ষ নিয়ে থানা বিএনপির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পাল্টাপাল্টি একে অন্যদের দোষারোপ করেছেন। সংঘর্ষে লিপ্ত ওই দু’টি গ্রুপ ছিল এই দুই নেতার অনুসারী। সূত্রের খবর অনুযায়ী, ফতুল্লার রেললাইন থেকে শুরু করে কাঠেরপুল, কোতালেরবাগ, রামারবাগ, শিবু মার্কেটসহ বিভিন্ন জায়গায় গার্মেন্টস সেক্টর থেকে ঝুট ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ নিয়েই শো-ডাউন দেখাতে যায় ওই দুটি পক্ষ। এরপর যা রূপ নেয় সংঘর্ষে।

 


চলতি মাসের ৪ তারিখ থেকে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার পাশাপাশি লুট হওয়া অস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধার কার্যক্রমসহ নিয়মিত টহল এবং নজরদারি অব্যাহত রাখতে শুরু হয়েছে যৌথ অভিযান। যা পরবর্তীতে রূপ নেয় ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতায়। এরইমধ্যে, ৬০ কার্যদিবসের জন্য ১৭ সেপ্টেম্বর আইনশৃঙ্খলা অবনতি রোধ কল্পে সরকারের সিদ্ধান্তক্রমে সেনাবাহিনীকে বিশেষ ক্ষমতা প্রদান করা হয়েছে।

 

 

যৌথ বাহিনীর অভিযান পূর্ববর্তী সময় একেবারে ভেঙে পরা আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসতে সক্ষম হয়েছেন দায়িত্বপ্রাপ্তরা। তবে, বিভিন্ন জায়গায় বিচ্ছিন্নসব ঘটনাপ্রবাহে সম্প্রতি নারায়ণগঞ্জজুড়ে সেনাবাহিনীর প্রতি প্রবল তথা জোরালো অভিযান দাবি করেছেন সচেতন নাগরিকরা। তারা বলছেন, সন্ত্রাসী কার্যকলাপ রুখতে এখনই সেনাবাহিনীকে হার্ডলাইনে যাওয়া উচিৎ।     এন. হুসেইন রনী  /জেসি

এই বিভাগের আরো খবর