বুধবার   ১১ ডিসেম্বর ২০২৪   অগ্রাহায়ণ ২৭ ১৪৩১

২০১৩ মনে রেখেছেন ড. ইউনুস!

যুগের চিন্তা রিপোর্ট :

প্রকাশিত: ২৬ নভেম্বর ২০২৪  

বিগত সরকারের আমলে ড. মুহম্মদ ইউনূসকে নানাভাবে অপমান অপদস্ত করেছেন শেখ হাসিনা। রাজনীতির মাঠ থেকে সংসদ কোথাও বাদ রাখেননি তার সমালোচনা। একের পর এক আক্রমণ ছিল শান্তিতে নোবেল জয়ী ইউনূসের বিরুদ্ধে। কিন্তু যার সমালোচনায় সরব ছিলেন পালিয়ে যাওয়া শেখ হাসিনা, সেই ইউনূসই এখন সিংহাসনে,বিপরীতে পরবাসে শেখ হাসিনা। বিগত আওয়ামী লীগের আমলে গ্রামীণ টেলিকমের টাকা আত্নসাতের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় হাজিরা দেওয়াসহ নানা রকম হয়রানির শিকার হয়েছিলেন ইউনূস। সে সময় হয়রানি বন্ধে দেশ বিদেশের অনেক বিশিষ্ট নাগরিকগণও দিয়েছিলেন বিবৃতি। শুধু তাই নয় পদ্মা সেতুর টাকা বন্ধে ইউনূসকে পদ্মা নদীতে দুটি চুবানি দেওয়ার কথা ও বলেছিলেন শেখ হাসিনা। 

 

 

কিন্তু ২০১৩ ড.ইউনূসকে নিয়ে সংসদে বক্তব্যের প্রতিবাদ করেছিলেন তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেতা বেগম খালেদা জিয়া। আড়াই মিনিটের ওই বক্তব্যে ড. ইউনূসকে আন্তরিক অভিনন্দন জানিয়ে খালেদা জিয়া বলেছিলেন, শান্তিতে নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের সর্বোচ্চ ইউএস কংগ্রেশনাল অ্যাওয়ার্ডে ভূষিত হয়েছেন। এ জন্য জাতি হিসেবে আমরা গর্বিত।

 

খালেদা জিয়া আরো বলেছিলেন, তবে নিজ দেশে তিনি যেভাবে নিগৃহের শিকার হচ্ছেন, তা সত্যিই দুঃখজনক। তার মেধা, শ্রম ও ঘামে প্রতিষ্ঠিত গ্রামীণ ব্যাংকও হুমকির মুখে। সরকার মনোনীত কমিশন নোবেল বিজয়ী প্রতিষ্ঠান গ্রামীণ ব্যাংককে ভেঙে ১৯ টুকরো করার সুপারিশ করেছে। আমরা এতে স্তম্ভিত। এ ধরনের সিদ্ধান্ত গ্রামীণ ব্যাংককে ধ্বংস করে ফেলবে।

 


গত বৃহস্পতিবার সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষে দীর্ঘ এক যুগ পর ঢাকা সেনানিবাসের সেনাকুঞ্জে যান বেগম খালেদা জিয়া। সেখানে অন্তর্র্বতী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের সঙ্গে মতবিনিময় করেন তিনি। বেগম জিয়াকে দেখেই ড. ইউনূস সেখানে এগিয়ে যান এবং দাঁড়িয়ে থেকে কিছুক্ষণ কথা বলেন। পরে দুজনকে পাশাপাশি সোফায় একে অন্যের দিকে হেলে কথা বলতে দেখা যায়। পরে বেগম খালেদা জিয়াকে স্বাগত জানিয়ে বক্তব্য দেন ড. ইউনূস। এর পরই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বক্তব্যটি ছড়িয়ে পড়ে।

 


সাধারণ মানুষও বিষয়টিকে আন্তরিকতার সহিত নিয়েছেন। ড. ইউনূস বলেন, খালেদা জিয়া আজ এখানে আমাদের মাঝে উপস্থিত আছেন। এক যুগ ধরে তিনি এই মহাসম্মিলনীতে অংশ নেওয়ার সুযোগ পাননি। আজ সুযোগ পেয়েছেন। আমরা সবাই আনন্দিত এবং গর্বিত যে, আপনাকে এই সুযোগ দিতে পেরেছি।

 


তিনি বলেন, শারীরিক অসুস্থতা সত্ত্বেও এই বিশেষ দিবসে সবার সঙ্গে শরিক হওয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। এই অনুষ্ঠানে আপনাকে বিশেষভাবে স্বাগত জানাচ্ছি। এসময় খালেদা জিয়ার আশু রোগমুক্তি কামনা করেন প্রধান উপদেষ্টা।

 


অনুষ্ঠানে নিমন্ত্রণ, বেগম জিয়ার শারীরিক সুস্থতা কামনা, উষ্ণ অভ্যর্থনা যেন জানিয়ে দেয়, ২০১৩ সালে দেওয়া বেগম জিয়ার সেই বক্তব্যের পুনারাবৃত্তি।

এই বিভাগের আরো খবর