Logo
Logo
×

নগর জুড়ে

নারায়ণগঞ্জ নাগরিক আন্দোলন এর সংবাদ সম্মেলন

কদম রসুল সেতুর পশ্চিম প্রান্তের সংযোগ মুখ পরিবর্তনের দাবি

Icon

যুগের চিন্তা রিপোর্ট

প্রকাশ: ০৪ মে ২০২৫, ১২:০০ এএম

কদম রসুল সেতুর পশ্চিম প্রান্তের সংযোগ মুখ পরিবর্তনের দাবি

কদম রসুল সেতুর পশ্চিম প্রান্তের সংযোগ মুখ পরিবর্তনের দাবি

Swapno

নারায়ণগঞ্জের কদম রসুল সেতুর পশ্চিম প্রান্তের সংযোগ মুখ পরিবর্তন এবং যথাযথ সমীক্ষা সম্পন্ন করে দ্রুত নতুন নকশা প্রণয়নের দাবি জানিয়েছে নারায়ণগঞ্জ নাগরিক আন্দোলন। গতকাল শনিবার (৩ মে) সকাল ১১টায় নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়। সংগঠনের পক্ষে আহ্বায়ক রফিউর রাব্বি বলেন, “নারায়ণগঞ্জ একটি ঐতিহ্যবাহী শহর। শিল্প, সংস্কৃতি, রাজনীতি ও অর্থনীতিতে এর গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস রয়েছে। কিন্তু নগর উন্নয়নে নাগরিক মতামত ও অংশগ্রহণ উপেক্ষা করা হচ্ছে, যা পরিণতিতে জনদুর্ভোগ বাড়াচ্ছে।” তিনি বলেন, “আদর্শ নগরে সড়ক নেটওয়ার্ক থাকা উচিত মোট ভূখণ্ডের ২০ থেকে ২৫ শতাংশ।

অথচ নারায়ণগঞ্জ শহরে বর্তমানে তা মাত্র ৭ শতাংশ। অপরিকল্পিত নগরায়নের সঙ্গে সঙ্গে পরিবহন ব্যবস্থাও অকার্যকর হয়ে উঠেছে। এই প্রেক্ষাপটে শীতলক্ষ্যা নদীর উপর কদম রসুল সেতু নির্মাণ ইতিবাচক হলেও, প্রকল্পটির নকশা ও বাস্তবায়ন পদ্ধতি নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে।” রাব্বি জানান, সেতুটির পশ্চিম প্রান্তের সংযোগ নারায়ণগঞ্জ কলেজের সামনের ফলপট্টি এলাকায় পড়েছে যা শহরের অন্যতম ব্যস্ত সড়ক। এখানে আগে থেকেই যানজট লেগেই থাকে। এখানে রয়েছে নারায়ণগঞ্জ হাইস্কুল, নারায়ণগঞ্জ কলেজ এর সাথে দ্বিগুবাবুর বাজারে প্রবেশে মুখ, তাছাড়া এটিই শহরের  রেলস্টেশন, বাস টার্মিনাল ও লঞ্চঘাটের সংযোগ সড়ক। সর্বোপরি দেশের বৃহত্তর রঙ ও সুতার বাজার টানবাজারে প্রবেশের এইটি একটি প্রধানতম সড়ক হওযায় এখানে প্রতিনিয়ত ভয়াবহ যানজট লেগে থাকে। আবর এর সাথেই রেলক্রসিং থাকায় বিভিন্ন সময় এখানে দুর্ঘটনায় মৃত্যুর ঘটনাও ঘটেছে। এমন একটি ব্যস্ত সড়কে কদম রসুল সেতুর মুথ যদি যুক্ত হয় তাহলে এই সেতু থেকে যানবাহন সড়কে নামার ক্ষেত্রে যেমনি বড় ধরণের সংকটে পড়বে, অন্যদিকে এই পুরো এলাকাটিই সম্পূর্ণ ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে উঠবে। এ অবস্থায় আরও একটি সেতু সংযোগ এ অঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙে ফেলতে পারে। এত বড় নকশা তৈরির ক্ষেত্রে  নগরের এই বাস্তবতা ও সংকটটি গভীরভাবে বিবেচনায় নেয়া উচিত ছিল। এই প্রকল্পে যথাযথ সমীক্ষার ক্ষেত্রেও ঘাটতি রয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।  



তিনি বলেন, “প্রতিদিন বন্দরঘাট দিয়ে এক লাখ বিশ হাজার থেকে দেড় লক্ষ মানুষ যাতায়াত করে। এর একটি বড় অংশ যদি এই সেতু ব্যবহার করে, তাহলে এর প্রভাব কী হবে বিবেচনায় নেওয়া হয়নি। প্রকল্পের নকশায় সঠিক ও দীর্ঘমেয়াদী সমীক্ষার অভাব রয়েছে। আমরা মনে করি, এ ধরণের প্রকল্প অন্তত একশ বছর পরবর্তী বাস্তবতা মাথায় রেখে প্রণয়ন করা উচিত।”



তিনি আরও বলেন, “দ্রুত প্রকল্প সংশোধন করে সেতুর পশ্চিমমুখ পুনঃনির্ধারণ করতে হবে। জনগণের কষ্ট বাড়ায়, এমন অপরিকল্পিত উন্নয়ন কোনওভাবে গ্রহণযোগ্য নয়।”



নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক ধীমান সাহা জুয়েল এর সঞ্চালনায় সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন, সিপিবি নারায়ণগঞ্জ জেলার সভাপতি হাফিজুল ইসলাম, ন্যাপ জেলা সাধারণ সম্পাদক আওলাদ হোসেন, বাসদ সদস্য সচিব আবু নাইম খান বিপ্লব, নারায়ণগঞ্জ নাগরিক কমিটির সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল হক দিপু, সাংস্কৃতিক জোটের সাবেক সভাপতি ভবানী শঙ্কর রায়, বর্তমান সভাপতি জিয়াউল ইসলাম কাজল, এবং সাবেক কাউন্সিলর অসিত বরণ বিশ্বাস।



প্রসঙ্গত,  কদম রসুল সেতু প্রকল্পটি ২০১৭ সালে একনেকে অনুমোদিত হয়। এর কার্যক্রম শুরু হয় ২০১৮ সালে। এর মেয়াদ ২০১৮ সালের জুলাই থেকে ২০২৬ সালের জুন মাস পর্যন্ত নির্ধারণ করা হয়েছে। এর প্রকল্প ব্যয় ৭৩৫ কোটি টাকা। সেতুটির মূল দৈর্ঘ্য ৩৮০ মিটার, প্রশাস্ত ১২ দশমিক ৮০ মিটার। সংযোগ সড়ক ১৩৭৯ মিটার। সেতুটি নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন ও স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) যৌথভাবে নির্মাণ করবে। সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা অভিযোগ করেন, সেতুর প্রকল্প প্রক্রিয়া দীর্ঘদিন ধরে চলমান থাকলেও এই সেতু ব্যবহারকারী নাগরিকদের সাথে এ প্রকল্প নিয়ে মতবিনিময় বা তাদের অভিমত জানার জন্য কখনো কোন কর্তৃপক্ষ কোন উদ্যোগ গ্রহণ করেনি।

Abu Al Moursalin Babla

Editor & Publisher
ই-মেইল: [email protected]

অনুসরণ করুন