Logo
Logo
×

নগর জুড়ে

নগরবাসীর বিষফোড়া ৩০ হাজার অবৈধ অটোরিক্সা

Icon

যুগের চিন্তা রিপোর্ট

প্রকাশ: ১২ মে ২০২৫, ১২:০০ এএম

নগরবাসীর বিষফোড়া ৩০ হাজার অবৈধ অটোরিক্সা

নগরবাসীর বিষফোড়া ৩০ হাজার অবৈধ অটোরিক্সা

Swapno

নারায়ণগঞ্জ শহরে চলাচল করতে গিয়ে মানুষের উপচেপড়া ভিড় লক্ষ্য করা যায়। সম্প্রতি যানজট নিয়ে স্বয়ং জেলা প্রশাসক নিজেই ক্ষোভ প্রকাশ করেন। এটি নিয়ে যানজট নিরসনে প্রশাসন থেকে শুরু করে নগরবাসিকে নিয়ে তিনি মতবিনিময় সভা করেন। নারায়ণগঞ্জ শহরেই ২০ লাখ জনসংখ্যার উপরে বসবাস। নগরীর চাষাঢ়া থেকে নিতাইগঞ্জ পর্যন্ত দেড় কিলোমিটার জুরে বঙ্গবন্ধু সড়কে প্রতিনিয়ত যানজট লেগেই থাকে। আর এতে করে মানুষকে ভোগান্তি পোহাতে হয়। অটো মালিক সমিতির তথ্য মতে, ১৭ হাজার অটোর লাইসেন্স রয়েছে। কিন্তু তাদের  দেয়া তথ্যমতে নারায়ণগঞ্জ সদর-বন্দর উপজেলায় ৫০ হাজার অটো রয়েছে। তার মাঝে ৩০ হাজারের বেশি অটো রয়েছে শহরেই। আর এই অবৈধ অটো নিয়ে ব্যাপক ক্ষোভ প্রকাশ করে জেলা  প্রশাসক।



এই অটোরিক্সার দৌরাত্ম্য নিয়ে জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞা বলেন, রুট পারমিট ও ফিটনেসবিহীন সকল পরিবহন ডাম্পিংয়ে দেয়া হবে। আমরা কারও প্রতি রুষ্ঠ হতে চাই না। ‘অবৈধ অটোগুলো কোনভাবেই শহরে চলতে পারবে না। চাষাঢ়া ও দুই নং রেলগেট এলাকায় আমাদের ভ্রাম্যমাণ আদালত চলতে থাকবে। বাস মালিকদের বলতে চাই, আপনাদের আর কতবার বলতে হবে, রাস্তায় বাসগুলো রাখবেন না। আপনি চেঞ্জ করুন, অটোচালকের কথা কেন আপনি বলবেন। আমাদের প্রতিনিয়ত সমস্যা আসবে এবং তার সমাধান করতে হবে। তবে আমাদের আইনের আওতায় থেকে কাজ করতে হবে। আপনি যদি ভাবেন আবেগ দিয়ে আইনকে প্রভাবিত করবেন সে সুযোগ আইনেও নেই, আমার কাছেও নেই। ডিসি আরও বলেন, আমরা আপনাদের দাবীর কথা শুনবো এবং যৌক্তিক দাবীর ক্ষেত্রে ব্যাবস্থাও নেবো। কিন্তু আপনি রাস্তা বন্ধ করবেন, অফিস ঘেরাও করবেন এটা চলবে না।



অপরদিকে বৈধ, অবৈধ ব্যাটারি চালিত অটোরিকশা, মিশুকের রাজত্ব চলছে পুরো শহর জুড়ে। আরেক দিকে অবৈধ হকারদের বেপরোয়া দখলে মানুষ এখন আর ফুটপাত সড়কে হেঁটে চলাচল করতে পারেন না। চাষাঢ়া থেকে কালির বাজার ৫ মিনিটে  হেঁটে চলার পথও এখন হকার আর মানুষের ভীড়ের জন্য ৩০ মিনিটে হেঁটে গন্তব্যে পৌছানো যায় না। যারা গাড়িতে কিংবা ব্যাটারি চালিত পরিবহনে চলাচল করে তারা ১ ঘণ্টা ৩০ মিনিটেও চাষাঢ়া থেকে নিতাইগঞ্জ যেতে পারে না। তাছাড়া বঙ্গবন্ধু সড়ক দিয়ে এম্বুলেন্স যাবে এখন সেই পরিবেশও নেই।



গত বছরের ৫ আগষ্টের আগ পর্যন্ত শহরে একদিকে ব্যাটারিচালিত অটো প্রবেশ নিষেধাজ্ঞা থাকলেও তখন নিয়ন্ত্রণে ছিল। কিন্তু সরকার ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পরে যাওয়ার পর হর হামেশাই ইজিবাইক, ব্যাটারি চালিত রিকশা শহরময় তাণ্ডব চালাচ্ছে।



খোঁজ নিয়ে জানা যায়, নারায়ণগঞ্জ ফতুল্লার কাশিপুরেই ২৫০টির বেশি অটোরিকশা গ্যারেজ সহ সদর উপজেলায় ৬০০টির বেশি অটো রিকশা গ্যারেজ রয়েছে। এই গ্যারেজ গুলোতে প্রতিনিয়ত বিদ্যুৎ চুরির অভিযোগ রয়েছে। এদের বেশির ভাগই বৈধতা নেই।



শহরে যানবাহনের শৃঙ্খলা ফেরাতে সম্প্রতি জেলা পুলিশ সুপার প্রত্যুষ কুমার মজুমদার বলেছেন, নারায়ণগঞ্জ শহরের কোন জায়গায় চাদাঁবাজি চলবে না। কেউ যদি চাঁদাবাজি করে তাহলে হয় সে থাকবে আর না হয় আমি এসপি গিরি ছেড়ে দিয়ে চলে যাবো। তাছাড়া যে সকল অটোর বৈধতা নেই সে গুলো এখন থেকে কোন ভাবেই শহের প্রবেশ করতে পারবে না। কারো গাড়ি অটো আটকালে কেউ তদ্বির করতে আইসেন না এটা আপনাদের প্রতি আমার অনুরোধ।



জেলা অটো মালিক সমিতির সভাপতি আব্দুর রহমান বিশ্বাস বলেন, নারায়ণগঞ্জে পৌরসভার আমল থেকে সদর বন্দরে ১৭ হাজার ৪৪২টি অটোর বৈধতা রয়েছে। তার মাঝে সিদ্ধিরগঞ্জে ৬ হাজার, নারায়ণগঞ্জ শহরে ১০ হাজার ৮৪২ এবং বন্দরে ৭০০। এর বাইরে যত অটো রয়েছে সবগুলোই অবৈধ। তাছাড়া সিটি জরিপের তথ্য মতে নারায়ণগঞ্জে ৫০ হাজারের বেশি বৈধ অবৈধ অটো রয়েছে। তার মাঝে ৩০ হাজার অটো রয়েছে অবৈধ। যে গুলো শহরে অবাধে প্রবেশ করে যানজট তৈরী করছে।

Abu Al Moursalin Babla

Editor & Publisher
ই-মেইল: [email protected]

অনুসরণ করুন