
বাংলাদেশ ব্যাংক
দেশের ইতিহাসে ২০২২ সালের আগস্টে রিজার্ভ সর্বোচ্চ ৪৮ দশমিক শূন্য ৬ বিলিয়ন ডলারে উঠেছিল। এরপর থেকে শুরু করে আওয়ামী লীগ সরকারের শেষ সময় পর্যন্ত সেখান থেকে প্রতি মাসে শুধু কমতেই থাকে। সরকার পতনের আগে গত জুলাই শেষে তা ২০ দশমিক ৩৯ বিলিয়ন ডলারে নেমেছিল। তবে স্বৈরাচার সরকারের পতনের পর ড. মুহাম্মদ ইনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তবর্তীকালীন সরকারের সুপরিকল্পিত রাষ্ট্র পরিচালনায় রিজারর্ভের সেই পারদ ধীরে ধীরে উপরের দিকে উঠতে থাকে। এরপর থেকেই আর কোনো ডলার বিক্রি করছে না কেন্দ্রীয় ব্যাংক। রবিবার (২০ এপ্রিল) বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ তথ্যে দেখা গেছে, ১৭ এপ্রিল পর্যন্ত দেশের মোট রিজার্ভের পরিমাণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৬ দশমিক ৭৩ বিলিয়ন ডলার।
তবে এই রিজার্ভ বৃদ্ধির পেছনে মূল ভূমিকা রাখছে প্রবাসী আয় বা রেমিট্যান্স। চলতি এপ্রিল মাসের প্রথম ১২ দিনেই দেশে ১০৫ কোটি ২৪ লাখ ডলারের রেমিট্যান্স এসেছে। শুধু গত মার্চ মাসেই রেমিট্যান্সের ইতিহাসে নতুন রেকর্ড গড়েছে বাংলাদেশ। এক মাসে এসেছে ৩.২৯ বিলিয়ন ডলার, যা দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ। দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ পুনরুদ্ধারে ধীরে ধীরে ফিরছে স্থিতিশীলতা। ধারাবাহিকভাবে টানা সাত মাস দুই বিলিয়নের বেশি রেমিট্যান্স প্রবাহ অব্যাহত থাকার ফলেই রিজার্ভে এসেছে গতি।
তবে
আন্তর্জাতিক মুদ্রা
তহবিল
(আইএমএফ)-এর হিসাব পদ্ধতি
বিপিএম-৬ অনুযায়ী রিজার্ভের পরিমাণ
২১
দশমিক
৩৯
বিলিয়ন
ডলার।
এরমধ্যে বাস্তবে যে
রিজার্ভ ব্যবহারযোগ্য, সেই
‘নিট
রিজার্ভ’ এর
হিসাব
আরও
ভিন্ন।
আইএমএফকে জানানো
হিসাবে-
এসডিআর
খাত,
ব্যাংকগুলোর ফরেক্স
ক্লিয়ারিং ব্যালেন্স এবং
আকুর
পাওনা
বাদ
দিয়ে
বাংলাদেশের প্রকৃত
ব্যয়যোগ্য রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে প্রায়
১৬
বিলিয়ন
ডলারের
কাছাকাছি।
বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম
মাস
থেকে
ধারাবাহিকভাবে রেমিট্যান্স প্রবাহ
দুই
বিলিয়ন
ডলারের
ওপরে
রয়েছে।
জুলাইয়ে এসেছে
১.৯১ বিলিয়ন, আগস্টে
২.২২ বিলিয়ন, সেপ্টেম্বরে ২.৪০ বিলিয়ন, অক্টোবরে ২.৩৯ বিলিয়ন, নভেম্বরে ২.২০ বিলিয়ন, ডিসেম্বরে ২.৬৪ বিলিয়ন, জানুয়ারিতে ২.১৯ বিলিয়ন এবং
ফেব্রুয়ারিতে এসেছে
২.৫৩ বিলিয়ন ডলার।
গুরুত্বপূর্ন বিষয়
হলো,
একটি
দেশের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য সে দেশের
রিজার্ভ অন্তত
তিন
মাসের
আমদানি
ব্যয়
নির্বাহের জন্য
পর্যাপ্ত হওয়া
প্রয়োজন। বর্তমান সময়ে বাংলাদেশে যে পরিমান অর্থ রিজার্ভ আছে তা দিয়ে দেশের তিন
মাসেরও
বেশি
সময়ের
আমদানি
দায়
মেটানো
সম্ভব হবে।