Logo
Logo
×

আদালতপাড়া

কিল-ঘুষি, উত্তম-মধ্যমে না.গঞ্জ ছাড়েন সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক

Icon

যুগের চিন্তা রিপোর্ট

প্রকাশ: ২৯ এপ্রিল ২০২৫, ১২:০০ এএম

কিল-ঘুষি, উত্তম-মধ্যমে না.গঞ্জ ছাড়েন  সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক

নারায়ণগঞ্জে আদালতের এজলাসের প্রবেশমুখে আইনজীবীদের মারধরের শিকার হয়েছেন সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।

Swapno

নারায়ণগঞ্জে আদালতের এজলাসের প্রবেশমুখে আইনজীবীদের মারধরের শিকার হয়েছেন সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। গতকাল সোমবার (২৮ এপ্রিল) পৌনে তিনটার দিকে এ ঘটনা ঘটে বলে জানান প্রত্যক্ষদর্শীরা। এর আগে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে নিহত হাফেজ সোলাইমান হত্যা মামলায় রিমাণ্ড শুনানির জন্য নারায়ণগঞ্জের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মঈনুদ্দিন কাদিরের আদালতে তোলা হয় তাকে বলে জানান আদালত পুলিশের পরিদর্শক মো. কাইউম খান।

তিনি বলেন, হত্যা মামলাটিতে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাতদিনের রিমাণ্ড আবেদন করে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। শুনানি শেষে আদালত চারদিনের রিমান্ড আবেদন মঞ্জুর করেন। এর আগে কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে নারায়ণগঞ্জ আদালতে আনা হয় আনিসুল হককে। মামলার শুনানি শেষে বের হওয়ার পথে বিএনপিপন্থী আইনজীবীদের একাংশ আনিসুল হককে কিল-ঘুষি মারে। পরে পুলিশ দ্রুত নিরাপত্তাবেষ্টনী তৈরি করে তাঁকে প্রিজন ভ্যানে তুলে কারাগারে পাঠায়।


ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, দুপুরে আদালতে তোলার সময় বাইরে বিএনপন্থী আইনজীবীরা ‘আনিসুল হকের ফাঁসি’ চেয়ে স্লোগান দেন। শুনানি শেষে এজলাস থেকে বের হওয়ার সময় প্রবেশমুখে তাকে কিল-ঘুষি দেন বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা। এই সময় আনিসুল হকের মাথায় পুলিশের হেলমেট ছিল। বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি দেখে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা পুলিশ সদস্যরা সাবেক এ আইনমন্ত্রীকে নিয়ে দৌঁড়ে আদালতের বারান্দা ত্যাগ করেন এবং একইভাবে তাকে দ্রুততার সাথে প্রিজন ভ্যানে তোলা হয়।

বাদীপক্ষের আইনজীবী সাখাওয়াত হোসেন খান বলেন, ছাত্র আন্দোলনে সিদ্ধিরগঞ্জে মাদ্রাসাছাত্র হাফেজ মো. সোলাইমান নিহত হয়। এ ঘটনায় নিহত ছাত্রের দুলাভাই সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা করেন। এ মামলায় সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হককে ৩ নম্বর আসামি করা হয়েছে।আজ এই মামলায় আনিসুল হককে আদালতে তুলে সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করেন সিআইডির তদন্ত কর্মকর্তা। মামলার শুনানি শেষে আনিসুল হকের চার দিনের রিমান্ড দেন আদালত।

গণমাধ্যমকর্মীদের ধারণ করা ভিডিওতেও এজলাসের প্রবেশমুখে আনিসুল হককে চর-থাপ্পড়, কিল-ঘুষি দিতে দেখা যায়।


প্রিজন ভ্যানে থাকা অবস্থায়ও বাইরে আদালত প্রাঙ্গণে ‘ফাঁসি চাই, ফাঁসি চাই, আনিসুল হকের ফাঁসি চাই’ বলে স্লোগান দিতে থাকেন বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা।


এ বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা আদালত পুলিশের পরিদর্শক কাইউম খান বলেন, “এজলাস থেকে বের হওয়ার পর বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি হয়, পরে পুলিশ দ্রুততার সাথে আসামিকে প্রিজন ভ্যানে তোলে। কিন্তু সেখানে কেউ চড়-থাপ্পড় দিয়েছে এমনটা আমার নজরে পড়েনি।”


যোগাযোগ করা হলে ‘আনিসুল হককে উৎসুক জনগণ মারধর করেছে’ বলে জানিয়ে এতে বিএনপন্থী আইনজীবীদের কোনো সম্পৃক্ততা নেই বলে দাবি করেন জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি সরকার হুমায়ূন কবির। “ফাঁসির দাবিতে মিছিল করেছি আমরা কিন্তু চড়-থাপ্পড় দিছে জনগণ। আইনজীবীরা কেন মারবে, তাদের প্রতি মানুষের ক্ষোভ আছে, সেই ক্ষোভ থেকে জনগণ তাকে মারধর করছে”, বলেন বিএনপিপন্থী এ আইনজীবী।
আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আনোয়ার প্রধান সাংবাদিকদের জানান, মাদরাসা ছাত্র সোলায়মানকে গুলি করে হত্যা  করা হয়। এসময় মুহুর্মুহু বোমার বিস্ফোরণ ঘটে। এই হত্যায় কে নির্দেশ দিয়েছে। অস্ত্র গুলির উৎসব কি ভাবে আসলো। সেটির প্রকৃত চিত্র তুলে খুঁজে বের করার জন্যই আদালতের বিচারক আনিসুল হককে চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন।


আদালতে থেকে বের করার সময় সাবেক আইনমন্ত্রীকে কিলঘুষি মার বিষয়ে জানতে চাইলে নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপারেশন ) তারেক আল মেহেদী জানান, আনিছুল হকে কিল-ঘুষি মারার বিষয়টি আমার জানা নেই। ভিডিও দেখে পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে।


পুলিশ জানায়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র জনতার আন্দোলন চলাকালে গত ৫ আগস্ট দুপুরে সিদ্ধিরগঞ্জের শিমরাইল এলাকায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ওপর গুলিবিদ্ধ হন ১৯ বছর বয়সী হাফেজ সোলাইমান। পরে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথেই মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় ২২ আগস্ট সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় সোলাইমানের ভগ্নিপতি শামীম কবির বাদী হয়ে হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী আসাদুজ্জামান কামাল, সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, মন্ত্রী দিপু মনি, সাবেক প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক, সাবেক এমপি শামীম ওসমানসহ ৫১ জনকে আসামি করা হয়েছে।

Abu Al Moursalin Babla

Editor & Publisher
ই-মেইল: [email protected]

অনুসরণ করুন