
আ.লীগপন্থী ৩৩৯ ভোটে নজর
নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির (২০২৫-২০২৬) নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আলোচনায় উঠে এসেছে আওয়ামী লীগপন্থী আইনজীবীদের ৩৩৯ ভোট যাবে কোন বাক্সে। দীর্ঘ ৭/৮ বছর পর ৩নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির (২০২৫-২০২৬) নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আলোচনায় উঠে এসেছে আওয়ামী লীগপন্থী আইনজীবীদের ৩৩৯ ভোট যাবে কোন বাক্সে। দীর্ঘ ৭/৮ বছর পর ৩টি প্যানেলের উৎসবমুখর প্রতিদ্বন্দ্বিতার মাধ্যমে বার ভবন জুড়ে ছড়িয়ে পরেছে নির্বাচনী আমেজ। বিগত দিনে আওয়ামী লীগপন্থী আইনজীবীরা ওসমানদের প্রভাব খাটিয়ে এককভাবে জিম্মি করে রেখেছিলেন জেলা আইনজীবী সমিতি। কিন্তু গত ৫ আগষ্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনে স্বৈরাচার শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে পালালে আওয়ামী লীগপন্থী দেড় শতাধিক আইনজীবী নারায়ণগঞ্জ আইনজীবী সমিতি ফেলে পালিয়ে যায়। যাকে ঘিরে যাকে ঘিরে দীর্ঘদিন পর রাহুমুক্ত হয় আইনজীবী সমিতি। যাকে ঘিরে গত (২০২৪-২০২৫) নির্বাচনে হুমায়ূন ও আনোয়ার প্যানেলকে সকল ভোটাররা সমর্থন করে নির্বাচিত করলে তারা ১ বছর দায়িত্ব পালন করেন বর্তমানে আবার (২০২৫-২০২৬) সালের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে আগামী (২৮ আগষ্ট) যাকে ঘিরে নানান প্রস্তুতি ইতিমধ্যে শেষ প্রায়। তা ছাড়া নিয়মিত ভোট চাওয়া এবং প্রচার-প্রচারনা চলছে। তা ছাড়া ইতিমধ্যে বিএনপির দুই প্যানেল ও জামায়েতের এক প্যানেল নির্বাচন করছে আওয়ামী লীগ পলাতক থাকায় তাদের কেউ নির্বাচনে অংশ নেয়নি। তা ছাড়া এবারের নির্বাচনে আইনজীবী সমিতির মোট ভোটার ১১৭৫টি। যার মধ্যে আইনজীবী ফোরামের সদস্য ৪০৯জন, জামায়াত ইসলামীর ১৭৪ জন এবং আওয়ামীলীগ সমর্থিত আছেন ৩৩৯ জন। যেখানে বাকিরা সাধারণ ভোটার।
এই নির্বাচনে আওয়ামীলীগ অংশগ্রহণ করেনি এবং আওয়ামীলীগের ভোটারদেরও ভোট প্রদানে তেমন একটা আগ্রহ দেখা যাচ্ছে না। কিন্তু এদের দ্বারে দ্বারে যাওয়া হচ্ছে বিভিন্ন প্যানেল থেকে তাদের সাথে যোগাযোগ করা হচ্ছে বর্তমানে তাদের ভোট ও একটি ফ্যাক্টর। নির্বাচনে বিএনপি, জামাত ও সাধারণ ভোটারদের নিয়েই নির্বাচনটি হতে যাচ্ছে বলা যায়। যদিও অনেকে বলছেন আওয়ামীলীগের কর্মী সমর্থক পর্যায়ের আইনজীবীরা ভোট প্রদানে আসতেও পারেন। বিএনপির ভোট দুইভাগে বিভক্ত হবে এবং জামাত তার ভোট এককভাবে পাবেন সেটা ধারণা করছেন আইনজীবীরা। এক্ষেত্রে সাধারণ ভোটারদের ভোট যেদিকে বেশি যাবে তাদের জয়ের সম্ভাবনা থাকবে বেশি।
সূত্র বলছে, নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচনের ভোট গ্রহণ আগামী ২৮ আগস্ট। এবারের নির্বাচনে তিনটি প্যানেল অংশগ্রহণ করেছে। এ ছাড়াও আরও ১ জন স্বতন্ত্র প্রার্থী প্রত্যাহার করেনি তিনি অটুট রয়েছেন এই নির্বাচনে। তা ছাড়া বর্তমানে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের হুমায়ূন ও আনোয়ার প্যানেল বর্তমানে আদালতপাড়া জুড়েই ফুরফুরে মেজাজে রয়েছে। তা ছাড়া ব্যাপক প্রচার-প্রচারণায় শক্তিশালী অবস্থানে রয়েছে বিএনপিপন্থী প্যানেলের আইনজীবীরা। তা ছাড়া ভোটারদের ব্যাপক সাড়ায় সর্ব প্যানেলে জয়ের আশা করছেন হুমায়ূন ও আনোয়ার প্যানেল। তা ছাড়া দীর্ঘদিন পর স্বৈরাচার মুক্ত আইনজীবী সমিতি সিলেকসন সিস্টেম থেকে বেরিয়ে ইলেকশনের পথে হাঁটতে শুরু করেছে। যকে ঘিরে জেলা আইনজীবী সমিতির (২০২৫-২০২৬) সালের নির্বাচনের মধ্য দিয়ে আইনজীবী সমিতিতে ফিরতে শুরু করেছে গনতন্ত্র, হতে যাচেছ ভোট প্রয়োগ।
সেই সাথে সকল আইনজীবীদের মধ্যেই বিরাজ করছে উৎসবমুখর আমেজ। প্রায় সকল আইনজীবীরাই নির্বাচনকে স্বাগত জানাচ্ছেন। সকলেরই প্রত্যাশা যেন নির্বাচন হয় এবং সকলেই যেন ভোটকেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিতে পারার সেই স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে পারেন। এদিকে আইনজীবী সমিতির নির্বাচন মানেই ছিল একমাস ব্যাপী বিরাট আয়োজন। খাওয়া-দাওয়া, কুশল বিনিময়, আইনজীবীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রার্থীদের ভোট প্রার্থনা, আইনজীবীদের সাথে নির্বাচনী বিষয়ে নানা মত-দ্বিমত, আড্ডা আরও কত কি? তবে এসব কিছু গত ৭/৮ বছর ধরে এক প্রকার হারিয়েই গিয়েছিলো এসব আয়োজন। ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের দমন-নিপীড়ন আর কুখ্যাত ওসমান পরিবারের নগ্ন হস্তক্ষেপে আইনজীবীদের এই নির্বাচন বিগত সময়ে এক আতঙ্কের নাম হয়ে উঠে। নির্বাচন আসলেই শামীম ওসমানের নির্দেশে কুখ্যাত ছাত্রলীগ, যুবলীগ, শ্রমিক লীগসহ তার ক্যাডারবাহিনীরা আইনজীবীদের ভয় দেখাতে আদালতপাড়ায় মহড়া দিতো। এছাড়া শামীম ওসমানের লেজুরবৃত্তি করা বেশ কিছু আইনজীবীই আইনজীবীদের দমন-নিপীড়নে উঠেপড়ে লেগে পড়তো। অনর্থক আইনজীবীদের হেনস্থা করা, আইনজীবীদের মারধর, নির্বাচনে ভোট জালিয়াতি, নির্বাচনের নামে সিলেকশন কমিটি, বিএনপি ও জামায়াতপন্থী আইনজীবী প্রার্থীদের উপর নানা দমন নিপীড়ন, এমনকি ওসমানদের ভিন্নমতের আইনজীবীদের উপর নেমে আসতো নানা অত্যাচারের খড়গ। নির্বাচনে আইনজীবী প্রার্থীদের অস্ত্র প্রদর্শন, বাড়ি বাড়ি গিয়ে পরিবারের সদস্যদের হুমকি-ধমকি, ধরে নিয়ে গিয়ে নির্যাতন, আইনজীবীদের চেম্বারে ঢুকে মারধর, সাংবাদিকদের নাজেহাল, মারধর কোন অত্যাচারই বাদ রাখেনি ওসমানীয় সন্ত্রাসীরা। ওসমানদের আজ্ঞাবহ কুখ্যাত খালেদ হায়দার খান কাজলের থাবা থেকে মুক্ত হওয়ার পর এবারই প্রথম পুরনো সেই জৌলুসে ফিরে গিয়ে নির্বাচনী প্রস্তুতি নিয়ে নারায়ণগঞ্জ আইনজীবী সমিতি।
শামীম ওসমানে ছায়ায় আইনজীবীদের উপর স্বেচ্ছাচারিতা চাপিয়ে দেয়া নারায়ণগঞ্জ আইনজীবী সমিতির সাবেক দুই সভাপতি এড. হাসান ফেরদৌস জুয়েল এবং মোহসীন মিয়া দুইজনই আজ পলাতক। পলাত আরো অনেক কুর্কীর্তিতে অংশ নেয়া আওয়ামী পন্থী আইনজীবী। কিন্তু আওয়ামী লীগের মধ্যে ভালো আইনজীবী যারা কোন স্বৈচ্ছাচারিতা ছিলেন না, তারা বর্তমানে কোট প্রাঙ্গনে রয়েছে তাদের ভোটগুলো কোন প্যানেলে যাবে বর্তমানে আওয়ামী লীগের এই ভোট নিয়েই ফ্যাক্টর আলোচনা চলছে। বর্তমানে ৩ প্যানেলের মধ্যে বিএনপিপন্থী আইনজীবী রেজা-গালিব প্যানেল বাংলাদেশ আইনজীবী ফোরামের প্যানেলকে কোনঠাসা করতে গিয়ে তারাই কোনঠাসা হয়ে পরেছেন। গতকাল দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গে দায়ে বাংলাদেশ আইনজীবী ফোরামের সদস্য পদ থেকে রেজা-গালিব-কামাল তিনকে বহিস্কার করা হয়েছে। যাকে ঘিরে নির্বাচনে কোনঠাসা হয়ে পরেছেন বিএনপির এই বিদ্রোহী প্যানেল। যাকে ঘিরে বর্তমানে মূল বিএনপির প্যানেল ফুরফুরে মেজাসে আওয়ামী লীগসহ সকল ভোট সুবিধা দেখিয়ে টানতে সক্ষম হবে। বর্তমানে এদের বহিস্কারে বিএনপি ও জামায়েত দুই প্যানেলের শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে।