দীর্ঘ ৯ বছর পর বাংলাদেশ ইয়ার্ন মার্চেন্টস এসোসিয়েশন নির্বাচনে ভোট প্রয়োগ নিয়ে ষড়যন্ত্র
নির্বাচনে নেতা চায় ভোটাররা

যুগের চিন্তা রিপোর্ট
প্রকাশ: ৩০ এপ্রিল ২০২৫, ১২:০০ এএম

দীর্ঘ ৯ বছর পর বাংলাদেশ ইয়ার্ন মার্চেন্টস এসোসিয়েশন নির্বাচন
দীর্ঘ ৯ বছর পর ভোট গ্রহণের মাধ্যমে আনন্দ ও উৎসবমুখর নির্বাচনে যোগ্য ও পরীক্ষিত নেতৃত্ব বেছে নিতে একাট্টা বাংলাদেশ ইয়ার্ন মার্চেন্টস সাধারণ ও অ্যাসোসিয়েশনের অ্যাসোসিয়েট সদস্যরা। এদিকে ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে সর্বশেষ ২০১৬ সালে নির্বাচনে ভোট গ্রহণ হয়েছিলো। এরপর থেকে সংগঠনটি বিনাভোটে কুক্ষিগত করে রাখা হয়েছিল। কিন্তু পটপরিবর্তনের পর বিভিন্ন ব্যবসায়ী সংগঠনগুলো কালো থাবা মুক্ত হয়ে ভোট গ্রহণের মাধ্যমে নেতা নির্বাচিত হচ্ছে। সেই আলোকে বাংলাদেশ ইয়ার্ন মার্চেন্টস এসোসিয়েশন নির্বাচন হতে যাচ্ছে যাকে ঘিরে বিগত দিনে ওসমানদের মতোই একটি পক্ষ ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়ে উঠেছেন। এদিকে দফায় দফায় আলোচনা সভার মাধ্যমে একটি পক্ষ বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচন সম্পন্ন করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু ভোটররা সেই কুক্ষিগতকারীদের মতে একমত নয় ভোটারদের দাবি তারা ভোটের মাধ্যমেই তাদের যোগ্য নেতা নির্বাচিত করতে চান।
জানা গেছে, এবারের অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া নির্বাচনে জেনারেল গ্রুপ ১৫টি এবং এসোসিয়েট গ্রুপের ৬টি পদ সহ মোট ২১ পদের বিপরীতে প্রার্থী হয়েছেন মোট ২৪ জন। যার মধ্যে জেনারেল গ্রুপে ১জন এবং এসোসিয়েট গ্রুপে ২ জন অতিরিক্ত প্রার্থী নিজেদের মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ায় আসন্ন নির্বাচনে ভোট গ্রহণের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। এদিকে নির্বাচনের জন্য মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া প্রার্থীদের মধ্যে প্যানেলের বাইরে থাকা তিনজন প্রার্থী হলেন জেনারেল গ্রুপের মো. বিল্লাল হোসেন ও এসোসিয়েট গ্রুপের মো. কামরুল হাসান ও মো. খায়রুল কবীর। এদিকে আগামী ২৪ মে অনুষ্ঠিতব্য বাংলাদেশ ইয়ার্ন মার্চেন্টস্ এসোসিয়েশনে’র দ্বি-বার্ষিক নির্বাচন। আর আগামী ৩ মে নির্বাচন বোর্ড কর্তৃক মনোনয়নপত্র যাচাই বাছাই ও প্রার্থীদের তালিকা প্রকাশ করা হবে। তফসিল অনুযায়ী বিভিন্ন কার্যক্রম সম্পাদনের পর আগামী ১০ মে, বৈধ প্রার্থীদের চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করা হবে। এদিকে ৩ মে এর আগেই অতিরিক্ত এই তিন প্রার্থীকে নানাভাবে চাপ প্রয়োগ করছেন বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচন চাওয়া কয়েকজন। সূত্র জানিয়েছে, বিএনপির একাধিক নেতা এবং সাবেক এমপি শামীম ওসমান ও সেলিম ওসমানের ঘনিষ্ঠদের দিয়েও চাপ তৈরি করা হচ্ছে। তা ছাড়া ও এই নির্বাচনে বহু সৎ এবং নেতৃত্বগুনসম্পন্ন ব্যক্তিরা নির্বাচন করতে আগ্রহী হলেও নানামুখী চাপের কারণে অনেকে প্রার্থী হননি। ২১ পদে মাত্র ২৪ প্রার্থী হলেও এখন তিনজনকে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারে বাধ্য করা হলে আর নির্বাচনের প্রয়োজনই পড়বেনা। কিন্তু যাদের অংশগ্রহণে ইতিমধ্যে নির্বাচন হতে যাচ্ছে এরা বৃদ্ধপরিকর অবস্থায় রয়েছে। তারা নির্বাচনী মাঠ ছাড়তে রাজি নন। এরা সকল বাধা ও চাপের মধ্য দিয়েই ভোট প্রয়োগের মাধ্যমে নির্বাচন করতে বাধ্য করবে বলে জানিয়েছেন। এ ছাড়া ইতিমধ্যে সেই ৩ প্রার্থীর সাথে একমত প্রকাশ করছেন এসোসিয়শনে নির্বাচন করা কয়েকজন প্রার্থীসহ আরো অনেকেই।
নির্বাচন নিয়ে একজন ভোটার বলেন, শামীম ওসমান, সেলিম ওসমান দীর্ঘদিন যাবৎ আমাদের এই ইয়ার্ন মার্চেন্ট এসোসিয়েশন সংগঠনই নয়। এখানকার ব্যবসা-বানিজ্যে সবই কুক্ষিগত করে রেখেছিলেন। গড়েছিলেন বিশাল বড় বড় সিন্ডিকেট। যাকে ঘিরে আমরা কোন কাজই তাদের হুকুমের বাহিরে করতে পারতাম না। কিন্তু গত ৫ আগষ্টের পর ইয়ান মার্চেন্টসসহ সকল টানবাজারের ব্যবসায়ীরা সুন্দরভাবে নিজেদের ব্যবসা পরিচালনা করে আসছেন। কিন্তু বর্তমানে বিগত ওসমানদের লেজ হিসেবে অনেকেই টানবাজারের ব্যবসার পরিস্থিতি অস্থিশীল করতে চাইছেন কিন্তু এটা আর সম্ভব হবে না। ইতিমধ্যে ইয়ান মার্চেন্টস নির্বাচন নিয়ে কে বা কারা ষড়যন্ত্র করছে তা আমরা জানলে ও জানা নেই ভাবেই আছি। কিন্তু সর্বশেষ আমরা আন্দোলন করে হলে ও এবারের নির্বাচনে ভোট প্রয়োগ হতেই হবে বলে জোর দাবী জানাবো। আর কত সিলেকন এবার হবে ইলেকশন।
জেনারেল গ্রুপের পদপ্রাথী মো. জোবায়ের আলম ঝলক যুগের চিন্তাকে বলেন, দীর্ঘদিন পর যেহেতু সুতা ব্যবসায়ীদের সবচাইতে সব সংগঠন বাংলাদেশ ইর্য়ান মার্চেন্টস এসোসিয়েশনে ভোট প্রয়োগের মাধ্যমে নির্বাচনী হচ্ছে এটা ছাড় দেওয়ার কোন অবশনই উঠে না। ভোট প্রয়োগের মাধ্যমে নেতা নির্বাচন দীর্ঘদিন যাবৎই এই টানবাজারের ব্যবসায়ীরা পাচ্ছে না, দেখছে না কোন উৎসবমুখর পরিবেশ সেই দিকে লক্ষ্য রেখে হলে ও বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় নয় ভোটের মাধ্যমে নেতা নির্বাচন প্রয়োজন বলে আমি মনে করি। তাহলেই বর্তমান ভোটারদের কাছে কে কত জনপ্রিয় তা যাচাই করা সম্ভব হয়।
জেনারেল গ্রুপের পদপ্রার্থী আব্দুল্লাহ্ আল হোসেন বাপ্পি যুগের চিন্তাকে বলেন, তফসিল অনুযায়ী নির্বাচনে আমাদের সকল প্রকারের কার্যক্রম অবহৃত রয়েছে। ইতিমধ্যে সাধারণ গ্রুপে ১ জন ও এসোসিয়েট গ্রুপে একজন প্রার্থী বেশি প্রার্থীতা করায় বিনাপ্রতিদ্বদ্বিতা নয় হতে যাচ্ছে নির্বাচন। আর সকলেরই অধিকার রয়েছে সেই অধিকার অনুযায়ী আমার দাবী উৎসমুখর নির্বাচনের মাধ্যমে নেতা নির্বাচন হোক।
বাংলাদেশ ইয়ার্ন মার্চেন্টস্ এসোসিয়েশনে’র দ্বি-বার্ষিক নির্বাচনে (২০২৫-২০২৭) ২১ পদে ২৪ জন প্রার্থীতা করছেন। সাধারণ গ্রুপ থেকে ১৫ পদে ১৬ প্রার্থী এবং এসোসিয়েট গ্রুপের ৬ পদে ৮ জন মনোয়নপত্র জমা দিয়েছেন। সাধারণ গ্রুপ থেকে আলহাজ্ব এম সোলায়মান, মোস্তফা এমরানুল হক মুন্না, সঞ্জিত রায়, আলহাজ্ব মো. মজিবুর রহমান, তাজুল ইসলাম টুটুল, সিরাজুল হক হাওলাদার সিরাজ, মো. আকবর হোসেন, মো. আকরাম, গৌতম সাহা, মো. তাইজ উদ্দিন আহমেদ, মো. জোবায়ের আলম ঝলক, মো. সাইদুর রহমান, আব্দুল্লাহ্ আল হোসেন বাপ্পি, মাজহারুল ইসলাম, মো. মাহমুদুল হোসেন লিংকন ও মো. বিল্লাল হোসেন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।
এছাড়া এসোসিয়েট গ্রুপ থেকে মোহাম্মদ মুসা, মো. মজিবুর রহমান, মো. মাহফুজুর রহমান খান মাহফুজ, মো. জাহিদ হোসেন, জীবন সাহা, মো. ফয়সাল আহম্মদ দোলন, মো. কামরুল হাসান ও মো. খায়রুল কবীর মনোনয়নপত্র জমা দেন। সাধারণ গ্রুপ থেকে ১৫ জন এবং এসোসিয়েট গ্রুপ থেকে ৬ জন ইসি সদস্য নির্বাচিত হবেন।
নির্বাচন বোর্ডের দায়িত্বে আছেন চেয়ারম্যান হিসেবে, প্রবীর কুমার সাহা, সদস্য হিসেবে মো. হাবিব ইব্রাহিম সদস্য এবং ব্যারিস্টার মেহেদী হাসান। নির্বাচন আপিল বোর্ডে চেয়ারম্যান হিসেবে আলহাজ্ব মুহাম্মদ আইউব, সদস্য আলহাজ্ব মো. নিছারউদ্দিন কামাল এবং মো. মকবুল হোসেন দায়িত্ব পালন করছেন।
উল্লেখ্য যে, গত ৪ মার্চ নির্বাচন বোর্ড কর্তৃক দ্বি-বার্ষিক নির্বাচন (২০২৫-২০২৭) এর তফসিল ঘোষণা করা হয়। ৫ এপ্রিল প্রাথমিক ভোটার তালিকা এবং ১৫ এপ্রিল চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হয়। তফসিল অনুযায়ী প্রয়োজনীয় কার্যক্রম সম্পাদন এবং আগামী ২৪ মে কার্যকরী পরিষদ নির্বাচন (২০২৫-২০২৭) অনুষ্ঠিত হবে।