ঝুট ব্যবসা কাল হল হাতেমের, লোক দেখানো নির্বাচনেও হলেন ১০ নম্বর

যুগের চিন্তা রিপোর্ট
প্রকাশ: ১৫ মে ২০২৫, ১২:০০ এএম

ঝুট ব্যবসা কাল হল হাতেমের, লোক দেখানো নির্বাচনেও হলেন ১০ নম্বর
যুগের চিন্তার অনুসন্ধানী প্রতিবেদনের পর চোখ খুলেছে ব্যবসায়ীদের। এতোদিন ব্যবসায়ীরা আওয়ামী সরকারের দোসর মোহাম্মদ হাতেমকে ব্যবসায়ী হিসেবে জানলেও যুগের চিন্তার অনুসন্ধানী প্রতিবেদনের পর হাতেমের ঝুট ব্যবসা নিয়ন্ত্রণের চিত্র প্রকাশ পাওয়ায় তার প্রভাব পড়েছে বিকেএমইএর স্বল্প পরিসরে আয়োজিত নাটকের নির্বাচনে।
সেলিম ওসমানের প্রেসক্রিপশনে গত ৫ আগস্ট ফ্যাসিস্ট সরকারের পতনের পর বিকেএমইএর সভাপতি বনে যান হাতেম। এরপর ব্যবসায়ীদের তীব্র আপত্তি থাকলেও পদ ছাড়তে নারাজ ছিলেন হাতেম। সভাপতি পদ দখলে রাখতে ৩৫ পদে ৩৫ প্রার্থীর প্যানেল দেন হাতেম। মাত্র ৩ প্রার্থী বিপক্ষে থাকে যারাও সেলিম ওসমান ও হাতেম ঘনিষ্ট লোকজন হিসেবে পরিচিত।
এই নাটকীয় নির্বাচনেও ঝুট ব্যবসায়ীকে সহজভাবে গ্রহণ করেনি ব্যবসায়ীরা। নিজেকে অনন্য ও জনপ্রিয় দাবি করা হাতেম এই নির্বাচনেও হয়েছেন ১০ নম্বর। এর কারণ হিসেবে জানা গেছে, এতোদিন ব্যবসায়ীরা হাতেমকে ব্যবসায়ী হিসেবে জানলেও এখন তিনি ব্যবসায়ীদের কাছে ঝুট ব্যবসায়ী হাতেম কিংবা ঝুট বাবা হাতেম হিসেবে পরিচিত। ঝুট ব্যবসা নিয়ন্ত্রণের বিষয়টি এখন সর্বমহলে প্রতিষ্ঠিত হয়ে গেছে। জুলাই বিপ্লবের সময় শেখ হাসিনার কাছে গিয়ে গণভবনে ছাত্র-জনতার বিপক্ষে থাকার ঘোষণা দেন হাতেম। এরপর সেলিম ওসমানের ঘনিষ্ঠতা আর দীর্ঘদিন ফতুল্লার বিসিকে ঝুট নিয়ন্ত্রণের বিষয়টি প্রকাশিত হওয়ায় হাতেম সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা পায় ব্যবসায়ীরা।
সূত্র মতে, অভিযোগ তিনি তিনি বিকেএমই’ এ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর থেকেই যোগ্য হিসেবে প্রার্থীতা করতে চাওয়া বিভিন্ন জেলার ব্যবসায়ীদের হুমকি-ধমকি ও ভয়ভীতিসহ বিভিন্নভাবে ম্যানেজের মাধ্যমে করেছেন একক নির্বাচন। যাকে ঘিরে বিগত স্বৈরাচারের আমলের মতোই জিম্মি করে এবার ও বিকেএমই’ এ এর ৩৫ পদে তার নিজস্ব ঘনিষ্ট ৩ জনকে স্বতন্ত্র প্রার্থী দিয়ে নির্বাচন প্যানেল তৈরি করেন।
এমনকি যেহেতু ৯ মাস পূর্বেই পটপরিবর্তন হওয়ায় পালিয়েছে আওয়ামী লীগ এ ছাড়া ও নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন ব্যবসায়ী সংগঠনে ভোট গ্রহনের মাধ্যমে হচ্ছে নির্বাচন। সে দিকে নিজেকে ক্লিন ইমেজ হিসেবে আখ্যা দিতে তারই ঘনিষ্ট ৩ জনকে প্রার্থী বানিয়ে মঞ্চস্থ করেছে ভোট গ্রহনের উৎসবমুখর নির্বাচন। কিন্তু ব্যবসায়ীরা যে হাতেম দ্বারা নির্যাতিত ও নিপীড়িত তার প্রমাণ এসেছে ভোটের ফলাফলের মাধ্যমেই। এবারের নাটকীয় নির্বাচনে ঝুট ব্যবসায়ী ও বিকেএম’ এ সভাপতি মোহাম্মদ হাতেমের নেতৃত্বে একক প্যানেল তবুও ভোটের হিসেবে দশম অবন্থানে রয়েছে ঝুট ব্যবসায়ী মোহাম্মদ হাতেম।
যা নিয়ে বুঝতে বাকি নেই যে ঝুট কাণ্ডে ও ওসমানদের ঘনিষ্টতায় ব্যবসায়ীদের উপর নানান অত্যাচারে তিনি তার জনপ্রিয়তা হারিয়েছে। এ ছাড়া গত ৫ আগষ্ট পটপরিবর্তনের পর এই হাতেম তার ভাতিজা ও ছেলেদের মাধ্যমে বিএনপি নেতাদের মাধ্যমে আওয়ামী লীগের আমলের মতো নিজের অবস্থান টিকিয়ে রাখতে বিসিক শিল্পঞ্চালের গার্মেন্টস, ফ্যাক্টরী, নিটিংয়ের ঝুটসহ বিভিন্ন নিয়ন্ত্রণ দিয়েছেন বিএনপি নেতাদের হাতে। এদিকে এবারের বিকেএমই’এ নির্বাচনে ৫৭২ জন ভোটারের মধ্যে ৪৩১ জন ভোট প্রয়োগ করেন।
যেখানে ঝুট ব্যবসায়ী হাতেম প্যানেল লিডার হয়ে ও ৪০৩ পান যা ভোটার তালিকা হিসেবে দশম। যেখানে তারই প্যানেলের আরেক প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার বেলায়েত হোসেন রিপন ৪০৮ ভোট পেয়ে জয় লাভ করেন। যা হাতেমের জন্য বড়ই লজ্জাজনক বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। আর ছাড়া এর আগে আওয়ামী লীগের আমলে ২০১২ সালের (১৫ সেপ্টেম্বর) বিকেএমইএ’র নির্বাচনের ভোটগ্রহণ হয়। যেখানে সেলিম ওসমানের নেতৃত্বাধীন প্যানেল থেকে নির্বাচন করেন মোহাম্মদ হাতেম। সেবার ভোটের হিসেবে প্রথম হন তিনি।
ওই নির্বাচনে ৬৫২ জন ভোটারের মধ্যে ৫৯৭ জন ভোট দেন। এবং হাতেম পান ৫০৪ ভোট। যদিও পরবর্তীতে নির্বাচিত প্রার্থীদের সিদ্ধান্তে সংখ্যাঘনিষ্ঠ প্যানেল প্রধান হিসেবে সভাপতি হন সেলিম ওসমান। বর্তমানে ও সেই আরেক প্রথায় সভাপতি হতে পারেন হাতেম। ওই হিসেবে হাতেমের জনপ্রিয়তা কমে এসেছে। আর জনপ্রিয়তায় এই ধস নামার পেছনে তার বিরুদ্ধে ‘ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ ও ওসমান পরিবারের দোসরের’ অভিযোগটি প্রভাবক হিসেবে কাজ করেছে বলে মনে করছেন সাধারণ ব্যবসায়ীরা। এই সংকেতই বোঝা যাচ্ছে হাতেম শীগ্রই ‘লাল কার্ড’ পাওয়ার দারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে আছেন।
বিকেএমইএ সূত্রে জানা যায়, গত ১০ মে দিনভর ঢাকার বাংলামোটর ও নারায়ণগঞ্জের বিকেএমইএ ভবনের আলাদা দু’টি ভোট কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ চলে। এবারের নির্বাচনে ৫৭২ জন ভোটারের মধ্যে ৪৩১ জন ভোট দেন। এরমধ্যে ২৩টি ভোট বাতিল ঘোষণা করা হয়। বিকেএমইএ’র ৫৭২ ভোটারের মধ্যে নারায়ণগঞ্জে ২৭২, ঢাকায় ২২৪ ও চট্টগ্রামে ৭৬ জন। দিনভর নাটকীয়ভাবে বিকেএমই’এ ভবনের নিচ তলায় নারায়ণগঞ্জের লোকাল পত্রিকার সাংবাদিকদের কাছে পর্যবেক্ষন কার্ড দেওয়া হবে বলে স্বাক্ষর নিয়ে ধরিয়ে দেওয়া হয়েছিলো খাবার ভবনের ভোট কেন্দ্র পর্যবেক্ষনে শেষ সময় ছিলেন তার ঘনিষ্ট সাংবাদকর্মীরাই।
ভোটগ্রহণ শেষে সন্ধ্যায় নির্বাচন পরিচালনা কমিটি শহরের চাষাঢ়ায় বিকেএমইএ’র প্রধান কার্যালয়ে ফলাফল ঘোষণা করেন। হাতেমের নেতৃত্বে ‘প্রোগ্রেসিভ নীট অ্যালায়েন্স’ এ সবচেয়ে বেশি পেয়ে নির্বাচিত হন ইঞ্জিনিয়ার বেলায়েত হোসেন। এ প্যানেলের লিডার মোহাম্মদ হাতেম ভোটের হিসেবে দশম হয়েছেন। যদিও এ প্যানেলের নেতা হিসেবে আবারও এ ব্যবসায়ী সংগঠনের সভাপতি হতে যাচ্ছেন আছেন তিনি।
এদিকে ফলাফল অনুযায়ী, সবচেয়ে বেশি ৪০৮ ভোট পেয়েছেন ইঞ্জিনিয়ার বেলায়েত হোসেন রিপন। এছাড়া, ফকির কামরুজ্জামান নাহিদ ৪০৬, আশিকুর রহমান ৪০৫, এম. ইসফাক আহসান ৪০৫, আহমেদ নূর ফয়সাল ৪০৪, আহসান খান চৌধুরী ৪০৪, মো. আব্দুল হান্নান ৪০৪, মো. মহসিন রাব্বানি ৪০৪, মো. শাহরিয়ার সাইদ ৪০৪, মোহাম্মদ হাতেম ৪০৩, ইঞ্জিনিয়ার ইমরান কাদের তুর্য ৪০৩, মোহাম্মদ শামসুল আজম ৪০২, গাওহার সিরাজ জামিল ৪০১, আব্দুল বারেক ৪০১, মো. জামাল উদ্দিন মিয়া ৪০১, মো. মনিরুজ্জামান ৪০১, মো. সামসুজ্জামান ৪০১,
মোহাম্মদ রাশেদ ৪০১, ফজলে শামীম এহসান ৪০০, মনসুর আহমেদ ৩৯৯, মো. মামুনুর রশিদ ৩৯৯, খন্দকার সাইফুল ইসলাম ৩৯৮, মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম ৩৯৮, মো. ইয়াসিন ৩৯৭, রাজীব চৌধুরী ৩৯৭, ফওজুল ইমরান খান ৩৯৬, মোহাম্মদ জাকারিয়া ওয়াহিদ ৩৯৬, মো. মোরশেদ সারোয়ার ৩৯৩, মোহাম্মদ সেলিম ৩৯১, মিনহাজুল হক ৩৮৬, অমল পোদ্দার ৩৮০, রাকিব সোবহান মিয়া ৩৭৪, সালাহ উদ্দিন আহমেদ ৩৭০, নন্দ দুলাল সাহা ৩৫৪, রতন কুমার সাহা ৩৩৮ ভোট পেয়েছেন। অনির্বাচিত তিন স্বতন্ত্র প্রার্থী জিএম হায়দার আলী ১৬৩, মো. শাহজাহান আলম ১৫৩ ও মনির হোসেন শেখ ১৪০ ভোট পেয়েছেন।
এর আগে গণঅভ্যুত্থানের মুখে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের আগ পর্যন্ত সবগুলো নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বীতায় সভাপতি নির্বাচিত হতেন জাতীয় পার্টির ওই সংসদ সদস্য। গত আগস্টে গণঅভ্যুত্থানের মুখে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হলে সেলিম ওসমান আত্মগোপনে চলে যান। পরে আত্মগোপনে থাকা অবস্থাতেই (২৪ আগষ্ট) সেলিম ওসমান শারীরিক অসুস্থতার কারণে বিকেএমইএ'র সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালনে অপারগতা এবং সেই কারণে বিকেএমইএ পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি হিসেবে পদত্যাগ প্রসঙ্গে চিঠি পাঠান।
২৫ আগস্ট বিকেএমইএ অফিস সেটি গ্রহণ করেন। সেই দিনই (২৫ আগস্ট) বিকেএমইএর পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সংগঠনটির শীর্ষ পদে রদবদলের কথা জানানো হয়। এতে বলা হয়, বিকেএমইএর ঢাকা কার্যালয়ে সংগঠনের পরিচালনা পর্ষদের বোর্ড সভায় নতুন নেতৃত্ব নির্বাচন করা হয়। এর আগে শারীরিক অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে এ কে এম সেলিম ওসমান সংগঠনের সভাপতির দায়িত্ব পালনে অপারগতা প্রকাশ করে পদত্যাগের ঘোষণা দেন, যা পর্ষদে সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়। পর্ষদ সভায় অনলাইনে যুক্ত হয়ে বিদায়ী সভাপতি সেলিম ওসমান বক্তব্যও দেন।
একেএম সেলিম ওসমানের ২৫ আগস্টের পদত্যাগপত্রে উল্লেখ করেন, প্রিয় সহকর্মী, ১। বিকেএমইএ'র পরিচালনা পর্ষদের (২০২৩-২৫) সকল সদস্যকে আমি অন্তরিক ধন্যবাদ জানাই বিকেএমইএ'র সভাপতি হিসেবে আমাকে দায়িত্ব পালনে সার্বিক সহযোগিতা প্রদান করায়। আপনাদের সহযোগিতা ছাড়া বিকেএমইএ-কে এবং নীট সেক্টরের উন্নতির জন্য কাজ করা সম্ভবপর ছিলনা। আপনাদের মেধা, মনন ও পরামর্শ নিয়েই আমি বিকেএমইএ'র সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছি।
আপনাদের প্রতি তাই আমার কৃতজ্ঞতার শেষ নেই। একইসাথে ২০১০ সালের জুলাই মাসে বিকেএমইএ'র সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার পর থেকে যতগুলো পরিচালনা পর্ষদ গঠিত হয়েছে, সেই সফল পরিচালনা পর্ষদের সফল সদস্যদের আজকের দিনে স্মরণ করে কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। দীর্ঘ এই ১৪ বছরের পথ চলায় যেসকল সহকর্মীরা ইতোমধ্যেই এই পৃথিবী থেকে বিদায় নিয়েছেন, তাদের প্রতিও আমার সশ্রদ্ধ কৃতজ্ঞতা। বিষয়ের বহুল্যতা এই যে, আপনারা সবাই জানেন, বিগত বেশ কিছুদিন ধরে আমি শারীরিকভাবে অসুস্থ।
কয়েক মাস-অন্তর আমাকে চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে যেতে হচ্ছে। পরিস্থিতি এমন হয়েছে কখনো কখনো আমাকে লম্বা সময় ধরে চিকিৎসা গ্রহণের জন্য দেশের বাইরে থাকার বাধ্যবাধকতা থাকছে, কিন্তু দায়িত্বের কারণে চিকিৎসা অর্ধসমাপ্ত রেখে আমাকে ফিরে আসতে হয়েছে। ফলে আমার শারীরিক ক্ষতি আরও বেশি হয় এখন শারিরীক সমস্যা অধিকতর তীব্রতর হয়েছে বিধায়,
আমার পক্ষে বিকেএমইএ'র সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করা আর সম্ভবপর হচ্ছে না। তাই এই পত্রের মাধ্যমে বিকেএমইএ'র সভাপতি'র পদ এবং একইসাথে পরিচালক পদ থেকে আমি অব্যাহতি নিলাম। বিকেএমইএ'র পরিচালনা পর্ষদের সকল সদস্যদের কাছে আমার এই আবেদন অনুমোদন করার জন্য সবিনয়ে অনুরোধ রাখছি। আপনাদের সকলকে সহযোগিতার জন্য আবারও ধন্যবাদ।
২। অনেক আগেই বিকেএমইএ'র সভাপতি হিসেবে আমার চলে যাবার কথা ছিল। কিন্তু নারায়ণগঞ্জের চাষাড়ায় বিকেএমইএ'র কমপ্লেক্স ভবন তৈরির সদস্যদের আকারদর প্রতি সম্মান রেখে আমি দায়িত্ব পালন করে গেছি। আমি অত্যন্ত আনন্দিত যে, অনেক বাঁধা পেরিয়ে, অসাধারণ চেষ্টা ও প্রয়াসের মাধ্যমে নারায়ণগঞ্জের চাষাড়ায় বিকেএমইএ'র প্রধান কার্যালয় ভবন আমি আপনাদের সকলের সহযোগিতা নিয়ে তৈরি করতে পেরেছি। আমি সবসময় চেয়েছি, বিকেএমইএ'র প্রধান কার্যালয় ভবনটি নারায়ণগঞ্জে তৈরি করতে এবং অল্লাহর অশেষ মেহেরবানিতে এবং আপনাদের সহযোগিতায় সেই স্বপ্ন আজ বাস্তবে রূপলাভ করেছে। আজ নারায়ণগঞ্জের সবচেয়ে সুন্দর ভবনের মধ্যে বিকেএমইএ'র কমপ্লেক্স ভবন একটি। এই গৌরব আমার, আপনার এবং নীট সেক্টর সংশ্লিষ্ট সকল উদ্যোক্তাদের। এই অসাধারণ কাজ সম্পন্ন করতে সহায়তা করায় আপনাদের সকলকে আরও একবার ধন্যবাদ।
৩। যেহেতু আমি চলে যাচ্ছি, সেহেতু আমি বর্তমান পরিচালনা পর্ষদে আমাদের যেসকল সিনিয়র পরিচালকগণ রয়েছেন এবং যারা বিশেষ করে ব্যবসার কাজে ব্যস্ততার কারণে বিকেএমইএতে সময় দিতে পারছেন না, তাদের কাছে সবিনয়ে অনুরোধ রাখব নীট সেক্টর ও বিকেএমইএ'র বৃহত্তর স্বার্থে স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করে নতুন প্রজন্মকে কাজ করার সুযোগ করে দিতে। এতে করে নতুন প্রজন্ম নতুনভাবে বিকেএমইএ-কে এগিয়ে নিতে পারবে এবং একটি আধুনিক বিকেএমইএ ও উন্নত নীট সেক্টর গড়তে তারা আরও বেশি উৎসাহ ও উদ্দীপনা পাবে।
৪। আপনারা সকলেই স্বীকার করবেন যে, বর্তমান নির্বাহী সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম দীর্ঘদিন ধতে আমাকে, বিকেএমইএ-কে ও নীট সেক্টরের উন্নতির জন্য সহায়তা করে গেছে। বর্তমান প্রেক্ষাপটে আমি পরিচালনা পর্ষদের সকলের কাছে অনুরোধ রাখতে চাই, আমার বিদায়ের পর পর বিকেএমইএ ও নীট সেক্টরের উন্নয়ন কল্পে মোহাম্মদ হাতেম এর অবদান এবং প্রচেষ্টার কথা স্মরণ করে তাকে এই নতুন বিকেএমইএ পরিচালনার জন্য সভাপতি'র দায়িত্বভার অর্পণ করা হোক। আপনাদের প্রতি এই আমার বিশেষ অনুরোধ।
৫। সবাই ভালো থাকবেন। সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা। বিকেএমইএ'র সকল কর্মকর্তা কর্মচারীদের প্রতিও কৃতজ্ঞতা। আগামীতে একটি গতিশীল বিকেএমইএ দেখার প্রত্যাশায় থাকব।
এদিকে গত (১০ মে) নাটকীয়ভাবে পূর্ণ প্যানেলে জয়ের পর ‘প্রোগ্রেসিভ নীট অ্যালায়েন্স’-এর নেতা ঝুট ব্যবসায়ী মোহাম্মদ হাতেম বলেছিলেন, “অনেকদিন পর উৎসবমুখর পরিবেশে ভোটগ্রহণ শেষ হয়েছে। সকল মালিকরা সুন্দর পরিবেশে ভোট প্রদান করেছেন। আমরা এই সুন্দর পরিবেশটা উপভোগ করেছি। ১৯৯৯ সালের ৫ ডিসেম্বর বিকেএমইএর জন্ম হয়। তখন থেকেই আমি নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছি। তারই প্রতিদান আজ সকল সদস্যরা আমাকে দিয়েছে।”