জেলখানায় আজমেরীর সহযোগী পাগলা হামিদের পাগলামী

যুগের চিন্তা রিপোর্ট
প্রকাশ: ০৭ এপ্রিল ২০২৫, ১২:০০ এএম

জেলখানায় আজমেরীর সহযোগী পাগলা হামিদের পাগলামী
তিনি ছিলেন একসময় পিক আপ ভ্যান চালক। এরপর ২০০৮ সালে প্রয়াত সাংসদ কবরীর সাথে গিয়ে শুরু করেন অপকর্ম। নিজেকে সাবেক ঐ এমপির পিএস হিসেবে পরিচয় দিতেন। এরপর কবরীকে পল্টি দিয়ে ফতুল্লা থানা আওয়ামীলীগের সভাপতি সাইফ উল্লাহ বাদলের অপরাধ সম্রাজের ঘাটে গিয়ে নিজের তরী ভিড়ান তিনি। হয়ে উঠেন কবরী বিরোধী। সাইফ উল্লাহ বাদলের সাথে থেকে তৎকালীন মেয়র আইভীর বিরুদ্ধেও কাজ করেছেন ঐ গুনধর। সাইফউল্লাহ বাদলের সংস্পর্শে থেকে শাহ নিজাম, সাজনুর বলয়ে গিয়েও মিশেছিলেন তিনি। পরবর্তীতে নিজের অবস্থান পোক্ত করার জন্য আজমেরী ওসমান বলয়ের পিৎজা শামীমের সাথে গিয়ে মিশেছিলেন। পরবর্তীতে পিৎজাকে পল্টি দিয়ে ত¦কী হত্যার প্রধান আসমাী নারায়ণগঞ্জের ভয়ংকর দূর্ধর্ষ সন্ত্রাসী আজমেরী ওসমানের সেকেন্ড ইন কামন্ড হয়ে যান । তিনি আর কেউ নন, তিনি হলেন ফতুল্লার চাঁদনী হাউজিং এলাকার হামিদ প্রধান ওরফে পাগলা হামিদ।
বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের মামলায় বর্তমানে নাারয়ণগঞ্জ জেলা কারাগারে তিনি আটক আছেন। জেলখানায় রয়েছেন জেলার আলোচিত সাবেক একজন ছাত্র নেতা। ঐ নেতার রক্ষার্থে পাগলা হামিদ এবার জেলখানার ভেতরেই করে যাচ্ছেন নানা আয়োজন। অপরদিকে পাগলা হামিদের বলয়ের মানুষ যারাই তাঁর সাথে দেখা করতে যাচ্ছেন, তাদেরকে কিছুদিন অপেক্ষা করতে বলছেন। তিনি বের হয়েই সেই ছাত্র নেতার আশির্বাদ নিয়ে পুনরায় মাঠে সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালিয়ে যাবেন বলে আশ^স্ত কর যাচ্ছেন বলে অভিযোগ। পাগলা হামিদ জেলখানায় আটক একটি রাজনৈতিক নেতাদের আস্থাভাজন হয়ে উঠার জন্য যা যা করনীর তা করছেন, এমনটাই দাবী জেল থেকে জামিনে বের হয়ে আসা কয়েকজন ব্যাক্তির।
পাগলা হামিদের মতো ব্যাক্তিদের কারনেই বিভিন্ন দল ও তাদের নেতাকর্মীরা প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে আসছেন দিনের পর দিন। স্বাধীনতার পরবর্তী সময়ে এই সমস্ত সুবিধাবাদীদের কারনে বিভিন্ন এলাকায় সন্ত্রাসীরা জনগনের উপর জোর জুলুম জবর দখল করে জন জীবনকে অতিষ্ঠ করে তুলেছে। এর ব্যতিক্রম নয় পাগলা হামিদ। তিনি এক সময় মোহাম্মদ আলীর মালিকানাধীন এবি ভেজিটেবলের পিকআপ ভ্যান চালক ছিলেন। এরপর নাারয়ণগঞ্জ-৪ আসনে কবরী সাংসদ নির্বাচিত হওয়ার পর হামিদের বৃহস্পতি তুঙ্গে উঠে। কবরীর সময় হামিদ জড়িয়ে পড়েন নানা অপকর্মে। কবরীর শেষ সময়ের কিছু মাস আগে তিনি সেখান থেকে সটকে ফতুল্লা থানা আওয়ামীলীগের সভাপতি সাইফ উল্লাহ বাদলের সাথে যোগ দেন। শুরু করেন চাঁদনী হাউজিংসহ আশপাশের এলাকায় সন্ত্রাসী কর্মকান্ড। এই বলয়ে থেকেই নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামীলীগের নেতৃবৃন্দের সাথে তার পরিচয় হয়। এক সময় সাজনুর সাথেও গড়ে তোলেন সখ্যতা। শাহ নিজামের অফিসেও তাঁর আসা যাওয়া ছিলো। এই দুই বলয়ে থেকেই হামিদ ভুমি দস্যুতা থেকে শুরু করে বিভিন্ন সেক্টরে শুরু করেন নানা অপকর্ম। শামীম ওসমান ক্ষমতায় আসার পর হামিদের বলয় আরো বিস্তৃত ঘটে। আওয়ামীলীগ সরকারের পতনের প্রায় এক বছর আগে একটি জমি সংক্রান্ত বিষয়ে আজমেরীর ঘনিষ্ঠ সহযোগী পিৎজা শামীমের মাধ্যমে আজমেরীর কাছাকাছি যান হামিদ। পরবর্তীতে ফতুল্লার বিভিন্ন সেক্টর থেকে বিভিন্ন অবৈধ আয়ের উৎস দেখান আজমেরীকে। আর আজমেরীও লুফে নেন পাগলা হামিদকে। হামিদ আজমেরী বলয়ে হয়ে উঠেন সেকেন্ড ইন কমান্ড। কথিত আছে আজমেরী তার অবস্থান ধরে রাখতে অবৈধ অস্ত্রও দিয়েছিলেন। সেই অস্ত্র নিয়ে বিভিন্ন বিচার শালিসও করে বেড়াতো পাগলা হামিদ।
জেলার এমন কেনো সেক্টর নেই যেখানে হামিদ তার প্রভাব বিস্তার করেননি। ফতুল্লা ও সিদ্ধিরগঞ্জে আজমেরীর বলয়ের সবাইকে টক্কর দিয়ে হামিদ হয়ে উঠেছিলেন সর্বে সর্বা। প্রতি রাতে সদর,ফতুল্লা ও সিদ্ধিরগঞ্জের বিভিন্ন সেক্টর থেকে অবৈধ আয়ের টাকা আজমেরীর ক্যাশিয়ারের কাছে জমা রাখতেন পাগলা হাািমদ। আওয়ামীলীগ সরকার পতনের আগ মুহুর্ত পর্যন্ত আজেমেরীর সাথে থেকে ছাত্র জনতার উপর হামলাসহ পাগলা হামিদ নানা অপকর্ম করেছেন। আজেমেরী পালিয়ে যাওয়ার পর পাগলা হামিদ স্থানীয় বিএনপি নেতাদের ম্যানেজ করে এলাকায় অবস্থান করছিলেন। তবে ইতিমধ্যে পাগলা হামিদের বিরেুদ্ধে ছাত্র জনতার উপর হামলার ঘটনায় মামলা হলে পুলিশ হামিদকে গ্রেফতার করে। পাগলা হামিদ গ্রেফতার হওয়ার পর রিমান্ডে এনেছিলেন ফতুল্লা মডেল থানা পুলিশ। তবে রিমান্ডে এসে ফতুল্লা মডেল থানার ওসি শরিফুল প্রহসন করেছেন বলেও অভিযোগ উঠেছিলো। হামিদকে থানায় রিমান্ডের নামে ওসি জামাই আদর করেছিলেন অদৃশ্য কারনে। রিমান্ড শেষে হামিদকে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়। আর এতেই নিজের কপাল খুলে গেছেন বলে মনে করেন তিনি। নারায়ণগঞ্জ জেলা কারাগারে সাবকে একজন ছাত্র নেতা রয়েছেন। আর হামিদ এই সুযোগটিই কাজে লাগাচ্ছেন বলে জনিয়েছেন জেলা কারাগার থেকে জামিনে আসা বেশ কয়েকজন ব্যক্তি।
সম্প্রতি জেল হাজত থকে জামিনে আসা কয়েকজন জানান, জেল খানয় পাগলা হামিদ বেশ আরামেই জীবন যাপন করছেন। তিনি এখন জেল খানায় অবস্থান করা সাবেক এক ছাত্র নেতার খেদমতে নিজেকে উৎস্বর্গ করেছেন। তার মূল লক্ষ্য জেল হাজত থেকে কের হয়ে ঐ নেতার ছত্র ছায়ায় সন্ত্রাসী কর্মকান্ড চালিয় যাবেন ফতুল্লাসহ বিভিন্ন থানা এলাকায়। যখন যা লাগবে হামিদ জেল খানায় তা ঐ নেতার সামনে হাজির করছেন। এমনকি জেলখানায় খাসি দিয়ে পার্টি করাচ্ছেন হামিদ। জেলখানায় বিভিন্ন মামলায় বিএনপি নেতাদের পা চাটা শুরু করেছেন তিনি। আরো জানা গেছে, হামিদের সাথে তার ক্যাডাররা দেখা করতে গেলে তিনি তাদের চিন্তা করতে নিষেধ করেছেন। হামিদ তার ক্যাডারদের তিনি বলছেন কিছুদিন অপেক্ষা করতে। এরপর বিএনপির নেতৃবৃন্দের সাথে সখ্যতা গড়ে তোলে নানা অপকর্ম করবেন বলেও আশ^স্ত করে যাচ্ছেন।
এ ব্যাপারে নাম প্রকাশে ফতুল্লা থানা বিএনপির একজন নেতা বলেন, এমন একটি কথা জামিনে আসা বিএনপি নেতা কর্মীরাও বলেছেন। তবে হামিদ ইতিপূর্বে যা করেছেন যদি পরবর্তীতে দলের প্রভাব খাটিয়ে সে কোনো অপকর্ম করে তবে এর দায়ভার দলকেই নিতে হবে। আওয়ামীলীগ সরকারের সময় ফতুল্লায় বিএনপি নেতৃবৃন্দ ঘুমাতে পারেনি হামিদের কারণে। বিএনপি নেতাদের বাড়িতে পুলিশ পাঠিয়ে হয়ারনী করেছেন তিনি। সাইফ উল্লাহ বাদলের সাথে থেকে নানা অপকর্ম করা হামিদ এখন যেভাবে এগুতে চাচ্ছেন মনে হয়না বএিনপি তাকে পূনর্বাসিত করবেন। আজমেরী ওসমানের সাথে থেকে যে অপকর্ম করে গেছে হামিদ তা জেলার অনেকেরই জানা । মনে হয়না আওয়ামীলীগ ব্যাতিত কোনো সরকারের সময় হামিদ সুবিধা করতে পারবেন।