ফতুল্লার কাঠেরপুল-রামারবাগে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে উত্তেজনা

যুগের চিন্তা রিপোর্ট
প্রকাশ: ১৭ মে ২০২৫, ১২:০০ এএম

ফতুল্লার কাঠেরপুল-রামারবাগে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে উত্তেজনা
নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার কাঠেরপুল ও রামারবাগ এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ ও তীব্র উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। স্থানীয়রা জানান, দীর্ঘদিন ধরে মাদক, ইট-বালু ও ঝুট ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ নিয়ে এলাকায় দাপট দেখিয়ে আসছেন দুই চিহ্নিত গ্রুপ সোহেল-রবিন ও আলমগীর গ্রুপ। সোহেলের বিরুদ্ধে মাদক ব্যবসা, চাঁদাবাজি, রাহাজানি ও ঝুট ব্যবসাসহ নানা অপরাধে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে।
স্থানীয়দের দাবি, সোহেল পূর্বে ক্ষমতাসীন দলের বিভিন্ন কর্মসূচিতে সক্রিয় ছিলেন এবং বিভিন্ন অপরাধে পার পেয়ে যেতেন। এমন কিছু ভিডিও ও স্থিরচিত্র প্রতিবেদকের হাতে এসেছে, যেখানে সোহেলকে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে অংশ নিতে দেখা গেছে। তবে সরকার পরিবর্তনের পর তিনি নিজেকে বিএনপির কর্মী হিসেবে পরিচয় দিতে শুরু করেন এবং এলাকায় পুনরায় আধিপত্য বিস্তার করেন।
অন্যদিকে আলমগীর ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের কুতুবপুর ৯নং ওয়ার্ডের উপদেষ্টা হিসেবে পরিচিত। তিনি জানান, এলাকার মাদকবিরোধী অবস্থান নেওয়ার কারণে ১২ মে রাতে তার সহকর্মী সহ-সভাপতি মোশারফ হোসেন ও সেক্রেটারি আবুল বাশারসহ কয়েকজনের ওপর সশস্ত্র হামলা চালায় মাদকচক্র। আহতদের প্রথমে খানপুর হাসপাতাল ও পরে ঢাকা মেডিকেলে ভর্তি করা হয়।
ঘটনার নিন্দা জানিয়েছে ইসলামী যুব আন্দোলনের নারায়ণগঞ্জ জেলা শাখা। সংগঠনের সভাপতি মো. মামুনুর রশিদ ও সাধারণ সম্পাদক ড. আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ হাসান কঠোর ভাষায় এই হামলার প্রতিবাদ করেন।
এ বিষয়ে ফতুল্লা থানায় সোহেলসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, কিশোর গ্যাংয়ের নেতা রবিন নামে এক যুবক সোহেলের সহযোগী হিসেবে এলাকায় ত্রাস সৃষ্টি করছে। পূর্বে অস্ত্র ও মাদকসহ গ্রেপ্তার হলেও বর্তমানে সে আবারও অবৈধ অস্ত্রসহ এলাকায় ঘোরাফেরা করছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
তবে স্থানীয়দের মধ্যে আলমগীরের বিরুদ্ধেও মাদকের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার গুঞ্জন রয়েছে। এমনকি ইট-বালুর ব্যবসা নিয়ন্ত্রণে নিতে তাকে হামলায় নেতৃত্ব দিতে দেখা গেছে একটি ভিডিও ফুটেজে।
উভয় পক্ষই একে অপরকে দোষারোপ করে গণমাধ্যমে বক্তব্য দিচ্ছেন, যা পরিস্থিতিকে আরও উত্তপ্ত করে তুলেছে। এলাকাবাসীর দাবি, “প্রতিদিনই কোনো না কোনোভাবে এই দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা লেগেই থাকে। ব্যবসার নামে এলাকায় সন্ত্রাস কায়েম হয়েছে। আমরা পরিবার নিয়ে আতঙ্কে আছি।” তারা প্রশাসনের প্রতি কঠোর হস্তক্ষেপের আহ্বান জানিয়ে বলেন, “এই অপরাধীদের দ্রুত এলাকা ছাড়াতে হবে। প্রশাসন এখনই ব্যবস্থা না নিলে সামনে বড় ধরনের সহিংসতা ঘটতে পারে।”