
ক্লিন ইমেজ রক্ষা নিয়ে প্রতিযোগিতা
বিএনপি ক্লিন ইমেজের প্রার্থী খুঁজছে এমন সংবাদ প্রকাশিত হওয়ার পর থেকেই ক্লিন ইমেজের নেতারা সমর্থকরা উচ্ছ্বাস প্রকাশ করলেও বিতর্কিত বেপরোয়া নেতার সমর্থকরা বিভিন্ন আঙ্গিকে দ্বিমত বা ক্লিন ইমেজ দাবি নিয়ে করছেন প্রতিযোগিতা। ক্লিন ইমেজের ও বিতর্কিত প্রার্থী নিয়ে নারায়ণগঞ্জের প্রতিটি আসনেই ব্যাপক আলোচনা সমালোচনা রয়েছে।
কেউবা গত ৫ই আগস্টের পর বিভিন্ন বিতর্কিত কান্ডের সাথে জড়িয়ে বেপরোয়া হয়ে উঠেছিলেন। এছাড়া কেউবা বিএনপির রাজনীতিতে নিশক্রিয় ছিলেন এবং পূর্বের কৃতকর্ম যেমন সংস্কারপন্থী তকমা পাওয়া নেতারাও বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশা করছেন।
দলীয় সূত্র বলছে, নারায়ণগঞ্জ-১ আসন(রূপগঞ্জ) এলাকায় বিএনপি এখনও পর্যন্ত দুজন মনোনয়ন প্রত্যাশা করছেন এরমধ্যে দুজনই বিএনপির রাজনীতিতে একে অপরের কট্টর প্রতিদ্বন্দ্বি। তারা হলেন বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য কাজী মনিরুজ্জামান এবং নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মোস্তাফিজুর রহমান দিপু ভূইয়া।
তবে তাদের দুজনের মধ্যে কাজী মনিরুজ্জামানকে ক্লিন ইমেজের বিবেচনা করা গেলেও গত ৫ই আগস্টের পর আওয়ামীলীগ সরকারের পতনের পরবর্তী সময়ে দিপু ভূইয়ার বিরুদ্ধে এবং তার সমর্থকদের বিরুদ্ধে একের পর বিতর্কিত কর্মকান্ড ও রূপগঞ্জ জুড়ে একের পর এক বিতর্কিত কান্ডে বেপরোয়া হয়ে উঠেন দিপু ভূইয়ার সমর্থকরা।
যার ফলে দিপু ভূইয়ার ক্লিন ইমেজের প্রার্থীতার তালিকা নিয়ে রয়েছে শঙ্কা। অপরদিকে নারায়ণগঞ্জ-২ আসন (আড়াইহাজার) এলাকায় বিএনপির রাজনীতিতে বর্তমানে সর্বত্ত আলোচিত নেতা ঢাকা বিভাগীয় বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক নজরুল ইসলাম আজাদ। আড়াইহাজারে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশায় আলোচনায় আজাদ এগিয়ে থাকলেও ক্লিন ইমেজের প্রার্থী হিসেবে বিবেচনায় থাকলেও তার সমর্থকদের বিরুদ্ধে বিতর্কিত কর্মকান্ডের অভিযোগ রয়েছে।
এছাড়া তার সাথে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশায় সাবেক তিন বারের সাংসদ আতাউর রহমান খাঁন আঙ্গুর আলোচনায় থাকলেও সংস্কারপন্থী তকমা থাকায় মনোনয়ন লড়াই বা ক্লিন ইমেজের প্রার্থী তালিকা থেকেও ছিঁটকে পড়তে পারেন। নারায়ণগঞ্জ-৩ আসন (সোনারগাঁ) এলাকায় বিএনপির একাধিক প্রার্থীদের মধ্যে রাজনৈতিক প্রতিযোগীতা ইতিমধ্যে শুরু হয়ে গেলেও বিতর্কিত ও ক্লিন ইমেজের প্রার্থী নিয়েও ব্যাপক আলোচনা সমালোচনা রয়েছে। কেননা নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনে আলোচনায় রয়েছেন সাবেক প্রতিমন্ত্রী ও সাবেক সাংসদ রেজাউল করিম। কিন্তু তিনি রাজনীতিতে দীর্ঘদিন নিশক্রিয় এবং সংস্কারপন্থী তকমা থাকায় তারা মনোনয়ন নিয়ে শঙ্কা রয়েছে।
এছাড়া যুব উন্নায়নের সাবেক মহাপরিচালক এসএম ওলিউর রহমান আপেলের ক্লিন ইমেজ থাকলেও ২০১৮ সালে নারায়ণগঞ্জ-৩ আসন থেকে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশা করে ব্যর্থ হয়ে দীর্ঘদিন নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনে বিএনপির রাজনীতিতে নিষ্ক্রিয় থেকে ফের মনোনয়ন প্রত্যাশা করছেন আপেল। অপরদিকে সোনারগাঁ উপজেলা বিএনপির সভাপতি আজহারুল ইসলাম মান্নান সোনারগাঁ থেকে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশায় ব্যাপক আলোচিত হলেও তার বিরুদ্ধে গত ৫ আগস্টের পর আওয়ামীলীগ সরকারের পতনের পর সোনারগাঁয়ের বিভিন্ন বিতর্কিত কান্ডের সাথে সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগ রয়েছে। যার কারণে ক্লিন ইমেজের তালিকা থেকে ছিঁটকে পড়তে পারেন মান্নান।
নারায়ণগঞ্জ-৪ আসন (ফতুল্লা-সিদ্ধিরগঞ্জ) এলাকায় নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সাবেক বিএনপির সাংসদ মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন ক্লিন ইমেজের প্রার্থী হিসেবে আলোচিত। কেননা তিনি রাজনীতিতে এখনো নিজের ক্লিন ইমেজ ধরে রেখেছেন এবং ক্লিন নেতাকর্মীদেরও নিজের ক্লিন ইমেজ রক্ষায় নিয়ন্ত্রণে রেখেছেন।
অপরদিকে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মামুন মাহমুদ নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনে মনোনয়ন প্রত্যাশা করছেন এবং ক্লিন ইমেজ রয়েছে কিন্তু জোরালোভাবে আসন্ন সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে মনোনয়ন প্রত্যাশা করছেন। এরআগেও মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন তিনি। এছাড়া ফতুল্লা থানা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক বিএনপি থেকে পদত্যাগ করা শাহ আলম ফের নারায়ণগঞ্জ-৪ আসন থেকে ফের নির্বাচনের ঘোষণা দিলেও তাঁকে নিয়ে বেশ সমালোচনা। কারণ তিনি বিএনপির দুঃসময়ে বিএনপি থেকে পদত্যাগ ও ফের বিএনপির রাজনীতিতে সক্রিয় না হওয়ার কারণে তাঁকে নিয়ে উল্টো সমালোচনা রয়েছে।
নারায়ণগঞ্জ-৫ আসন (বন্দর ও সদর) এলাকায় বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশায় আলোচিত প্রার্থী হিসেবে রয়েছেন নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এড. সাখাওয়াত হোসেন খান। কারণ তিনি বিএনপির রাজনীতিতে পরীক্ষিত নেতা হিসেবে নিজের সাংগঠনিক দক্ষতা এবং মহানগরে বিএনপিকে শক্তিশালী সংগঠন এবং তার আইনজীবী পেশায়ও বিভিন্ন প্রশংসনীয় কর্মকান্ডের কারণে একজন ক্লিন ইমেজের প্রার্থী হিসেবে নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে আলোচনায় রয়েছেন সাখাওয়াত হোসেন খান।
যার কারণে ক্লিন ইমেজের প্রার্থী তালিকায়ও বিবেচনায় সাখাওয়াত হোসেন থাকবেন। এছাড়া নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সাবেক সাংসদ আবুল কালাম ফের বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশা করলেও রাজনীতিতে তিনি ছিলেন দীর্ঘদিন নিষ্ক্রিয়। তবে তার ক্লিন ইমেজ থাকলেও এবং ফের রাজনীতিতে সক্রিয় হলেও মাঠের রাজনীতিতে এখনো ফিরতে পারেননি।