Logo
Logo
×

রাজনীতি

আ.লীগ নেতার মেয়ের কাছে হিরণের লাখ টাকা চাঁদা দাবি

Icon

যুগের চিন্তা রিপোর্ট

প্রকাশ: ০৮ মে ২০২৫, ১২:০০ এএম

আ.লীগ নেতার মেয়ের কাছে হিরণের লাখ টাকা চাঁদা দাবি

আ.লীগ নেতার মেয়ের কাছে হিরণের লাখ টাকা চাঁদা দাবি

Swapno

ধামগড় ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেতা সফুরউদ্দিন মেম্বারের পরিবারের কাছ থেকে বিভিন্ন কারণে বন্দর উপজেলা বিএনপির সভাপতি মাজহারুল ইসলাম হিরণের এক লাখ টাকা চাঁদা দাবি করার অডিও কলের রেকডিং রীতিমতে বন্দর জুড়ে ভাইরাল হয়ে উঠেছে। যা নিয়ে ইতিমধ্যে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় বইছে বন্দর উপজেলা জুড়ে।


এদিকে বন্দর উপজেলার ত্রাস হিসেবে পরিচিত এই হিরণের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগ নেতাদের হামলা-মামলার ভয়-ভীতি দেখিয়ে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে বাড়ি থাকতে দেওয়াসহ, একজন যুবলীগ নেতার বাড়ি নিজ তত্ত্বাবধায়নে টাকা বিনিময়ে করে দেওয়া, চিহ্নিত আওয়ামী লীগের দোসর মাসুম চেয়ারম্যানের নাম ১০ লাখ টাকার বিনিময়ে মামলা থেকে বাদ দেওয়া, 


আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ব্যবসা-ঘর বাড়িতে আগুন দেওয়ার ভয় দেখিয়ে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেওয়া, উপজেলার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে ইট-ভাটা নিয়ন্ত্রণ, স্ট্যান্ড, ফুটপাত, বাস কাউন্টার, গার্মেন্টসের ঝুট, বিভিন্ন সমবায় সমিতি, রাস্তাসহ বিভিন্ন্ টেন্ডার, জমি দখলসহ বহু অভিযোগ ইতিমধ্যে তার বিরুদ্ধে থাকলে ও মহানগর বিএনপির তার বিরুদ্ধে এখনো কোন এক্যাশন না নেওয়ায় ক্ষুদ্ধ বিএনপির ত্যাগী নেতাকর্মীরা।  
অডিও রেকডিং এ সফুরউদ্দিনের মেয়েকে হুঙ্কার ও ভয়ভীতি দেখিয়ে হিরণকে বলতে শোনা যায়।


‘তোমরা কি আমারে পাগল মনে করছো, নাকি আমি ছাগল। নাকি আমি কচুরী যেদিকেই ভাটা যায় সেদিকেই তোমরা আমাকে পাগলের লাগানি বেচাঁ কিনা করবা। তোমারে আমি বলছি সকালে ১ লাখ টাকা নিয়ে আসো। কিন্তু তুমি আসলা না, বললা তোমার কাছে টাকা নাই। আমার কিন্তু মাথা গরম হইলে তোর বাবারে বেড় কইরা টাকা নিমু। তোর কাছ থেকে আর নিতাম না। তুই আমারে কেন বলছোস ১ লাখ টাকা দিবি তুই সকালে বেশি কথা না বইলা টাকা নিয়া আয়। না হইলে তোর গাড়ি আমার কাছে বন্দক রাখ। আমার বেশি কথা বলতে ইচ্ছা করতাছে না। তুই সকালে সুন্দর মতো টাকা নিয়া আয়। পরে তোর বাবারে থেকে বেড় কইরা পরে টাকা নিমু। তুই ম্যানেজ কইরা ১ লাখ নিয়া আয় তোর হিসাব শেষ পরে তোর বাবার থেকে আমি টাকা নিমু।’


পরে হিরণের কাছ থেকে ফোন নিয়ে আরেকজনকে বলেন, তুই কালকে ১ লাখ টাকা নিয়া আয় বাকিরা ভাইয়ে দেখতাছে। তোরে তো আল্লাহ কম দেয় নাই। সকালে ৮টা বা ৯টার দিকে টাকা রেডি রাখিস আমি আইসা নিয়া যামুনে।


এর আগে ২০২৪ সালের (১৩ মে) বন্দরে পান্নু নামে এক রাজমিস্ত্রীকে কারাগারে পাঠিয়ে তার স্ত্রীকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে একাধিকবার ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছিলো সফুরউদ্দিন মেম্বারের বিরুদ্ধে। এ ছাড়া ও ভুক্তভোগী ওই নারীর এক মিনিট ৫২ সেকেন্ডের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে বন্দর উপজেলা জুড়ে তোলাপাড় সৃষ্টি হয়েছিলো।


এ ঘটনায় ভুক্তভোগী নারী থানা পুলিশের কাছে বিচার না পেয়ে অবশেষে নারায়ণগঞ্জ পুলিশ সুপার বরাবর সফুরউদ্দিন মেম্বারের বিরুদ্ধে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। পরবর্তীতে সেই বিষয়ে বিচার শালিস মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে তাদেরই সহযোদ্ধা আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা মিটমাটে নিয়ে আসলে।


পটপরিবর্তনের পর সেই অভিযোগ বেড় লাড়া দেয় এমনকি এছাড়া আরো বেশি কিছু বিষয় নিয়ে আওয়ামী লীগ করার অপরাধে এলাকায় থাকতে কয়েক দফায় বন্দর উপজেলার সভাপতি হিরণ সফুরউদ্দিন মেম্বার পরিবারের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা নিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।


তা ছাড়া এর বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে, গত ৫ আগষ্ট সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশ ত্যাগ করলে  টানা ১০/১৫ দিন বন্দরে গড়ে ওঠা শতাধিক শিল্প প্রতিষ্ঠান আগুনে পোড়ানোর হুমকি ধামকি দিয়ে চাঁদা আদায়ের অভিযোগ উঠেছে উপজেলা বিএনপির পদপদবি নেতাদের বিরুদ্ধে। এছাড়াও আওয়ামীলীগ  সমর্থিত সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান, ইউপি চেয়ারম্যান, ইউপি সদস্য সহ শতাধিক স্থানে হামলা, ভাংচুর ও লুটপাট চালিয়ে প্রায় শত কোটি টাকা ক্ষতি হয়েছে বলে ভুক্তভোগীদের দাবি।


গত ৬ আগষ্ট কুমিল্লার সংসদ সদস্য শামীম আহম্মেদের মালিকাধিন উপজেলা মদনপুর ইউপির কেওঢালা এলাকায় অবস্থিত এসকিউ ক্যাবল তৈরির ফ্যাক্টরীতে উপজেলা বিএনপির সভাপতি মাজারুল ইসলাম হিরণের ছত্রছায়ায় জেলা জাতীয় পার্টির নেতা জাকার মোল্লা ও তার ভাই শাহজাহান মোল্লা সাজা, বিএনপি নেতা মামুন, সহ-সভাপতি শারজাহান, গোলাপ, মাহবুব  সহ ২০/২৫ জনের একটি দল হামলা চালিয়ে আগুন জ্বালিয়ে দেওয়ার হুমকি ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে।


এ সময় নগদ ৫ লাখ টাকা চাঁদা দিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেন কর্তৃপক্ষ। একই কায়দায় একই এলাকায় অবস্থিত পোলার গে¬াব ফ্যাক্টরী থেকে ২ লাখ টাকা ও বেঙ্গল গেরেট ওয়েল, টাইলসের গোডাউন থেকে ৬৫ হাজার টাকা ও দুইটি মোবাইল সেট ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া যায়। তা ছাড়া চুনা পাথরের ফ্যাক্টরী থেকে ৫ লাখ, আমজাদ ডাক্তারের বাসায় হামলা ও লুটপাট, আক্তার মেম্বারের কাছ থেকে ৩ লাখ টাকা, একই সাথে ধামঘরের বাবু মেম্বারের উপরে হামলা চলায় পরে আমার কাছ থেকে ৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবী করলে তিনি না দিতে চাইলে তার বাসায় হামলা ও তাকে চারটি মামলার আসামী করা হয়।


তাছাড়া ধামঘর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী ও এ এস আর এম এর ঠিকাদার শরীফ হোসেনের কাছ থেকে ১০ টাকা হাতিয়ে নেয় হিরণ ও লিটন। ধামঘর ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ড মেম্বার ও শেখ রাসেল ক্রীড়া একাডেমীর কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতির কাছ থেকে ৫ লাখ টাকা ভয়-ভীতি দেখিয়ে হাতিয়ে নেন এই হিরণ ও লিটন। তা ছাড়া মহানগর আওয়ামী লীগ নেতা ধামঘর ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ড মেম্বারের কাছ থেকে সাবেক উপজেলার চেয়ারম্যান মাকসুদ ৫ লাখ ও মাজহারুল ইসলাম হিরণ ৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নেন।


এভাবে বন্দর উপজেলা জুড়ে বাণিজ্যে চালিয়ে যাচ্ছে হিরণ ও তার বাহিনীর সদস্যরা। বর্তমানে এই হিরণের বিরুদ্ধে দল সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে আগামীতে হিরণ আরো বেপরোয়া হয়ে উঠবে।


এ বিষয়ে বন্দর উপজেলা বিএনপির সভাপতি মাজহারুল ইসলাম হিরণের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করলে ও তিনি তা রিসিভ করেননি।

Abu Al Moursalin Babla

Editor & Publisher
ই-মেইল: [email protected]

অনুসরণ করুন