৪৪ দিন পর জিয়াউর রহমানের সমাধিস্থলে হাস্যোজ্জ্বল জাকির খান, সমালোচনা!

যুগের চিন্তা রিপোর্ট
প্রকাশ: ২৭ মে ২০২৫, ১২:০০ এএম

৪৪ দিন পর জিয়াউর রহমানের সমাধিস্থলে হাস্যোজ্জ্বল জাকির খান, সমালোচনা!
নারায়ণগঞ্জের আলোচিত জেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি জাকির খান। ৩৩টা মামলা মোকাবেলা শেষে গত ১৩ এপ্রিল কারামুক্ত হওয়ার পর শুধু শুক্রবারেই নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন প্রোগ্রাম ও জুম্মার নামাজে দেখা গেলেও বর্তমানে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফেসবুকে বিএনপির একাধিক কেন্দ্রীয় নেতাকর্মীদের সাথে সাক্ষাৎ এর ছবি লক্ষ্য করা যায়।
কারামুক্তির পরপরই জাকির খান ঘোষণা দিয়েছিলেন শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের কবর জিয়ারত করেই তিনি রাজনৈতিক ময়দানে নামবেন। এর পর থেকেই জিয়াউর রহমানের মাজার জিয়ারত নিয়ে নানান আলোচনা দেখা যায়। গতকাল (২৬ মে) হাজারো নেতাকর্মী নিয়ে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের সমাধিস্থল জিয়ারত করতে যান জাকির খান।
বিএনপির কেন্দ্রীয় কয়েকজন নেতাও জাকির খানের সাথে সমাধিস্থল জিয়ারত করতে আসেন। তবে বিপত্তি বাধে সমাধিস্থল জিয়ারতের সময় জাকির খান ও আরো বেশ কয়েকজন নেতাকে হাস্যোজ্জ্বল অবস্থায় দেখে। এনিয়ে নেটিজেনরা এবং বিএনপির অন্যান্য জেলার কর্মী সমর্থকরা ব্যথিত হয়েছেন। এনিয়ে নানা নেতিবাচক মন্তব্যও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঘুরে বেড়াচ্ছে।
অনেকে বলছেন, জাকির খান সাবেক জেলা ছাত্রদলের সভাপতি ছিলেন। নেতাকর্মীদের মনে কিসে আঘাত লাগতে পারে সেটি তার অজানা থাকার কথা নয়। দীর্ঘ কয়েক দশক পর প্রথমবারের মতো বিএনপির প্রতিষ্ঠাতার সমাধিস্থলে দোয়া করতে গিয়ে হাস্যেজ্জ্বল ছবি তুলে তিনি আদতে হাজারো নেতাকর্মীর মনে কষ্ট দিয়েছেন। এমনটি তার কাছে কেউ প্রত্যাশা করেননি। অনেকে বলছেন, সময় বদলেছে, রাজনীতিতে নতুন অনেক বাঁক তৈরি হয়েছে। এখনকার মানুষ এবং দলের নেতাকর্মীরাও অনেক সচেতন।
তারা শুধু নেতার অতীত কর্মকাণ্ডতেই দৃষ্টি রাখেন না, সাথে সাথে অন্যান্য দিকও খেয়াল করেন। বর্তমানে নারায়ণগঞ্জে বিএনপির অনেক তরুণ নেতাই তরুণ জেনারেশনকে আকৃষ্ট করতে পেরেছে। আচার-ব্যবহার, দৃষ্টিভঙ্গি, স্মার্টনেস, কথা বলার ধরণ, মানুষের সাথে মিশে যাওয়ার ক্ষমতাসহ আরো অন্যান্য বিষয়ে খেয়াল রাখেন। তাহলে কি একসময়ের জনপ্রিয় ছাত্রদল নেতা আধুনিক সমাজের নেতাকর্মীদের সাথে মিশে যেতে পারছেননা। এসব বিষয়কে সামনে এনেই চলছে নানা আলোচনা সমালোচনা।
এর আগে জিয়াউর রহমানের সমাধিস্থলে যাওয়া প্রসঙ্গে বিএনপির একাংশের নেতাকর্মীরা মন্তব্য করেছিলেন, জাকির খান কারামুক্তির পরও এতো দেরি করছেন কেন জিয়াউর রহমানের সমাধিস্থলে যেতে। কিন্তু গত ২৫ মে থেকে হঠাৎ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জাকির খান সমর্থকের বিভিন্ন ব্যানার-ফেস্টুন দেখা যায়। আবার অনেকেই বলছেন জাকির খানের নেতৃত্ব সরগরম হবে ঢাকার রাজপথ। ‘চলো চলো জাকির খানের নেতৃত্বে জিয়ার মাজারে চলো’ এমন নানান স্ট্যাটাসে বোঝা যাচ্ছে জিয়াউর রহমানের মাজার জিয়ারতে যাবেন জাকির খান কারামুক্তির ৪৪ দিন পর গতকাল তিনি শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়ার রহমানের মাজার জিয়ারতে যান।
এদিকে সূত্র জানিয়েছে, দীর্ঘ ২১ বছর সিনেমার কাহিনীর মতোই তাকে নিয়ে নানা মুখরোচক চর্চা হতে দেখা গেছে নারায়ণগঞ্জে সর্বমহলে। কিন্তু তার মুক্তির পরপরই সমর্থক ভূরি ভূরি থাকলে ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সমালোচনায় জাকির খান ইস্যূ। এদিকে চাঁদাবাজি, হত্যা মামলাসহ ৩৩ মামলা থেকে খালাস পাওয়া বিএনপি নেতাকে নিয়ে বিগত দিনে যেমন ছিলো আলোচনা বর্তমানে এর থেকে বেশি সমালোচনা লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
তা ছাড়া জাকির খানের সঙ্গে বিএনপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্ট্রা আব্দুস সালাম, ডা. এম এ কাইয়ূম, খাইরুল কবির খোকন, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সিনিয়র সদস্য ডা. খন্দকার মোশারফ হোসেন, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান রকত উল্লাহ বুলু, বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহা-সচিব রুহুল কবীর রিজভী, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য বাবু গয়েশ^র চন্দ্র রায়। এদের সঙ্গে সাক্ষাৎ, ফুল আদান-প্রদান নিয়ে জাতীয় মিডিয়াসহ সাধারণ জনমনে সামাজিক যোগযোগ মাধ্যমে ব্যাপক সমালোচনা লক্ষ্য পাওয়া গেছে।
তা ছাড়া বিএনপি সূত্রে জানা গেছে, শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের মাজারে প্রধান অতিথি হিসেবে বিএনপির একজন সিনিয়র নেতাকে সেখানে উপস্থিত রাখতেই এতোদিন নানা দৌড়ঝাঁপ ছিলো জাকির খানের।