১১ মাসে বিএনপির বহিষ্কার ৫ হাজার, সতর্ক কর্মীরা
যুগের চিন্তা রিপোর্ট
প্রকাশ: ০৯ জুলাই ২০২৫, ১২:০০ এএম
১১ মাসে বিএনপির বহিষ্কার ৫ হাজার, সতর্ক কর্মীরা
# নির্বাচনকে ঘিরে আরো কঠোর অবস্থানেও যেতে পারে : মামুন মাহমুদ
# বহিষ্কার বা গ্রেফতার করায় দল কোন ক্ষতিগ্রস্ত হবে না : এড. সাখাওয়াত
# জনগণ বিএনপির সঠিক বিচার লক্ষ্য করছে : মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন
# অপকর্ম করে বিএনপিতে বসে থাকার কোন সুযোগ নেই : এড.টিপু
# সমুদ্র থেকে একটু ময়লা পানি তুললে সেটির প্রভাব দেখা যায় না : মাসুকুল রাজীব
গত ৫ই আগস্ট স্বৈরাচার শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর নতুন করে যেন প্রান ফিরে পেয়েছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপিসহ অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা। হাসিনা সরকারের শাসনামলে বিএনপির নেতাকর্মীদের গায়েবি মামলা ও হামলা সহ্য করেই দিন কাটতো। ফলে দিনের পর দিন নিজ নিজ এলাকায় বা ঘরে থাকতে পারতো না এমন নেতাকর্মীদের সংখ্যা অহরহ। পরবর্তীতে ০৫ আগষ্ট পটপরিবর্তনের পর সাংগঠনিক ভাবে বেশ চাঙা হয়ে উঠেছে বিএনপি।
এরই পাশাপাশি গত ১১ মাসে স্বৈরাচারী আওয়ামী লীগের সাথে ব্যবসা বাণিজ্যে ও দখলদারিত্বে আপোষ করে যেমন বিএনপির বহু নেতাদের উত্থান হয়েছে তেমনই পতন লক্ষ্য করা যাচ্ছে। এদিকে ছাত্র আন্দোলনে পুরো দমে ভাগ্য পরিবর্তন হয়েছে বিএনপির একাধিক নেতাকর্মীদের। ইতিমধ্যে বিগত দিনে বিএনপির নাম বিক্রি করে আওয়ামী লীগের সাথে মিলেমিশে সুফল নেওয়া একাধিক নেতাকর্মীরা বড় বিএনপি নেতা বনে গিয়ে কেউ কেউ আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ বনে গেছেন।
কিন্তু বর্তমানে তা একে একে ফাঁস হচ্ছেন। গত ১১ মাসে বিএনপি নেতাদের সকল অপকর্মের আমলনামা গোয়েন্দাদের হাতে রয়েছে বলে জানিয়েছে সূত্র। তা ছাড়া গত ১১ মাসে সারাদেশে ৫ হাজারের অধিক নেতাকর্মীকে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ের দল থেকে বহিস্কার হয়েছে। যার মধ্যে নারায়ণগঞ্জের দেড় শতাধিক নেতাকর্মী রয়েছে। তা ছাড়া নারায়ণগঞ্জের একাধিক নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে শোকজসহ রয়েছে। বিএনপির এমন কার্যক্রম কদর বাড়ছে বিএনপির ত্যাগী নেতাকর্মীদের। তা ছাড়া ইতিমধ্যে সারাদেশের বিএনপির নতুন ৫ কোটি সদস্য যোগান দিতে মাঠে নেমেছেন।
তা ছাড়া আগামী ফেব্রুয়ারী মাসে নির্বাচন হতে পারে জাতীয় নির্বাচন সব কিছু বিবেচনা করেই বিএনপির দলীয় সকল কার্যক্রম যথাযথ অবহৃত থাকলে ও বিএনপির মূলদল ও অঙ্গসংগঠনের অনেকেই বড় বড় পদ নিয়ে যারা বহু অপকর্মের সাথে জড়িয়ে পরছেন এদের মধ্যে অনেকেই কেন্দ্রীয়ভাবে ম্যানেজ করে রেহায় পেয়ে যাওয়াদের বিরুদ্ধে ও দ্রুত একশ্যান চাইছেন তৃণমূলের নেতাকর্মীরা। যাকে ঘিরে দলের নাম ব্যবহার করে চাঁদাবাজি, দখল এবং নানা অপকর্মে জড়িয়ে পড়া নেতাকর্মীদের তালিকা তৈরি করছে বিএনপি।
বিশেষ করে ‘হাইব্রিড’ ও ‘নব্য বিএনপি’ পরিচয়ে যেসব ব্যক্তি তৃণমূল থেকে কেন্দ্র পর্যন্ত কোন্দল সৃষ্টি করছে এবং দলে বিশৃঙ্খলা ছড়াচ্ছে, তাদের চিহ্নিত করে শুরু হয়েছে শুদ্ধি অভিযান। যা নিয়ে ইতোমধ্যে ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড থেকে জেলা পর্যায় পর্যন্ত কমিটিগুলোর যাচাই-বাছাই শুরু হয়েছে।
সূত্র জানায়, পটপরিবর্তনের পর থেকে এখন পর্যন্ত গত ১১ মাসের নানা অপকর্মের আমলনামা গোয়ান্দাসহ কেন্দ্রীয় হাইকমান্ডের হাতে প্রস্তুত থাকায় অনেকটাই চিন্তিত বিএনপি নেতারা। তা ছাড়া বর্তমানে শুধু বহিস্কারই নয় পাশাপাশি দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা ও নেওয়া হচ্ছে।
যার অংশ হিসেবে ফতুল্লা থানা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক প্রভাবশালী নেতা রিয়াদ চৌধুরীকে দলীয় ভাবমূর্তি নষ্টের দায়ে বিএনপির সকল পদ ও প্রাথমিক সদস্য পদসহ সকল পদ থেকে বহিষ্কার এবং একই দিনে চাঁদাবাজি মামলায় গ্রেফতার হয়েছিলেন। যার পর থেকেই নারায়ণগঞ্জ বিএনপিতে নেমে এসেছিলেন এক বিশাল আতঙ্ক। এদিকে যেসব নেতাকর্মীর কর্মকাণ্ড জনমনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে, তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। যারা দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করছেন বা দলের জন্য বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছেন, তাদের আর দলে রাখার প্রয়োজন নেই বলেও সাফ জানিয়ে দিয়েছেন হাইকমান্ড।
তা ছাড়া বিএনপির নেতকার্মীরা বলছে, 'দল ও দেশের স্বার্থে যে পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন, বিএনপি তা-ই নেবে। দলের ভাবমূর্তি ক্ষুন্নকারীদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে, প্রয়োজনে তালিকাও করা হচ্ছে।' 'বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ইতোমধ্যে নেতৃত্বে গুণগত পরিবর্তন এনেছেন।
৫ আগস্টের আগের বিএনপি আর পরের বিএনপি এক নয়। তাই যারা অপকর্মে লিপ্ত, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এতে দলের বিন্দু মাত্র ক্ষতি হবে না। দল জনগণের চোখে ভালো ও সঠিক কাজের মাধ্যমে ফুটে উঠবে। তা ছাড়া নারায়ণগঞ্জে পট-পরিবর্তনের পর আলাদিনের চেরাগের মতোই কয়েক মাসের ব্যবধানের কেউ কেউ হয়েছেন গাড়ি ও বাড়ির মালিক। তাছাড়া বর্তমানে নারায়ণগঞ্জের সবকিছুই বিএনপি নেতাদের দখলে।
নগরীর হাট-বাজার, ঘাট, বাস টার্মিনাল শুধু নয়, বিভিন্ন মালিক সমিতির কমিটি, চেম্বার অব কমার্স, ইয়ার্ন মাচেন্ট এসোসিয়েশন, ট্রাক স্ট্যান্ড, এমনকি বিসিক শিল্পনগরী, বালু মহাল, ড্রেজিংয়ের ব্যবসা ও থ্রি হুইলার স্ট্যান্ড, টেন্ডারবাজি, সরকারি দপ্তর নিয়ন্ত্রণ, থানা নিয়ন্ত্রণ, অবৈধ স্ট্যান্ড, ফুটপাত, পানি সরবারহ, সরকারি জায়গায় দোকান, জায়গার লিজ বাণিজ্য, মামলা বাণিজ্যে, সিটি কর্পোরেশনসহ বিভিন্ন উপজেলার সকল টেন্ডার।
এ ছাড়া বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও বিএনপি এবং অঙ্গসংগঠনের অনেকেরে দেশের বাহিরে গিয়ে আওয়ামী লীগ নেতাদের সাথে বৈঠক করার অভিযোগ রয়েছে। এ ছাড়া বিগত দিনে আওয়ামী লীগের সকল ব্যবসা বাণিজ্যেসহ তাদের দখলে থাকা সবই আপোষের মাধ্যমে বুঝে নিয়েছে বিএনপি। এর মধ্যে ডিস বাবুর ক্যাবল ব্যবসা ভাগ যোগের মাধ্যমে বিএনপি নেতারা নিয়ন্ত্রণ করছেন, অয়ন ওসমানের ইন্টারনেট ব্যবসা এটা ও ভাগযোগের মাধ্যমে বিএনপি নেতাদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছেন।
তা ছাড়া ও চারপাশের জানা অজানা সবই বর্তমানে এককভাবে নিয়ন্ত্রণে নিয়েছেন নারায়ণগঞ্জ বিএনপির একাধিক নেতাকর্মীরা। এ ছাড়া গত ৯ মাসে নারায়ণগঞ্জ জেলার বিভিন্ন থানা ও উপজেলায় ঝুট সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড, জাহাজ কেঁেট হজম, চাঁদা না পেয়ে গার্মেন্টস ও আওয়ামী লীগের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে আগুনসহ আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বিএনপির একাধিক গ্রুপের সংঘর্ষের দৃশ্যমান রয়েছে। যাকে ঘিরে অনেকের বিরুদ্ধে দল ব্যবস্থা গ্রহণ করেছেন আবার অনেককে রাখা হয়েছে কেন্দীয় নজরদারিতে তা ছাড়া এর বাহিরে বিএনপির সকল নেতাকর্মীই বিশেষ গোয়েন্দা নজরদারিতে।
এদিকে পটপরিবর্তনের বিএনপির নানান অপকর্মের ফল হিসেবে ২০২৪ সালের (১৭ সেপ্টেম্বর) দলীয় নির্দেশনা অমান্যর অভিযোগে নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগরসহ উপজেলা, থানা, ইউনিয়ন, পৌর, ওয়ার্ড ও কলেজ শাখা ছাত্রদলের কমিটি বিলুপ্ত করার পর এখন ও যোগ্য প্রার্থী না পাওয়ায় দেওয়া হয়নি কোন কমিটি। তার কিছুদিন পরপরই ২৫ ডিসেম্বর তদন্ত কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়েছে।
পরবর্তীতে যুগের চিন্তার তদন্তের প্রেক্ষিতে বেড়িয়ে এসেছিলো জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক গোলাম ফারুক খোকনের কুকর্ম। তিনি পটপরিবর্তনের পরপরই সন্ত্রাসী মন্ত্রী গাজীর মতো পুরো রূপগঞ্জ নিয়ন্ত্রণে নিয়ে ব্যাপক অপকর্ম চালিয়েছেন হয়েছে শত শত কোটি টাকার মালিক। তার বিরুদ্ধে সকল তথ্য গোয়ান্দা সংস্থার নিকট রয়েছে। দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে গত (১ জানুয়ারী) নারায়ণগঞ্জ জেলা কৃষকদলের আহবায়ক কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়েছিলো।
তা ছাড়া আওয়ামী লীগে নেতার পরিবারের কাছ থেকে মামলা বানিজ্যের টাকা চাওয়ার রেকডিং ফাঁস হওয়ায় বন্দর উপজেলা বিএনপির সভাপতি মাজহারুল ইসলাম হিরণকে শোকজ করেছে নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপি।
তা ছাড়া ও ২০২৪ সালের (২৯ সেপ্টেম্বর) বাস স্ট্যান্ডে চাঁদাবাজির অভিযোগে সোনারগাঁ উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক আতাউর রহমান গ্রেফতার হয়েছিলেন। পরবর্তীতে গত ২০২৪ সালের (১৫ অক্টোবর) চাঁদা দাবির অভিযোগে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের তারাবো পৌর বিএনপি'র সাধারণ সম্পাদক হাফিজুর রহমান পিন্টুকে গ্রেফতার করেছিলেন যৌথবাহিনী।
তা ছাড়া ও নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন উপজেলায় ও থানায় বিএনপির একাধিক নেতাকর্মী গ্রেফতার হয়েছিলেন চাঁদাবাজিসহ নানা অপকর্মের মাধ্যমে। পটপরির্বতনের পর বহিস্কার হিসেবে রয়েছে , গত ২০২৪ সালের (৫ নভেম্বর) দলের ভাবমূর্তি নষ্টের দায়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির সভাপতি মাজেদুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন সাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির সদস্য অকিলউদ্দিন ভূইয়া এবং সিটি কর্পোরেশনের ৮ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সদস্য ও মহানগর ছাত্রদলের সাবেক সহ সভাপতি দেলোয়ার হোসেন খোকন।
২০২৪ সালের (১৪ ডিসেম্বর) “দলবল নিয়ে সাংবাদিক মিনহাজ আমানকে শারীরিকভাবে আঘাত ও লাঞ্ছিত করার অভিযোগে ইকবাল হোসেনের কর্মকাণ্ড দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেনকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়। গত (২৩ জানুয়ারী) দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে যুবদল নেতা আশরাফ ভূইয়াকে কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি আব্দুল মোনায়েম মুন্না ও সাধারণ সম্পাদক মো. নুরুল ইসলাম নয়ন স্বাক্ষরিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বহিস্কার করা হয়।
গত (২০ মার্চ) দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে রূপগঞ্জ থানা যুবদলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক শামীম মিয়াকে প্রাথমিক সদস্য পদসহ দল থেকে বহিষ্কার করেন। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী যুবদল কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সভাপতি আবদুল মোনায়েম মুন্না ও সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ নূরুল ইসলাম নয়ন স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে। তা ছাড়া দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ের পটপরিবর্তনের পর নারায়ণগঞ্জে দুই শতাধিকের কাছাকাছি বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মী বহিস্কার হয়েছে বলে জানা গেছে। কিন্তু এর কোন প্রভাবই পরেনি রাজনৈতিক অঙ্গনে। আর এই দুষ্ট নেতাদের দমনের মাধ্যমেই আগামী নিবার্চনে নারায়ণগঞ্জ তথা সারাদেশে ক্লিন ইমেজ নিয়ে নির্বাচনী মাঠে থাকবে বিএনপি।
এ বিষয়ে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যাপক মামুন মাহমুদ যুগের চিন্তাকে বলেন, দুষ্টের দমন করতে হবে সৃষ্টের লালন করতে হবে। দলের মধ্যে যদি কোন দুষ্ট থাকে তাকে অবশ্যই দমন করতে হবে। তা ছাড়া বিএনপি একটি বড় রাজনৈতিক দল এই দলের মধ্যে বহিস্কার কার্যক্রম না থাকলে তো কিছু বেপরোয়া নেতাকর্মীরা বেপরোয়া থেকে যাবে। আর এটা একটি সাংগঠনিক পক্রিয়া যা বিগত দিনে আওয়ামী লীগ কখনোই করে নাই।
তিনি বলেন, বিএনপি বর্তমানে যেভাবে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে নিজ দলের নেতাকর্মীদের দফায় দফায় বহিস্কার করে তা জনগণ বিএনপির দ্বারা আশা করে। কারণ এটা নতুন কিছু নয় পুরনো আমল থেকেই বিএনপি কোনই অপকর্মকারীকে পশ্রয় দেয় না। দলকে শুশৃঙ্খল রাখার জন্য এই কার্যক্রম সর্বদা অব্যহৃত রাখার পাশাপাশি দলের নেতাকর্মীদের ক্লিন ইমেজ সৃষ্টির লক্ষে আগামী নির্বাচনকে ঘিরে আরো কঠোর অবস্থানেও যেতে পারে।
মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এড. সাখাওয়াত হোসেন খান যুগের চিন্তাকে বলেন, বিএনপি একটি বড় রাজনৈতিক দল এই দলের একটি মহানগরী ও একটি ইউনিটে হাজারো হাজারো নেতাকর্মী রয়েছে। যারা দলের মধ্যে থেকে দলের স্বার্থ বিরোধী, জনগণের স্বার্থ বিরোধী কাজ করবে। তাদের বিরুদ্ধে দল সাংগঠনিক ও আইনগত ব্যবস্থা নিবে সেটাই স্বাভাবিক। আর দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে যে বহিস্কার কার্যক্রম চলছে তাকে আমরা সমর্থন জানাই। আর অপকর্মের সাথে জড়িত থাকা নেতাকর্মীদের বহিস্কার বা গ্রেফতার করায় দল কোন ক্ষতিগ্রস্ত হবে না।
মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব এড. আবু আল ইউসুফ খান টিপু যুগের চিন্তাকে বলেন, দফায় দফায় নেতাকর্মীদের বহিস্কারের মাধ্যমে বিএনপি প্রমান দিয়েছে যে বিএনপি কোন অপকর্মকে পশ্রয় দেয় না। যাকে ঘিরে বিএনপিকে জনগণ বা হা বা দিচ্ছেন। কারণ সকলের আর বুঝতে বাকি নেই, জনগণের কোন বিএনপি নেতা নির্যাতন করলে, বিভিন্ন অপকর্মের সাথে জড়িত থাকলে তারা কোনভাবেই ছাড় পাবে না।
তিনি বলেন, বিগত দিনে স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা তার গডফাদার, গডমাদারের লোকেরা নারায়ণগঞ্জ জুড়ে যে অপকর্ম পরিচালনা করেছেন তার পরে ও তাদের দল তাদের প্রশ্রয় দিয়েছেন। কিন্তু বিএনপিতে এটা কোনভাবেই সম্ভব নয়। কারণ বিএনপি শুধু তার নির্দেশনায় নয়, জনগণের মনের ভাষার দিকে লক্ষ্য রেখে ও দল পরিচালনা করে থাকেন। যাকে ঘিরে অপকর্ম করে বিএনপিতে বসে থাকার কোন সুযোগ নেই, তারেক রহমান অপকর্মকারীদের পশ্রয় দেয় না।
জেলা বিএনপির ১ নং সদস্য আলহাজ¦ মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন যুগের চিন্তাকে বলেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান যে সকল সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন তা দলের জন্য মঙ্গল তার পাশপাশি দেশের জনগণের জন্য মঙ্গল। তিনি দেশের জনগণের সামনে বিএনপিকে ক্লিন ইমেজ হিসেবে গড়ে তুলতে যে সকল কার্যক্রম অবহৃত রেখেছেন যাকে আমরা সাধুবাদ ও সমর্থন জানাই।
তিনি বলেন, বিএনপি একটি বড় দল বিগত ১৬ বছর আন্দোলন সংগ্রামে যেভাবে বিএনপির দুরবার আন্দোলন গড়ে তুলতে লক্ষ লক্ষ নেতাকর্মী মাঠে ছিলেন। বর্তমানে ও যে কোন সময় বিএনপি ডাক দিলে নেতাকর্মীদের পাশাপাশি দেশের জনগণ ও মাঠে ঝাঁপিয়ে পরবেন। তা ছাড়া বিএনপি বর্তমানে দলের নেতাকর্মীরা দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে যে বহিস্কার অভিযান অবহৃত রেখেছেন যার মাধ্যমে বিএনপি জনগণের মনের কোঠায় অবস্থান করে নিচ্ছেন।
এখন জনগণ বলতে পারে যে বিএনপি শুধু নেতাদের দলই নয় দেশের সকল পর্যায়ের জনগণের দল। তা ছাড়া বর্তমানে বিএনপির এই বহিস্কার কার্যক্রমে কোন প্রভাবই রাজনীতি বা নির্বাচনে পরবে না বলে আমরা আশাবাদী। কারণ বহিস্কারের মাধ্যমে জনগণ বিএনপির সঠিক বিচার লক্ষ্য করছে যা আওয়ামী লীগসহ বাকি দলের লোকেরা কখনো দেখাতে পারেনি।
জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মাসুকুল ইসলাম রাজীব যুগের চিন্তাকে বলেন, যারা দলের নাম বিক্রি করে নানান অপকর্ম করে বেড়াবে দল তাদের বিগত দিনে ও প্রশয় দেয়নি আগামীতে ও কখনো দিবে না। তা ছাড়া বিএনপি একটি জনগণের দল যাকে ঘিরে বিএনপি যা করে সবই জনগণের ইচ্ছাপোষনের মাধ্যমেই করে থাকেন।
তা ছাড়া কেউ দলের সুনামক্ষুন্ন করলে তাদের বিরুদ্ধে দল ব্যবস্থা নিবে এটা আমাদের দলের অবস্থান। তা ছাড়া গত ১১ মাসে ৫ হাজার বহিস্কার করেছে বিএনপি যা এতো বড় দলের কাছে কিছুই নয়। কারণে সমুদ্র থেকে একটু ময়লা পানি তুলে নিলে সেখানে কোন প্রভাব দেখা যায় না।


