সদস্য নবায়ন কর্মসূচিতেও জেলা বিএনপিতে ব্যর্থতার ছাপ
যুগের চিন্তা রিপোর্ট
প্রকাশ: ১১ জুলাই ২০২৫, ১২:০০ এএম
সদস্য নবায়ন কর্মসূচিতেও জেলা বিএনপিতে ব্যর্থতার ছাপ
নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির ৩৩ সদস্য বিশিষ্ট উন্নতিকরণ কমিটি গঠনের পর ও বিতর্ক যেন পিছু ছাড়ছে না জেলা বিএনপির নেতাকর্মীদের। কমিটি গঠনের ৫ মাসেও জেলা বিএনপিকে সাংগঠনিক শক্তি করতে নেই কোন প্রকারের পদক্ষেপ। তা ছাড়া জেলা বিএনপির বর্তমান আহ্বায়কের প্রেসক্রিপশনে জেলা বিএনপির উন্নতি কমিটি গঠন হলে ও নেতাকর্মীদের নেই দলকে সাংগঠনিকভাবে শক্তিশালী করার পরিকল্পনা।
তা ছাড়া জেলার আওতাধীন ১০টি ইউনিট কমিটিই জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন ও সাধারণ সম্পাদক গোলাম ফারুক খোকনের স্বাক্ষরে হলে ও এখনো সেই ইউনিট কমিটিগুলো ভেঙে পূর্ণ গঠন না করায় বর্তমানে জেলা বিএনপির আওতাধীন প্রতিটি ইউনিট কমিটিসহ ইউনিয়ন, ওয়ার্ড কমিটিগুলোতে দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে হয়ে উঠেছে। যাকে ঘিরে বর্তমানে তারেক রহমানের ঘোষিত নতুন সদস্য ফরম নবায়ন কর্মসূচিগুলোতে কান জায়গায় আহ্বায়ক অন্য সদস্যদের নিয়ে কর্মসূচি করছে আবার অন্য দিকে কিছু কিছু জায়গায় ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক আবার অনেক স্থানে নবায়ন কর্মসূচি একই স্থানে এক সংগঠনের দুই ব্যানারে হচ্ছে।
ইতিমধ্যে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ঘোষিত যে ঐক্যের যাক তা গত ৫ মাসে দিতে পারেনি জেলা বিএনপির নেতৃবৃন্দ। তা ছাড়া জেলা বিএনপি ৩৩ সদস্য বিশিষ্ট হলে ও বর্তমানে নবায়ন কর্মসূচিগুলোতে ৩/৪ সদস্য ছাড়া এর বেশি লক্ষ্য করা যায়নি। যাকে ঘিরে এতে ও জেলা বিএনপির মূল সংগঠনের কমিটিও অঐক্য তা প্রকাশ্যে রয়েছে। অন্যদিকে জেলা বিএনপির আওতাধীন ফতুল্লা-সিদ্ধিরগঞ্জ জেলার আওতাধীন হলে ও ফতুল্লার কুতুবপুর ইউনিয়নে অবৈধ ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়কের সভাপতিত্বে সদস্য নবায়ন ফরম কর্মসূচি পালিত হয়।
একই সাথে এনায়েতনগর ইউনিয়নে বিভিক্ত করা দুই স্থানে সদস্য নবায়ন ফরম কর্মসূচি, ফতুল্লা থানা বিএনপি নেতার এক নেতার সভাপতিত্বে ফতুল্লা ইউনিয়ন বিএনপির সদস্য নবায়ন ফরম কর্মসূচি হয় যেখানে আহ্বায়ক ও সদস্য সচিব কেউ ছিলো না। এ ছাড়া সিদ্ধিরগঞ্জে থানা বিএনপির আয়েজিত সদস্য নবায়ন ফরম কর্মসূচি পালিত হলে ও সেখানে সভাপতি ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক কেউই ছিলো না। যা নিয়ে নানান বিতর্ক উঠছে জেলা বিএনপি জুড়ে। এদিকে জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মাসুকুল ইসলাম রাজীব। প্রতিটি পোগ্রামেই ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আবার কোন কোন জায়গায় সভাপতি আছে সাধারণ সম্পাদক নেই। এমন নানান ঘটনার সম্মূখিন হয়ে নেতাদের উপরে ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
এছাড়া নির্বাচনকে ঘিরে নেতাকর্মীদের দ্রুত ঐক্যবদ্ধ হওয়ার নির্দেশ বারবারই দিয়ে আছেন কিন্তু কোন দ্বন্দ্ব ও অনঐক্যের বেড়াজালেই আটকে আছে জেলা বিএনপিসহ সকল ইউটিন এবং ওয়ার্ড-ইউনিয়নের নেতাকর্মীরা। এদিকে বর্তমানে সদস্য নবায়ন ফরম কর্মসূচি পালনে ফতুল্লার প্রতিটি ইউনিয়ন ও সিদ্ধিরগঞ্জের ১০টি ওয়ার্ড একে একে চষে বেড়াচ্ছেন জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও বর্তমান ১নং সদস্য আলহাজ¦ মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন। তা ছাড়া জেলা বিএনপির বর্তমান কমিটির নেতৃত্বে নবায়ন কর্মসূচি পালন যেন বোঝা প্রায়। তা ছাড়া অনঐ্যরে বেড়াজালে আটকে জেলা বিএনপির ঘাড়ে ব্যর্থতার চাপ।
সূত্র বলছে, চলতি বছরের (০২ ফেব্রুয়ারী) জেলা বিএনপিকে গতিশীল করতে ৫ সদস্য বিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করেন বিএনপির হাইকমান্ড। একই সাথে কমিটি যেন দুইভাগে বিভক্ত না হয়ে পরে সেই দিকে লক্ষ্য রেখে দেওয়া হয়নি কাউকে সদস্য সচিব। পরবর্তীতে গত (২৪ মার্চ) কমিটিকে উন্নতি করলে ও আহ্বায়ক অধ্যাপক মামুন মাহমুদ, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক মোস্তাফিজুর রহমান ভূঁইয়া দিপু, যুগ্ম আহ্বায়ক মাসুকুল ইসলাম রাজীব। এই তিন নেতাকে জেলা বিএনপির সাইনিং পাওয়া দেওয়া হয়। কিন্তু সদস্য সচিবের দায়িত্ব দেওয়া হয়নি কোন নেতাকর্মীদের।
তা ছাড়া উন্নিত কমিটির ৭৫ দিনে ও জেলা বিএনপির কোন সক্রিয়তা বা গতিশীলতা লক্ষ্য করা যায়নি। তা ছাড়া কমিটি দেওয়ার পরবর্তীতে নির্দেশ ছিলো দ্রুত ইউনিট কমিটি ভেঙে পূনরায় সম্মেলনের মাধ্যমে গঠন করে নিজেদের কমিটির সম্মেলন দেওয়ার জন্য। কিন্তু দলীয় নির্দেশনার বাহিরে গিয়ে নিজস্ব দ্বন্দ্বে কোন প্রকারের সক্রিয়তা বা ঐক্য লক্ষ্য করা যাচ্ছে না জেলা বিএনপিতে। এদিকে গত (০২ ফেব্রুয়ারী) ৫ সদস্য বিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটি গঠনের পর বিভিন্ন মিছিল-মিটিং, সভায় জেলা বিএনপির নেতাকর্মীদের ঐক্য দেখা গেলে ও গত (২৪ মার্চ) জেলা বিএনপি উন্নতি করণের পরপরই অনঐক্য লক্ষ্য করা যাচ্ছে জেলা বিএনপি জুড়েই।
তা ছাড়া জেলা বিএনপির উন্নতি কমিটিতে বিভিন্ন বিতর্কিত ঘটনা জেনে ও ফতুল্লা থানা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক রিয়াদ চৌধুরীকে সদস্য পদ দেওয়ার পরের মাসেই চাঁদাবাজির অভিযোগে দল থেকে বহিস্কার হন রিয়াদ চৌধুরী। যা নিয়ে জেলা বিএনপির নেতৃত্ব নিয়ে সমালোচনা ও উঠছে নানান প্রশ্ন।
তা ছাড়া জেলা বিএনপির কমিটিতে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নোটিশে বহিস্কৃত অকিল উদ্দিন ভূঁইয়াকে স্থান দেওয়াসহ গত ৫ আগষ্টের পর সোনারগাঁও উপজেলা জুড়ে ব্যাপক সমালোচনায় থাকা আজহারুল ইসলাম মান্নান রূপগঞ্জের ত্রাস গোলাম ফারুক খোকন, তারাবোতে ব্যাবসায়ীদের আতঙ্ক তাসিক হক ওসমান। এরা জেলা বিএনপির দায়িত্বে থাকায় বর্তমানে অনঐক্য দেখা দিচ্ছে জেলা বিএনপিতে। যাকে ঘিরে প্রথম কমিটির ৫ আহ্বায়ক ও যুগ্ম আহ্বায়ক বর্তমানে বিছিন্ন হয়ে পরেছে।
আহ্বায়ক মামুন মাহমুদ একদিকে, মোস্তফিজুর রহমান ভূইয়া দিপু অন্যদিকে মাসুকুল ইসলাম রাজীব একক আবার শরীফ আহম্মেদ টুটুল নেই মাঠে। তা ছাড়া আহ্বায়ক কমিটির বাকি ৪ যুগ্ম আহ্বায়কের সাথে নেই জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও বর্তমান ১নং সদস্য আলহাজ¦ মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিনের। আধিপত্যসহ নানান দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পরেছে জেলা বিএনপি নেতারা। যাকে ঘিরে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৪৪ তম শাহাদাৎ বার্ষিকীতে জেলা বিএনপির ব্যানারে হয়নি কোন প্রকারের পোগ্রাম। তা ছাড়া জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি গঠনের পর সর্বশেষ নারায়ণগঞ্জে জেলা বিএনপির একটি সমাবেশ। এর পর রাজপথে শক্তিমত্বা দেখানোর মতো কোন কর্মসূচি দেয়নি বা কেন্দ্রীয়ভাবে পায়নি জেলা বিএনপি।
তা ছাড়া সচল না থাকায় এদের প্রতি আস্থা রেখে করে কেন্দ্র দেয়নি একজন সদস্য সচিব। এদিকে বর্তমানে নবায়ন ফরম কর্মসূচিগুলোতে পুরো পোগ্রাম জুড়েই ছাত্রদল, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতাদের দিয়েই ভরে রাখা হয়। মূল দল বিএনপির নেতাকর্মীদের বেশিরভাগই দেখা মিলে না জেলা বিএনপির বর্তমান কমিটি ছায়াতলে।
বর্তমানে জেলা বিএনপিকে গতিশীল করতে হলে দ্রুত প্রতিটি ইউনিট কমিটি ভেঙে পূর্ণগঠনসহ প্রতোক ওয়ার্ড, ইউনিয়নের কমিটি ভেঙে ভেঙে পূর্ণগঠন করতে হবে। তা ছাড়া সম্মেলনের মাধ্যমে প্রতিটি ইউনিট কমিটি ও জেলা বিএনপির মূল কমিটি পূর্ণাঙ্গ করতে হবে। তাহলেই নির্বাচন পর্যন্ত ব্যর্থতার বেড়াজাল থেকে মুক্ত থাকবে জেলা বিএনপি।


