আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ও ষড়যন্ত্রমূলকভাবে দেশকে অস্থিতিশীল করার প্রতিবাদে দেশব্যাপী বিক্ষোভ মিছিল করছে বিএনপি। এদিকে ৫ই আগস্টের আওয়ামীলীগ সরকারের পতনের পর সন্ত্রাস নৈরাজ্য, চাঁদাবাজি, ভূমিদস্যুতা, ঝুট সেক্টর, বালু মহাল, হাট-ঘাট, স্ট্যান্ড, ফুটপাত দখল, টেন্ডারবাজিসহ নানা অপকর্মের সাথে সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগে বিএনপি থেকে বহিষ্কার এবং যৌথ বাহিনীর নিকট আটক হয়েছেন নারায়ণগঞ্জ বিএনপির অনেক শীর্ষ নেতারা।

যারা বহিষ্কার ও গ্রেফতার হয়েও এখনো বীরদার্পে নানা অপকর্ম করে যাচ্ছেন। কিন্তু বর্তমানে নারায়ণগঞ্জ বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের এসকল অপকর্মের সাথে সম্পৃক্ত থাকা নেতারা কেন্দ্রীয় ঘোষিত কর্মসূচি বাস্তবায়নে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ও ষড়যন্ত্রমূলকভাবে দেশকে অস্থিতিশীল করার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল কর্মসূচি করছে।

সূত্র বলছে, গত ৫ই আগস্টের পর নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির কমিটির বিরুদ্ধে অপকর্মের অভিযোগ থাকায় তদন্ত কমিটির সুপারিশে কমিটি থেকে বিলুপ্ত করা হয়। কারণ তৎকালীন নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক গোলাম ফারুক খোকনের বিরুদ্ধে ছিল নানা অপকর্মের অভিযোগ। পরবর্তীতে ফের নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির তৎকালীন নেতারা বর্তমান আহ্বায়ক কমিটিতে ঠাঁই করে নিয়েছেন। অপরদিকে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন সাংবাদিককে লাঞ্চিত করার পর  বহিষ্কার হন।

এছাড়া যৌথ অভিযানে গ্রেফতার হয়েছিলেন মোগরাপাড়া ইউপি বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান,নারায়ণগঞ্জ জেলা যুবদলের আহ্বায়ক সাদেকুর রহমান সাদেক,তারাব পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হাফিজুর রহমান পিন্টু গ্রেফতার হন। এছাড়া যুবদল এবং স্বেচ্ছাসেবকদলের বেশকয়েকচজন নেতার বহিষ্কারেও থামেনি বিএনপির নেতাকর্মীদের অপকর্ম উল্টো বেপরোয়া হয়ে উঠেন।

কিন্তু গত ১৫ মে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে বহিষ্কার এবং দেশত্যাগের সময় আটক হন ফতুল্লা থানা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক রিয়াদ চৌধুরী। এছাড়া বর্তমান উপজেলা বিএনপির সভাপতিকে হিরণকে শোকজ করা হয়। এছাড়া নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সকল থানা উপজেলা বিএনপি এবং অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা বেপরোয়া হয়ে উঠেছিলেন।

এরমধ্যে- রূপগঞ্জে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মোস্তাফিজুর রহমান দিপু ভূইয়া সমর্থকরা রূপগঞ্জ জুড়ে ব্যাপক অপকর্ম করেন আওয়ামীলীগের সরকারের পতনের পরবর্তী সময়ে এরমধ্যে সর্বশিখড়ে রয়েছেন দিপু ভূইয়ার আস্থাভাজন নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক গোলাম ফারুক খোকন এবং নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রদলের সাবেক আহ্বায়ক নাহিদ হোসেন ভূইয়া।

গোলাম ফারুক খোকনের নানা অপকর্মের ফিরিস্তি মিডিয়াতে উঠে আসলেও নাহিদের আসেনি নাহিদ ৫ই আগস্টের পর থেকেই শিল্পপ্রতিষ্ঠানে চাঁদাবাজি,আবাসান ব্যবসায়ীদের হয়ে ভূমিদস্যুতা,পরিবহন চাঁদাবাজিসহ অটো ট্রাক বাস স্ট্যান্ড ও ফুটপাতে রয়েছে তার চাঁদাবাজি। সোনারগাঁয়ে সোনারগাঁ উপজেলা বিএনপির সভাপতি আজহারুল ইসলাম মান্নান এবং তার পুত্র নারায়ণগঞ্জ জেলা যুবদলের সি যুগ্ম আহ্বায়ক খাইরুল ইসলাম সজীবের বিরুদ্ধে ছিল নানা অভিযোগ এখনো চাঁদাবাজিসহ নানা অপকর্মের অভিযোগ আসছে।

তাছাড়া সোনারগাঁয়ে মান্নান বলয়ের অধিকাংশ নেতাকর্মীরা গত ৫ই আগস্টের পর থেকে বেপরোয়া হয়ে আছেন নানা অপকর্মের সাথে সর্ম্পৃক্ত। এছাড়া ফতুল্লা থানা বিএনপির সভাপতি শহিদুল ইসলাম টিটু বহিষ্কৃত বিএনপি নেতা রিয়াদ চৌধুরী অন্যতম ঘনিষ্ঠ ছিলেন। এছাড়া ফতুল্লা অঞ্চলের অধিকাংশ সেক্টর টিটুর নিয়ন্ত্রণে রয়েছে থানা সভাপতি হওয়ায়। অপরদিকে নারায়ণগঞ্জ জেলা যুবদলের সদস্য সচিব মশিউর রহমান রনির বিরুদ্ধে ৫ই আগস্টের পর নানা অপকর্মের সাথে সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগ উঠলেও বর্তমানে সতর্ক হয়ে নানা পর্দার অন্তরাল থেকে ছায়া হয়ে থাকেন।

নারায়ণগঞ্জ জেলা স্বেচ্ছাসেবকদলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক রফিকুল ইসলাম রফিকের বিরুদ্ধে রূপগঞ্জের একটি আড়তের জায়গা দখলে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে জড়িয়েছিলেন রফিক। এখনো রূপগঞ্জে নানা ভাবে প্রভাব বিস্তার করে অপকর্মে লিপ্ত রয়েছেন। নারায়ণগঞ্জ মহানগর স্বেচ্ছাসেবকদলের আহ্বায়ক শাখাওয়াত ইসলাম রানার বিরুদ্ধে ৫ই আগস্টের পর বহু অপকর্মের অভিযোগ এবং বাস টার্মিনাল দখলে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে ছিলেন।

তাছাড়া প্রকাশ্যেই একের পর এক অপরাধমূলক কর্মকান্ডে জড়াচ্ছেন বেশকয়েকদিন আগে জমি সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে শিবির নেতা পিটিয়েছেন রানার নেতৃত্বে তার সমর্থকরা। এখন সেই রানাই গতকাল আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ও ষড়যন্ত্রমূলকভাবে দেশকে অস্থিতিশীল করার প্রতিবাদে দেশব্যাপী বিক্ষোভ মিছিল করছে।

অপরদিকে নারায়ণগঞ্জ জেলা কৃষকদলের আহ্বায়ক ড.শাহীন এবং সদস্য সচিব আলম মিয়ার বিরুদ্ধে ভূমিদস্যুতা এবং কমিটি বাণিজ্যের গুরুতর অভিযোগ থাকায় জেলা কৃষকদলের নেতাকর্মীরাই তাদের বহিষ্কার চেয়ে তাদের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন এবং মানববন্ধন করেন। এখনো তারা নানা অপকর্মে জড়িয়ে আছেন। এভাবেই নারায়ণগঞ্জ বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের এসকল অপকর্মের সাথে সম্পৃক্ত থাকা নেতারা কেন্দ্রীয় ঘোষিত কর্মসূচি বাস্তবায়নে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ও ষড়যন্ত্রমূলকভাবে দেশকে অস্থিতিশীল করার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল কর্মসূচি করছে।