দলনেতার ছড়াছড়ি, জননেতার অভাব
নারায়ণগঞ্জ বিএনপির রাজনীতিতে দলীয় নেতার ছড়াছড়ি দেখা গেলেও জননেতার বড়ই অভাব লক্ষ্য করা যাচ্ছে বলে মত বিশিষ্টজনদের। রাজনীতিতে দলীয় পরিচয়ে রাজনৈতিক চর্চার পাশাপাশি স্বচ্ছ রাজনৈতিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে জনসেবায় রাজনৈতিক নেতাদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে জনগণের নিকট হয়ে উঠেন একজনদলনেতার বাহিরে জননেতা।
আর সেই জননেতারই বড় সংকট নারায়ণগঞ্জ বিএনপির রাজনৈতিক অঙ্গনে কারণ দলীয় পদ পদবীর প্রভাবকে আলিঙ্গন করতেই কেবল সকলে মগ্ন রয়েছেন বর্তমান বিএনপির নেতারা এবং দলীয় পদ পদবীর প্রভাবকে বিস্তার করেই জননেতা তকমা পেতে চান। এখানেই শেষ নয় দলীয় পদের প্রভাবে দলীয় গ্রুপিং সৃষ্টি এবং হাইকমান্ডে দেন দরবারের মাধ্যমে দলীয় মনোনয়নে সাংসদ হওয়ারও চিন্তা চেতনায় রয়েছে নারায়ণগঞ্জ বিএনপির অধিকাংশ দলনেতা। তবে আগামী সংসদ নির্বাচনে বিএনপি থেকে শুধু দলনেতা হয়ে থাকলে মনোনয়ন মিলবে না জননেতা হয়ে জনপ্রিয়তার উপর নির্ভর করে মনোনয়ন তুলে দেয়া হবে বিএনপি থেকে বার্তা প্রকাশ করা হয়েছে।
সূত্র বলছে, নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর বিএনপির রাজনীতিতে দলনেতাদের ব্যাপক প্রচার প্রচারণা এবং সমর্থকদের দ্বারা নিজেদের জননেতা দাবি করলেও এখনো হয়ে উঠতে পারেন জননেতা। যেমন: নারায়ণগঞ্জ-১ আসনে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী হিসেবে বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য কাজী মনিরুজ্জামানকে নারায়ণগঞ্জ-১ (রূপগঞ্জে) জনসাধারণের নিকট ব্যাপক পরিচিতি এবং জননেতা খেতাব পেলেও নারায়ণগঞ্জ-১ আসনে অপর এক মনোনয়ন প্রত্যাশী স্থানীয় রাজনীতিতে প্রভাবশালী নেতা নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মোস্তাফিজুর রহমান দিপু এখনো দলনেতা হিসেবেই রূপগঞ্জে প্রচলিত রয়েছেন।
কেননা তিনি দলীয় নেতাকর্মীদের নিকট জননেতা হিসেবে পরিচিত পেলে বাস্তবিক অর্থে তিনি দলনেতা হিসেবেই রয়ে গিয়েছেন। কেননা তিনি এখনো স্বচ্ছ রাজনৈতিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে জনসেবায় দলনেতা হিসেবে আত্মনিয়োগের কারণে জননেতার খেতাব পাননি। অপরদিকে নারায়ণগঞ্জ-২ আসনে বিএনপির থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশী নজরুল ইসলাম আজাদ,মাহমুদুর রহমান সুমন,আতাউর রহমান আঙ্গুর কেউই নেই জননেতার খেতাবে। সবচেয়ে আশ্চর্যজনক বিষয় হচ্ছে নারায়ণগঞ্জ-২ আসন থেকে টানা তিন বার সাংসদ হয়ে জনসম্পৃক্ততা বজায় না রাখার কারণে জননেতা খেতাব এখনো মেলেনি আঙ্গুরের।
অপরদিকে ঢাকা বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক নজরুল ইসলাম আজাদ এবং বিএনপির সহ-অর্থনৈতিক বিষয়ক সম্পাদক নারায়ণগঞ্জ-২ আসনে জননেতার খেতাব প্রচার করে আসলে প্রকৃকপক্ষে তারা দলনেতা হিসেবেই পরিচিত রয়ে গিয়েছেন জনগণের নিকট। কারণ নারায়ণগঞ্জ-২ আসনে জনগণের নিকট তাদের নাম এবং তাদের ব্যক্তিত্ব এখনো নতুন। তাছাড়া তারা দলীয় নেতাদের নিয়েই রাজনৈতিক কর্মকান্ডে ব্যস্ত সময় পার করেন।
জনসেবামূলক এবং জনসম্পৃক্তমূলক কর্মকান্ড থেকে দূরে থাকেন। অপরদিকে নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনে বিএনপি থেকে একাধিক প্রার্থী মনোনয়ন প্রত্যাশা করলেও এখনো কেউ জননেতায় পরিণত হতে পারেননি দলীয় ভিত্তিক রাজনীতির প্রভাবকে প্রধান্য দেয়ার কারণে দলনেতাই রয়ে গিয়েছেন। কিন্তু ইতিমধ্যে অনেকেই দলনেতার থেকে জনপ্রিয়তা অর্জনের লক্ষ্যে জননেতা হওয়ার লক্ষ্যে কাজ করছেন এরমধ্যে আলোচনায় এস এম ওলিউর রহমান আপেল এবং অধ্যাপক ওয়াহিদ বিন ইমতিয়াজ বকুল।
তবে নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনে টানা তিন বারের মত সাংসদ থাকলেও রেজাউল করিম দলনেতা এবং জননেতা হিসেবেও খ্যাতি অর্জন করতে পারেনি দীর্ঘ রাজনীতির অনউপস্থিতির কারণে কিন্তু তার অনউপস্থিতি নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনে তার স্থানে বিচরণ ঘটায় আজহারুল ইসলাম মান্নান দলনেতা হিসেবে। কারণ সোনারগাঁ উপজেলা বিএনপির সভাপতি পদ লাভের পর থেকেই সোনারগাঁ বিএনপিকে তার মুঠোবন্ধি করে এবং ৫ই আগস্টের দলীয় পদের প্রভাবে পুরো সোনারগাঁকে জিম্মি করেন।
এদিকে নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনে জননেতার বিভেচনায় বহু আগেই খেতাব লাভ করেছিলেন নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সাবেক সাংসদ মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন। কিন্তু তার সমপক্ষ মনোনয়ন প্রত্যাশী শাহ আলম একজন ব্যবসায়ী এবং বিএনপির মনোনয়নে নির্বাচন করেছিলেন এতটুকুই তার খ্যাতি রয়েছে। এছাড়া নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির বর্তমান আহ্বায়ক মামুন মাহমুদ নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনে তিনিও মনোনয়ন প্রত্যাশা করলেও দলনেতা হিসেবেই তিনি রাজনৈতিক ভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছেন।
কারণ তিনি দলীয় রাজনীতির বাহিরে জনপ্রিয়তা অর্জনের জনসম্পৃক্ততা অর্জনের কার্যক্রমের মাধ্যমে জনপ্রিয়তা অর্জন করতে পারেননি। নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী হিসেবে নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সাবেক সাংসদ আবুল কালাম এখনো জনপ্রিয়তা সমন্বত রাখতে সক্ষম হয়েছেন।
পাশাপাশি নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের মনোনয়ন প্রত্যাশী হিসেবে সাখাওয়াত হোসেন খানও দলনেতা থেকে জননেতায় পরিণত হয়েছেন। কিন্তু নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের মনোনয়ন প্রত্যাশী হিসেবে ব্যবসায়ী মডেল মাসুদ এবং প্রাইম বাবুল এখনো শিল্পপতি খেতাবেই রয়েছেন। তবে নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব আবু আল ইউসুফ খান টিপু এখনো দলনেতা রয়ে গিয়েছেন।


