Logo
Logo
×

রাজনীতি

না.গঞ্জ জেলা বিএনপিকে কেন্দ্রের কড়া বার্তা

Icon

যুগের চিন্তা রিপোর্ট

প্রকাশ: ২৮ জুলাই ২০২৫, ১২:০০ এএম

না.গঞ্জ জেলা বিএনপিকে কেন্দ্রের কড়া বার্তা

না.গঞ্জ জেলা বিএনপিকে কেন্দ্রের কড়া বার্তা

Swapno

# বিতর্কিত নয়, ত্যাগী, জনপ্রিয় ও কর্মীবান্ধব নেতারাই পাবেন মনোনয়ন


নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সাংগঠনিক কাঠামো, অভ্যন্তরীণ কোন্দল ও আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে চলমান প্রস্তুতি নিয়ে সম্প্রতি কেন্দ্রীয় বিএনপি একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে বসে। গুরুত্বপূর্ণ এই বৈঠকে অনলাইনে অংশ নেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।  এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির তিন শীর্ষ নেতা আহ্বায়ক মামুন মাহমুদ, যুগ্ম আহ্বায়ক মোস্তাফিজুর রহমান ভূঁইয়া দিপু এবং মাসুকুল ইসলাম রাজিব।


সূত্র মতে, বৈঠকে দলের  কেন্দ্রীয় শীর্ষ নেতারা অংশ নেন এবং নারায়ণগঞ্জের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট, নেতৃবৃন্দের কার্যকলাপ ও ভবিষ্যৎ কৌশল নিয়ে খোলামেলা আলোচনা করেন। বৈঠকে স্পষ্টভাবে জানানো হয়েছে, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মনোনয়ন পাওয়ার জন্য শুধু অর্থশক্তি যথেষ্ট নয়। বরং যারা বছরের পর বছর বিএনপির দুঃসময়ে পাশে থেকেছেন, আন্দোলনে মাঠে ছিলেন, নিঃস্বার্থভাবে ত্যাগ স্বীকার করেছেন, কর্মীবান্ধব এবং ক্লিন ইমেজধারী, দল এবং তারেক রহমানের প্রতি আস্থাশীল তাদেরকেই প্রাধান্য দেওয়া হবে।


এই বার্তাটি ছিল একটি স্পষ্ট সতর্কতা, যারা ভাবেন শুধু অর্থ, ক্ষমতা বা পরিচয় দিয়ে মনোনয়ন পাওয়া সম্ভব তাদের জন্য এটি ছিল চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখানোর মতো। নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির ভেতরে বিভিন্ন সময়ে যে বিভাজন, অভ্যন্তরীণ বিরোধ এবং গ্রুপিং তৈরি হয়েছে, তা নিয়ে কেন্দ্র দীর্ঘদিন ধরেই পর্যবেক্ষণ করে আসছে। এই বৈঠকে কেন্দ্রীয় নেতারা স্পষ্টভাবে জানান, কে কোথায় কী করছে, কারা আলাদা প্রোগ্রাম করছে, কে কার সঙ্গে সম্পর্ক রাখছে সবই আমাদের জানা। বিশেষ করে সাম্প্রতিক সময়ে নারায়ণগঞ্জে জেলা বিএনপির নেতৃত্বকে পাশ কাটিয়ে কিছু নেতাকর্মীর পৃথক কর্মসূচি, সমাবেশ, মিছিল এর  বিষয়টি কেন্দ্রের নজর এড়ায়নি।


এই বৈঠকে জেলার নেতাদের চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখানো হয়েছে যে কেন্দ্র জানে, বুঝে এবং নথিভুক্ত করে রাখছে সব কিছু। বৈঠকে বিএনপির অঙ্গ সংগঠন বিশেষ করে ছাত্রদল ও যুবদলের কিছু নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে অভিযোগ এবং অপকর্মের বিষয়গুলোও তুলে ধরা হয়। বলা হয়, এসব কর্মকাণ্ড দলকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে, কর্মীদের মধ্যে হতাশা ছড়াচ্ছে এবং দলের ভাবমূর্তি নষ্ট করছে।


কেন্দ্রীয় নেতারা সাফ জানিয়ে দেন, তারা যদি ভাবে অন্ধকারে যা করছে কেউ জানে না, সেটা ভুল ধারণা। তাদের কর্মকাণ্ড দলের ভেতরের এবং বাইরের বহু সূত্র থেকে তাদের কাছে আসে। তারা সকল তথ্য সম্পর্কে অবগত। বিএনপির হাইকমান্ড বৈঠকে সতর্ক করে জানান, নির্বাচনের পূর্বে এবং পরে  এই মধ্যবর্তী সময়ে সংগঠনে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে প্রয়োজনে কঠোর সিদ্ধান্ত নিতে হবে এবং দল তার অবস্থান থেকে একচুলও সরবে না।


বিশেষ করে বলা হয়  বিতর্কিত ব্যক্তিদের মনোনয়ন দেওয়া হবে না। নেতাকর্মী বিমুখ বা সুবিধাবাদী নেতারা মনোনয়নের বাইরে থাকবেন দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ করলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে ব্যক্তিগত ইভেন্ট বা ভিন্নমতের রাজনীতি বরদাস্ত করা হবে না। এটি ছিল একটি কড়া বার্তা, যাতে করে জেলা পর্যায়ে বিভক্তি এবং শৃঙ্খলাহীনতা রোধ করা যায়।


রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব এখন নারায়ণগঞ্জকে একটি গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষা ক্ষেত্র হিসেবে দেখছে। এই জেলার নেতৃত্ব, সাংগঠনিক কার্যকলাপ এবং নির্বাচনের প্রস্তুতি দলের সামগ্রিক কৌশল নির্ধারণে বড় ভূমিকা রাখবে। তারেক রহমান এবং কেন্দ্রীয় নেতারা এই মেসেজটি দিতে চেয়েছেন। বিএনপি এখন পরিবর্তনের দিকে যাচ্ছে। ত্যাগী, পরিচ্ছন্ন ভাবমূর্তিসম্পন্ন এবং কর্মীবান্ধব নেতারাই দলকে ভবিষ্যতে নেতৃত্ব দেবেন।


এই বৈঠক একটি স্পষ্ট নির্দেশনা দিয়েছে, বিএনপি বাস্তবতা এবং ভবিষ্যৎ নেতৃত্ব নির্ধারণে কঠোর অবস্থান গ্রহণ করছে। নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির শীর্ষ নেতাদের জন্য এটি ছিল একটি বার্তা যারা দলের জন্য নিবেদিত, সংগঠনের প্রতি দায়বদ্ধ এবং জনপ্রিয়, তারাই হবেন আগামী দিনের কান্ডারি।

Abu Al Moursalin Babla

Editor & Publisher
ই-মেইল: [email protected]

অনুসরণ করুন