প্রার্থী তালিকা চূড়ান্তের বিষয়টি মনগড়া
# জেলা বিএনপি কেন্দ্রিক আলোচনার বাহিরে আর কোন আলোচনা হয়নি : মামুন মাহমুদ
# কি নির্দেশনা এসেছে সে বিষয়ে আহ্বায়ক অবগত : দিপু ভূঁইয়া
# জেলা বিএনপির নেতারাই শুধু ছিলো আমরা নয় : এড. সাখাওয়াত
# এটা জেলা বিএনপির বৈঠক এখানে আমাদের বলা হয়নি : এড. টিপু
নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সাংগঠনিক কাঠামো, অভ্যন্তরীণ কোন্দল ও আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে চলমান প্রস্তুতি নিয়ে সম্প্রতি গত (২৬ জুলাই) কেন্দ্রীয় বিএনপি একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে বসে। গুরুত্বপূর্ণ এই বৈঠকে অনলাইনে অংশ নেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির তিন শীর্ষ নেতা আহ্বায়ক মামুন মাহমুদ, যুগ্ম আহ্বায়ক মোস্তাফিজুর রহমান ভূঁইয়া দিপু এবং মাসুকুল ইসলাম রাজিব।
সূত্র জানায়, সে বৈঠকে জেলা বিএনপির দুর্বলতা এবং অভ্যন্তরীণ কোন্দল নিয়ে আলোচনা হয় তার পাশাপাশি আগামী নির্বাচনকে ঘিরে নারায়ণগঞ্জের বর্তমান পরিস্থিতি উঠে আসলেও সেখানে নারায়ণগঞ্জের ৫টি আসনের সম্ভাব্য বা চূড়ান্ত কোন প্রার্থী নাম প্রকাশ্যে আসেনি বা সেই প্রসঙ্গে কোন প্রশ্নই উঠেনি বলে জানিয়েছে সূত্র। শুধু আগামী নিয়ে যোগ্যতা যাচাই-বাছাই ৫ই আগষ্ট পূর্বে ও পরবর্তী রাজপথের সক্রিয় ভূমিকাসহ নেতাকর্মীদের আস্থার প্রতীক এবং জনগণ যাদের চিনেন এমন প্রার্থীদের মধ্যে থেকেই আগামী নির্বাচনে মনোনয়ন দেওয়া হবে এমনটা ঘোষণা এসেছে।
এর বাহিরে ও বৈঠকে দলের কেন্দ্রীয় শীর্ষ নেতারা অংশ নেন এবং নারায়ণগঞ্জের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট, নেতৃবৃন্দের কার্যকলাপ ও ভবিষ্যৎ কৌশল নিয়ে খোলামেলা আলোচনা করেন। বৈঠকে স্পষ্টভাবে জানানো হয়েছে, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মনোনয়ন পাওয়ার জন্য শুধু অর্থশক্তি যথেষ্ট নয়। বরং যারা বছরের পর বছর বিএনপির দুঃসময়ে পাশে থেকেছেন, আন্দোলনে মাঠে ছিলেন, নিঃস্বার্থভাবে ত্যাগ স্বীকার করেছেন, কর্মীবান্ধব এবং ক্লিন ইমেজধারী, দল এবং তারেক রহমানের প্রতি আস্থাশীল তাদেরকেই প্রাধান্য দেওয়া হবে।
তারেক রহমানের সাথে জেলা বিএনপির এই বৈঠকে আগামী নির্বাচনকে ঘিরে কোন প্রকারের প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত হয়নি জানিয়েছে সূত্র। তা ছাড়া কেন্দ্রের স্পষ্ট নির্দেশনা যারা বিগত দিনের আন্দোলন সংগ্রামে যারা মাঠে ছিল না বা রাজনৈতিক কর্মকান্ডে অংশগ্রহণ করেনি। এমন কোন প্রার্থী নির্বাচনে মনোনয়ন পাবে না। এদিকে নারায়ণগঞ্জের ৫ টি আসনে যারা আন্দোলন সংগ্রামে রাজেথে ছিলো নেতাকর্মীদের সাথে সংযোগ আছে এবং জনগণ যাদের চিনেন এমন প্রার্থীদের মধ্যে থেকেই আগামী নির্বাচনে মনোনয়ন দেওয়া হবে।
সূত্র আরো জানায়, ব্যবসায়ী যারা রাজপথে সক্রিয় নয় এমন বিএনপি নেতা কিংবা বহিষ্কৃত বিএনপি নেতাদের মনোনয়ন দেয়ার প্রশ্নই আসে না। নারায়ণগঞ্জে অতীতে বিএনপির সাথে শক্তিশালীভাবে আকরে ছিলো এমন নেতাদের দেওয়া হবে মনোনয়ন। এদিকে কেন্দ্রীয় একাধিক সূত্র জানিয়েছে, জেলা বিএনপিকে দ্রুত সময়ের মধ্যে ফতুল্লা থানা ও সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির কমিটি ভেঙ্গে দেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এই তালিকায় সোনারগাঁও ও আড়াইহাজার উপজেলা বিএনপির কমিটি ভেঙে দেওয়া কথা উঠলে ও আপাতত সেটি না ভাঙ্গার নির্দেশনা দেওয়া হয়।
তা ছাড়া আগামী দিনে জেলার ৫টি আসনে মনোনয়ন দেওয়ার ক্ষেত্রে মনোয়নয়ন প্রত্যাশীদের অতীত কর্মকাণ্ড ও শিক্ষাগত যোগ্যতা এবং ৫ ই আগষ্টের পরে ওই নেতা ও তার কর্মী সমর্থকদের ভূমিকা এবং স্বচ্ছ বা ক্লিন ইমেজের ব্যাপারে খোঁজ খবর নিয়েই মনোনয়ন চূড়ান্ত করবে কেন্দ্র এটি সাব জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। সূত্র আরো জানিয়েছে, যে সকল বিএনপি নেতাদের সাথে ফ্যাসিস্ট সরকারের কর্মী সমর্থকরা মিশে গিয়েছে এবং তাদের যে বিএনপি নেতারা আশ্রয় পশ্রয় দিয়েছেন এবং অনৈক সুবিধা গ্রহণ করেছেন সে সকল ব্যাপারে নিজেদের তদন্ত কমিটির পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের সহযোগীতা নেওয়া হবে।
মনোনয়ন দেওয়ার ক্ষেত্রে অতীত এবং বর্তমানে সাংগঠনিক বিশৃঙ্খা করেছেন এবং নেতাকর্মীদের বিভক্ত করেছেন,এমন প্রার্থীদের পাদান্ন দেওয়া হবে না। এদিকে রূপগঞ্জ, আড়াইহাজার, সোনারগাঁওসহ যে সকল নির্বাচনী আসনে অথনৈতিক অঞ্চল বা ইকোনোমিক জোন রয়েছে সে সকল এলাকায় ৫ ই আগষ্টের পর মনোনয়ন প্রত্যাশী ও তাদের নেতাকর্মীদের কি কি ভূমিকা ছিলো এবং বর্তমানে কি অবস্থা সকল হালহাকিকদ তদন্ত করেই। নারায়ণগঞ্জের ৫ টি আসনে মনোনয়ন চূড়ান্ত করবে বিএনপি।
এর আগে যতই টেবিল কমিটিতে কিংবা লোকমুখে প্রার্থী চূড়ান্ত করা হোক না কেন। এ বিষয়ে বিভ্রান্ত না হওয়ার জন্য নেতাকর্মীদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এর বাহিরে ও আরো নির্দেশনা রয়েছে যে সকল ব্যবসায়ী বিএনপি নেতা বিএনপির রাজনীতিতে সংশিষ্ট থাকলে ও অতীতেই বিএনপি থেকে সরে গিয়েছেন কিংবা বহিস্কৃত এবং পদত্যাগ করেছেন এর পাশাপাশি নতুন করে যারা বর্তমান পরিস্থিতিতে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশা করছেন এমন ব্যাক্তিদের নারায়ণগঞ্জের মতো গুরুত্বপূর্ণ জেলায় কোন আসনেই মনোনয়নের জন্য চূড়ান্ত করবে না বিএনপি।
এ বিষয়ে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যাপক মামুন মাহমুদ যুগের চিন্তাকে বলেন, জেলা বিএনপির কমিটি গঠনের পর আগামী ৪ মাস জেলা বিএনপিকে গতিশীল রাখতে কি কি কার্যক্রম পরিচালিত হলো সেগুলো ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান সাহেবকে অবগত করলাম। তার পাশাপাশি জুলাই আন্দোলনকে ঘিরে কেন্দ্রীয়ভাবে যে ৩৬ দিনের কর্মসূচিগুলো ঠিকভাবে পালন করা হচ্ছে কিনা সেই ব্যাখা, জেলা বিএনপির ইউনিটগুলোতে কি কি দুর্বলতা রয়েছে সেই আলোচনাসহ তার সাথে হয়েছে।
জেলা বিএনপির কেন্দ্রিক আলোচনার বাহিরে আর কোন আলোচনা তার সাথে হয়নি। তিনি আমাদের শীর্ষ নেতা তিনি আমাদের জেলা বিএনপি পরিচালনার দায়িত্ব দিয়েছেন সেগুলোই আমরা পালন করছি আর এটা কি কি পরিস্থিতি তার আপডেট দিচ্ছি। আর এটা আমাদের ডেইলি রুটিন ওয়ার্ক।
জেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক মোস্তাফিজুর রহমান ভূঁইয়া দিপু যুগের চিন্তাকে বলেন, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সাথে জেলা বিএনপির সাংগঠনিক বিষয়ের আলোচনার বৈঠকে আমি থাকলেও আমি অন্য একটি কাজে ব্যস্ত ছিলাম। কি কি নির্দেশনা এসেছে বা কি হয়েছে সে বিষয়ে আমাদের আহ্বায়ক অবগত আমি নয়।
মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এড. সাখাওয়াত হোসেন যুগের চিন্তাকে বলেন, জেলা বিএনপির সাংগঠনিক বিষয়ে আলোচনা নিয়ে তারেক রহমান সাহেবের সাথে বৈঠক, এখানে জেলা বিএনপির নেতারাই শুধু ছিলো।
মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব এড. আবু আল ইউসুফ খান টিপু যুগের চিন্তাকে বলেন, এটা জেলা বিএনপির নেতাদের সাথে তারেক রহমান সাহেবের বৈঠক, এখানে আমাদের বলা হয়নি।


