Logo
Logo
×

রাজনীতি

না.গঞ্জের পাঁচটি সংসদীয় আসনের তিনটিতে সীমানা পরিবর্তন

Icon

রাকিবুল ইসলাম

প্রকাশ: ৩১ জুলাই ২০২৫, ১২:০০ এএম

না.গঞ্জের পাঁচটি সংসদীয় আসনের তিনটিতে সীমানা পরিবর্তন

না.গঞ্জের পাঁচটি সংসদীয় আসনের তিনটিতে সীমানা পরিবর্তন

Swapno



# সীমানা পরিবর্তনে নাগরিকদের মাঝে বিভক্ত তৈরী করার পায়তারা চলছে : এড.সাখাওয়াত
# আমরা আগের অবস্থায় থাকতে চাই: মামুন মাহমুদ


সংসদীয় আসনের জনসংখ্যা, ভোটার সংখ্যাসহ সামগ্রিক বিষয় সামনে রেখে ৩০০ সংসদীয় আসনের মধ্যে ৩৯টির সীমানায় পরিবর্তন আসছে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার (ইসি) মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকার। (৩০ জুলাই) নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি। তারই প্রেক্ষিতে নারায়ণগঞ্জের ৩ টি আসনের সীমানায় পরিবর্তন আনা হয়েছে। ইতিমধ্যে সীমানা পরিবর্তনের খসড়া প্রকাশ করা হয়েছে।


নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গেছে, নারায়ণগঞ্জের ৩টি আসনের সীমানা পরিবর্তনের আসনগুলো হলো, নারায়ণগঞ্জ-৫ আসন। আগে যেটি সদর ও বন্দর এলাকা নিয়ে গঠিত ছিল। পরিবর্তিত সীমনার খসড়া তালিকা অনুযায়ী এবার নারায়ণগঞ্জ-৫ আসন পুনর্বিন্যাস করে শুধু সিটি করপোরেশন এলাকা নিয়ে গঠন করা হয়েছে।


নারায়ণগঞ্জ-৪ আসন আগেছি ফতুল্লা ও সিদ্ধিরগঞ্জ থানা এলাকা নিয়ে। এ আসনে সিদ্ধিরগঞ্জ এলাকা বাদ দিয়ে সদর উপজেলার ৭টি ইউনিয়ন নিয়ে খসড়া তালিকায় সীমানায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে গোগনগর ও আলীরটেক ইউনিয়ন ছিল নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে । যা এখন পরিবর্তন করে নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সাথে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।


এছাড়া নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনটি আগে শুধু সোনারগাঁও উপজেলা কেন্দ্রিক ছিল। এখন সোনারগাঁ উপজেলার সাথে বন্দর উপজেলার ইউনিয়নগুলোকে সংযুক্ত করা হয়েছে খসড়া তালিকায়। বন্দরের সিটি করপোরেশনের অংশকে নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে অর্ন্তভুক্ত করা হয়েছে। নারায়ণগঞ্জ-২ (আড়াইহাজার) ও নারায়ণগঞ্জ-১ (রূপগঞ্জ) আসনে কোন পরিবর্তন হয়নি।


এদিকে নারায়ণগঞ্জের ৩টি আসনে সীমানা পরিবর্তন নিয়ে খসড়া তালিকা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে বিএনপির সম্ভাব্য সংসদ সদস্য প্রার্থীদের মাঝে নানা প্রতিক্রিয়া তৈরী হয়েছে। সেই সাথে অনেকে এই সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানিয়েছে। আবার অনেকে নাগরিক অধিকার খর্ব করে বলে মন্তব্য করেছেন। তবে সীমানা পরিবর্তন নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা দুটোই তৈরী হয়েছে নেতাকর্মীদের মাঝে।


খসড়া তালিকায় সীমানা পরিবর্তন নিয়ে নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এড.সাখাওয়াত হোসেন খান যুগের চিন্তাকে, বলেন, ‘নারায়ণগঞ্জের ৩ টি আসন নিয়ে সীমানা পরিবর্তন নিয়ে প্রাথমিকভাবে যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে এতে নারায়ণগঞ্জের নাগরিকরা খুশি হতে পারেনি। আমরা এটা নিয়ে জনগণের মতামত নিয়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে আপত্তি জানাবো।


তাছাড়া নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনে খসড়া তালিকায় বন্দরকে দুটি ভাগ করে এখানকার মানুষের মাঝে বিভক্ত তৈরী করা হয়েছে। অপরদিকে সদর থানার আংশিক এলাকা বিভক্ত করে নাগরিকদের মাঝে বিভক্ত তৈরী করা হয়েছে। যা এখানকার নাগরিকরা মেনে নিতে পারেনি। এই জন্য আমরা স্থানীয় জনগণকে সাথে নিয়ে এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে যা যা করা প্রয়োজন তার সকল ধরণের ব্যবস্থার জন্য পদক্ষেপ গ্রহণ করবো।’  


জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যাপক মামুন মাহমুদ যুগের চিন্তাকে বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনের ট্যাকনিক্যাল কমিটি নারায়ণগঞ্জের ৩ টি আসনের সীমানা নির্ধারণ নিয়ে প্রাথমিক সিদ্ধান্ত খসড়া প্রকাশ করেছে। এটা তাদের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নয়। নারায়ণগঞ্জের মানুষ যেভাবে এখন অভ্যস্ত রয়েছে, আমরা সেভাবেই থাকতে চাই। আর এটা আমরা আমাদের দলের নীতিনির্ধারকদের কাছে তুলে ধরবো।’


নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব এড. আবু আল ইউসুফ খান টিপু যুগের চিন্তাকে বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার আজ্ঞাবহ হয়ে বর্তমান সরকারের অপকৌশল হিসেবে রাজনৈতিক কুটচাল করে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে  দীর্ঘায়িত ও বানচাল করার জন্য নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর নাগরিকদের অধিকার খর্ব করে নারায়ণগঞ্জ-৩, ৪  এবং ৫ আসনকে নতুন করে  বন্টন করেছে।  আমরা জনগণের অধিকার ফিরিয়ে দিয়ে না.গঞ্জ -৩,৪ ও ৫ আসন পূর্বের অবস্থায় বহাল রাখার জন্য জোর দাবী জানাচ্ছি।


প্রসঙ্গত নির্বাচন  কমিশনার আনোয়ারুল ইসলাম সরকার জানিয়েছেন, নির্বাচন কমিশনের বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে গঠিত বিশেষায়িত কারিগরি কমিটি সংসদীয় আসনের সীমানা পুনরায় নির্ধারণে সুপারিশ জমা দিয়েছে। সংসদীয় ৩০০ আসনের মধ্যে ৩৯টির সীমানা পরিবর্তন হচ্ছে। তিনি বলেন, সীমানা পুনঃনির্ধারণ আইনে বলা হয়েছে সীমানা নির্ধারণের ক্ষেত্রে প্রশাসনিক ব্যবস্থা, ভৌগোলিক অখণ্ডতা এবং আদমশুমারি এই তিনটি বিষয়কে গুরুত্ব দিয়ে করতে হবে।


তবে আদমশুমারি ২০২২ অনুযায়ী কিছু বিষয় আছে একটু অসামঞ্জস্যপূর্ণ। আমাদের কাছে আছে হালনাগাদ করা ভোটার সংখ্যা। এছাড়া, আমাদের ভোটার তালিকা ও সংখ্যার ভিত্তিতে কমিটি এভারেজ আসনভিত্তিক ভোটার সংখ্যা নির্ধারণ করেছে। সেটি হলো প্রায় ৪ লাখ ২০ হাজার।


 তিনি আরো জানান, উনারা ভোটারের সংখ্যার ভিত্তিতে একটা গ্রেডিং করেছেন, সেটি হচ্ছে সবচেয়ে বেশি ভোটার কোন জেলায় এবং সবচেয়ে কম ভোটার কোন জেলায়। কারিগরি কমিটি ফাইন্ড আউট করেছেন যে, সবচেয়ে বেশি ভোটার যে জেলায় সেই জেলায় একটি আসন উনারা বাড়ানোর প্রস্তাব করেছেন এবং সর্বনিম্ন ভোটার যে জেলায় সেই জেলায় একটি আসন কমানোর প্রস্তাব করেছে। সেই আলোকে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি।

Abu Al Moursalin Babla

Editor & Publisher
ই-মেইল: [email protected]

অনুসরণ করুন