Logo
Logo
×

রাজনীতি

নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সীমানা পুনর্নির্ধারণে বিএনপিতে উচ্ছ্বাস

Icon

সাইমুন ইসলাম

প্রকাশ: ০২ আগস্ট ২০২৫, ১২:০০ এএম

নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সীমানা পুনর্নির্ধারণে বিএনপিতে উচ্ছ্বাস

নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সীমানা পুনর্নির্ধারণে বিএনপিতে উচ্ছ্বাস

Swapno

জাতীয় সংসদের ৩০০ আসনের মধ্যে ৩৯টি আসনে সীমানা পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। জনসংখ্যা, ভোটার সংখ্যা ও ভৌগোলিক অবস্থাসহ সামগ্রিক বিষয় বিবেচনায় এনে এই পুনর্বিন্যাস করা হয়েছে। এই তালিকায় রয়েছে নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনও। আগে সিদ্ধিরগঞ্জ যুক্ত করে এই আসন গঠিত হলেও, এবার নতুন খসড়ায় সিদ্ধিরগঞ্জকে বাদ দিয়ে গোগনগর ও আলীরটেক ইউনিয়নকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।


নির্বাচন কমিশনের এই সিদ্ধান্ত প্রকাশের পর থেকেই নারায়ণগঞ্জের রাজনৈতিক অঙ্গনে শুরু হয়েছে আলোচনা-সমালোচনা। তবে বিএনপির স্থানীয় নেতাকর্মীরা এ সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন এবং মনে করছেন এ আসনে এতে দলটি আরও শক্তিশালী অবস্থানে যাবে।


এ ব্যাপারে কেন্দ্রীয় বিএনপি’র জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন গতকাল ফতুল্লায় এক চা চক্রে নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেছেন,  ‘নির্বাচনী এলাকার সীমানা পুনর্গঠন জনকল্যাণের জন্য হলে নেতারা ব্যক্তিগত স্বার্থ ত্যাগ করতে প্রস্তুত।  নির্বাচনী এলাকা পুনর্র্নিধারণের একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়েছে। যখন বিজ্ঞপ্তিটি পাই, তখন আলীরটেক থেকে একটি ফোন আসে, যেখানে আনন্দের বন্যা বয়ে যাচ্ছে।


যদি জনগণের এই পরিবর্তনে সুবিধা হয় এবং তাদের কল্যাণ হয়, তবে আমাদের মতো নেতাদের অসুবিধা হলেও তাতে কিছু যায় আসে না। আমরা নেতা হতে চাই, এমপি হতে চাই, কিন্তু জনগণ চায় সেবা। যদি জনগণের কল্যাণ হয়, আমরা এটাকে স্বাগত জানাব। আর যদি জনগণের জন্য অকল্যাণ হয়, তবে জনগণ এর বিরুদ্ধে আবেদন বা আপত্তি জানাতে পারবে।’


তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের আয়তন, জনসংখ্যা, ভৌগোলিক অবস্থা ও প্রশাসনিক ব্যবস্থার ওপর ভিত্তি করে নির্বাচনী এলাকার সীমানা নির্ধারিত হয়। নারায়ণগঞ্জের পাঁচটি আসনে জনসংখ্যা ও ভোটার সংখ্যা সবসময় একইভাবে বাড়ে না। শিল্প ও বাণিজ্য এলাকাগুলোতে ভোটার সংখ্যা দ্রুত বৃদ্ধি পেলেও গ্রামাঞ্চলে তা ঘটে না।


এ কারণেই পরিবর্তনের প্রয়োজন পড়ে। স্বাধীনতার পর থেকে এই আসনগুলোতে যে উন্নয়ন হয়েছে, তার বেশিরভাগই হয়েছে আমাদের সময়ে।’ এই আসনে আরেকজন মনোনয়নপ্রত্যাশী শাহ আলম এক প্রতিক্রিয়ায় জানান, ‘নির্বাচন কমিশনার যথাযথভাবে বিষয়গুলো বিবেচনা করে আসনের পুনর্বিন্যাস করেছে। এ আসনটি যে এলাকা নিয়েই গঠিত হোক না কেন  আমি এই আসন থেকেই নির্বাচন করতে চাই। নারায়ণগঞ্জের অন্যান্য আসন থেকে নয় এ  আসন যে এলাকা নিয়ে গঠিত হোক না কেন, আমি মানুষের পাশে থাকবো এবং এখানেই নির্বাচন করব।নির্বাচন কমিশনের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাই।’


এ বিষয়ে ফতুল্লা থানা বিএনপির সভাপতি শহীদুল ইসলাম টিটু বলেন, ‘বহু বছর আগে এই আসন এভাবেই ছিল। মাঝখানে পরিবর্তন হয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ যুক্ত হয়েছিল। আবার গোগনগর ও আলীরটেক ফিরে আসায় আমরা খুশি। বিএনপি অধ্যুষিত এ দুটি ইউনিয়ন যুক্ত হওয়ায় এ  আসনে আমাদের অবস্থান আরও সুদৃঢ় হলো।’


এ প্রসঙ্গে ফতুল্লা থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট বারী ভূঁইয়া বলেন,  ‘গোগনগর ও আলীরটেক যুক্ত হওয়ায় এ আসন যে বিএনপির ঘাঁটি তা আরও শক্তিশালী হলো। এতে আসন্ন নির্বাচনে বিএনপির মনোনয়ন প্রাপ্ত প্রার্থী  সুস্পষ্ট সুবিধা পাবে।এ  সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাই। এতে করে এই আসনে বিএনপি আরো শক্তিশালী হলো।’

কাশিপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মাইনুল ইসলাম রতন বলেন, ‘২০০১ সাল পর্যন্ত গোগনগর ও আলীরটেক ফতুল্লার সাথেই ছিল। এই দুটি এলাকা বিএনপির ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত। তাই এ আসনে বিএনপি এখন আরও শক্ত অবস্থানে।’ একই সুরে কাশিপুর ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আরিফ মন্ডল বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাই। এতে করে নারায়ণগঞ্জ ৪ আসনে বিএনপির অবস্থান আরো শক্ত হবে।’  


ফতুল্লা ইউনিয়ন বিএনপি'র সভাপতি হাসান মাহমুদ পলাশ বলেন, ‘নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনে আলীরটেক ও গোগনগর কে অন্তর্ভুক্ত করায় আমরা আনন্দিত। এতে করে এই আসনে বিএনপি আরো শক্তিশালী হলো।’

এনায়েতনগর ইউনিয়নের সভাপতি এডভোকেট আলমগীর বলেন, ‘আলীরটেক ও গোগনগর পূর্বেও নারায়ণগঞ্জ-৪  আসনের অন্তর্ভুক্ত ছিল।পুনরায় তাদের অন্তর্ভুক্তি নারায়ণগঞ্জ চার আসনে বিএনপিকে আরোও শক্তিশালী করে তুলবে।’

কুতুবপুর ইউনিয়নের সভাপতি নজরুল ইসলাম মাদবর বলেন, ‘এই আসনের সীমানা পুনঃনির্ধারণের গোটা ফতুল্লাবাসী আনন্দিত।এতে করে এই আসনে বিএনপি অত্যন্ত শক্তিশালী অবস্থানে থাকবে।’  

ফতুল্লা থানা বিএনপির সহ-কোষাধ্যক্ষ তৈয়বুর রহমান বলেন, ‘এ আসনের সীমানা পুনঃনির্ধারণের সিদ্ধান্ত অত্যন্ত চমৎকার। এতে করে গোটা ফতুল্লা পাশে আনন্দিত। কারণ যুক্ত হওয়া দুটি ইউনিয়নও বিএনপির ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত। এতে করে সংসদ নির্বাচনে বিএনপি অত্যন্ত শক্তিশালী অবস্থানে থাকবে।’  

সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফুল ইসলাম বিপ্লব বলেন, ‘আলীরটেক ও গোগনগর বিএনপির ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত।এ দুটি ইউনিয়ন নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনে যুক্ত হওয়ায় যিনি ধানের শীষ প্রতীকে মনোনয়ন পাবেন তিনি বিপুল ভোটে জয়ী হবেন।’

বক্তাবলী ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মতিউর রহমান ফকির জানান, ‘আলীরটেক ও গোগনগর যুক্ত হওয়ায় বিএনপির ভোট ব্যাংক আরও শক্তিশালী হয়েছে। তারা বিশ্বাস করেন, এ আসনে ধানের শীষের প্রার্থী বিপুল ভোটে জয়ী হবেন।’

নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সীমানা পুনর্নির্ধারণে বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যে বিরোধ নয়, বরং এক ধরনের ঐক্য ও আশাবাদ তৈরি হয়েছে। স্থানীয় নেতাদের দাবি, আলীরটেক ও গোগনগর যুক্ত হওয়ায় এ আসনে বিএনপি এখন আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে শক্তিশালী অবস্থানে রয়েছে।

Abu Al Moursalin Babla

Editor & Publisher
ই-মেইল: [email protected]

অনুসরণ করুন