কেন্দ্রীয় নেতাদের নজরে জেলা বিএনপির বিভেদ
যুগের চিন্তা রিপোর্ট
প্রকাশ: ০৭ আগস্ট ২০২৫, ১২:০০ এএম
কেন্দ্রীয় নেতাদের নজরে জেলা বিএনপির বিভেদ
বিএনপির কেন্দ্র ঘোষিত জুলাই গণঅভ্যুত্থানের প্রথম বর্ষপূর্তিতে রাজধানীরতে কেন্দ্রীয় ঘোষিত ‘বিজয় র্যালিকে’ সফল করতে নারায়ণগঞ্জ বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা হাজারো হাজারো নেতাকর্মী নিয়ে বিজয় র্যালীতে অংশগ্রহণ করলেও প্রতিটি সংগঠনজুড়েই লক্ষ্য করা গেছে বিভেদ। প্রতিটি সংগঠনের নেতাকর্মীরা যার যার বলয় মোতাবেক আলাদা আলাদা ব্যানারের মাধ্যমে বিভেদ প্রকাশ্যে করে বিজয় র্যালী করেন নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর বিএনপি নেতারা।
এদিকে সকাল থেকেই নয়াপল্টন এলাকার বিভিন্ন স্থানে নারায়ণগঞ্জ বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতকার্মীরা উপস্থিত থাকলে ও বিশাল আকারে সর্বপ্রথমই বিজয় র্যালী নিয়ে সমাবেশস্থলে জান মহানগর বিএনপি। কিন্তু জেলা বিএনপির বর্তমান কমিটিকে ঘিরে দেখা মিলে দৈন্যদশা। লোক একত্রিত করতে করতেই দিন প্রায় শেষের দিকে।
এদিকে জেলা বিএনপির ও রূপগঞ্জ উপজেলা বিএনপির ব্যানারে সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক মোস্তাফিজুর রহমান ভূঁইয়া দিপু মিছিল নিয়ে ঢাকার সমাবেশ ও বিজয় র্যালীতে অংশ নেয়, অপর দিকে জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও বর্তমান ১ নং সদস্য আলহাজ¦ মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন আলাদাভাবে চমকপ্রদ শোডাউন দিলেও জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যাপক মামুন মাহমুদ ফতুল্লা ও সিদ্ধিরগঞ্জ মিলিয়ে পাচ্ছিলেন না নেতাকর্মীরা। পরবর্তীতে দিপু ভূঁইয়া, বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক নজরুল ইসলাম আজাদের একটি মিছিল চলে আসলে সেখানে মামুন মাহমুদের রিকোয়েস্টে একত্রিত হয়ে জেলা বিএনপির ব্যানার ফোকাস করতে চাইলেও হ-য-ব-র-ল ও নানান বিশৃঙ্খলায় সুশৃঙ্খল পোগ্রাম করতে পারেনি জেলা বিএনপি।
যা কেন্দ্রেক নজরে ও আসেনি। যাকে ঘিরে উড়ছে নানান সমালোচনা। বর্তমানে সকলেই বলছে বিভেদে নড়বড়ে হয়ে পরেছে জেলা বিএনপি। তা ছাড়া আগামী নির্বাচনে কর্মী সংকটে পরে জেলা বিএনপি নাজেহাল হওয়ার আগমুহুর্ত্বেই জেলা বিএনপিকে পূর্ণাঙ্গ করে আরো শক্তিশালীসহ বর্তমান উন্নতিকরণ কমিটিতে কিছুটা রদবদল প্রয়োজন এমনটাও বলছে নেতাকর্মীরা।
সূত্র বলছে, চলতি বছরের (০২ ফেব্রুয়ারী) জেলা বিএনপিকে গতিশীল করতে ৫ সদস্য বিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করেন বিএনপির হাইকমান্ড। একই সাথে কমিটি যেন দুইভাগে বিভক্ত না হয়ে পরে সেই দিকে লক্ষ্য রেখে দেওয়া হয়নি কাউকে সদস্য সচিব। পরবর্তীতে গত (২৪ মার্চ) কমিটিকে উন্নতি করলে ও আহ্বায়ক অধ্যাপক মামুন মাহমুদ, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক মোস্তাফিজুর রহমান ভূঁইয়া দিপু, যুগ্ম আহ্বায়ক মাসুকুল ইসলাম রাজীব। এই তিন নেতাকে জেলা বিএনপির সাইনিং পাওয়া দেওয়া হয়। কিন্তু সদস্য সচিবের দায়িত্ব দেওয়া হয়নি কোন নেতাকর্মীদের।
তা ছাড়া উন্নিত কমিটির ৭৫ দিনে ও জেলা বিএনপির কোন সক্রিয়তা বা গতিশীলতা লক্ষ্য করা যায়নি। তা ছাড়া কমিটি দেওয়ার পরবর্তীতে নির্দেশ ছিলো দ্রুত ইউনিট কমিটি ভেঙে পূনরায় সম্মেলনের মাধ্যমে গঠন করে নিজেদের কমিটির সম্মেলন দেওয়ার জন্য। কিন্তু দলীয় নির্দেশনার বাহিরে গিয়ে নিজস্ব দ্বন্দ্বে কোন প্রকারের সক্রিয়তা বা ঐক্য লক্ষ্য করা যাচ্ছে না জেলা বিএনপিতে। এদিকে গত (০২ ফেব্রুয়ারী) ৫ সদস্য বিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটি গঠনের পর বিভিন্ন মিছিল-মিটিং, সভায় জেলা বিএনপির নেতাকর্মীদের ঐক্য দেখা গেলে ও গত (২৪ মার্চ) জেলা বিএনপি উন্নতি করণের পরপরই অনঐক্য লক্ষ্য করা যাচ্ছে জেলা বিএনপি জুড়েই।
তা ছাড়া জেলা বিএনপির উন্নতি কমিটিতে বিভিন্ন বিতর্কিত ঘটনা জেনে ও ফতুল্লা থানা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক রিয়াদ চৌধুরীকে সদস্য পদ দেওয়ার পরের মাসেই চাঁদাবাজির অভিযোগে দল থেকে বহিস্কার হন রিয়াদ চৌধুরী। তা ছাড়া গত ৫আগষ্টের পর সোনারগাঁও উপজেলা জুড়ে ব্যাপক সমালোচনায় থাকা আজহারুল ইসলাম মান্নান রূপগঞ্জের ত্রাস গোলাম ফারুক খোকন, তারাবোতে ব্যাবসায়ীদের আতঙ্ক তাসিক হক ওসমান। এরা জেলা বিএনপির দায়িত্বে থাকায় বর্তমানে অনঐক্য দেখা দিচ্ছে জেলা বিএনপিতে। যাকে ঘিরে প্রথম কমিটির ৫ আহ্বায়ক ও যুগ্ম আহ্বায়ক বর্তমানে বিছিন্ন হয়ে পরেছে।
আহ্বায়ক মামুন মাহমুদ একদিকে, মোস্তফিজুর রহমান ভূইয়া দিপু অন্যদিকে মাসুকুল ইসলাম রাজীব একক আবার শরীফ আহম্মেদ টুটুল নেই মাঠে। তা ছাড়া আহ্বায়ক কমিটির বাকি ৪ যুগ্ম আহ্বায়কের সাথে নেই জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও বর্তমান ১নং সদস্য আলহাজ¦ মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিনের। আধিপত্যসহ নানান দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পরেছে জেলা বিএনপি নেতারা। যাকে ঘিরে গতকাল কেন্দ্রীয় প্রেগামে কেন্দ্রীয় নেতাদের নজরে জেলা বিএনপির দ্বন্দ্ব পুরোটাই প্রকাশ্যে উঠে এসেছে। এদিকে সূত্র বলছে, ইতিমধ্যে জেলা বিএনপির গতকালকের বিশৃঙ্খলা, দ্বন্দ্ব, সাংগঠনিক দুর্বলতা নিয়ে হাইকমান্ডের আলোচনা সভায় নেতাকর্মীরা এই প্রশঙ্গ নিয়ে কথা উঠলে ফের দামা চাপা পরে যায়।
এদিকে নেতাকর্মীদের ভাষ্য অনযায়ী নেতাকর্মীরা বলছে, জেলা বিএনপির সাবেক কমিটি থাকাকালীন আলহাজ¦ মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন সর্বদা নেতাকর্মীদের পাশে সময় দিয়েছেন। তা ছাড়া শহরে বা রাজধানীতে কেন্দ্রীয় ঘোষিত পোগ্রামে জেলা বিএনপির ব্যানারে হাজারো হাজারো নেতাকর্মীদের নিয়ে মাঠে শুশৃঙ্খল পোগ্রাম করেছেন ও বিশাল আকারে পোগ্রাম সফলমন্ডিত করেছেন।
কিন্তু বর্তমান কমিটি আসার পর এখনো ইউনিট কমিটি জুড়ে হয়নি নতুন কমিটি, পুরনো দিয়েই চলছে। যা বর্তমানে বিএনপির জন্য অনেকটাই দুভাগ্য বিষয় হয়ে দাড়িঁয়েছে। কারণ আগামী ফেব্রুয়ারী মাসে নির্বাচন সেই দিকে লক্ষ্য রেখেই নারায়ণগঞ্জসহ রাজধানীর মনোনয়ন প্রত্যাশীসহ জেলা, মহানগর বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতকার্মীরা গোচ্ছাছেন।


